ভারতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন
ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সোমবার ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ নির্বাচনে লোকসভা, রাজ্যসভা ও বিধানসভার সদস্যদের ভোটে আগামী পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটির নতুন রাষ্ট্রপতি। এবারের রাষ্ট্রপতি পদে লড়াই হচ্ছে দ্বিমুখী। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ’র প্রার্থী বিহারের সাবেক রাজ্যপাল রামনাথ কোবিন্দ। অন্যজন বিরোধী দল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ’র প্রার্থী লোকসভার সাবেক স্পিকার মীরা কুমার। নির্বাচনে কোবিন্দ বড় জয় পেতে যাচ্ছেন বলে অগ্রিম ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। খবর এনডিটিভির। রাজনীতির এ খেলায় প্রধান দুই জোটই এবার প্রার্থী বেছে নিয়েছে দলিত সম্প্রদায় থেকে। ফলে ১৯৯৭-২০০২ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করা কেআর নারায়ণের পর এবার দ্বিতীয় দলিত রাষ্ট্রপতি পেতে যাচ্ছে ভারত। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, দিল্লির পার্লামেন্ট ভবন এবং সব রাজ্যের বিধানসভায় সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা করা হবে ২০ জুলাই (বৃহস্পতিবার)। ২৪ জুলাই ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়াদ শেষ হবে। এর পরদিন ২৫ জুলাই শপথ নিয়ে রাষ্ট্রপতি ভবন দিল্লির রাইসিনা হিলে উঠবেন নতুন রাষ্ট্রপ্রধান। ক্ষমতাসীন বিজেপি ও তাদের শরিক দলগুলোর বিধায়ক সংখ্যা ধরে হিসাব করলে ৭১ বছর বয়সী কোবিন্দের জয় অনেকটাই নিশ্চিত। এ ছাড়া অন্যতম প্রধান বিরোধী নেতা নীতিশ কুমার এবং বিহারে ক্ষমতাসীন তার জনতা দল ইউনাইটেড, বিজু জনতা দল, এআইএডিএমকে এনডিএ’র প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ায় বিরোধী শিবির বড় ধাক্কা খেয়েছে। সোমবার সকালে পার্লামেন্টে প্রথম ভোট দিয়ে নরেন্দ্র মোদি কোবিন্দকে অগ্রিম অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের এ সময়টা ঐতিহাসিক। সম্ভবত প্রথমবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে আরেক প্রার্থী কোনো ধরনের মর্যাদাহানিকর ও অনায্য মন্তব্য করেননি।’ বিজেপির একটি সূত্র বলছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে এটাই বোঝা যাচ্ছে যে, কোবিন্দ ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হতে যাচ্ছেন। ভারতের ইতিহাসে প্রথম রাষ্ট্রপতি বাবু রাজেন্দ্র প্রসাদ কেবল দুই মেয়াদে ওই পদে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। প্রণব মুখার্জিকে দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি করার যে প্রস্তাব কোনো কোনো বিরোধী দল দিয়েছিল, বিজেপি তা মানেনি। হিন্দুত্ববাদীদের সমর্থনে ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতায় আসা বিজেপি এই প্রথম নিজেদের আদর্শের কাউকে রাষ্ট্রপতি করার সুযোগ পেয়েছে। সে বিষয়টি ইঙ্গিত করেই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী রোববার বলেন, এ নির্বাচন পরিণত হয়েছে আদর্শের লড়াইয়ে। এদিন রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী মীরা, উপ-রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী গোপালকৃষ্ণ গান্ধী এবং কংগ্রেসের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সোনিয়া। এ বৈঠক গণমাধ্যমের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। তবে বৈঠকে অংশগ্রহণকারী নেতারা বলেন, কংগ্রেস সভানেত্রী ভোট দেয়ার সময় দল নয়, বিবেকের কথা শোনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচনের ফল আমাদের বিরুদ্ধে যেতে পারে। তবে লড়াই কঠিন হতে হবে।’ সোনিয়ার বক্তব্য থেকে পরিষ্কার, তাদের প্রার্থীর পরাজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে মোদি শিবির তাদের প্রার্থী কোবিন্দের নিশ্চিত জয়ের আশা করছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি : সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পার্থক্য রয়েছে। সাধারণ নির্বাচনে একটি ভোটের মূল্য এক। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদাতাদের ভোটের মূল্য এক জটিল পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়। লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যদের একেকজনের ভোটের মূল্য ৭০৮, রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের ভোটমূল্য নির্ধারিত হয় সেই রাজ্যের বিধানসভার মোট আসন ও জনসংখ্যার নিরিখে। সবচেয়ে বেশি ভোটমূল্য উত্তর প্রদেশের বিধায়কদের, ২০৮। সবচেয়ে কম সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশের বিধায়কদের, ৮। রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্যরা এই ভোটে অংশ নিতে পারেন না। এবারের ভোটে অংশ নিয়েছেন লোকসভার ৫৪৩ ও রাজ্যসভার ২৩৩ জন সদস্য এবং দেশের মোট ২৯টি রাজ্য এবং দিল্লি ও পদুচেরি দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৪ হাজার ১২০ জন বিধায়ক। সব ভোটদাতার ভোট ধরলে এবারের নির্বাচনে মোট ভোটমূল্য ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৯০৩। এর মধ্যে সংসদ সদস্যদের ভোটমূল্য ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪০৮ এবং বিধায়কদের ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৫।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি : সাধারণ নির্বাচনের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পার্থক্য রয়েছে। সাধারণ নির্বাচনে একটি ভোটের মূল্য এক। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদাতাদের ভোটের মূল্য এক জটিল পদ্ধতিতে নির্ধারিত হয়। লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যদের একেকজনের ভোটের মূল্য ৭০৮, রাজ্য বিধানসভার সদস্যদের ভোটমূল্য নির্ধারিত হয় সেই রাজ্যের বিধানসভার মোট আসন ও জনসংখ্যার নিরিখে। সবচেয়ে বেশি ভোটমূল্য উত্তর প্রদেশের বিধায়কদের, ২০৮। সবচেয়ে কম সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশের বিধায়কদের, ৮। রাজ্যসভায় রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্যরা এই ভোটে অংশ নিতে পারেন না। এবারের ভোটে অংশ নিয়েছেন লোকসভার ৫৪৩ ও রাজ্যসভার ২৩৩ জন সদস্য এবং দেশের মোট ২৯টি রাজ্য এবং দিল্লি ও পদুচেরি দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৪ হাজার ১২০ জন বিধায়ক। সব ভোটদাতার ভোট ধরলে এবারের নির্বাচনে মোট ভোটমূল্য ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৯০৩। এর মধ্যে সংসদ সদস্যদের ভোটমূল্য ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪০৮ এবং বিধায়কদের ৫ লাখ ৪৯ হাজার ৪৯৫।
No comments