গৌরবময় জয় by ইশতিয়াক পারভেজ
মুশফিক
আউট হতেই টনটনে নেমে এলো ভীষণ হতাশা। গ্যালারি ছেড়ে দর্শকরা পায়চারি করতে
লাগলেন সমারসেট স্টেডিয়ামের বাইরের আঙ্গিনাতে। সবার মুখে চিন্তার ছাপ।
তাদের মধ্যে একজন বলে উঠলেন সাকিবকে আজ ‘সুপার হিরো’ হতে হবে। তার কথা হয়তো
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের কানে যায়নি। তবে সাকিব জানতেন আজ হারলেই ভেঙে যাবে
বাংলাদেশের স্বপ্নের ডানা। তাই তিনি উড়লেন ব্যাট হাতে তার পিঠে নিয়ে গোটা
বাংলাদেশকে। ক্যারিবীয়দের ছুড়ে দেয়া ৩২২ রানের লক্ষ্য মামুলি মানিয়ে এনে
দিলেন এক ঐতিহাসিক গৌরবময় জয়।
৫১ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটের এই জয় যেন টনটনের সবুজ প্রকৃতিতে লাল সূর্যোদয়। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস বিশ্বকাপে আবারো রেকর্ড গড়া জয় তুলে নিলো টাইগাররা। সাকিব শেষ পর্যন্ত অপরাজিত রইলেন ১২৪ রানে। এবারের বিশ্বকাপে এটি তার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তাকে সঙ্গ দিতে এসে দারুণভাবে নিজের অভিষেক বিশ্বকাপ ম্যাচে হাল ধরেছিলেন লিটন কুমার দাস। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা জুটির মালিক এখন এ দুজন। লিটন অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ৯৬ রানে। এ জয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টাইগাররা বাঁচিয়ে রাখলো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার আশাও। পয়েন্ট তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এলো বাংলাদেশ।
৩’শ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তবে ২৯ রান করে সৌম্য ফিরে গেলে এই জুটি ভাঙে দলীয় ৫২ রানে । এবার ১৯৮৩’র ইংলিশ ব্যাটসম্যান ডেভিড গাওয়ারের মতো বাংলাদেশ দলের হাল ধরলেন সাকিব। কিন্তু সঙ্গ দিতে থাকা তামিম সাজঘরে ফিরলেন দুর্ভাগ্যজন রানআউটে। ব্যক্তিগত ৪৮ রানে তামিমের খেলা বল ফলো থ্রোতে হাতে পেয়ে যান বোলার প্রান্তে শেলডন কটরেল। ব্যাটিংয়ের পর দুই পা ক্রিজ থেকে বেরিয়ে আসা তামিমের উইকেট ভেঙে দেন ক্ষিপ্র থ্রোতে। দলের তখন ১২১ রানে ২ উইকেট নেই। দুঃচিন্তা ভর করলো টাইগার শিবিরে যখন মুশফিকুর রহীম ফিরে গেলেন মাত্র ১ রান করে। কিন্তু কে জানতো ৪ ম্যাচ পর একাদশে জায়গা পাওয়া লিটন দাসই হবেন সাকিবের ভারসা। দু’জন জুটি বেঁধে যখন এগিয়ে যেতে লাগলেন বাংলাদেশ বাংলাদেশ চিৎকারে কখন উত্তাল সমারসেট স্টেডিয়াম।
তবে গোটা ম্যাচেই সাকিব লড়াই করেছেন দুর্দান্ত। ক্যারিবীয় পেসার ওশান থমাসের বলে দুর্দান্ত এক কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তুলে নেন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের মাত্র দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকালেন তিনি। দারুণ ছন্দে থাকা বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের তিন অঙ্ক ছুঁতে এবার লেগেছে ৮৩ বল। ওয়ানডেতে এটি সাকিবের নবম সেঞ্চুরি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম। শুধু তাই নয় নিজে ছুঁয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৬ হাজার রানের মাইলফলক। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সব ব্যাটসম্যানকে ছাড়িয়ে সাকিবের সংগ্রহ ৩৮৪ রান। শুধু তাই নয় সমারসেট স্টেডিয়ামে সেঞ্চুরি তালিকাতে সাকিবের জায়গা এখন গাওয়ারের পরই। অন্যদিকে সাকিবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করেছেন লিটনও। শুরুতে একটু সময় নিলেও এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান পরে ঝড় তুলেছেন। ৪৩ বলে ৫০ করার পথে হাঁকিয়েছেন চারটি চার ও একটি ছক্কা। শেষ পর্যন্ত ৬৯ বলে অপরাজিত থেকেছেন ৯৪ রানে।
