কবে আমরা মানুষ হবো
চাপে
পড়ে সুপ্রিম কোর্টে স্থাপিত ভাস্কর্যটি সরিয়ে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন এর
শিল্পী মৃণাল হক। এই ভাস্কর্য সরানোতে সন্তান হারানোর মতো তার কষ্ট হচ্ছে
বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভাস্কর্য সরানোর কাজ শুরু
হওয়ার পর পুরো সময় সেখানে ছিলেন মৃণাল হক। অন্যরা সরালে ভার্স্কযটি ভেঙে
যেতে পারে কিংবা নষ্ট হতে পারে-এ আশঙ্কা থেকে নিজেই সরাতে এসেছেন বলে জানান
মৃণাল হক। কাজ শুরুর কিছুক্ষণ পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,
আমি কিছু জানি না, উপরের প্রেসারে সরাতে হচ্ছে। আমাকে বলা হয়েছে সরাতে, চাপ
দেয়া হয়েছে। কারা চাপ দিয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা দুঃখজনক। আমরা
কবে মানুষ হবো। অনেকের অনেক রকম ক্ষমতা আছে। আমি বানিয়েছিলাম, আমাকে সরাতে
বাধ্য করা হচ্ছে। মৃণাল হক বলেন, আমার হাত-মুখ বাঁধা। মাফ চাই, আমি কিছু
বলতে পারব না। ভাস্কর্যটি সরিয়ে সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ভবনের পাশে কোথাও
বসানো হতে পারে বলে জানান তিনি। শুক্রবার ভোরের আগে ভাস্কর্য সরানো কাজ
সম্পন্ন হওয়ার পর ক্ষতির বিষয়ে তিনি বলেন, ভাস্কর্যটির তেমন ক্ষতি হয়নি,
কিছু টাকা ক্ষতি হয়েছে। তবে, টাকার ক্ষতির চেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে দেশের
সাধারণ মানুষের, যারা সংস্কৃতিপ্রেমী, তাদের। হেফাজতের দাবির মুখে এ
ভাস্কর্য অপসারণের পর অন্য সব শিল্পকর্মও ঝুঁকির মুখে পড়ল বলে মনে করেন
মৃণাল হক। তিনি বলেন, এরপর হয়তো অপরাজেয় বাংলা, রাজু ভাস্কর্য ও শেরাটনের
সামনের ঘোড়ার গাড়ির ভাস্কর্য সরানোর নির্দেশ আসবে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে এই
শিল্পী জানান, কারও সন্তান হারালে যেমন কষ্ট লাগে তারও তেমন লাগছে। তবে,
ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হওয়ায় বিক্ষোভকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে
তিনি বলেন, কিছু যুবক ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদ-আন্দোলন করছেন। আমার বুক
ভরে যাচ্ছে। এটি আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে।
No comments