তিউনিশিয়া থেকে ফিরলেন ১৭ বাংলাদেশি
বিমানবন্দরে
কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে। আবার আত্মীয়স্বজনদের দেখা পেয়ে
জড়িয়ে ধরেন কেউ কেউ। এ যেন সাগর পাড়ি দিয়ে আরেক জীবনে ফেরা। লিবিয়া থেকে
অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিশিয়ার উপকূলে ভাসতে
থাকা ৬৪ বাংলাদেশির মধ্যে ১৭ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। গতকাল বিকাল ৫টা ৫
মিনিটের দিকে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে তারা ঢাকা আসেন। বিমানবন্দর
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির দায়িত্বশীল
কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিউনিশিয়া থেকে দেশে ফিরে আসা ১৭ জনের
মধ্যে শুধু মাদারীপুর জেলার নয়জন রয়েছেন। এছাড়া বাকি আটজনের মধ্যে চারজনের
গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং বাকি পাঁচজন নোয়াখালী, চাঁদপুর,
সুনামগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মৌলভীবাজারের বাসিন্দা।
দেশে ফিরে আসা এই ১৭ জনের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ।
সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে অভিবাসী হতে চেয়েছিলেন তারা। এরা হলেন, মাদারীপুরের মোহাম্মদ লাদেন মাতব্বর (২০), রাসেল মাতব্বর (৩০), রাজীব মাতব্বর (২০), জুয়েল শাহজালাল (৩৪), আজাদ রহমান (২৭), পিয়ার আলী (২৯), আকমন মাতব্বর (২০), মীর আজিজুল ইসলাম (৩৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আবু বকর সিদ্দিক (২৩), শাহেজুল খাদু (২৫), ইদ্রিস জমাদ্দার (২৪), নিয়ামত শিকদার (১৮), নোয়াখালীর রফিকুল ইসলাম (২৮), চাঁদপুরের শফিকুল ইসলাম (৩৩), শরীয়তপুরের রাকিব হোসেন (২১), মৌলভীবাজারের জিল্লুর রহমান (৩৫) ও সুনামগঞ্জের শিপন আহমেদ (২১)। গতকাল বিকালে ঢাকার শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পুলিশের বিশেষ শাখা, ইমিগ্রেশন পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ানসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার সদস্যরা প্রাথমিকভাবে তাদের সাথে কথা বলেন। পরে জিজ্ঞাসবাদ শেষে সন্ধ্যার দিকে তাদের বিমানবন্দর থেকে যার যার বাড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেয়া হয়।
পৃথক সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে পাচারের শিকার এসব ব্যক্তিরা জানান, স্থানীয়ভাবে দালালদের মাধ্যমে কয়েকটি রুটে তারা লিবিয়া পৌঁছান। সেখানে বেশ কিছুদিন অবস্থানের পর লিবিয়ার ত্রিপোলি উপকূল থেকে তিউনিশিয়া উপকূল হয়ে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। এসব বিষয়ে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান বলেন, এই ধর?নের মানবপাচার যে কোনো মূ?ল্যে বন্ধ কর?তে হবে। স্থানীয় দালালদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আন্তর্জা?তিক বি?ভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তিউনিশিয়ার সাগরে এক?টি নৌকায় ভাস?ছি?লেন ৭৫ জন শরণার্থী, যা?দের ম?ধ্যে ৬৪ জনই বাংলা?দে?শি। নৌকাটি তিউনিশিয়ার উপকূলের কাছে পৌঁছালেও কর্তৃপক্ষ তীরে নামার অনুমতি দেয়নি। তিউনিশিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের শরণার্থী কেন্দ্রে আর জায়গা দেয়া সম্ভব নয়। ফলে ওই নৌকাটি উপকূলীয় জারজিস শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাগ?রে ভাস?তে থাকে। প?রে বাংলা?দেশ দূতাবা?সের কর্মকর্তারা সেখানে যান। লিবিয়ার বাংলা?দেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গে?ছে, আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে যাবেন, দূতাবাসের পক্ষ থেকে তিউনিশিয়ার কর্তৃৃপক্ষ এমন নিশ্চয়তা প্রদানের পর দেশটির দায়িত্বশীল কর্তৃৃপক্ষ তাদেরকে ১৮ই জুন সন্ধ্যায় জারজিস বন্দরে নামার অনুমতি দেয়। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনক্রমেই তাদেরকে জারজিস বা মেন্ডিনে থাকার অনুমতি দেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে উদ্ধার করা বাংলাদেশিদের কঠোর নিরাপত্তায় তিউনিসে নিয়ে গিয়ে রেড ক্রিসেন্ট ও আইওএম’র যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থে?কে পর্যায়ক্রমে সবাই?কে দেশে পাঠা?নো হচ্ছে বলে জানিয়েছে লিবিয়ার বাংলাদেশে দূতাবাস। এর ম?ধ্যে প্রথম দফায় ২০ জন?কে ঢাকায় আসার টিকিট দি?লেও তিনজন আস?তে রা?জি হন?নি। লি?বিয়ার বাংলা?দেশ দূতাবাস বল?ছে, তিনজন দে?শে আস?তে রা?জি না হওয়ার বিষয়?টি নতুন দু?শ্চিন্তার কারণ। একইভা?বে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত আরো কিছু বাংলাদেশি এই মুহূর্তে দেশে যেতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। বিষয়টি বেশ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, তাদের সকলকে দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে রাজি করানোর পরই তিউনিশিয়ার কর্তৃপক্ষের নিকট নিশ্চয়তা দেয়া হয়। দূতাবাসের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, কাপড়চোপড় এবং তিউনিসে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়াও তাদের সকলের আত্মীয়স্বজনের সাথে দেশে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া সবাই দেশে ফিরে না গেলে পরবর্তীতে এই রকম দুর্ঘটনায় তিউনিশিয়ার কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলেও জানান দূতাবাসের এক কর্মকর্তা।
সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন ৪৩৪ জন শ্রমিক
এদিকে, সৌদি আরব থেকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ৪৩৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক ফিরে এসেছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা তিন মিনিটের দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসবি৩৮০৪ ফ্লাইটে করে রিয়াদ থেকে ঢাকায় ফেরত আসেন এসব বাংলাদেশি। বিমানবন্দর এপিবিএন’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক মানবজমিনকে এমন খবর নিশ্চিত করেন। এদিকে, কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দেশে ফেরত আসা চার শতাধিক বাংলাদেশির বেশির ভাগই সৌদি আরবের বিভিন্ন কারাগারে জেল খেটেছেন। দেশটিতে অবস্থানে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। কারাভোগ শেষে বাংলাদেশ দূতাবাসের আউটপাস নিয়ে এসব শ্রমিক অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয় সৌদি সরকার।
দেশে ফিরে আসা এই ১৭ জনের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ।
সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে ইউরোপে অভিবাসী হতে চেয়েছিলেন তারা। এরা হলেন, মাদারীপুরের মোহাম্মদ লাদেন মাতব্বর (২০), রাসেল মাতব্বর (৩০), রাজীব মাতব্বর (২০), জুয়েল শাহজালাল (৩৪), আজাদ রহমান (২৭), পিয়ার আলী (২৯), আকমন মাতব্বর (২০), মীর আজিজুল ইসলাম (৩৭), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আবু বকর সিদ্দিক (২৩), শাহেজুল খাদু (২৫), ইদ্রিস জমাদ্দার (২৪), নিয়ামত শিকদার (১৮), নোয়াখালীর রফিকুল ইসলাম (২৮), চাঁদপুরের শফিকুল ইসলাম (৩৩), শরীয়তপুরের রাকিব হোসেন (২১), মৌলভীবাজারের জিল্লুর রহমান (৩৫) ও সুনামগঞ্জের শিপন আহমেদ (২১)। গতকাল বিকালে ঢাকার শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর পুলিশের বিশেষ শাখা, ইমিগ্রেশন পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটলিয়ানসহ বেশ কয়েকটি সংস্থার সদস্যরা প্রাথমিকভাবে তাদের সাথে কথা বলেন। পরে জিজ্ঞাসবাদ শেষে সন্ধ্যার দিকে তাদের বিমানবন্দর থেকে যার যার বাড়ির উদ্দেশ্যে ছেড়ে দেয়া হয়।
