বড় এক যুদ্ধ জিতেছেন সাকিব
একটা লক্ষ্য স্থির করে বিশ্বকাপ খেলতে এসেছেন সাকিব আল হাসান। মাঠে সেই দৃঢ় সংকল্পের কী দারুণ অনুবাদ। এ যেন সাকিবের বড় এক যুদ্ধ জয়।
লিটন দাস যখন বাউন্ডারি মেরে জয় নিশ্চিত করেছেন, অন্য প্রান্তে দাঁড়ানো সাকিব আল হাসান একটা স্টাম্প তুলে নিলেন হাতে। স্মারক হিসেবে স্টাম্পটা নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আম্পায়ারদের বারণে সেটা আর নেওয়া হলো না, রেখেই এলেন উইকেটে।
‘জিংক বেল নাকি যেন বলে! লাইট-টাইট জ্বলে। এই স্টাম্প ওরা দিতে চায় না’—স্টাম্প সংগ্রহে না রাখতে পেরে কোনো আফসোস নেই সাকিবের, বরং বিষয়টা মনে করিয়ে দেওয়ায় হাসলেন। স্মারক হিসেবে স্টাম্প না পেলেও যে ইনিংসটা কাল খেলেছেন টন্টনে, বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে অমূল্য এক ‘স্মারক’ হয়ে থাকবে এটি। তাঁর দুর্দান্ত সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিততে। জয়টাও কী দাপুটে!
শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই কেন, সাকিব আশ্চর্য ধারাবাহিক গত বছর থেকেই। ১২৪*, ১২১, ৬৪, ৭৫, ৫০* ২৯ ও ৬১*—সবশেষ সাত ইনিংসে পাঁচটিই ফিফটি পেরোনো ইনিংস। এর মধ্যে টানা দুটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন এ বিশ্বকাপেই। কাল নিজেই বললেন, ‘আমি লক্ষ্য ঠিক করে এসেছি, বিশ্বকাপে ভালো খেলতে হবে।’ লক্ষ্য পূরণে তিনি দুর্দান্ত গতিতে এগোচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ব্যাটিং বিবেচনায় তিনি ক্যারিয়ারের শীর্ষ বিন্দুতেই আছেন, ‘রানের কথা যদি চিন্তা করেন, ক্যারিয়ারের সেরা অবস্থানে আছি। এর আগেও ভালো অবস্থানে ছিলাম। ভালো অবস্থানে থাকা মানে এই নয় যে ভালো রান করব। অনেক সময় ভালো অবস্থানে থেকেও বেশি রান করা সম্ভব হয়নি। সবকিছু মিলিয়ে আসলে ভালো একটা অবস্থানে আছি। চেষ্টা করব এটা ধরে রাখতে।’
এখন সেরা ছন্দে আছেন। উইকেটে গেলেই রান পাচ্ছেন। তবে সাকিব ভোলেনি কঠিন সময়টাও, যখন রান পেতে বেগ পেতে হয়েছে তাঁকে, ‘খুব ভালো অবস্থায় থাকলেই যে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাব, রান করব, বিষয়টা তা নয়। অনেক সময় সেরা অবস্থায় না থেকেও অনেক কিছু করা সম্ভব হয়। এখন খুব ভালো অবস্থায় আছি। যখনই কঠিন পরিস্থিতি আসে ওই কষ্টের কথা মনে পড়ে। সেটি আমাকে সাহস দেয়, শক্তি দেয় যে এত যখন কষ্ট করেছি এর চেয়ে বেশি কষ্ট নিশ্চয়ই করা লাগবে না। ওই শক্তিটা আমার মনে সব সময়ই পাচ্ছি। ওই চিন্তা মনস্তাত্ত্বিকভাবে অনেক সমর্থন দিচ্ছে।’
