জাপায় কেন এই অস্থিরতা? by হাফিজ মুহাম্মদ
অস্থিরতা,
নয়া মেরুকরণ জাতীয় পার্টিতে নতুন কিছু নয়। এই অস্থিরতা আর মেরুকরণের চাবিও
সব সময় একজনেরই হাতে। তিনি পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দলের
সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী এরশাদ একাই সিদ্ধান্ত দেন। একাই আবার প্রত্যাহার
করেন। অন্য নেতারা হয় দর্শক আর না হয় সমর্থক। দলটির সিনিয়র নেতারা বলছেন,
পার্টি চেয়ারম্যানের একক কর্তৃত্বের কারণেই নিয়মিত অস্থিরতা লেগে আছে জাতীয়
পার্টিতে। আর এই অস্থিরতা ও মেরুকরণে ক্রমেই ম্রিয়মাণ হচ্ছে সাবেক
স্বৈরশাসকের হাতে গড়া দলটি।
গুরুতর অসুস্থতার সময় নিজের ভাইকে উল্টরসূরি নিয়োগ ও পরে জাতীয় সংসদের উপনেতা করায় দলের অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন।
আবার কেউ কেউ ছিলেন ক্ষুব্ধ। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে এরশাদের নতুন সিদ্ধান্ত নতুন করে ক্ষোভ আর অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে। তার সিদ্ধান্তে ফের স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পার্টিতে থাকা বিভক্তি। নেতারা বলছেন, এখন মূলত তিনটি ধারায় চলছে জাতীয় পার্টি, একটি পক্ষ অতিমাত্রায় সরকার ঘেঁষা। অন্য একটি পক্ষ সরকার বিরোধী। মধ্যপন্থা নিয়ে আছেন পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদ। তিন পক্ষের নেতারাই সুযোগ-সুবিধার জন্য এরশাদকে সময় সময় ব্যবহার করছেন। সূত্র বলছে, পার্টির বাইরে থেকেও একটি পক্ষ পার্টির নিয়ন্ত্রণে ছড়ি ঘোরাচ্ছে।
কেউ কেউ বলছেন, পার্টির আসল নিয়ন্ত্রণ এখন বাইরে থেকেই হচ্ছে। এ কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে অবিশ্বাস ও হতাশা বাড়ছে। একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে প্রশ্ন সবারই একটা। কি হতে যাচ্ছে জাপায়? কেন এই অস্থিরতা। গত কয়েকদিন ধরে পার্টি অফিসেও সিনিয়র নেতারা আসছেন না। কর্মীদের আনাগোনাও কম। সর্বশেষ বুধবার এরশাদের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে জাপার প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন। এর দু’দিন পরেই ছোট ভাই জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ায় হতবাক অনেকে। আর শনিবার সংসদের বিরোধী দলের উপনেতা পদ থেকেও ছোট ভাইকে সরিয়ে দেন এরশাদ। তার স্থলে উপনেতা করা হয় স্ত্রী রওশনকে। একটি পক্ষ এতে খুশি হলেও অন্য পক্ষ ক্ষুব্ধ। খুশি হওয়া নেতাকর্মীরা রওশনের বাসায় ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতেও ভিড় করছেন।
এছাড়া চলমান উপজেলা নির্বাচন নিয়েও পার্টিতে চলছে ব্যাপক তোলপাড়। পার্টিতে অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সিনিয়র নেতাদের সম্পর্কে। সংসদের প্রধান বিরোধী দল উপজেলা নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছে না। অনেক উপজেলায় তারা প্রার্থীও দিতে পারেনি। এর আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের পর জাপার প্রার্থী সাফিন আহমেদ জাপা থেকে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছিলেন।
