ফেঁসে যাচ্ছেন ট্রাম্প জামাতা?
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতার তদন্ত নতুন মোড় নিচ্ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পর এবার তার জামাতা ও হোয়াইট হাউসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা জারেদ কুশনারের রুশ সংযোগ খতিয়ে দেখছে এফবিআই। কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের খবরে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। খবর বিবিসির। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের সঙ্গে রাশিয়ার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই তদন্ত করছে। তথ্য গোপন করা বা রাশিয়ার সঙ্গে স্পর্শকাতর তথ্য বিনিময় করার প্রমাণ পাওয়া গেলে সংকটে পড়বেন মাইকেল ফ্লিন। এর জের ধরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যরাও জড়িয়ে পড়েন কিনা, তা নিয়ে সরগরম রয়েছে আমেরিকার রাজনৈতিক অঙ্গন। এর মধ্যে আবার নতুন করে নাম এসেছে ট্রাম্পের জামাতা কুশনারের। তবে এফবিআই কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে তার নাম আসেনি। তার কাছে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রয়েছে বলে মনে করছে এফবিআই। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন পোস্ট প্রথম এ সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশন করে। ৩৬ বছর বয়সী কুশনার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্পের স্বামী। গত নির্বাচনে শ্বশুরের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখার পর আলোচনায় আসেন তিনি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর কুশনারকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাম্প। ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে ইতিমধ্যে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে এফবিআই প্রধান জেমস কমিকে বরখাস্তের পর রাশিয়া তদন্ত নিয়ে নানা নাটকীয়তা শুরু হয়েছে ওয়াশিংটনে। ট্রাম্প পদত্যাগী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের বিরুদ্ধে তদন্ত না চালানোর জন্য কমিকে বলেছিলেন বলে গণমাধ্যমে এসেছে।
পরে এ বিষয়ে তদন্তে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে এফবিআইয়ের সাবেক প্রধান রবার্ট মুলারকে নিয়োগ করে মার্কিন বিচার বিভাগ। জারেদ কুশনার এখন এফবিআইর নজরদারিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছে এফবিআই। তবে বিষয়টি নিয়ে একেবারেই ঠাণ্ডা মেজাজে রয়েছেন কুশনারের আইনজীবী জেমি গোরেলিক। তিনি জানিয়েছেন, তদন্তের বিষয়ে এফবিআইকে পূর্ণ সহযোগিতা করবেন তার মক্কেল। তবে তদন্তের বিষয়টি নিয়ে শ্বশুর ট্রাম্পের মেজাজ বেশ খারাপ। তিনি বলেছেন, আমেরিকার ইতিহাসে একজন রাজনীতিককে এভাবে হেনস্তা করার ঘটনা আগে ঘটেনি। এটাকে রাজনৈতিক ‘উইচ হান্ট’ হিসেবে বর্ণনা করেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াক ও এক ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন কুশনার। ওই বৈঠকে রাশিয়ার এ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশনার ঠিক কী আলোচনা করেছিলেন, সেটাই অনুসন্ধান করছে তদন্তকারীরা। ২০১৬ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে হিলারি ও তার দলের কয়েক নেতার ই-মেইল হ্যাক করা হয়। এ ঘটনা নির্বাচনে বেশ প্রভাব ফেলে। ট্রাম্পকে জয়ী করতে নির্বাচনের আগে মাঠে নেমেছিল রাশিয়া, এমন আভিযোগ আনা হয় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে। তবে এ অভিযোগকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দেন ট্রাম্প। ঘটনাটি স্বীকার করে ক্রেমলিনও।
No comments