চালের বিশ্ববাজার এখন আমদানিকারকদের পক্ষে
খুবই সাধারণ মানের মোটা চাল লালির মণও গত সপ্তাহে দিনাজপুরের পুলহাট মোকামে এক হাজার ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। ঢাকায় খুচরা লালি ৩১-৩২ টাকা কেজি, ১০ দিনে বেড়েছে তিন টাকা।
চালের এ মূল্যবৃদ্ধিতে এবার প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে সরকার। ১ জুলাই খাদ্য মন্ত্রণালয় উৎসাহ মূল্যের নামে চাল সংগ্রহ মূল্য তিন টাকা বাড়ালে বাজার চড়ে গেছে।
এবার বোরো কাটা শেষ হওয়ার আগেই চালের বাজার ধীরে ধীরে চড়ছিল। ৩০ মে উদ্বিগ্ন খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও আমদানি করে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পরামর্শ দিয়েছিল।
কয়েক মাস ধরে বিশ্ববাজারের হালচালও অনুকূলে। উৎপাদন পূর্বাভাস ভালো থাকায় ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান বা আমেরিকায়ও চালের রপ্তানি মূল্য আমদানিকারকদের অনুকূলেই।
মার্কিন কৃষি অধিদপ্তর ইউএসডিএ গত বুধবার জানিয়েছে, ২০১০-১১ উৎপাদন বর্ষে বিশ্বে গতবারের চেয়ে দুই কোটি টন চালের ফলন বাড়বে। রপ্তানি বাজারেও সরবরাহ বাড়বে ১৫ লাখ টন।
এদিকে চীনের আমদানি কমায় আমেরিকান চালের রপ্তানি মূল্য কমেছে। জুন শেষে শিকাগো কমোডিটি এক্সচেঞ্জে ‘রাইস ফিউচার প্রাইস’ ১৯৯৬ সালের পর সর্বনিম্ন হয়েছে। ইউএসডিএ বলছে, আগামী মৌসুমে আমেরিকায় চালের রেকর্ড উৎপাদন হবে। কারণ, ধানের রোপণ গতবারের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
ওবামাপত্নী মিশেল সম্প্রতি এক কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন, যাতে আমেরিকান স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা টিফিনে ফাস্টফুডের চেয়ে বিশেষ রাইস ডিস খেয়ে মোটা হওয়া থেকে পরিত্রাণ পাবে। আমেরিকার চাল রপ্তানিকারকেরা কিউবায়ও গেছেন। এত দিন আমেরিকানদের অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করে চাল পেতে হতো বলে কিউবান আমদানিকারকেরা ভিয়েতনাম থেকে সহজ শর্তে ও সাশ্রয়ী মূল্যে চাল আনতেন। বাংলাদেশ কেন পারে না আমেরিকার সঙ্গে ‘রাইস রিলেশন’ তৈরি করে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে?
বাজার সূত্র বলছে, কয়েক মাস ধরে চাল আমদানি হচ্ছিল পাকিস্তান থেকে। সম্প্রতি কোনো কোনো আমদানিকারক ভিয়েতনাম গেছেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক ভিয়েতনামের মজুদ ও মূল্য এখন শীর্ষ রপ্তানিকারক থাইল্যান্ড থেকে বেশ ভালো।
এদিকে বিশ্ববাজারের দাম পড়তি দেখে ভিয়েতনাম সরকার সরকারি ও বেসরকারি কিছু সংস্থাকে বিনা সুদে তহবিল জুগিয়েছে, যেন তারা আর ১০ লাখ টন চাল কিনে নেয় কৃষকদের থেকে আর স্থানীয় বাজারে দাম না পড়ে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল আমদানিকারক ফিলিপাইন গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছে, এবারও তারা প্রায় ২৫ লাখ টন চাল আমদানি করবে। তবে আগামী তিন বছরে উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে তারা। শুক্রবার কম্বোডিয়ার নমপেন পোস্ট খবর দিয়েছে, ফিলিপাইন সে দেশ থেকে তিন লাখ টন সাধারণ মানের (২৫ শতাংশ ভাঙা) চাল আমদানির চুক্তি করতে যাচ্ছে ৩১০ ডলার টন দরে। এর আগের আড়াই লাখ টনের চালানটিই ফিলিপাইন নিয়েছিল ভিয়েতনাম থেকে, তবে একটু বেশি দরে। চাল রপ্তানিতে ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের বেশ পেছনে কম্বোডিয়া। গত এপ্রিলে তাদের কৃষি মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, রপ্তানি করার মতো ২৪ লাখ টন ধানের মজুদ আছে তাদের।
