প্রবীণের করুণ মৃত্যু
গান
বা সংগীত মানুষের মনকে সুন্দর ও শুদ্ধ করে বলে এত দিন যে ধারণা ছিল,
সেটিকে মিথ্যা প্রমাণ করলেন গোপীবাগের আর কে মিশন রোডের বাসিন্দা আলতাফ
হোসেন ও তাঁর সহযোগীরা। উচ্চ স্বরে সংগীত বাজানোর আপত্তি করায় তাঁরা ৬৫ বছর
বয়সী এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে কার্যত হত্যা করতেও দ্বিধা করেননি।
প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ভাতিজার গায়েহলুদ উপলক্ষে ফ্ল্যাট মালিক সমিতির
সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বাড়ির ছাদের ওপর কমিউনিটি হলে উচ্চ স্বরে গান
বাজাতে থাকলে সেই ভবনেরই আরেক বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মো.
নাজমুল হকের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটছিল। তাঁর ছেলে নাসিমুল হক বিষয়টি বাড়ির
কেয়ারটেকারকে জানালে আলতাফ হোসেন তাঁর সঙ্গে রূঢ় আচরণ করেন।
কিন্তু ঘটনা
এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। পরদিন আলতাফ হোসেন নাসিমুল হককে ডেকে পাঠালে বিপদ
আঁচ করতে পেরে তাঁর সঙ্গে অসুস্থ বাবা, মা, বোন ও স্ত্রীও নিচে নেমে আসেন।
সেখানে পৌঁছাতেই আলতাফ হোসেন দলবল নিয়ে নাসিমুলের ওপর হামলা চালান। এ সময়
বাবা নাসিমুলকে রক্ষায় এগিয়ে এলে আক্রমণকারীরা তাঁকেও মারধর করেন এবং
হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। ঘটনাটি এতটাই ঘৃণ্য যে নিন্দা জানানোর
ভাষা আমাদের জানা নেই। তাহলে কি একজন অসুস্থ মানুষের ঘুমের সমস্যা হলে
প্রতিকার চাওয়া যাবে না? সমাজে মনুষ্যত্ব, ভ্রাতৃত্ববোধ বলে কি কিছু নেই?
যেখানে একজন প্রবীণের ঘুমের ব্যাঘাত হওয়ার কথা জেনে আলতাফ হোসেন ও তাঁর
সহযোগীদের লজ্জিত হওয়ার কথা, সেখানে সদলবলে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। নিহত
নাজমুল হকের ছেলে নাসিমুল বলেছেন, আলতাফ হোসেন ও তঁার সহযোগীরা
পরিকল্পিতভাবেই তাঁদের ওপর চড়াও হয়েছেন। ঘটনা পরিকল্পিত হোক আর যা-ই হোক,
এই ঘটনার পরিণতিতে একজনের মৃত্যু ঘটেছে। এর যথাযথ বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
আলতাফ হোসেন ও তাঁর সহযোগীদের জানার কথা আবাসিক এলাকায় উচ্চ স্বরে গান
বাজানো যায় না। শব্দদূষণের বিষয়ে উচ্চ আদালতেরও নির্দেশনা রয়েছে।
No comments