কাশ্মীরকে এড়িয়ে যেতে পারে না বিশ্ব, আমরা সবাই ঝুঁকিতে by ইমরান খান
গত
আগস্টে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর আমি যেসব
বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছিলাম তার মধ্যে অন্যতম ছিল দক্ষিণ এশিয়ায়
দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা। আমাদের কঠিন ইতিহাসজুড়ে ভারত ও পাকিস্তান
উভয় রাষ্ট্রই একই ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি। এরমধ্যে আছে দারিদ্র্য,
বেকারত্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষ করে হিমবাহ গলে যাওয়া ও দু’দেশের কোটি
কোটি মানুষের সুপেয় পানির অভাব।
বাণিজ্য ও কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানের মধ্য দিয়ে আমি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে চেয়েছিলাম। কাশ্মীর ইস্যুই ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পথে সব থেকে বড় বাধা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয় পাওয়ার পর গত বছরের ২৬শে জুলাই টেলিভিশনে আমার প্রথম বার্তায় বলেছিলাম, আমি ভারতের সঙ্গে শান্তি চাই। ভারত যদি এ লক্ষ্যে এক পা এগিয়ে আসে, আমরা তাহলে তাদের দিকে দুই পা এগিয়ে যাব। এরপর উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজন করা হয়।
কিন্তু ভারত ওই বৈঠক বাতিল করে। নরেন্দ্র মোদির কাছে লেখা আমার তিন চিঠির প্রথমটি আমি তখন লিখেছিলাম। এতে আমি তাকে আলোচনার ও শান্তির জন্য কাজ করার আহ্বান জানাই।
দুঃখজনকভাবে শান্তির জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসার আমার সব চেষ্টা ভেস্তে দেয় নয়াদিল্লি। তখন আমরা ধারণা করি, নরেন্দ্র মোদির কট্টরপন্থি অবস্থান ও পাকিস্তানবিরোধী মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে একটি জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। যা গত মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট পেতে তাকে সাহায্য করেছে।
ওই নির্বাচনের পূর্বে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি এক কাশ্মীরি যুবক ভারতীয় সেনাদের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালায়। ভারত সরকার এ হামলার দায় পুরোপুরি পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেয়। আমরা তাদের কাছে এমন দাবির পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ দেখাতে বলি। কিন্তু মোদি সীমান্তের এপারে হামলা চালাতে তার বিমান বাহিনীকে পাঠায়। আমাদের বিমান বাহিনী তাদের একটি বিমান ভূপাতিত করে ও তার পাইলটকে আটক করে। আমরা তাদেরকে বার্তা দিতে চেয়েছিলাম যে হামলা চালিয়ে পাকিস্তান কোনো জীবন কেড়ে নিতে চায় না। আমরা আটক ভারতীয় পাইলটকে কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই ফেরত দিয়েছিলাম।
এরপর ২৩শে মে, নরেন্দ্র মোদি যখন পুনরায় নির্বাচিত হলেন আমি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি। জুনে আমি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে তার কাছে আরো একটি চিঠি পাঠাই। কিন্তু আবারো ভারত কোনো ধরনের আগ্রহ দেখায় নি। আমরা বুঝতে পারলাম, ভারত এখন পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
স্পষ্টভাবেই নরেন্দ্র মোদি শান্তির লক্ষ্যে আমাদের প্রস্তাবকে ভুল বুঝেছেন। আমরা কোনো শত্রুভাবাপন্ন সরকারের বিরুদ্ধে ছিলাম না। আমরা বিরুদ্ধে ছিলাম এমন একটি সরকারের বিরুদ্ধে যেটি হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা পরিচালিত হয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ও আরো বেশ কয়েকজন মন্ত্রী আরএসএস সদস্য। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন অ্যাডলভ হিটলার ও বেনিতো মুসোলিনির ভক্ত। নরেন্দ্র মোদির গুরু ১৯৩৯ সালে প্রকাশিত এক বইয়ে লিখেছিলেন, কোনো জাতি ও এর সংস্কৃতিতে শুদ্ধতার জন্য জার্মানি শুদ্ধাভিযান চালাচ্ছে। সেখানে আমরা দেখতে পাই জাতীয় গর্ব চূড়ায় অবস্থান করছে। জার্মানি যা করেছে তা হিন্দুস্তানের জন্য একটি ভালো শিক্ষা। আমাদের এটি শেখা উচিত।
