কেকেআরের একাদশে অনিশ্চিত সাকিব?
একটু
চমক হয়েই এসেছিল সিদ্ধান্তটা। বাবার মৃত্যুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজে উড়ে
গিয়েছিলেন সুনীল নারাইন। ক্যারিবীয় অফ স্পিনারের অনুপস্থিতিতে কলকাতা
নাইট রাইডার্সের স্পিন বোলিংয়ের মূল দায়িত্ব সাকিব আল হাসানের ওপরেই
বর্তানোর কথা। অথচ সাকিবই প্রথম একাদশে সুযোগ পেলেন না। আর তাঁর জায়গায়
সুযোগ পেয়ে বাজিমাত করে দিলেন ব্র্যাড হগ। কাল হগ-চাওলাদের নিয়ে গড়া
কেকেআর যেভাবে বোলিং করে দিল্লিকে গুঁড়িয়ে দিল, সাকিবভক্তদের অনেকের
প্রশ্ন, কেকেআরে সাকিবের জায়গা কি অনিশ্চিত হয়ে গেল? কাল ৪৫ বছর বয়সী হগ
যেভাবে বল করেছেন, তাঁকে বাদ দেওয়া কঠিনই। ‘বুড়ো আঙুলে’র ভেলকি দেখিয়ে ৪
ওভারে মাত্র ১৯ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট, এর মধ্যে ১৬টি আবার ডট বল। পীযূষ
চাওলার সঙ্গে দুজন রীতমতো ঘোল খাইয়ে ছেড়েছেন দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে। আর
দলের ৯ উইকেটের জয়টা দর্শক হয়ে দেখতে হয়েছে সাকিবকে। ২০১১ সালে কলকাতার
হয়ে নাম লিখিয়েছিলেন সাকিব। মাঝে এক মৌসুমে শৃঙ্খলার কারণে মাঠের বাইরে
ছিলেন। ওই আসর বাদ দিলে প্রতি মৌসুমেই দলের জন্য অবদান রেখেছেন। কেকেআর
অবশ্য বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবেই খেলায় সাকিবকে। ব্যাটের চেয়ে বল হাতেই
বেশি অবদান রাখেন। প্রথম মৌসুমেই ৭ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১১ উইকেট। পরের
মৌসুমে প্রথমবারের মতো দলকে শিরোপা নেওয়ার পেছনে বল হাতে ছিল বড় অবদান,
ওই বার ৮ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১২ উইকেট, পাশাপাশি ব্যাট হাতেও ছিলেন সফল।
২০১৪ মৌসুমেও ১৩ ম্যাচে নিয়েছিলেন ১১ উইকেট। শুধু উইকেটসংখ্যায় কেকেআরে
সাকিবের অবদান বোঝা যাবে না। গুরুত্ব সময়ে জুটি ভাঙতে অধিনায়ক তাঁর হাতে
বল তুলে দিয়েছেন। সাকিব বেশির ভাগ সময়ই প্রত্যাশা মিটিয়েছেন। তা ছাড়া
ঠাস বুনুনির বোলিং করে প্রতিপক্ষের ওপর রান রেটের পাহাড়-চাপ তুলে দিতেও
সাকিবের জুড়ি মেলা ভার। ২০১৫ মৌসুমে অবশ্য বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের
সিরিজের জন্য খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। ৪ ম্যাচ খেলে পেয়েছিলেন ৪
উইকেট। কেকেআরের হয়ে ৩৮ ম্যাচ খেলে ৩৯ উইকেট পেয়েছেন। কেকেআরের হয়ে
সাকিবের চেয়ে বেশি উইকেট আছে শুধু লক্ষ্মীপতি বালাজি, জ্যাক ক্যালিস ও
সুনীল নারাইনের। ব্যাটিং অর্ডারে বেশির ভাগ সময় নিচের দিকে ব্যাটিং করেছেন
বলে রান সেভাবে তুলতে পারেননি। শুধু কেকেআরেই সাকিবের চেয়ে বেশি রান আছে
আরও ১৪ জনের। দলের প্রয়োজনে অনেক সময়ই ছয় বা সাতে নামতে হয়েছে, ব্যাট
করার সুযোগ পাননি অনেক সময়। তবে বল হাতে সেই অতৃপ্তি মিটিয়ে দিয়েছেন
ভালোমতোই। এটা তাই পরিষ্কার, বোলার সাকিবকেই চায় কেকেআর। আর একাদশে চার
বিদেশি খেলোয়াড় কোটায় জায়গা পাওয়ার লড়াইটা সাকিবের জন্য কঠিন হয়ে
গেল। নারাইন ফিরে এলে সেটি আরও কঠিন হবে সন্দেহ নেই। তা ছাড়া গত বিপিএল
থেকেই সাকিব নিজের সেরা ছন্দে নেই। পিএসএলের পর গত টি-টোয়েন্টি
বিশ্বকাপেরও বল হাতে চমক দেখাতে পেরেছেন কেবল ওমান ম্যাচে ১৫ রানে ৪ উইকেট
নিয়ে। সব মিলিয়ে সাকিবের জন্য কেকেআরের একাদশে জায়গা পাওয়া কঠিন। তবে
সাকিব তো সব সময় কঠিন চ্যালেঞ্জই ভালোবাসেন!
No comments