পৃথক সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদে পাচারের শিকার এসব ব্যক্তিরা জানান, স্থানীয়ভাবে দালালদের মাধ্যমে কয়েকটি রুটে তারা লিবিয়া পৌঁছান। সেখানে বেশ কিছুদিন অবস্থানের পর লিবিয়ার ত্রিপোলি উপকূল থেকে তিউনিশিয়া উপকূল হয়ে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। এসব বিষয়ে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল ইসলাম হাসান বলেন, এই ধর?নের মানবপাচার যে কোনো মূ?ল্যে বন্ধ কর?তে হবে। স্থানীয় দালালদের খুঁজে বের করে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আন্তর্জা?তিক বি?ভিন্ন গণমাধ্যম জানায়, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে তিউনিশিয়ার সাগরে এক?টি নৌকায় ভাস?ছি?লেন ৭৫ জন শরণার্থী, যা?দের ম?ধ্যে ৬৪ জনই বাংলা?দে?শি। নৌকাটি তিউনিশিয়ার উপকূলের কাছে পৌঁছালেও কর্তৃপক্ষ তীরে নামার অনুমতি দেয়নি। তিউনিশিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের শরণার্থী কেন্দ্রে আর জায়গা দেয়া সম্ভব নয়। ফলে ওই নৌকাটি উপকূলীয় জারজিস শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাগ?রে ভাস?তে থাকে। প?রে বাংলা?দেশ দূতাবা?সের কর্মকর্তারা সেখানে যান। লিবিয়ার বাংলা?দেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গে?ছে, আটকে পড়া বাংলাদেশিরা দেশে ফিরে যাবেন, দূতাবাসের পক্ষ থেকে তিউনিশিয়ার কর্তৃৃপক্ষ এমন নিশ্চয়তা প্রদানের পর দেশটির দায়িত্বশীল কর্তৃৃপক্ষ তাদেরকে ১৮ই জুন সন্ধ্যায় জারজিস বন্দরে নামার অনুমতি দেয়। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনক্রমেই তাদেরকে জারজিস বা মেন্ডিনে থাকার অনুমতি দেয়নি। এমন পরিস্থিতিতে উদ্ধার করা বাংলাদেশিদের কঠোর নিরাপত্তায় তিউনিসে নিয়ে গিয়ে রেড ক্রিসেন্ট ও আইওএম’র যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থে?কে পর্যায়ক্রমে সবাই?কে দেশে পাঠা?নো হচ্ছে বলে জানিয়েছে লিবিয়ার বাংলাদেশে দূতাবাস। এর ম?ধ্যে প্রথম দফায় ২০ জন?কে ঢাকায় আসার টিকিট দি?লেও তিনজন আস?তে রা?জি হন?নি। লি?বিয়ার বাংলা?দেশ দূতাবাস বল?ছে, তিনজন দে?শে আস?তে রা?জি না হওয়ার বিষয়?টি নতুন দু?শ্চিন্তার কারণ। একইভা?বে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত আরো কিছু বাংলাদেশি এই মুহূর্তে দেশে যেতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে। বিষয়টি বেশ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা, তাদের সকলকে দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে রাজি করানোর পরই তিউনিশিয়ার কর্তৃপক্ষের নিকট নিশ্চয়তা দেয়া হয়। দূতাবাসের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, কাপড়চোপড় এবং তিউনিসে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। এছাড়াও তাদের সকলের আত্মীয়স্বজনের সাথে দেশে কথা বলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া সবাই দেশে ফিরে না গেলে পরবর্তীতে এই রকম দুর্ঘটনায় তিউনিশিয়ার কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে বলেও জানান দূতাবাসের এক কর্মকর্তা।
সৌদি আরব থেকে ফিরেছেন ৪৩৪ জন শ্রমিক
এদিকে, সৌদি আরব থেকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ৪৩৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক ফিরে এসেছেন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটা তিন মিনিটের দিকে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসবি৩৮০৪ ফ্লাইটে করে রিয়াদ থেকে ঢাকায় ফেরত আসেন এসব বাংলাদেশি। বিমানবন্দর এপিবিএন’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল হক মানবজমিনকে এমন খবর নিশ্চিত করেন। এদিকে, কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দেশে ফেরত আসা চার শতাধিক বাংলাদেশির বেশির ভাগই সৌদি আরবের বিভিন্ন কারাগারে জেল খেটেছেন। দেশটিতে অবস্থানে বৈধ কাগজপত্র না থাকায় তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। কারাভোগ শেষে বাংলাদেশ দূতাবাসের আউটপাস নিয়ে এসব শ্রমিক অভিবাসীদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয় সৌদি সরকার।
No comments