আমি আশা করেছিলাম, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদি যেরকম মানুষ ছিলেন নতুন করে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তার সেসব পুরোনো পদ্ধতি ভুলে যাবেন। গুজরাটের স্থানীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে দাঙ্গা হয়েছিল তার জন্য বিশ্বব্যাপী কুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন মোদি। একইসঙ্গে এ জন্য তার ভিসা আবেদন বাতিল করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তার প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার সময়টি মুসলিম, খ্রিস্টান ও দলিত সম্প্রদায়ের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের হামলার মধ্য দিয়ে লেখা হয়েছিল।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আমরা দেখি, কাশ্মীরি মানুষদের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতন বেড়েই চলেছে। তরুণ কাশ্মীরি বিক্ষোভকারীদের পেলেট বিদ্ধ করা হচ্ছে। এতে শত শত তরুণ অন্ধ হয়ে গেছে। গত ৫ই আগস্ট নরেন্দ্র মোদির সরকার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের স্বশাসনের অধিকার কেড়ে নিতে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল ঘোষণা করে। ভারতের এমন পদক্ষেপ তাদের সংবিধান অনুযায়ী অবৈধ। তবে তার থেকেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ যে, এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুল্যুশনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত শিমলা চুক্তির লঙ্ঘন।
মোদির নতুন ভারত কাশ্মীরে আরো সেনা মোতায়েন করছে, এর জনগণকে কারাবন্দি করছে। কাশ্মীরিদের ঘরবন্দি করে তাদের ফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন সেবা বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। তাদের কাছে নিজের আপনজন হতে শুরু করে সমগ্র পৃথিবীর কোনো খবর নেই। এই ঘোষণার পর হাজারো কাশ্মীরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে সমগ্র ভারতজুড়ে থাকা বিভিন্ন কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কাশ্মীরিরা এই ঘোষণার বিরোধিতা করতে রাস্তায় নেমে এসেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই অঞ্চল থেকে কারফিউ উঠিয়ে নিলে রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে।
যদি কাশ্মীরের মানুষদের ওপর ভারতীয় আগ্রাসন বন্ধে বিশ্ব কিছু না করে তাহলে তা কঠিন পরিণতি ডেকে আনবে। দুটি পরমাণু শক্তিসম্পন্ন দেশ সামরিকভাবে মুখোমুখি হতে চলেছে। এরইমধ্যে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী পরমাণু বোমার নো ফার্স্ট ইউজ নীতি থেকে সরে আসার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে দেশটির নেতারাও একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের এই পরিকল্পনাকে সন্দেহের চোখে দেখেছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় যখন পরমাণু যুদ্ধের বাতাস বইছে তখন আমার মনে হচ্ছে, পাকিস্তান ও ভারতের উচিত কাশ্মীর ইস্যু, কৌশলগত নানা বিষয় ও বাণিজ্য নিয়ে এখনি আলোচনায় বসা। কাশ্মীর নিয়ে আলোচনায় কাশ্মীরিদেরসহ এর সব অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আলোচনা ও দরকষাকষির মধ্য দিয়ে অংশীদাররা এমন একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারবে যা কাশ্মীরি জনগণের কয়েক দশক ধরে চলা দুর্দশার সমাপ্তি ঘটাবে। একইসঙ্গে এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু এই আলোচনা শুধু তখনই সম্ভব যখন ভারত কাশ্মীরিদের স্বশাসনের অধিকার ফিরিয়ে দেবে, এই অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে তাদেরকে মুক্তি দেবে ও ভারতীয় সেনাদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ব্যবসা ও বাণিজ্য সুবিধার বাইরে গিয়ে চিন্তা করা। মিউনিখ চুক্তির কারণেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল। সেই একইরকম আরেকটি হুমকি এখন পৃথিবীতে নাড়া দিচ্ছে। কিন্তু এবার এটি হচ্ছে পরমাণু অস্ত্রের ছায়ায়।
