বিশ্বকাপ দেখতে চাকরি ছাড়ছে কলম্বিয়ানরা
জাতি
হিসেবে কলম্বিয়া প্রায় সব কিছুতেই বিভক্ত। রাজনীতি থেকে শুরু করে সংঘাত
কিংবা সংস্কৃতি- কোনো কিছুতেই এই ৪ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার দেশটি ঐক্যবদ্ধ
নয়। ব্যতিক্রম শুধু একটি জায়গায়। সেটি হলো জাতীয় ফুটবল দল। আর অনেক
কলম্বিয়ানের কাছে বিশ্বকাপের চেয়ে জীবনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু হতেই পারে না। এ
মুহূর্তে যেসব দল বিশ্বকাপ খেলছে, তার মধ্যে কলম্বিয়ার অবস্থান স্বাগতিক
দেশ রাশিয়া থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূরত্বে। অথচ, কলম্বিয়ানরা এই বিশ্বকাপে
জার্মানদের চেয়েও বেশি টিকেট কিনেছে। প্রায় ১৪৭০০ কলম্বিয়ান নাগরিক এবার
বিশ্বকাপ দেখতে রাশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন বা জমাবেন। এটি বিশ্বের তৃতীয়
সর্বোচ্চ। এমনই একজন কলম্বিয়ান ফুটবল ভক্ত হলেন আন্দ্রে ফিলিপ ফাজারদো
(২৫)। নিজের তিন বন্ধুকে নিয়ে তিনি রাশিয়ায় গেছেন। বিশ্বকাপ দেখতে পেশায়
ডাক্তার ফাজারদো নিজের চাকরি ছেড়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ছুটি পেতাম না।
কিন্তু এই বিশ্বকাপ হলো জীবনে আসা একমাত্র সুযোগের মতো। আমি রাশিয়ায় আসা
নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবিইনি। পুরো দুনিয়ায় ফুটবল আমার কাছে সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’
তবে বিশ্বকাপ দেখতে এমন আত্মত্যাগ কলম্বিয়ানদের মধ্যে বিরল নয়। হুয়ান এস্তেবান গার্সিয়া পেশায় একজন প্রকৌশলী। বিশ্বকাপ সফরের খরচ মেটাতে তিনি ঋণ নিয়েছেন। ক্রেডিট কার্ডও নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড ছাড়া ভিসা ও ভ্রমণের সব খরচ জোগাতে পারতাম না। তবে এটি একেবারে বিফলে যাবে না।’ এস্তেবান গার্সিয়া এবারই প্রথম নিজ দেশের বাইরের কোনো দেশে গেছেন।
তারা চার বন্ধু ইউরোপ হয়ে ভ্রমণ করছেন। বিভিন্ন দেশে থামতে হচ্ছে তাদেরকে। পুরো সফরের আয়োজন অবশ্য ফিলিপ গার্সিয়ার। তার ভাষ্য, ‘এই সফরের পরিকল্পনা করতে কয়েক মাস লেগেছে। তবে সফরটা হলো মোট ৫ সপ্তাহের। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের যে দূরত্ব, তাকে অনেকটা মজার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি আমরা।’ ফিলিপ গার্সিয়ার হিসাব করে দেখেছেন, তাদের প্রত্যেকের ৩ হাজার ডলারেরও বেশি খরচ হয়েছে। অথচ, একজন কলম্বিয়ানের মাসিক বেতন হলো গড়ে ২৯১ ডলার।
চতুর্থ বন্ধু হুয়ান জোস মোগিও পেশায় একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। তিনিও বিশ্বকাপ নিজ চোখে দেখতে চাকরি ছেড়ে এসেছেন। তার কাছে এই সফর অনেকটা জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন পূরণ হওয়ার মতো। তিনি বলেন, ‘ফুটবল হলো এমন একটা বিষয় যা প্রত্যেক কলম্বিয়ানের কাছে অভিন্ন। সেই ছোটবেলা থেকেই। প্রত্যেক রোববার পুরো দেশ ফুটবল খেলা দেখে।’
