আইএসের পতন
২০১৭
সালে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) স্বঘোষিত খিলাফত রাষ্ট্রটির পতন
ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বিমান হামলা, তাদের সমর্থনপুষ্ট সিরিয়ার
সরকারি ও বিদ্রোহী অন্যান্য গোষ্ঠীর বহুমুখী আক্রমণে আইএস মধ্যপ্রাচ্যে
পর্যুদস্ত হয়েছে। তাদের অনেক যোদ্ধা মারা পড়েছেন, জীবিতরা ছত্রভঙ্গ হয়েছেন।
আইএস ২০১৪ সালের জুনে তাদের কথিত খিলাফতের ঘোষণা দেয়। সিরিয়ার রাকাকে
রাজধানী ঘোষণা করে। পার্শ্ববর্তী ইরাকের মসুল শহরকে ঘোষণা করে দ্বিতীয়
রাজধানী। অতি দ্রুত তারা সিরিয়া ও ইরাক দখল করে এবং একটা সময়ে এ দুই দেশের
বিরাট অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, যেখানে এক কোটি লোকের বাস। তারা
নিয়ন্ত্রিত শহরগুলোতে ব্যাপক নৃশংসতা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়; বহু মানুষের
শিরশ্ছেদ ঘটায়।
তবে তিন বছরের মাথায় আইএসের পতন শুরু হয়। গত জুলাইতে ইরাকি
সরকারি বাহিনী মসুল শহর আইএসের কাছ থেকে পুনর্দখল করে। সিরিয়ার রাকা
আইএসমুক্ত হয় অক্টোবরে। নভেম্বরে ইরান ঘোষণা করে, তাদের দেশে আইএস শেষ।
ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ইরাকি সরকারি বাহিনী আইএসের পরাজয় উদ্যাপন করে। তবে
সিরিয়া ও ইরাকে পতন হলেও বিশ্বব্যাপী আইএসের হামলার ঝুঁকি কমেনি। বছরজুড়ে
বিভিন্ন দেশে তাদের সন্ত্রাসী হামলায় অনেক মানুষ মারা যায়। বিশ্বের ১১০টি
দেশের যে জঙ্গিরা আইএসে যোগ দিতে সিরিয়া ও ইরাকে গিয়েছিল, তারা নিজ নিজ
দেশে ফিরে গিয়ে হামলা চালায়। একজনের দ্বারা (‘লোন উলফ’) হামলার ঘটনা বাড়তে
থাকে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, সুইডেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, মিসর,
ইরানসহ বিভিন্ন দেশে তাদের হামলা হয়েছে। ইন্টারেনেটে আইএসএর উগ্রপন্থী
প্রচারণা থামছে না। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বোমা হামলায় জড়িত
বাংলাদেশি অভিবাসী আকায়েদ উল্লাহ ইন্টারনেটে আইএসের প্রচারণায় অনুপ্রাণিত
হয়ে হামলা চালিয়েছে বলে তদন্তকারী ব্যক্তিরা ধারণা করছেন। আইএস বৈশ্বিকভাবে
এখন কোণঠাসা, তবে তাদের ঝুঁকি দূর হয়নি। লোন উলফ হামলার আশঙ্কা বেড়েছে বলে
পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, যেগুলোর সম্ভাব্য প্রধান লক্ষ্যবস্তু ইউরোপ ও
আমেরিকা।
No comments