বছরে ১২০০০ মৃত্যু
অনেক বিষয় নিয়েই বাংলাদেশে নিয়মিত গবেষণা হয় এবং এর ফলাফল হিসেবে আমরা কিছু তথ্য ও পরিসংখ্যান পেয়ে থাকি। কিন্তু প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ হাজার মানুষের মৃত্যুর বিষয়টিকে সাধারণভাবে একটি গবেষণায় পাওয়া তথ্য বা পরিসংখ্যান বিবেচনা করার সুযোগ নেই। বছর বছর এত মৃত্যু এবং এর পারিবারিক ও সামাজিক প্রভাবের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া গেলে এই সংখ্যা আঁতকে ওঠার মতোই।
দুর্ঘটনাসংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) গবেষণা তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বয়স পাঁচ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে ১২ হাজার পরিবার। বছরের পর বছর ধরে এ পরিবারগুলোকে বয়ে বেড়াতে হয় স্বজন হারানোর ক্ষত। এই পরিবারগুলোর সঙ্গে প্রতিবছর নতুন করে যোগ হচ্ছে আরও ১২ হাজার পরিবার। আমাদের দেশের ট্রাফিক-ব্যবস্থা ও যানবাহন চলাচলে সমস্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে সামনের দিনগুলোয় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বাড়ছে। এভাবে কোথায় গিয়ে ঠেকব আমরা?
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা হয়তো কখনো শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। কিন্তু ট্রাফিক-ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রাণহানির সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই কমানো যায়। যানবাহনের সংখ্যা বাড়ার কারণে সড়কপথে যে চাপ পড়েছে, তা সামাল দিতে নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন একদিকে যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনি এর সঙ্গে আর্থিক বিষয় জড়িত। দীর্ঘ মেয়াদে এগুলো নিয়ে পরিকল্পনার বিকল্প নেই। কিন্তু ট্রাফিক আইন মেনে চলার এবং আইন ভঙ্গ করলে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনার হার ও প্রাণহানি কমানো সম্ভব।
আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির এই উচ্চ হার সত্ত্বেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে চালক বা দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তির মুখোমুখি করা যায় না। ১৭ বছরের মধ্যে সম্প্রতি একটি রায়ে সড়ক দুর্ঘটনায় এক ছাত্রীর প্রাণহানির ঘটনায় একজন চালক শাস্তি পেয়েছেন। অর্থাৎ গত ১৭ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় যত প্রাণহানি হয়েছে, তার একটির জন্যও কেউ শাস্তি পাননি। যে পরিবারগুলো সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারিয়ে বছরের পর বছর শোক বয়ে বেড়ায়, যাঁরা পঙ্গু হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটান, তাঁদের জন্য এই পরিস্থিতি কতটা হতাশার, তা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কেউ টের পান না বলেই হয়তো এ দিকটিতে কারোরই নজর নেই। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালক শাস্তি পেলে, তা দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে এবং চালকদের বেপরোয়া ভাব যে কমে আসবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
এআরআইয়ের গবেষণা প্রতিবেদনে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা, গাড়ি খাদে পড়া থেকে ঠেকানো ও চালকের আচরণ উন্নত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো করা গেলে দুর্ঘটনার হার কমে আসবে। অন্যদিকে দুর্ঘটনা-পরবর্তী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও রয়ে গেছে ঘাটতি। দুর্ঘটনার পর আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ের মধ্যে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। দুর্ঘটনায় কোন ধরনের আঘাত পাওয়াদের কীভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া উচিত, সে ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা চালানো গেলে, হাসপাতালে নেওয়ার আগে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপগুলো নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। প্রতিবছর হাজার হাজার পরিবার স্বজন হারানোর কষ্ট নেবে, আর বছরের পর বছর তা বয়ে বেড়াবে—এমন একটি পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি করতে এই কাজগুলো করা কি খুব কঠিন? সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিষয়গুলো ভেবে দেখতে অনুরোধ জানাই।
দুর্ঘটনাসংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এআরআই) গবেষণা তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বয়স পাঁচ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে ১২ হাজার পরিবার। বছরের পর বছর ধরে এ পরিবারগুলোকে বয়ে বেড়াতে হয় স্বজন হারানোর ক্ষত। এই পরিবারগুলোর সঙ্গে প্রতিবছর নতুন করে যোগ হচ্ছে আরও ১২ হাজার পরিবার। আমাদের দেশের ট্রাফিক-ব্যবস্থা ও যানবাহন চলাচলে সমস্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে সামনের দিনগুলোয় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাই বাড়ছে। এভাবে কোথায় গিয়ে ঠেকব আমরা?
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা হয়তো কখনো শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা সম্ভব নয়। কিন্তু ট্রাফিক-ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রাণহানির সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই কমানো যায়। যানবাহনের সংখ্যা বাড়ার কারণে সড়কপথে যে চাপ পড়েছে, তা সামাল দিতে নানা অবকাঠামোগত উন্নয়ন একদিকে যেমন সময়সাপেক্ষ, তেমনি এর সঙ্গে আর্থিক বিষয় জড়িত। দীর্ঘ মেয়াদে এগুলো নিয়ে পরিকল্পনার বিকল্প নেই। কিন্তু ট্রাফিক আইন মেনে চলার এবং আইন ভঙ্গ করলে শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনার হার ও প্রাণহানি কমানো সম্ভব।
আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির এই উচ্চ হার সত্ত্বেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে চালক বা দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তির মুখোমুখি করা যায় না। ১৭ বছরের মধ্যে সম্প্রতি একটি রায়ে সড়ক দুর্ঘটনায় এক ছাত্রীর প্রাণহানির ঘটনায় একজন চালক শাস্তি পেয়েছেন। অর্থাৎ গত ১৭ বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় যত প্রাণহানি হয়েছে, তার একটির জন্যও কেউ শাস্তি পাননি। যে পরিবারগুলো সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারিয়ে বছরের পর বছর শোক বয়ে বেড়ায়, যাঁরা পঙ্গু হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটান, তাঁদের জন্য এই পরিস্থিতি কতটা হতাশার, তা ভুক্তভোগী ছাড়া আর কেউ টের পান না বলেই হয়তো এ দিকটিতে কারোরই নজর নেই। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী চালক শাস্তি পেলে, তা দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে এবং চালকদের বেপরোয়া ভাব যে কমে আসবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
এআরআইয়ের গবেষণা প্রতিবেদনে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করা, গাড়ি খাদে পড়া থেকে ঠেকানো ও চালকের আচরণ উন্নত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এগুলো করা গেলে দুর্ঘটনার হার কমে আসবে। অন্যদিকে দুর্ঘটনা-পরবর্তী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও রয়ে গেছে ঘাটতি। দুর্ঘটনার পর আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ের মধ্যে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা গেলে মৃত্যুহার কমানো সম্ভব। দুর্ঘটনায় কোন ধরনের আঘাত পাওয়াদের কীভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া উচিত, সে ব্যাপারে প্রচার-প্রচারণা চালানো গেলে, হাসপাতালে নেওয়ার আগে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপগুলো নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। প্রতিবছর হাজার হাজার পরিবার স্বজন হারানোর কষ্ট নেবে, আর বছরের পর বছর তা বয়ে বেড়াবে—এমন একটি পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি করতে এই কাজগুলো করা কি খুব কঠিন? সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিষয়গুলো ভেবে দেখতে অনুরোধ জানাই।
No comments