শয্যাশায়ী থেকেই স্কুল পরিচালনা প্রধান শিক্ষিকার
উমা
শর্মা ১০ বছর আগে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। নড়াচড়ার জন্য প্রয়োজন অন্যের
সাহায্যের। কিন্তু এ অবস্থায় জীবনযুদ্ধে না হেরে চালাচ্ছেন একটি স্কুল।
ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তির কল্যাণে বিছানায় শুয়েই চালাচ্ছেন স্কুলটি।
এনডিটিভি ও বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের খবরে বলা হয়, ভারতের উত্তর প্রদেশের উমা
শর্মা ১০ বছর আগে শরীরের নিচের অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সাহারানপুরের
ন্যাশনাল পাবলিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা উমা শর্মা সে সময় থেকেই শুয়ে
আছেন হাসপাতালের বিছানায়। শুধু তার মুখ ও হাত সচল আছে। আর এ অবস্থায়
বিদ্যালয়ের সব কাজ করেন তিনি। ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তির কল্যাণে বিছানায়
শুয়েই চালাচ্ছেন স্কুলটি। ১০ বছর ধরে শয্যাশায়ী অবস্থাতেই স্কুল পরিচালনা
করছেন।
ট্যাবলেটের মাধ্যমে এ শিক্ষিকা তাঁর স্কুলের কার্যক্রম তদারকি করেন।
এমনকি ইন্টারনেটে ক্লাসও নেন। ১০ বছরে এক দিনও অফিস কামাই না দেওয়া এ
শিক্ষিকা একটি ট্যাবলেট পিসি দিয়ে শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কক্ষ
এমনকি স্কুলের মাঠও পরিদর্শন করেন। আর ট্যাবলেট পিসির মাধ্যমে নেন নিয়মিত
ক্লাসও। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের কাছে অনুপ্রেরণাদায়ী এক শিক্ষিকা উমা
শর্মা। বিদ্যালয়ের প্রশাসক সুরেন্দ্র চৌহান বলেন, ‘আমাদের কখনই মনে হয়নি যে
প্রধান শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে নেই। কারণ, তাঁর ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি অন্য যে
কারও শারীরিক উপস্থিতির চেয়ে অনেক বেশি।’ ২৭ বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর
স্কুলটি শুরু করেন উমা শর্মা। এর কয়েক বছরের মাথায় তাঁর দুই সন্তানও মারা
যায়। এখন তিনি অন্যের সাহায্য ছাড়া নড়াচড়া করতে পারেন না। নড়াচড়ায় অন্যের
সাহায্য লাগলেও তাঁকে দমিয়ে রাখা যায়নি। এত কিছুর পরেও প্রযুক্তির সাহায্য
চালিয়ে যাচ্ছেন পুরো স্কুলটি। আর তাই বেশ গর্ব ভরেই তিনি বলেন, ‘অন্য
যেকোনো পাবলিক স্কুলের চেয়ে আমাদের ফি অনেক কম। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।’ স্কুল
থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে নিজের বাড়িতে থাকেন উমা শর্মা। তাঁকে নিত্যদিনের
কাজে সাহায্য করার জন্য একজন পরিচারিকা রয়েছেন।
No comments