হার দিয়েই ট্রাম্পের দ্বিতীয় বর্ষ শুরু
গত
বছরের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন
ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও ২০১৬ সালের
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী
হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেন তিনি। ইতিমধ্যে ক্ষমতার
এক বছর পূর্ণ করে দ্বিতীয় বছরে পা দিয়েছেন তিনি। তবে হার দিয়েই শুরু হল তার
দ্বিতীয় বছর।
মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে পাস হলেও সিনেটে আটকে
যায় সরকার পরিচালনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজেট বিল। অনেক চেষ্টা-তদবির করেও
বিলটি পাস করাতে ব্যর্থ হয়েছেন ট্রাম্প। ফলে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে দেশটিতে
থমকে গেছে সরকারি কর্মকাণ্ড। দায়িত্ব গ্রহণের পর গত এক বছরে জনবিরোধী
বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বহু বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। নারী
কেলেঙ্কারি, বর্ণবাদী মন্তব্য, মুসলিম বিদ্বেষ, রাশিয়া সংযোগ কী নেই তার
বিতর্কে। গোটা বছরটাই বিশ্ব মিডিয়ার খোরাক জুগিয়েছেন তিনি। আধুনিক যুগের
অন্য সব মার্কিন প্রেসিডেন্টের তুলনায় তার জনপ্রিয়তা সর্বনিন্মে। বছর শেষে
এক জনমত জরিপ বলছে, ৫৩ শতাংশ মার্কিন নাগরিক মনে করেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে
ট্রাম্প ব্যর্থ। তিনি সফল এ কথা বিশ্বাস করেন মাত্র ৪১ শতাংশ মার্কিন
নাগরিক। দেশটির ৬১ শতাংশ মানুষ মনে করেন, ট্রাম্পের সময়ে আমেরিকা আগের
চেয়েও অধিক বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ
করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ট্রাম্প তথা মার্কিন নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বের
আস্থা কমেছে।
হ্রাস পেয়েছে সর্বধর্মীয় সম্মিলনের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয়
স্বাধীনতা। তিনি যত বেশি কথা বলেছেন কাজ করেছেন ততটাই কম। কর সংস্কার বিল
ছাড়া কংগ্রেসে তার প্রশাসনের কোনো বিলই পাস হয়নি। গত এক বছরে ট্রাম্প ৫৮টি
নির্বাহী আদেশ দিয়েছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামা ৪১ এবং জর্জ ডাব্লিউ বুশ
একই সময়ে ৫৬টি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। ট্রাম্পের কিছু নির্বাহী আদেশ
আদালতে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষ করে বছরের শুরুতেই মুসলিম
অভিবাসীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে তিনি বারবার ধাক্কা খেয়েছেন। যদিও শেষ সময়ে
এসে নিষেধাজ্ঞার সাময়িক অনুমোদন দেয় সুপ্রিমকোর্ট। ট্রাম্প ওবামা কেয়ার
বাতিল করে নতুন স্বাস্থ্য বিল পাস, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণসহ নানা
ইস্যুতে অঙ্গীকার করলেও কোনো সফলতা পাননি। তবে ওবামা কেয়ারে সব মার্কিন
নাগরিকের স্বাস্থ্যবীমার অধীনে থাকার যে বাধ্যবাধকতা ছিল, তা বাতিল করতে
সমর্থ হয়েছেন তিনি।
No comments