বাণিজ্য ও কাশ্মীর ইস্যুর সমাধানের মধ্য দিয়ে আমি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করতে চেয়েছিলাম। কাশ্মীর ইস্যুই ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পথে সব থেকে বড় বাধা। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয় পাওয়ার পর গত বছরের ২৬শে জুলাই টেলিভিশনে আমার প্রথম বার্তায় বলেছিলাম, আমি ভারতের সঙ্গে শান্তি চাই। ভারত যদি এ লক্ষ্যে এক পা এগিয়ে আসে, আমরা তাহলে তাদের দিকে দুই পা এগিয়ে যাব। এরপর উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে একটি বৈঠক আয়োজন করা হয়।
কিন্তু ভারত ওই বৈঠক বাতিল করে। নরেন্দ্র মোদির কাছে লেখা আমার তিন চিঠির প্রথমটি আমি তখন লিখেছিলাম। এতে আমি তাকে আলোচনার ও শান্তির জন্য কাজ করার আহ্বান জানাই।
দুঃখজনকভাবে শান্তির জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসার আমার সব চেষ্টা ভেস্তে দেয় নয়াদিল্লি। তখন আমরা ধারণা করি, নরেন্দ্র মোদির কট্টরপন্থি অবস্থান ও পাকিস্তানবিরোধী মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে একটি জাতীয়তাবাদী উন্মাদনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। যা গত মে মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট পেতে তাকে সাহায্য করেছে।
ওই নির্বাচনের পূর্বে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি এক কাশ্মীরি যুবক ভারতীয় সেনাদের ওপর আত্মঘাতী হামলা চালায়। ভারত সরকার এ হামলার দায় পুরোপুরি পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেয়। আমরা তাদের কাছে এমন দাবির পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ দেখাতে বলি। কিন্তু মোদি সীমান্তের এপারে হামলা চালাতে তার বিমান বাহিনীকে পাঠায়। আমাদের বিমান বাহিনী তাদের একটি বিমান ভূপাতিত করে ও তার পাইলটকে আটক করে। আমরা তাদেরকে বার্তা দিতে চেয়েছিলাম যে হামলা চালিয়ে পাকিস্তান কোনো জীবন কেড়ে নিতে চায় না। আমরা আটক ভারতীয় পাইলটকে কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই ফেরত দিয়েছিলাম।
এরপর ২৩শে মে, নরেন্দ্র মোদি যখন পুনরায় নির্বাচিত হলেন আমি তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি এবং দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছি। জুনে আমি আলোচনার আহ্বান জানিয়ে তার কাছে আরো একটি চিঠি পাঠাই। কিন্তু আবারো ভারত কোনো ধরনের আগ্রহ দেখায় নি। আমরা বুঝতে পারলাম, ভারত এখন পাকিস্তানকে কালো তালিকাভুক্ত করার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
স্পষ্টভাবেই নরেন্দ্র মোদি শান্তির লক্ষ্যে আমাদের প্রস্তাবকে ভুল বুঝেছেন। আমরা কোনো শত্রুভাবাপন্ন সরকারের বিরুদ্ধে ছিলাম না। আমরা বিরুদ্ধে ছিলাম এমন একটি সরকারের বিরুদ্ধে যেটি হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা পরিচালিত হয়। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ও আরো বেশ কয়েকজন মন্ত্রী আরএসএস সদস্য। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন অ্যাডলভ হিটলার ও বেনিতো মুসোলিনির ভক্ত। নরেন্দ্র মোদির গুরু ১৯৩৯ সালে প্রকাশিত এক বইয়ে লিখেছিলেন, কোনো জাতি ও এর সংস্কৃতিতে শুদ্ধতার জন্য জার্মানি শুদ্ধাভিযান চালাচ্ছে। সেখানে আমরা দেখতে পাই জাতীয় গর্ব চূড়ায় অবস্থান করছে। জার্মানি যা করেছে তা হিন্দুস্তানের জন্য একটি ভালো শিক্ষা। আমাদের এটি শেখা উচিত।