পার্টি সূত্র বলছে, জিএম কাদেরের অপসারণের পেছনে কয়েকজন সিনিয়র নেতার নেপথ্য ভূমিকা থাকতে পারে। সার্বিক বিষয়ে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ আখতার মানবজমিনকে বলেন, আমার রাজনীতিতে আর হারানোর কিছু বাকি নেই। তাই ভয়ের কিছুও নেই। অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু সখ মিটে গেছে। বাংলাদেশে সুস্থ রাজনীতি বলতে কিছু চলছে না। আমরা তো স্বাধীনভাবে রাজনীতি করছি না। জিএম কাদেরের অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত সহকারীর কারণে তার ক্ষতি হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে পার্টিতে যোগ দিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়া লে. জে. অব. মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে জাপার সিনিয়র থেকে জুনিয়র সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। তিনি ঠিক কি কারণে জাপায় এসেছেন তা বুঝে উঠছেন না নেতাকর্মীরা। সামনে তিনি আরো গুরুত্বপূর্ণ পদ পাচ্ছেন বলে আলোচনা আছে। জিএম কাদেরের অপসারণের বিষয়ে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, পুরো ঘটনাটা কীভাবে হয়েছে তা আমি কিছুই জানি না। কীভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তাও জানি না। জাপায় যোগ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে অনেক দিন ধরেই পার্টিতে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন। তিনি চাচ্ছিলেন তার কাছে সিনিয়র একজন জেনারেল থাকুক। এ ব্যাপারে কথা-বার্তা চলছিল। এরপরে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেলাম তাই জাপায় যোগ দিয়েছি। সিনিয়রিটির অবস্থানের কারণেই আমাকে সম্মানজনকভাবে নিয়েছে এটাই স্বাভাবিক। তাই হয়তো অনেকে তা ভালোভাবে নিতে পারেননি।
পার্টি একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কো-চেয়ারম্যান ও সংসদ উপনেতার পদ থেকে জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেয়ার পর এখন নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। নয়া মেরুকরণে নতুন কারা কোন দায়িত্ব পাচ্ছেন এবং কারা বাদ পড়ছেন এ নিয়ে এক ধরনের কৌতূহল রয়েছে। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের অবস্থান নিয়েও নেতকর্মীদের মধ্যে আছে নানা প্রশ্ন। জাপার তৃণমলের নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। এরশাদের অবর্তমানে দলের উত্তরসূরি হবে কে? এরশাদ ছাড়া অন্য কারও নেতৃত্বে ঠিকতে পারবে কি এক সময়ে দেশ শাসন করা দলটি।
গুরুতর অসুস্থতার সময় নিজের ভাইকে উল্টরসূরি নিয়োগ ও পরে জাতীয় সংসদের উপনেতা করায় দলের অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেছিলেন।
আবার কেউ কেউ ছিলেন ক্ষুব্ধ। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে এরশাদের নতুন সিদ্ধান্ত নতুন করে ক্ষোভ আর অবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে নেতাকর্মীদের মাঝে। তার সিদ্ধান্তে ফের স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পার্টিতে থাকা বিভক্তি। নেতারা বলছেন, এখন মূলত তিনটি ধারায় চলছে জাতীয় পার্টি, একটি পক্ষ অতিমাত্রায় সরকার ঘেঁষা। অন্য একটি পক্ষ সরকার বিরোধী। মধ্যপন্থা নিয়ে আছেন পার্টি চেয়ারম্যান এরশাদ। তিন পক্ষের নেতারাই সুযোগ-সুবিধার জন্য এরশাদকে সময় সময় ব্যবহার করছেন। সূত্র বলছে, পার্টির বাইরে থেকেও একটি পক্ষ পার্টির নিয়ন্ত্রণে ছড়ি ঘোরাচ্ছে।
কেউ কেউ বলছেন, পার্টির আসল নিয়ন্ত্রণ এখন বাইরে থেকেই হচ্ছে। এ কারণে নেতাকর্মীদের মধ্যে অবিশ্বাস ও হতাশা বাড়ছে। একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে প্রশ্ন সবারই একটা। কি হতে যাচ্ছে জাপায়? কেন এই অস্থিরতা। গত কয়েকদিন ধরে পার্টি অফিসেও সিনিয়র নেতারা আসছেন না। কর্মীদের আনাগোনাও কম। সর্বশেষ বুধবার এরশাদের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে জাপার প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন। এর দু’দিন পরেই ছোট ভাই জিএম কাদেরকে পার্টির কো-চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ায় হতবাক অনেকে। আর শনিবার সংসদের বিরোধী দলের উপনেতা পদ থেকেও ছোট ভাইকে সরিয়ে দেন এরশাদ। তার স্থলে উপনেতা করা হয় স্ত্রী রওশনকে। একটি পক্ষ এতে খুশি হলেও অন্য পক্ষ ক্ষুব্ধ। খুশি হওয়া নেতাকর্মীরা রওশনের বাসায় ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতেও ভিড় করছেন।
