রাজধানীতে স্ত্রী ও শ্যালিকার হাতে স্বামী দুলাভাই খুন
রাজধানীর পৃথক এলাকায় দুটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ভাটারায় স্ত্রীর হাতে স্বামী লিটন (২৫) এবং কদমতলীতে কিশোরী শ্যালিকার হাতে খুন হয়েছেন দুলাভাই জামাল খন্দকার (৪০)। শুক্রবার বিকালে তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও মিডফোর্ট হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। দুলাভাই খুনের ঘটনায় পুলিশ কিশোরী মিতু আক্তারকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের ভাষ্য- বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় মিতু আক্তার (১৬) তার দুলাভাইয়ের মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছে। বিকালে কদমতলীর পাটেরবাগের মাদ্রাসা রোডের একটি বাসা থেকে জামালের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গেছে, মিতুর সঙ্গে প্রায় সাত বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল জামালের। এমনকি তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়েছিল। প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও মিতুকে বিয়ে করতে রাজি ছিল না জামাল। এ নিয়ে একাধিকবার তাদের ঝগড়াও হয়েছে। শুক্রবার দুপুরের পর এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় মিতু রেগে গিয়ে স্লাইরেঞ্চ দিয়ে জামালের মাথায় আঘাত করে। এ সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জামালের মৃত্যু হয়। কদমতলী থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী যুগান্তরকে জানান, জামাল পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। তিনি স্ত্রী শারমিন আক্তার ও দুই শিশুসন্তান নিয়ে মাদ্রাসা রোডের মুক্তধারা আবাসিক এলাকার প্রবাসী বেলালের বাসার নিচতলায় ভাড়া থাকতেন। তিন দিন আগে মাদারীপুর থেকে তার শ্যালিকা মিতু বাসায় বেড়াতে আসে।
তাদের দু’জনের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। শুক্রবার দুপুরের পর জামালের স্ত্রী তিনতলায় এক প্রতিবেশীর বাসায় যান। এ সময় বিয়ে নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। ঘটনার একপর্যায়ে মিতু উত্তেজিত হয়ে রেঞ্চ দিয়ে জামালের মাথায় আঘাত করে। পুলিশ জানায়, এটি কোনো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড নয়। এটা আকস্মিক ঘটনা। ওই কিশোরীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে শুক্রবার বিকালে ভাটারার নূরেরচালা বাজার এলাকার একটি বাড়ির চারতলা ভবনের দুইতলা থেকে লিটনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্ত্রী পালিয়ে গেছে। ভাটারা থানার ওসি নুরুল মোত্তাকিন যুগান্তরকে বলেন, লাশের গন্ধ পেয়ে বাড়ির মালিক থানায় খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। অর্ধগলিত শরীরে আঘাতের চিহ্ন বোঝা যাচ্ছে না। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাসায় ভাড়া ছিল তারা। তাদের সঙ্গে একটি সন্তানও ছিল। এক সপ্তাহ ধরে রুমটি তালাবদ্ধ ছিল। বিকালে প্রতিবেশীরা লাশের গন্ধ পায়। পরে বাড়ির মালিক থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় লিটনের স্ত্রীকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তাকে পাওয়া গেলে এ হত্যাকাণ্ডের আসল রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।
No comments