আমি আশা করেছিলাম, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মোদি যেরকম মানুষ ছিলেন নতুন করে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি তার সেসব পুরোনো পদ্ধতি ভুলে যাবেন। গুজরাটের স্থানীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে দাঙ্গা হয়েছিল তার জন্য বিশ্বব্যাপী কুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন মোদি। একইসঙ্গে এ জন্য তার ভিসা আবেদন বাতিল করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তার প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার সময়টি মুসলিম, খ্রিস্টান ও দলিত সম্প্রদায়ের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের হামলার মধ্য দিয়ে লেখা হয়েছিল।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আমরা দেখি, কাশ্মীরি মানুষদের ওপর রাষ্ট্রীয় নির্যাতন বেড়েই চলেছে। তরুণ কাশ্মীরি বিক্ষোভকারীদের পেলেট বিদ্ধ করা হচ্ছে। এতে শত শত তরুণ অন্ধ হয়ে গেছে। গত ৫ই আগস্ট নরেন্দ্র মোদির সরকার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের স্বশাসনের অধিকার কেড়ে নিতে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল ঘোষণা করে। ভারতের এমন পদক্ষেপ তাদের সংবিধান অনুযায়ী অবৈধ। তবে তার থেকেও অধিক গুরুত্বপূর্ণ যে, এটি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুল্যুশনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত শিমলা চুক্তির লঙ্ঘন।
মোদির নতুন ভারত কাশ্মীরে আরো সেনা মোতায়েন করছে, এর জনগণকে কারাবন্দি করছে। কাশ্মীরিদের ঘরবন্দি করে তাদের ফোন লাইন, ইন্টারনেট ও টেলিভিশন সেবা বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। তাদের কাছে নিজের আপনজন হতে শুরু করে সমগ্র পৃথিবীর কোনো খবর নেই। এই ঘোষণার পর হাজারো কাশ্মীরিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে সমগ্র ভারতজুড়ে থাকা বিভিন্ন কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে কাশ্মীরিরা এই ঘোষণার বিরোধিতা করতে রাস্তায় নেমে এসেছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, এই অঞ্চল থেকে কারফিউ উঠিয়ে নিলে রক্তগঙ্গা বয়ে যাবে।
যদি কাশ্মীরের মানুষদের ওপর ভারতীয় আগ্রাসন বন্ধে বিশ্ব কিছু না করে তাহলে তা কঠিন পরিণতি ডেকে আনবে। দুটি পরমাণু শক্তিসম্পন্ন দেশ সামরিকভাবে মুখোমুখি হতে চলেছে। এরইমধ্যে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী পরমাণু বোমার নো ফার্স্ট ইউজ নীতি থেকে সরে আসার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে দেশটির নেতারাও একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের এই পরিকল্পনাকে সন্দেহের চোখে দেখেছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় যখন পরমাণু যুদ্ধের বাতাস বইছে তখন আমার মনে হচ্ছে, পাকিস্তান ও ভারতের উচিত কাশ্মীর ইস্যু, কৌশলগত নানা বিষয় ও বাণিজ্য নিয়ে এখনি আলোচনায় বসা। কাশ্মীর নিয়ে আলোচনায় কাশ্মীরিদেরসহ এর সব অংশীদারদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আলোচনা ও দরকষাকষির মধ্য দিয়ে অংশীদাররা এমন একটি সমাধানে পৌঁছাতে পারবে যা কাশ্মীরি জনগণের কয়েক দশক ধরে চলা দুর্দশার সমাপ্তি ঘটাবে। একইসঙ্গে এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। কিন্তু এই আলোচনা শুধু তখনই সম্ভব যখন ভারত কাশ্মীরিদের স্বশাসনের অধিকার ফিরিয়ে দেবে, এই অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে তাদেরকে মুক্তি দেবে ও ভারতীয় সেনাদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ব্যবসা ও বাণিজ্য সুবিধার বাইরে গিয়ে চিন্তা করা। মিউনিখ চুক্তির কারণেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল। সেই একইরকম আরেকটি হুমকি এখন পৃথিবীতে নাড়া দিচ্ছে। কিন্তু এবার এটি হচ্ছে পরমাণু অস্ত্রের ছায়ায়।
No comments