এছাড়া চলমান উপজেলা নির্বাচন নিয়েও পার্টিতে চলছে ব্যাপক তোলপাড়। পার্টিতে অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সিনিয়র নেতাদের সম্পর্কে। সংসদের প্রধান বিরোধী দল উপজেলা নির্বাচনে কোনো ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারছে না। অনেক উপজেলায় তারা প্রার্থীও দিতে পারেনি। এর আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজয়ের পর জাপার প্রার্থী সাফিন আহমেদ জাপা থেকে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছিলেন।
পার্টি সূত্র বলছে, জিএম কাদেরের অপসারণের পেছনে কয়েকজন সিনিয়র নেতার নেপথ্য ভূমিকা থাকতে পারে। সার্বিক বিষয়ে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর (অব.) খালেদ আখতার মানবজমিনকে বলেন, আমার রাজনীতিতে আর হারানোর কিছু বাকি নেই। তাই ভয়ের কিছুও নেই। অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু সখ মিটে গেছে। বাংলাদেশে সুস্থ রাজনীতি বলতে কিছু চলছে না। আমরা তো স্বাধীনভাবে রাজনীতি করছি না। জিএম কাদেরের অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত সহকারীর কারণে তার ক্ষতি হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে পার্টিতে যোগ দিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়া লে. জে. অব. মাসুদ উদ্দিন চৌধুরীকে নিয়ে জাপার সিনিয়র থেকে জুনিয়র সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতূহল রয়েছে। তিনি ঠিক কি কারণে জাপায় এসেছেন তা বুঝে উঠছেন না নেতাকর্মীরা। সামনে তিনি আরো গুরুত্বপূর্ণ পদ পাচ্ছেন বলে আলোচনা আছে। জিএম কাদেরের অপসারণের বিষয়ে মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, পুরো ঘটনাটা কীভাবে হয়েছে তা আমি কিছুই জানি না। কীভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তাও জানি না। জাপায় যোগ দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান আমাকে অনেক দিন ধরেই পার্টিতে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন। তিনি চাচ্ছিলেন তার কাছে সিনিয়র একজন জেনারেল থাকুক। এ ব্যাপারে কথা-বার্তা চলছিল। এরপরে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ইতিবাচক ইঙ্গিত পেলাম তাই জাপায় যোগ দিয়েছি। সিনিয়রিটির অবস্থানের কারণেই আমাকে সম্মানজনকভাবে নিয়েছে এটাই স্বাভাবিক। তাই হয়তো অনেকে তা ভালোভাবে নিতে পারেননি।
পার্টি একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কো-চেয়ারম্যান ও সংসদ উপনেতার পদ থেকে জিএম কাদেরকে সরিয়ে দেয়ার পর এখন নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। নয়া মেরুকরণে নতুন কারা কোন দায়িত্ব পাচ্ছেন এবং কারা বাদ পড়ছেন এ নিয়ে এক ধরনের কৌতূহল রয়েছে। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের অবস্থান নিয়েও নেতকর্মীদের মধ্যে আছে নানা প্রশ্ন। জাপার তৃণমলের নেতাকর্মীদের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। এরশাদের অবর্তমানে দলের উত্তরসূরি হবে কে? এরশাদ ছাড়া অন্য কারও নেতৃত্বে ঠিকতে পারবে কি এক সময়ে দেশ শাসন করা দলটি।
No comments