পাকিস্তান-চীন সম্পর্ক ভারতীয় স্বার্থকে আঘাত করছে by কমলেন্দ্র কানোয়ার
চীন
ও পাকিস্তানের মধ্যে যে গভীর মিত্রতার বন্ধন রয়েছে, সেটা আন্তর্জাতিক
অঙ্গনে ভারতের প্রাধান্য বিস্তারের পথে একটা বড় বাধা। ভৌগলিকভাবে ভারত দুই
দিক থেকে প্রতিকূল দুই শক্তির মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে। জাতিসংঘ সিকিউরিটি
কাউন্সিলে জম্মু ও কাশ্মীর বিষয়ে ভারতের বিশেষ সুবিধা বাতিলের সিদ্ধান্তের
যেভাবে প্রতিবাদ হয়েছে, সেটা ভারতের জন্য একটা শিক্ষা যে চীনা প্রেসিডেন্ট
শি জিনপিংয়ের সাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বন্ধুত্ব নিয়ে এত
খুশি হওয়ার কিছু নেই। ভারত সরকারের কোন ভুল না থাকা সত্বেও দুই দেশের
কৌশলগত স্বার্থের সঙ্ঘাত হওয়ায় সেটা চীন-ভারত সম্পর্কের উপর প্রভাব ফেলেছে।
চীনের সাথে ভারতের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা আগামীতে আরও বাড়বে এবং সঙ্ঘাত ও বিবাদের বিষয়টি সেই ভাবে দূর হবে না। নয়াদিল্লীর একমাত্র বাস্তবসম্মত পন্থা হতে পারে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করা এবং পারমাণবিক শক্তিকে সংহত করা যাতে সেটা চীনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি হিসেবে কাজ করে।
ভারত ও চীনের মধ্যে বিবাদের সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে যেগুলো দুই দেশের মতপার্থক্যকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বিষয়টি এখনও দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু উচ্চ শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার চীনের কাছে অত আকর্ষণীয় নয়, সেখানে চীনকে ভারতের বৃহৎ বাজারের উপর আরও বেশি নির্ভর করতে হবে। চীনা পণ্যের কারণে ভারতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবং এটা ভারতে বেকারত্ব সৃষ্টি করছে। চীনের পণ্য – যেগুলো অনেক সময় নিম্নমানের – এগুলো ভারতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উৎপাদনের জায়গা নিয়েছে এবং হার্ডওয়্যার, বৈদ্যুতিক পণ্য, শিশুদের খেলনা, দিওয়ালি বাজি-পটকা এবং অন্যান্য পণ্যের বাজার দখল করেছে।
চীন-ভারত অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিশেষ কিছু সুবিধা থাকলেও কৌশলগত সম্পর্কের একটা পাল্টা দিক রয়েছে যেখানে চীন-পাক সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা পাচ্ছে।
জাতিসংঘ সিকিউরিটি কাউন্সিলের সাম্প্রতিক বৈঠকে, ভারত লাদাখকে তাদের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণা করায় চীন এর প্রতিবাদ জানিয়েছে কারণ এই অঞ্চলের একটা অংশকে নিজেদের দাবি করে তারা। পাকিস্তানের সাথে যোগ দিয়ে ভারতের উপর সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রস্তাব আরোপের চেষ্টা করেছে চীন, যেখানে তাদের ভেটো ক্ষমতা রয়েছে।
চীন ও পাকিস্তান উভয়েই কাশ্মীরে চলমান অভিযানকালে ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। এগুলো সবই চীন ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ককে তিক্ত করবে এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও রয়েছে।
চীন ও পাকিস্তানের ভেতরকার একটা প্রধান উপাদান হলো সিপিইসি (চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর) যেগুলো ৪৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকল্পের সমষ্টি। এর মধ্য ১১ বিলিয়ন ডলার এসেছে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে। সিপিইসি পাকিস্তানের ভেতরে বড় ধরনের অবকাঠামো সম্প্রসারণ করতে চায় এবং চীনের জিনজিয়াংয়ের সাথে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরকে যুক্ত করতে চায়। এর কাজ শেষ হলে দুই দেশের আরও ভাল পরিবহন ও বাণিজ্য সুবিধা পাবে। তবে চীনারা বালুচ ও পশতুনদের ব্যাপারে শঙ্কিত যে, পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় তারা স্যাবোটাজ করতে পারে কি না।
ভারত, পাকিস্তান ও চীন সবাই বিতর্কিত হিমালয়ান অঞ্চলের বিভিন্ন অংশকে নিজেদের দাবি করে আসছে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের দিক থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছে ভারত। ভারত বলেছে যে, চীন অবৈধভাবে তাদের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ৩৮০০০ বর্গকিলোমিটার দখল করে রেখেছে। বেইজিংয়ের দাবি উত্তরপূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশের ৯০০০০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল মূলত চীনের।