বিশ্বকাপে ভালো করবেন বলে যে প্রস্তুতি নিয়েছেন, সেটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফিটনেস নিয়ে কাজ করা। ব্যাটিং আরও স্বচ্ছন্দ হতে ওজন কমিয়েছেন প্রায় ৬ কেজি। তবে সাকিব মনে করেন না ফিটনেসের কারণেই তিনি এ সাফল্য পাচ্ছেন, ‘এ পর্যায়ে এসে এমন পরিস্থিতি, এমন পরিবেশে মানসিকভাবে শক্ত থাকাটাই বেশি কাজ দেয়। ফিটনেস ভালো থাকলে ওটা আপনাকে সহায়তা করে। তবে দিন শেষে মানসিকভাবে যত বেশি শক্ত থাকা যায়, যত বেশি সাহস রাখা যায়, সেটিই ব্যাটিং-বোলিংয়ে বেশি সহায়তা করে। যুদ্ধটা হয় নিজের সঙ্গে। কেউ যদি ভেতরে-ভেতরে হেরে যায় তার আর জেতার সম্ভাবনা থাকে না। মন থেকে যদি সব সময়ই বলা যায় আমি জিততে এসেছি, জিততে এসেছি, হয়তো সব সময়ই হবে না, তবে বেশির ভাগ সময়ে জেতার সম্ভাবনা থাকে।’
নিজের সঙ্গেই শুধু নয়, সাকিব কাল আরও একটা ‘যুদ্ধ’ করেছেন—বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের শেষ করে না আসার যে রোগ, সেটি থেকে আপাতত মুক্তি মিলেছে। অসাধারণ শুরু, দারুণ ‘বিল্ড আপ’ আর দুর্দান্ত ‘ফিনিশিং’—সাকিব বলছেন তাঁরা একটা উদাহরণই তৈরি করলেন কাল, ‘এটা ভালো একটা উদাহরণ। আমি আর তামিম যখন ব্যাটিং করছিলাম, ওকে অন্তত দুবার বলেছি, আমরাই শেষ করে আসতে পারি। ৫-৬ ওভার আগেই খেলা শেষ হয়ে যাবে যদি আমরা ব্যাটিং করি। লিটনের সঙ্গে যখন ব্যাটিং করেছি, দুজন-দুজনকে বলার চেষ্টা করেছি আমাদের শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে। অপরাজিত থাকতে হবে। অনেক বাজে বল পাচ্ছি, চার মারতে পারছি। কখনো চাপই নিতে হয়নি ভালো বল মারতে। দুজনের ভেতর অনেকবার কথা হয়েছে, দুজনে যদি চাই শেষ করা সম্ভব।’
শেষ করে এসেছেন। এখন সাকিবের দায়িত্ব, বিশ্বকাপে যে দুর্দান্ত খেলছেন, এটি শেষ পর্যন্ত ধরে রেখে দারুণ একটা ফিনিশিং দেওয়া।
লিটন দাস যখন বাউন্ডারি মেরে জয় নিশ্চিত করেছেন, অন্য প্রান্তে দাঁড়ানো সাকিব আল হাসান একটা স্টাম্প তুলে নিলেন হাতে। স্মারক হিসেবে স্টাম্পটা নিজের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আম্পায়ারদের বারণে সেটা আর নেওয়া হলো না, রেখেই এলেন উইকেটে।
‘জিংক বেল নাকি যেন বলে! লাইট-টাইট জ্বলে। এই স্টাম্প ওরা দিতে চায় না’—স্টাম্প সংগ্রহে না রাখতে পেরে কোনো আফসোস নেই সাকিবের, বরং বিষয়টা মনে করিয়ে দেওয়ায় হাসলেন। স্মারক হিসেবে স্টাম্প না পেলেও যে ইনিংসটা কাল খেলেছেন টন্টনে, বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে অমূল্য এক ‘স্মারক’ হয়ে থাকবে এটি। তাঁর দুর্দান্ত সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে সহায়তা করেছে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিততে। জয়টাও কী দাপুটে!