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগাররা জয় পায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৩০ রানের দলীয় স্কোর গড়ে। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে জিততে হেরে যায় টাইগাররা। সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়ে যখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দল হারে বাজেভাবে। সেই ম্যাচে একাই লড়াই করে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন সাকিব। তবে ম্যাচ বাঁচাতে পারেননি। দায়ী করা হয়েছিল টসে জিতে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে। গতকালও টসে জিতে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংয়ে পাঠানোর খেসারতই দিতে হবে ভাবছিলেন অনেকে। কিন্তু না, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আরো একবার দেখিয়ে দিলো- ‘আমরাও পারি।’
তবুও হোপ-হেটমায়ার ঝড়
টনটনের সবুজ প্রকৃতিতে যোগ হয়েছিল লাল আভা। ইংল্যান্ডে শুধু প্রবাসী বাংলাদেশি নয়, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা থেকে উড়ে আসা টাইগার সমর্থকরাও রয়েছেন। এক বছর আগে সিডনিতে বসে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের টিকিট কিনেছিলেন মোর্শেদ। ৪০ ঘণ্টা যাত্রা শেষে পৌঁছান টনটনে। ম্যাচ দেখার জন্য তার মধ্যে যেমন উত্তেজনা তেমনি ভয়ও কাজ করছিল। ভয়টা সমারসেটের ছোট মাঠ নিয়ে। ক্যারিবীয় দানবরা যদি ব্যাট হাতে ঝড় তোলে? কী হবে তখন! ইনিংসের শুরুতে টাইগাররা দারুণ বোলিংয়ে তাদের ব্যাটে লাগাম পরিয়েছিল। ভয়ঙ্কর গেইলকে ফিরিয়েছিল ০ রানে। কিন্তু মাঝে শেই হোপ ও শিমরন হেটমায়ারের ঝড়ে সব এলোমেলো হয়ে যায়। বাংলাদেশ প্রথম ১০ ওভারে খারাপ করেনি। ১ উইকেটে ৩২ রান করতে পেরেছিল ক্যারিবীয়রা। সেখান থেকে লুইস-হেটমায়ার মাশরাফি বিন মুর্তজার বোলিং বিভাগকে চ্যালেঞ্চ জানিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। লুইস ফিরে গেলেও ২৫ বলে পঞ্চাশ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন হেটমায়ার। এরপর হোপ আউট হন ৯৬ রান করে। তাতে শুরুর দারুণ লড়াই বিফলে যায় টাইগারদের। শেষদিকে ফের দুর্দান্ত বোলিংয়ে উইন্ডিজকে চেপে ধরে মোস্তাফিজরা। তবে টিকে থাকার ম্যাচে ৮ উইকেটে ৩২২ রানের বড় লক্ষ্য দিয়ে যায় বাংলাদেশকে। বল হাতে তিনটি করে উইকেট নেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। স্পিনারদের মধ্যে সফল সেই সাকিব। সহ-অধিনায়ক ৮ ওভার বল করে ৫৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আসরে চার ম্যাচে সাকিবের শিকার দাঁড়ালো পাঁচ উইকেটে।
৫১ বল বাকি থাকতে ৭ উইকেটের এই জয় যেন টনটনের সবুজ প্রকৃতিতে লাল সূর্যোদয়। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস বিশ্বকাপে আবারো রেকর্ড গড়া জয় তুলে নিলো টাইগাররা। সাকিব শেষ পর্যন্ত অপরাজিত রইলেন ১২৪ রানে। এবারের বিশ্বকাপে এটি তার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তাকে সঙ্গ দিতে এসে দারুণভাবে নিজের অভিষেক বিশ্বকাপ ম্যাচে হাল ধরেছিলেন লিটন কুমার দাস। শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা জুটির মালিক এখন এ দুজন। লিটন অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ৯৬ রানে। এ জয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে টাইগাররা বাঁচিয়ে রাখলো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার আশাও। পয়েন্ট তালিকার পঞ্চম স্থানে উঠে এলো বাংলাদেশ।
৩’শ ছাড়ানো লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা দারুণ করেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তবে ২৯ রান করে সৌম্য ফিরে গেলে এই জুটি ভাঙে দলীয় ৫২ রানে । এবার ১৯৮৩’র ইংলিশ ব্যাটসম্যান ডেভিড গাওয়ারের মতো বাংলাদেশ দলের হাল ধরলেন সাকিব। কিন্তু সঙ্গ দিতে থাকা তামিম সাজঘরে ফিরলেন দুর্ভাগ্যজন রানআউটে। ব্যক্তিগত ৪৮ রানে তামিমের খেলা বল ফলো থ্রোতে হাতে পেয়ে যান বোলার প্রান্তে শেলডন কটরেল। ব্যাটিংয়ের পর দুই পা ক্রিজ থেকে বেরিয়ে আসা তামিমের উইকেট ভেঙে দেন ক্ষিপ্র থ্রোতে। দলের তখন ১২১ রানে ২ উইকেট নেই। দুঃচিন্তা ভর করলো টাইগার শিবিরে যখন মুশফিকুর রহীম ফিরে গেলেন মাত্র ১ রান করে। কিন্তু কে জানতো ৪ ম্যাচ পর একাদশে জায়গা পাওয়া লিটন দাসই হবেন সাকিবের ভারসা। দু’জন জুটি বেঁধে যখন এগিয়ে যেতে লাগলেন বাংলাদেশ বাংলাদেশ চিৎকারে কখন উত্তাল সমারসেট স্টেডিয়াম।
