ছাত্রলীগ কর্মী খুনে মামলা, গ্রেফতার ৪
সিলেটের বিয়ানীবাজারে সরকারি কলেজে ছাত্রলীগ কর্মী লিটু খুনের ঘটনায় সাতজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে বিয়ানীবাজার থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত লিটুর বাবা খলিল উদ্দিন। এদিকে রাতভর অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে এ ঘটনায় গ্রেফতার হলো চারজন। অপরদিকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে একটি রিভলভার এ একটি রামদা। বিয়ানীয় বাজার থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী যুগান্তরকে জানান, রাতে খালেদ আহমদ লিটুর লাশ দাফনের পর তার বাবা খলিল উদ্দিন বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। আসামিরা হলেন- কামরান, ফাহাদ , এমদাদুর , দেলোয়ার হোসেন মিষ্টু, সাহেদ, শিপু এবং কাউসার। তারা সবাই পাভেল গ্রুপের ছাত্রলীগ কর্মী। ওসি জানান, এদের মধ্যে ঘটনার পরই আটক কামরান, ফাহাদ ও এমদাদুরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এছাড়া মামলার পরই আসামিদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। এসময় গ্রেফতার করা হয় দেলোয়ার হোসেন মিষ্টুকে। আর বাকীদের কাউকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে সাহেদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি রামদা উদ্ধার এবং রাতে অভিযানের সময় কলেজের সামনের এক সবজি বিক্রেতার মাচাংয়ের নীচ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি রিভলবার উদ্ধার করা হয়েছে। তবে লিটু খুনের ঘটনায় এই রিভলবার ব্যবহার হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত নয় পুলিশ। ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী যুগান্তরকে জানান, ময়না তদন্তের সময় লিটুর মাথা থেকে উদ্ধার করা বুলেটটি পুলিশের হাতে আসলেই তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এদিকে গ্রেফতারকৃত আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ আদালতে আনা হবে বলে জানান তিনি। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে সোমবার দুপুরে সরকারি কলেজের শ্রেণীকক্ষে গুলি করে খালেদ আহমদ লিটুকে হত্যা করা হয়। এর আগে ক্যাম্পাসে পাভেল ও পল্লভ গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি ও সংঘর্ষ হয়। নিহত লিটু ওই কলেজের ছাত্র নয়। সে পেশায় একজন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় ছাত্রলীগের পাভেল গ্রুপের কর্মী। কলেজটি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত। আর নিহত লিটু শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিপক্ষ গ্রুপের কর্মী বলে জানা গেছে। এদিকে শিক্ষামন্ত্রীর এলাকার একটি কলেজের শ্রেণিকক্ষে এ ধরনের ঘটনা ঘটায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষামন্ত্রীর এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়ায় অভিভাবকদের মধ্যেও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। লিটু কলেজের ছাত্র না হয়েও কী করে শ্রেণীকক্ষে অবস্থান করছিল, সে প্রশ্নও এখন অনেকের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে।
No comments