এই সব ঘটনাপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদে ভারত ও চীনের সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক হবে না। ভিন্ন রকম কৌশলগত স্বার্থের কারণে সুসম্পর্কের বিষয়টিতে ছাড় দেয়া হবে। চীন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা এটাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাবে, সেটা বলাটা কঠিন।
চীনের সাথে ভারতের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা আগামীতে আরও বাড়বে এবং সঙ্ঘাত ও বিবাদের বিষয়টি সেই ভাবে দূর হবে না। নয়াদিল্লীর একমাত্র বাস্তবসম্মত পন্থা হতে পারে ভারতীয় সামরিক বাহিনীকে শক্তিশালী করা এবং পারমাণবিক শক্তিকে সংহত করা যাতে সেটা চীনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ শক্তি হিসেবে কাজ করে।
ভারত ও চীনের মধ্যে বিবাদের সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে যেগুলো দুই দেশের মতপার্থক্যকে বিপজ্জনক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বিষয়টি এখনও দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু উচ্চ শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার চীনের কাছে অত আকর্ষণীয় নয়, সেখানে চীনকে ভারতের বৃহৎ বাজারের উপর আরও বেশি নির্ভর করতে হবে। চীনা পণ্যের কারণে ভারতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবং এটা ভারতে বেকারত্ব সৃষ্টি করছে। চীনের পণ্য – যেগুলো অনেক সময় নিম্নমানের – এগুলো ভারতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উৎপাদনের জায়গা নিয়েছে এবং হার্ডওয়্যার, বৈদ্যুতিক পণ্য, শিশুদের খেলনা, দিওয়ালি বাজি-পটকা এবং অন্যান্য পণ্যের বাজার দখল করেছে।
চীন-ভারত অর্থনৈতিক সম্পর্কের বিশেষ কিছু সুবিধা থাকলেও কৌশলগত সম্পর্কের একটা পাল্টা দিক রয়েছে যেখানে চীন-পাক সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা পাচ্ছে।
জাতিসংঘ সিকিউরিটি কাউন্সিলের সাম্প্রতিক বৈঠকে, ভারত লাদাখকে তাদের কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল ঘোষণা করায় চীন এর প্রতিবাদ জানিয়েছে কারণ এই অঞ্চলের একটা অংশকে নিজেদের দাবি করে তারা। পাকিস্তানের সাথে যোগ দিয়ে ভারতের উপর সিকিউরিটি কাউন্সিলের প্রস্তাব আরোপের চেষ্টা করেছে চীন, যেখানে তাদের ভেটো ক্ষমতা রয়েছে।
চীন ও পাকিস্তান উভয়েই কাশ্মীরে চলমান অভিযানকালে ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। এগুলো সবই চীন ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ককে তিক্ত করবে এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও রয়েছে।
চীন ও পাকিস্তানের ভেতরকার একটা প্রধান উপাদান হলো সিপিইসি (চায়না-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর) যেগুলো ৪৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকল্পের সমষ্টি। এর মধ্য ১১ বিলিয়ন ডলার এসেছে চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে। সিপিইসি পাকিস্তানের ভেতরে বড় ধরনের অবকাঠামো সম্প্রসারণ করতে চায় এবং চীনের জিনজিয়াংয়ের সাথে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরকে যুক্ত করতে চায়। এর কাজ শেষ হলে দুই দেশের আরও ভাল পরিবহন ও বাণিজ্য সুবিধা পাবে। তবে চীনারা বালুচ ও পশতুনদের ব্যাপারে শঙ্কিত যে, পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় তারা স্যাবোটাজ করতে পারে কি না।
ভারত, পাকিস্তান ও চীন সবাই বিতর্কিত হিমালয়ান অঞ্চলের বিভিন্ন অংশকে নিজেদের দাবি করে আসছে। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের দিক থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছে ভারত। ভারত বলেছে যে, চীন অবৈধভাবে তাদের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের ৩৮০০০ বর্গকিলোমিটার দখল করে রেখেছে। বেইজিংয়ের দাবি উত্তরপূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশের ৯০০০০ বর্গকিলোমিটার অঞ্চল মূলত চীনের।
এই সব ঘটনাপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদে ভারত ও চীনের সম্পর্কের জন্য ইতিবাচক হবে না। ভিন্ন রকম কৌশলগত স্বার্থের কারণে সুসম্পর্কের বিষয়টিতে ছাড় দেয়া হবে। চীন-পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠতা এটাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যাবে, সেটা বলাটা কঠিন।
No comments