মোগিও বলেন, ‘কলম্বিয়ায় ফুটবল যেন ধর্মের মতন। এটিই একমাত্র জিনিস যেটি সবাইকে একত্রিত করে। আমার নিজ দলকে রাশিয়ায় খেলতে দেখবো, সেটি হবে আমার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলোর একটি।’
তবে শক্তিমত্তা বিবেচনায় বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি কলম্বিয়া। অক্টোবরে পেরুর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে দলটি। ফলে অনেক কষ্টেই বাছাইপর্ব অতিক্রম করতে পেরেছে কলম্বিয়া। তারপরও কলম্বিয়ার ভক্তরা নিজ দল নিয়ে অনেক উচ্ছ্বসিত।
উত্তরাঞ্চলীয় শহর বোগোটার সড়কগুলোর প্রায় প্রত্যেক কোণে দলের স্টিকারের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ৫ ডলার ব্যায়ে আপনি এক প্যাকেট স্টিকার কিনতে পারবেন। এক বিক্রেতা বলেন, ‘খেলা যখন শুরু হবে, আমরাও ব্যস্ত হতে শুরু করবো। এখন প্রতিদিন ১০-১৫টা বক্স বিক্রি করছি। খেলা শুরু হলে ২০টা করে বেচবো।’ প্রতি বক্সে ৫০ প্যাকেট স্টিকার থাকে। অর্থাৎ এই একজন বিক্রেতাই প্রতিদিন ১ হাজার প্যাকেট বিক্রির প্রত্যাশা করছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের একটি স্টিকার কারখানা পুরো লাতিন আমেরিকায় প্রতিদিন ৯০ লাখ স্টিকার যোগান দিয়েছে।
বোগোতার আরেক বিক্রেতা বলেন, তার পরিবার গত ৩টি টুর্নামেন্টে স্টিকার বিক্রি করেছে। তার ভাষ্য, ‘এটাই শহরের সেরা ব্যবসা। ফুটবল ও দলের স্টিকারের জন্য লোকজন পাগল হয়ে যায়। আমরা প্রতিদিন প্রায় ২০ বক্স স্টিকার বেচি।’
রাজধানী শহরের রাস্তায় রাস্তায় দলের জার্সি গায়ে লোকজন হাটাহাটি করছে। বার কিংবা রেস্তোরাঁর সামনে উড়ছে দেশের তেরঙ্গা পতাকা। বোগোতার লাইবারটিক্স বারের মালিক ক্রিস বলেন, ‘আমি আমার পানশালায় টিভি লাগাবো। আমরা কিন্তু স্পোর্টস বার নই। তবে বিশ্বকাপে টিভি চালু থাকতেই হবে।’
আগেরবার প্রতিবেশী ব্রাজিলে বিশ্বকাপ হওয়ায় সময় নিয়ে সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ও দুপুর ১টায় খেলা হবে। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, এতে তাদের সমস্যাই হবে না। এক ভক্ত বললেন, ‘বরং আমরা পুরো দিনজুড়ে পার্টি করতে পারবো।’
তবে বিশ্বকাপ দেখতে এমন আত্মত্যাগ কলম্বিয়ানদের মধ্যে বিরল নয়। হুয়ান এস্তেবান গার্সিয়া পেশায় একজন প্রকৌশলী। বিশ্বকাপ সফরের খরচ মেটাতে তিনি ঋণ নিয়েছেন। ক্রেডিট কার্ডও নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড ছাড়া ভিসা ও ভ্রমণের সব খরচ জোগাতে পারতাম না। তবে এটি একেবারে বিফলে যাবে না।’ এস্তেবান গার্সিয়া এবারই প্রথম নিজ দেশের বাইরের কোনো দেশে গেছেন।
