ভেনিজুয়েলায় ‘গণভোটে’ মাদুরোকে প্রত্যাখ্যান
ভেনিজুয়েলায় সরকারবিরোধীদের আয়োজিত এক ব্যতিক্রমী গণভোটে ৭০ লক্ষাধিক ভোটার ভোট দিয়েছে। ৯৮ শতাংশ ভোটার প্রতীকী এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এবং তার সংবিধান পরিবর্তনের পরিকল্পনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। মাদুরোবিরোধীরা রোববার নির্বাচনটির আয়োজন করে। গণভোটের তদারককারীদের বরাত দিয়ে বিবিসি ও এএফপি এ খবর দিয়েছে। ভেনিজুয়েলার কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর সেসিলিয়া গার্সিয়া আরোচা বলেন, ‘এ ভোটের মাধ্যমে ভেনিজুয়েলা প্রেসিডেন্ট মাদুরো ও বিশ্বকে একটি পরিস্কার বার্তা দিল।’ তিনি জানান, ভেনিজুয়েলার নিবন্ধিত ভোটারের মধ্যে ৬৪ লাখ ৯২ হাজার ৩৮১ জন দেশের অভ্যন্তরে ভোট দিয়েছে। অন্যদিকে ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৭৮৯ জন প্রবাসী ভোটার বিদেশের ভোট কেন্দ্রগুলোয় ভোট দেয়। তবে এ গণভোটের কোনো আইনি ভিত্তি নেই। এদিকে গণভোট চলাকালে রাজধানী কারাকাসে বন্দুকধারীদের হামলায় ভোটের লাইনে দাঁড়ানো এক নারী নিহত হয়েছেন। মোটরসাইকেলে আরোহী বন্দুকধারীরা উন্মুক্ত গুলি করে।
এতে ৬১ বছর বয়সী জিওমারা সোলেদাদ স্কট নামে এক সেবিকা নিহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বন্দুকধারীরা ভোট দেয়ার অপেক্ষায় থাকা লোকজনের ওপর গুলি চালালে চারজন আহত হন। হাসপাতালে নেয়ার পর পরই জিওমারা মারা যান। সরকারবিরোধীরা এ হামলার জন্য ‘আধাসামরিক’ বাহিনীর সদস্যদের দায়ী করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা এ হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখছেন। ২০১৯ সালে বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তার আগেই নতুন নির্বাচনের দাবিতে বিরোধীরা এ গণভোটের আয়োজন করে। তবে মাদুরো এ গণভোটকে ‘অর্থহীন’ অ্যাখ্যা দেন। ৩০ জুলাই দেশটিতে আনুষ্ঠানিক এক গণভোট হওয়ার কথা। পুরনো সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নতুন সংসদের প্রস্তাব করা হয়েছে, যারা সংবিধান সংশোধন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির এখতিয়ার রাখবে। সমালোচকরা বলছেন, নতুন এ সাংবিধানিক অ্যাসেম্বলি মাদুরোর ‘একনায়কতন্ত্র’কে আরও দীর্ঘায়িত করবে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ভেনিজুয়েলা গভীর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটকাল অতিক্রম করছে। বিরোধী দলগুলো প্রেসিডেন্ট মাদুরোর শাসনের অবসানে তুমুল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে শুধু রাজনৈতিক সংঘর্ষেই দেশটিতে ১০০ জনেরও বেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
No comments