শুধু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই কেন, সাকিব আশ্চর্য ধারাবাহিক গত বছর থেকেই। ১২৪*, ১২১, ৬৪, ৭৫, ৫০* ২৯ ও ৬১*—সবশেষ সাত ইনিংসে পাঁচটিই ফিফটি পেরোনো ইনিংস। এর মধ্যে টানা দুটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন এ বিশ্বকাপেই। কাল নিজেই বললেন, ‘আমি লক্ষ্য ঠিক করে এসেছি, বিশ্বকাপে ভালো খেলতে হবে।’ লক্ষ্য পূরণে তিনি দুর্দান্ত গতিতে এগোচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ব্যাটিং বিবেচনায় তিনি ক্যারিয়ারের শীর্ষ বিন্দুতেই আছেন, ‘রানের কথা যদি চিন্তা করেন, ক্যারিয়ারের সেরা অবস্থানে আছি। এর আগেও ভালো অবস্থানে ছিলাম। ভালো অবস্থানে থাকা মানে এই নয় যে ভালো রান করব। অনেক সময় ভালো অবস্থানে থেকেও বেশি রান করা সম্ভব হয়নি। সবকিছু মিলিয়ে আসলে ভালো একটা অবস্থানে আছি। চেষ্টা করব এটা ধরে রাখতে।’
এখন সেরা ছন্দে আছেন। উইকেটে গেলেই রান পাচ্ছেন। তবে সাকিব ভোলেনি কঠিন সময়টাও, যখন রান পেতে বেগ পেতে হয়েছে তাঁকে, ‘খুব ভালো অবস্থায় থাকলেই যে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাব, রান করব, বিষয়টা তা নয়। অনেক সময় সেরা অবস্থায় না থেকেও অনেক কিছু করা সম্ভব হয়। এখন খুব ভালো অবস্থায় আছি। যখনই কঠিন পরিস্থিতি আসে ওই কষ্টের কথা মনে পড়ে। সেটি আমাকে সাহস দেয়, শক্তি দেয় যে এত যখন কষ্ট করেছি এর চেয়ে বেশি কষ্ট নিশ্চয়ই করা লাগবে না। ওই শক্তিটা আমার মনে সব সময়ই পাচ্ছি। ওই চিন্তা মনস্তাত্ত্বিকভাবে অনেক সমর্থন দিচ্ছে।’
বিশ্বকাপে ভালো করবেন বলে যে প্রস্তুতি নিয়েছেন, সেটির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফিটনেস নিয়ে কাজ করা। ব্যাটিং আরও স্বচ্ছন্দ হতে ওজন কমিয়েছেন প্রায় ৬ কেজি। তবে সাকিব মনে করেন না ফিটনেসের কারণেই তিনি এ সাফল্য পাচ্ছেন, ‘এ পর্যায়ে এসে এমন পরিস্থিতি, এমন পরিবেশে মানসিকভাবে শক্ত থাকাটাই বেশি কাজ দেয়। ফিটনেস ভালো থাকলে ওটা আপনাকে সহায়তা করে। তবে দিন শেষে মানসিকভাবে যত বেশি শক্ত থাকা যায়, যত বেশি সাহস রাখা যায়, সেটিই ব্যাটিং-বোলিংয়ে বেশি সহায়তা করে। যুদ্ধটা হয় নিজের সঙ্গে। কেউ যদি ভেতরে-ভেতরে হেরে যায় তার আর জেতার সম্ভাবনা থাকে না। মন থেকে যদি সব সময়ই বলা যায় আমি জিততে এসেছি, জিততে এসেছি, হয়তো সব সময়ই হবে না, তবে বেশির ভাগ সময়ে জেতার সম্ভাবনা থাকে।’
নিজের সঙ্গেই শুধু নয়, সাকিব কাল আরও একটা ‘যুদ্ধ’ করেছেন—বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের শেষ করে না আসার যে রোগ, সেটি থেকে আপাতত মুক্তি মিলেছে। অসাধারণ শুরু, দারুণ ‘বিল্ড আপ’ আর দুর্দান্ত ‘ফিনিশিং’—সাকিব বলছেন তাঁরা একটা উদাহরণই তৈরি করলেন কাল, ‘এটা ভালো একটা উদাহরণ। আমি আর তামিম যখন ব্যাটিং করছিলাম, ওকে অন্তত দুবার বলেছি, আমরাই শেষ করে আসতে পারি। ৫-৬ ওভার আগেই খেলা শেষ হয়ে যাবে যদি আমরা ব্যাটিং করি। লিটনের সঙ্গে যখন ব্যাটিং করেছি, দুজন-দুজনকে বলার চেষ্টা করেছি আমাদের শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে। অপরাজিত থাকতে হবে। অনেক বাজে বল পাচ্ছি, চার মারতে পারছি। কখনো চাপই নিতে হয়নি ভালো বল মারতে। দুজনের ভেতর অনেকবার কথা হয়েছে, দুজনে যদি চাই শেষ করা সম্ভব।’
শেষ করে এসেছেন। এখন সাকিবের দায়িত্ব, বিশ্বকাপে যে দুর্দান্ত খেলছেন, এটি শেষ পর্যন্ত ধরে রেখে দারুণ একটা ফিনিশিং দেওয়া।
No comments