পায়েলের চোখে নির্দয় পৃথিবী by শামীমুল হক
আমি
পায়েল বলছি। সাঈদুর রহমান পায়েল। অন্য সবার মতো আমারও চোখে স্বপ্ন ছিল।
মনে আশা ছিল। মাত্র কিশোর থেকে তারুণ্যে পা দিয়েছিলাম। পুরো জীবনটাই সামনে
পড়েছিল। কিন্তু কি হলো? একদল শকুন আমাকে খুবলে খেয়েছে। ওরা উল্লাস করছে।
আমি চেয়ে চেয়ে দেখেছি। জানিনা ওদের কাছে আমি কি অন্যায় করেছিলাম? কি অপরাধ
করেছিলাম? না কোনো উত্তর নেই। শকুনের দল কোনো উত্তর দিতে পারবে না। কিন্তু
আমার জীবনের এ অল্প সময়ে কি দেখেছি আজ আপনাদের জানাতে চাই। আমি দেখেছি
নির্দয় এক পৃথিবী। এমন পৃথিবীর প্রতি বর্ষন করছি ঘৃণা। যেখানে ভালোবাসা
মূল্যহীন। প্রেম যেখানে ছলনা। আদর সোহাগ যেখানে কৃত্রিমতা। আকুতি যেখানে
বৃথা।
স্বার্থপররা যেখানে বাসা বেঁধেছে শক্ত খুঁটি গেড়ে। আমি শকুনদের উল্লাস দেখেছি আর আফসোস হয়েছে। যারা আমার স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করেছে। যারা আমার ইচ্ছাকে পিষে মেরেছে। অথচ আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম আরও কিছুদিন। সুন্দর পৃথিবীতে ভালবাসা বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। আমাকে নিয়ে যাদের স্বপ্ন ছিল তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলাম। কি অভাগা আমি। তা আর হলো না। শকুনের খপ্পরে পড়ে প্রাণসহ সবই বিলিয়ে দিতে হয়েছে। জানেন, এ দেশকে কিছু দেওয়ার ইচ্ছা নিয়েই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার জীবনের সুখ-দুখের বহু কাহিনী আছে। সেসব বলতে চাই না। আমি চাই জীবনের শেষদিনের কথা আপনাদের জানাতে। গত ২১শে জুলাই, দিনটি ছিল শনিবার। দুই বন্ধু ও আমি হানিফ পরিবহনের একটি বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসছিলাম। বাস নাম্বার ঢাকা মেট্রো-ব-৯৬৮৭। ওইদিন রাত সোয়া ১০টায় গাড়িটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ভোর চারটায় গজারিয়া ভাটের চর ব্রিজের কাছে প্রচ- জ্যাম দেখতে পাই। এ সুযোগে আমি প্রস্রাব করতে নামি। দেখি গাড়িটি আস্তে আস্তে চলছে। আমি দৌড়ে গাড়িতে উঠতে গিয়ে মাথায় আঘাত পাই। বাসের চালক জামাল হোসেন, সুপারভাইজার জনি ও হেলপার ফয়সাল সহযোগিতার বদলে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই শকুনরা আমার উপর চালায় নির্মম অত্যাচার।
এক পর্যায়ে নদীতে ফেলে দেয়। পৃথিবী থেকে আমার নাম নিশানা মুছে দেয় ওরা। আমার বুকে জমানো স্বপ্নগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। মা-বাবা হন সন্তানহারা। যে সন্তানকে নিয়ে তারা আগামীদিনগুলো নতুন করে সাজাচ্ছিলেন। যাক সেসব কথা। গভীর রাত হওয়ায় বাসের যাত্রীরা ছিলেন ঘুমে বিভোর। ২৩শে জুলাই সকালে গজারিয়ার ফুলদি নদীতে ভেসে ওঠে আমার মরদেহ। পুলিশ আসে। আসে লোকজন। সবাই দেখতে পায় আমার নাক-মুখ থেঁতলানো। শরীরে রক্ত। পুলিশ এটিকে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে ধরেও নেয়। ২৪শে জুলাই পুলিশের সহযোগিতায় গজারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আমার মামা গোলাম সারোওয়ার্দী বিপ্ল¬ব। এরপরই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। গ্রেপ্তার করা হয় বাসের চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারকে। ইতিমধ্যে সুপারভাইজার জনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছে। এ নিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম সংবাদ সম্মেলন করেন। দেশবাসী জানতে পারে একদল শকুনের কথা। কিন্তু এখানেই কি শেষ? মানবজাতি হিসেবে বিবেক বুদ্ধি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। এই কি আমাদের বিবেক। আমি পায়েল শুধু নয়, কত পায়েল নির্দয় এ পৃথিবীতে শকুনদের খপ্পরে পড়ে অকালে জীবন দিতে হচ্ছে। আর শকুনরা করছে উল্লাস। এ থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো পথ বুঝি নেই পৃথিবীতে। পৃথিবীর বিচার ব্যবস্থায় হয়তো এর বিচার হবে। হয়তোবা হবে না। কিন্তু পরপারে? সেখানকার বিচারতো কেউ ঠেকাতে পারবে না।