তারা চার বন্ধু ইউরোপ হয়ে ভ্রমণ করছেন। বিভিন্ন দেশে থামতে হচ্ছে তাদেরকে। পুরো সফরের আয়োজন অবশ্য ফিলিপ গার্সিয়ার। তার ভাষ্য, ‘এই সফরের পরিকল্পনা করতে কয়েক মাস লেগেছে। তবে সফরটা হলো মোট ৫ সপ্তাহের। রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের যে দূরত্ব, তাকে অনেকটা মজার চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি আমরা।’ ফিলিপ গার্সিয়ার হিসাব করে দেখেছেন, তাদের প্রত্যেকের ৩ হাজার ডলারেরও বেশি খরচ হয়েছে। অথচ, একজন কলম্বিয়ানের মাসিক বেতন হলো গড়ে ২৯১ ডলার।
চতুর্থ বন্ধু হুয়ান জোস মোগিও পেশায় একজন গ্রাফিক ডিজাইনার। তিনিও বিশ্বকাপ নিজ চোখে দেখতে চাকরি ছেড়ে এসেছেন। তার কাছে এই সফর অনেকটা জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন পূরণ হওয়ার মতো। তিনি বলেন, ‘ফুটবল হলো এমন একটা বিষয় যা প্রত্যেক কলম্বিয়ানের কাছে অভিন্ন। সেই ছোটবেলা থেকেই। প্রত্যেক রোববার পুরো দেশ ফুটবল খেলা দেখে।’
মোগিও বলেন, ‘কলম্বিয়ায় ফুটবল যেন ধর্মের মতন। এটিই একমাত্র জিনিস যেটি সবাইকে একত্রিত করে। আমার নিজ দলকে রাশিয়ায় খেলতে দেখবো, সেটি হবে আমার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলোর একটি।’
তবে শক্তিমত্তা বিবেচনায় বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি কলম্বিয়া। অক্টোবরে পেরুর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে দলটি। ফলে অনেক কষ্টেই বাছাইপর্ব অতিক্রম করতে পেরেছে কলম্বিয়া। তারপরও কলম্বিয়ার ভক্তরা নিজ দল নিয়ে অনেক উচ্ছ্বসিত।
উত্তরাঞ্চলীয় শহর বোগোটার সড়কগুলোর প্রায় প্রত্যেক কোণে দলের স্টিকারের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। ৫ ডলার ব্যায়ে আপনি এক প্যাকেট স্টিকার কিনতে পারবেন। এক বিক্রেতা বলেন, ‘খেলা যখন শুরু হবে, আমরাও ব্যস্ত হতে শুরু করবো। এখন প্রতিদিন ১০-১৫টা বক্স বিক্রি করছি। খেলা শুরু হলে ২০টা করে বেচবো।’ প্রতি বক্সে ৫০ প্যাকেট স্টিকার থাকে। অর্থাৎ এই একজন বিক্রেতাই প্রতিদিন ১ হাজার প্যাকেট বিক্রির প্রত্যাশা করছেন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের একটি স্টিকার কারখানা পুরো লাতিন আমেরিকায় প্রতিদিন ৯০ লাখ স্টিকার যোগান দিয়েছে।
বোগোতার আরেক বিক্রেতা বলেন, তার পরিবার গত ৩টি টুর্নামেন্টে স্টিকার বিক্রি করেছে। তার ভাষ্য, ‘এটাই শহরের সেরা ব্যবসা। ফুটবল ও দলের স্টিকারের জন্য লোকজন পাগল হয়ে যায়। আমরা প্রতিদিন প্রায় ২০ বক্স স্টিকার বেচি।’
রাজধানী শহরের রাস্তায় রাস্তায় দলের জার্সি গায়ে লোকজন হাটাহাটি করছে। বার কিংবা রেস্তোরাঁর সামনে উড়ছে দেশের তেরঙ্গা পতাকা। বোগোতার লাইবারটিক্স বারের মালিক ক্রিস বলেন, ‘আমি আমার পানশালায় টিভি লাগাবো। আমরা কিন্তু স্পোর্টস বার নই। তবে বিশ্বকাপে টিভি চালু থাকতেই হবে।’
আগেরবার প্রতিবেশী ব্রাজিলে বিশ্বকাপ হওয়ায় সময় নিয়ে সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ও দুপুর ১টায় খেলা হবে। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, এতে তাদের সমস্যাই হবে না। এক ভক্ত বললেন, ‘বরং আমরা পুরো দিনজুড়ে পার্টি করতে পারবো।’
No comments