তবে গোটা ম্যাচেই সাকিব লড়াই করেছেন দুর্দান্ত। ক্যারিবীয় পেসার ওশান থমাসের বলে দুর্দান্ত এক কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তুলে নেন টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের মাত্র দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকালেন তিনি। দারুণ ছন্দে থাকা বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের তিন অঙ্ক ছুঁতে এবার লেগেছে ৮৩ বল। ওয়ানডেতে এটি সাকিবের নবম সেঞ্চুরি, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম। শুধু তাই নয় নিজে ছুঁয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৬ হাজার রানের মাইলফলক। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সব ব্যাটসম্যানকে ছাড়িয়ে সাকিবের সংগ্রহ ৩৮৪ রান। শুধু তাই নয় সমারসেট স্টেডিয়ামে সেঞ্চুরি তালিকাতে সাকিবের জায়গা এখন গাওয়ারের পরই। অন্যদিকে সাকিবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই করেছেন লিটনও। শুরুতে একটু সময় নিলেও এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান পরে ঝড় তুলেছেন। ৪৩ বলে ৫০ করার পথে হাঁকিয়েছেন চারটি চার ও একটি ছক্কা। শেষ পর্যন্ত ৬৯ বলে অপরাজিত থেকেছেন ৯৪ রানে।
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগাররা জয় পায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৩০ রানের দলীয় স্কোর গড়ে। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিততে জিততে হেরে যায় টাইগাররা। সবচেয়ে বেশি ভেঙে পড়ে যখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দল হারে বাজেভাবে। সেই ম্যাচে একাই লড়াই করে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন সাকিব। তবে ম্যাচ বাঁচাতে পারেননি। দায়ী করা হয়েছিল টসে জিতে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠানোর সিদ্ধান্তকে। গতকালও টসে জিতে ক্যারিবীয়দের ব্যাটিংয়ে পাঠানোর খেসারতই দিতে হবে ভাবছিলেন অনেকে। কিন্তু না, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ আরো একবার দেখিয়ে দিলো- ‘আমরাও পারি।’
তবুও হোপ-হেটমায়ার ঝড়
টনটনের সবুজ প্রকৃতিতে যোগ হয়েছিল লাল আভা। ইংল্যান্ডে শুধু প্রবাসী বাংলাদেশি নয়, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা থেকে উড়ে আসা টাইগার সমর্থকরাও রয়েছেন। এক বছর আগে সিডনিতে বসে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের টিকিট কিনেছিলেন মোর্শেদ। ৪০ ঘণ্টা যাত্রা শেষে পৌঁছান টনটনে। ম্যাচ দেখার জন্য তার মধ্যে যেমন উত্তেজনা তেমনি ভয়ও কাজ করছিল। ভয়টা সমারসেটের ছোট মাঠ নিয়ে। ক্যারিবীয় দানবরা যদি ব্যাট হাতে ঝড় তোলে? কী হবে তখন! ইনিংসের শুরুতে টাইগাররা দারুণ বোলিংয়ে তাদের ব্যাটে লাগাম পরিয়েছিল। ভয়ঙ্কর গেইলকে ফিরিয়েছিল ০ রানে। কিন্তু মাঝে শেই হোপ ও শিমরন হেটমায়ারের ঝড়ে সব এলোমেলো হয়ে যায়। বাংলাদেশ প্রথম ১০ ওভারে খারাপ করেনি। ১ উইকেটে ৩২ রান করতে পেরেছিল ক্যারিবীয়রা। সেখান থেকে লুইস-হেটমায়ার মাশরাফি বিন মুর্তজার বোলিং বিভাগকে চ্যালেঞ্চ জানিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। লুইস ফিরে গেলেও ২৫ বলে পঞ্চাশ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন হেটমায়ার। এরপর হোপ আউট হন ৯৬ রান করে। তাতে শুরুর দারুণ লড়াই বিফলে যায় টাইগারদের। শেষদিকে ফের দুর্দান্ত বোলিংয়ে উইন্ডিজকে চেপে ধরে মোস্তাফিজরা। তবে টিকে থাকার ম্যাচে ৮ উইকেটে ৩২২ রানের বড় লক্ষ্য দিয়ে যায় বাংলাদেশকে। বল হাতে তিনটি করে উইকেট নেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। স্পিনারদের মধ্যে সফল সেই সাকিব। সহ-অধিনায়ক ৮ ওভার বল করে ৫৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। আসরে চার ম্যাচে সাকিবের শিকার দাঁড়ালো পাঁচ উইকেটে।
No comments