মূলত ভারত থেকে চাল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় চালের দাম বাংলাদেশে চড়া।
গতবার ভারতে চাল উৎপাদন মার খেয়েছিল। এবার তারা বাম্পার ফলন আশা করছে আর রপ্তানি পুনরায় শুরু করার আশাও রাখছে অক্টোবরের আগেই। অবশ্য ইতিমধ্যে শুরু হওয়া অতিবৃষ্টি ভারতের কোথাও কোথাও ধানের ক্ষতি করছে। বৃষ্টির অভাবে ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনেও উৎপাদন কিছু কমবে। তবে এমন মিশ্র পরিস্থিতি প্রায় সব সময়ই থাকে।
আমেরিকা, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়াসহ অনেক জায়গায়ই রপ্তানির মজুদ ও মূল্য পরিস্থিতি ভালো। তাই সরকারকে যেতে হবে সেখানে, বেসরকারি খাতকে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে নতুন নতুন আমদানি সূত্রের সঙ্গে।
বাংলাদেশ নিয়মিত চাল আমদানিকারক নয়। এবার বাজার বলছে, উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। উৎপাদন এমন কমলেই আমাদের বাইরে যেতে হয় মাঝেমধ্যে।
তবে এ ক্ষেত্রে সব আমদানি সূত্রের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ, অগ্রিম প্রস্তুতি ও উৎসাহ এবং চাল কূটনীতি নিয়ে সক্রিয় থাকলে স্থানীয় বাজার টালমাটাল না করেও সংগ্রহ ঘাটতি পূরণ সম্ভব। সব সূত্র থেকে আমদানি করা হলে সামান্য উৎপাদন ঘাটতি হলেই দাম বাড়বে না, মজুদদারেরা উৎসাহিত হবে না। চাল সংগ্রহের কিছু দায়সারা আন্তর্জাতিক দরপত্র ডেকে বসে থাকলে যেকোনো সরকারই বিপদে পড়বে।
চালের এ মূল্যবৃদ্ধিতে এবার প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে সরকার। ১ জুলাই খাদ্য মন্ত্রণালয় উৎসাহ মূল্যের নামে চাল সংগ্রহ মূল্য তিন টাকা বাড়ালে বাজার চড়ে গেছে।
এবার বোরো কাটা শেষ হওয়ার আগেই চালের বাজার ধীরে ধীরে চড়ছিল। ৩০ মে উদ্বিগ্ন খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও আমদানি করে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পরামর্শ দিয়েছিল।
কয়েক মাস ধরে বিশ্ববাজারের হালচালও অনুকূলে। উৎপাদন পূর্বাভাস ভালো থাকায় ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান বা আমেরিকায়ও চালের রপ্তানি মূল্য আমদানিকারকদের অনুকূলেই।
মার্কিন কৃষি অধিদপ্তর ইউএসডিএ গত বুধবার জানিয়েছে, ২০১০-১১ উৎপাদন বর্ষে বিশ্বে গতবারের চেয়ে দুই কোটি টন চালের ফলন বাড়বে। রপ্তানি বাজারেও সরবরাহ বাড়বে ১৫ লাখ টন।
এদিকে চীনের আমদানি কমায় আমেরিকান চালের রপ্তানি মূল্য কমেছে। জুন শেষে শিকাগো কমোডিটি এক্সচেঞ্জে ‘রাইস ফিউচার প্রাইস’ ১৯৯৬ সালের পর সর্বনিম্ন হয়েছে। ইউএসডিএ বলছে, আগামী মৌসুমে আমেরিকায় চালের রেকর্ড উৎপাদন হবে। কারণ, ধানের রোপণ গতবারের চেয়ে ১৩ শতাংশ বেড়েছে।
ওবামাপত্নী মিশেল সম্প্রতি এক কর্মসূচি উদ্বোধন করেছেন, যাতে আমেরিকান স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা টিফিনে ফাস্টফুডের চেয়ে বিশেষ রাইস ডিস খেয়ে মোটা হওয়া থেকে পরিত্রাণ পাবে। আমেরিকার চাল রপ্তানিকারকেরা কিউবায়ও গেছেন। এত দিন আমেরিকানদের অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করে চাল পেতে হতো বলে কিউবান আমদানিকারকেরা ভিয়েতনাম থেকে সহজ শর্তে ও সাশ্রয়ী মূল্যে চাল আনতেন। বাংলাদেশ কেন পারে না আমেরিকার সঙ্গে ‘রাইস রিলেশন’ তৈরি করে সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে?