স্বার্থপররা যেখানে বাসা বেঁধেছে শক্ত খুঁটি গেড়ে। আমি শকুনদের উল্লাস দেখেছি আর আফসোস হয়েছে। যারা আমার স্বপ্নকে গলাটিপে হত্যা করেছে। যারা আমার ইচ্ছাকে পিষে মেরেছে। অথচ আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম আরও কিছুদিন। সুন্দর পৃথিবীতে ভালবাসা বিলিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। আমাকে নিয়ে যাদের স্বপ্ন ছিল তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলাম। কি অভাগা আমি। তা আর হলো না। শকুনের খপ্পরে পড়ে প্রাণসহ সবই বিলিয়ে দিতে হয়েছে। জানেন, এ দেশকে কিছু দেওয়ার ইচ্ছা নিয়েই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলাম। আমার জীবনের সুখ-দুখের বহু কাহিনী আছে। সেসব বলতে চাই না। আমি চাই জীবনের শেষদিনের কথা আপনাদের জানাতে। গত ২১শে জুলাই, দিনটি ছিল শনিবার। দুই বন্ধু ও আমি হানিফ পরিবহনের একটি বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসছিলাম। বাস নাম্বার ঢাকা মেট্রো-ব-৯৬৮৭। ওইদিন রাত সোয়া ১০টায় গাড়িটি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ভোর চারটায় গজারিয়া ভাটের চর ব্রিজের কাছে প্রচ- জ্যাম দেখতে পাই। এ সুযোগে আমি প্রস্রাব করতে নামি। দেখি গাড়িটি আস্তে আস্তে চলছে। আমি দৌড়ে গাড়িতে উঠতে গিয়ে মাথায় আঘাত পাই। বাসের চালক জামাল হোসেন, সুপারভাইজার জনি ও হেলপার ফয়সাল সহযোগিতার বদলে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই শকুনরা আমার উপর চালায় নির্মম অত্যাচার।
এক পর্যায়ে নদীতে ফেলে দেয়। পৃথিবী থেকে আমার নাম নিশানা মুছে দেয় ওরা। আমার বুকে জমানো স্বপ্নগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। মা-বাবা হন সন্তানহারা। যে সন্তানকে নিয়ে তারা আগামীদিনগুলো নতুন করে সাজাচ্ছিলেন। যাক সেসব কথা। গভীর রাত হওয়ায় বাসের যাত্রীরা ছিলেন ঘুমে বিভোর। ২৩শে জুলাই সকালে গজারিয়ার ফুলদি নদীতে ভেসে ওঠে আমার মরদেহ। পুলিশ আসে। আসে লোকজন। সবাই দেখতে পায় আমার নাক-মুখ থেঁতলানো। শরীরে রক্ত। পুলিশ এটিকে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে ধরেও নেয়। ২৪শে জুলাই পুলিশের সহযোগিতায় গজারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আমার মামা গোলাম সারোওয়ার্দী বিপ্ল¬ব। এরপরই বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। গ্রেপ্তার করা হয় বাসের চালক, সুপারভাইজার ও হেলপারকে। ইতিমধ্যে সুপারভাইজার জনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানিয়েছে। এ নিয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম পিপিএম সংবাদ সম্মেলন করেন। দেশবাসী জানতে পারে একদল শকুনের কথা। কিন্তু এখানেই কি শেষ? মানবজাতি হিসেবে বিবেক বুদ্ধি দিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা। এই কি আমাদের বিবেক। আমি পায়েল শুধু নয়, কত পায়েল নির্দয় এ পৃথিবীতে শকুনদের খপ্পরে পড়ে অকালে জীবন দিতে হচ্ছে। আর শকুনরা করছে উল্লাস। এ থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো পথ বুঝি নেই পৃথিবীতে। পৃথিবীর বিচার ব্যবস্থায় হয়তো এর বিচার হবে। হয়তোবা হবে না। কিন্তু পরপারে? সেখানকার বিচারতো কেউ ঠেকাতে পারবে না।
No comments