বাজার সূত্র বলছে, কয়েক মাস ধরে চাল আমদানি হচ্ছিল পাকিস্তান থেকে। সম্প্রতি কোনো কোনো আমদানিকারক ভিয়েতনাম গেছেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক ভিয়েতনামের মজুদ ও মূল্য এখন শীর্ষ রপ্তানিকারক থাইল্যান্ড থেকে বেশ ভালো।
এদিকে বিশ্ববাজারের দাম পড়তি দেখে ভিয়েতনাম সরকার সরকারি ও বেসরকারি কিছু সংস্থাকে বিনা সুদে তহবিল জুগিয়েছে, যেন তারা আর ১০ লাখ টন চাল কিনে নেয় কৃষকদের থেকে আর স্থানীয় বাজারে দাম না পড়ে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল আমদানিকারক ফিলিপাইন গত সপ্তাহে ঘোষণা দিয়েছে, এবারও তারা প্রায় ২৫ লাখ টন চাল আমদানি করবে। তবে আগামী তিন বছরে উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে তারা। শুক্রবার কম্বোডিয়ার নমপেন পোস্ট খবর দিয়েছে, ফিলিপাইন সে দেশ থেকে তিন লাখ টন সাধারণ মানের (২৫ শতাংশ ভাঙা) চাল আমদানির চুক্তি করতে যাচ্ছে ৩১০ ডলার টন দরে। এর আগের আড়াই লাখ টনের চালানটিই ফিলিপাইন নিয়েছিল ভিয়েতনাম থেকে, তবে একটু বেশি দরে। চাল রপ্তানিতে ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের বেশ পেছনে কম্বোডিয়া। গত এপ্রিলে তাদের কৃষি মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, রপ্তানি করার মতো ২৪ লাখ টন ধানের মজুদ আছে তাদের।
মূলত ভারত থেকে চাল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকায় চালের দাম বাংলাদেশে চড়া।
গতবার ভারতে চাল উৎপাদন মার খেয়েছিল। এবার তারা বাম্পার ফলন আশা করছে আর রপ্তানি পুনরায় শুরু করার আশাও রাখছে অক্টোবরের আগেই। অবশ্য ইতিমধ্যে শুরু হওয়া অতিবৃষ্টি ভারতের কোথাও কোথাও ধানের ক্ষতি করছে। বৃষ্টির অভাবে ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনেও উৎপাদন কিছু কমবে। তবে এমন মিশ্র পরিস্থিতি প্রায় সব সময়ই থাকে।
আমেরিকা, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়াসহ অনেক জায়গায়ই রপ্তানির মজুদ ও মূল্য পরিস্থিতি ভালো। তাই সরকারকে যেতে হবে সেখানে, বেসরকারি খাতকে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে নতুন নতুন আমদানি সূত্রের সঙ্গে।
বাংলাদেশ নিয়মিত চাল আমদানিকারক নয়। এবার বাজার বলছে, উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। উৎপাদন এমন কমলেই আমাদের বাইরে যেতে হয় মাঝেমধ্যে।
তবে এ ক্ষেত্রে সব আমদানি সূত্রের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ, অগ্রিম প্রস্তুতি ও উৎসাহ এবং চাল কূটনীতি নিয়ে সক্রিয় থাকলে স্থানীয় বাজার টালমাটাল না করেও সংগ্রহ ঘাটতি পূরণ সম্ভব। সব সূত্র থেকে আমদানি করা হলে সামান্য উৎপাদন ঘাটতি হলেই দাম বাড়বে না, মজুদদারেরা উৎসাহিত হবে না। চাল সংগ্রহের কিছু দায়সারা আন্তর্জাতিক দরপত্র ডেকে বসে থাকলে যেকোনো সরকারই বিপদে পড়বে।
No comments