জরুরি হয়ে পড়েছে এক সন্তান নীতি -বিশেষ সাক্ষাৎকারে: মোহাম্মদ আলী by শিশির মোড়ল
মোহাম্মদ আলী |
সামাজিক
বিপণন বা সোশ্যাল মার্কেটিং–এর ধারণা জনপ্রিয় করেছে সোশ্যাল মার্কেটিং
কোম্পানি বা এসএমসি। পরিবার পরিকল্পনায় সামাজিক বিপণন প্রকল্প হিসেবে ১৯৭৪
সালে এসএমসির যাত্রা শুরু হয়েছিল। আজ ১১ জুলাই, বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস
উপলক্ষে এসএমসির ৪১ বছরের পথচলা, সাফল্য, ব্যবসায়িক কৌশল ও ভবিষ্যৎ
পরিকল্পনা নিয়ে প্রথম আলোকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি শিশির মোড়ল
প্রথম আলো: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্য কতখানি? এখনকার প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?
মোহাম্মদ আলী: স্বাধীনতার পর দেশে মোট প্রজনন হার বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (টিএফআর) ৬-এর বেশি ছিল। টিএফআর কমে এখন ২.২-এ দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হারও অনেক বেড়েছে। বর্তমানে ৬৬ শতাংশ দম্পতি কোনো না কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করছে। এগুলো বড় ধরনের সাফল্য।
তবে এখন কয়েকটি বিষয়ে জোর দেওয়ার সময় এসেছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের স্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহারের হার এ দেশে খুব কম। ভেসেকটমি বা লাইগেশনের মতো স্থায়ী পদ্ধতির ওপর জোর দিতে হবে। এখন এক সন্তান নীতি গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হওয়া দরকার। পাশাপাশি আচরণ পরিবর্তন এবং যোগাযোগে আরও গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
প্রথম আলো: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বা পরিবার পরিকল্পনায় দেশের সাফল্যে এসএমসির অবদান কীভাবে বর্ণনা করবেন।
মোহাম্মদ আলী: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও শিশুস্বাস্থ্যে বড় অবদান রেখেছে এসএমসি। সর্বশেষ বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপে (২০১৪) দেখা গেছে, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণকারীদের প্রতি তিনজনের একজন এসএমসির পণ্য ব্যবহার করে। অন্য গবেষণায় দেখা গেছে, এসএমসির সেবার ফলে ৪১ বছরে ১ কোটি ৬০ লাখ অপরিকল্পিত গর্ভধারণ থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। একই সঙ্গে ১২ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। এগুলো জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য খাতে এসএমসির বড় অবদান।
প্রথম আলো: বাজারে এসএমসির প্রধান পণ্য কী আছে? সাধারণ মানুষের কাছে এসব পণ্য কীভাবে পৌঁছায়?
মোহাম্মদ আলী: বর্তমানে এসএমসির আটটি পণ্যের ২৩টি ব্র্যান্ড বাজারে আছে। এর মধ্যে আছে জন্মনিরোধক বড়ি, কনডম, আইইউডি, ইমপ্লান্টস, ইনজেকটেবলস, ওআরএস, সেফ ডেলিভারি কিট, স্যানিটারি ন্যাপকিন, শিশুর জন্য অণুপুষ্টি-কণাসমৃদ্ধ পাউডার ও জিঙ্ক। এসব পণ্য সাধারণত ওষুধের দোকান, মুদি দোকান ও এনজিওতে বিক্রি হয়। এ ক্ষেত্রে এসএমসির স্যানিটারি ন্যাপকিনের কথা বিশেষভাবে বলা দরকার। এর নাম ‘জয়া’। নিম্নবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা মাথায় রেখে এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এর মান বাজারের যেকোনো উচ্চমূল্যের ন্যাপকিনের মানের সমান। অল্পদিন আগে বাজারে ছাড়লেও এর পরিচিতি ও চাহিদা ব্যাপক।
প্রথম আলো: বাজারে অনেক প্রতিষ্ঠানের একই ধরনের পণ্য আছে। কিন্তু মানুষ কেন এসএমসির পণ্যের ব্যাপারে বেশি আগ্রহী?
মোহাম্মদ আলী: ১৯৭৪ সাল থেকে এসএমসি মানুষকে কম দামে মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করে আসছে। এসএমসির সব পণ্যের দাম কম, দরিদ্র শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। এই দীর্ঘ সময়ে পণ্যের মান ঠিক রাখার ফলে এসএমসি মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। এসএমসির যেকোনো ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষের বিশ্বাস আছে যে, তিনি ঠকবেন না। উদাহরণ হিসেবে খাওয়ার স্যালাইন বা ওআরএসের কথা বলা যায়। বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তের মানুষ সাধারণ ডায়রিয়া চিকিৎসায় প্রথমেই এসএমসির স্যালাইন খোঁজে। বাজারের ৮০ শতাংশ ওআরএস এসএমসির। এটা আস্থারই পরিচয়।
প্রথম আলো: এত বড় বাজার ধরা ও মানুষের আস্থা অর্জনের পেছনের কারণ কী?
মোহাম্মদ আলী: বেশ কিছু কৌশলের কারণে এসএমসি বর্তমান অবস্থায় আসতে ও মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। একটি বড় বিতরণ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সহজে মানুষের কাছে মানসম্পন্ন পণ্য পৌঁছায়। আমাদের বাজারজাতকরণ কৌশল হচ্ছে ক্রেতাকেন্দ্রিক। ঘরের কাছের ওষুধের বা মুদি দোকানে আমাদের পণ্য পাওয়া যায়। ক্রেতারা এসএমসি ও এসএমসির পণ্যকে বিশ্বাস করে।
অন্যদিকে এসএমসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দেখতে চান যে এই প্রতিষ্ঠানটি দৃঢ়ভাবে টিকে আছে। কর্মচারীরা দেখতে পান, এই প্রতিষ্ঠানের মুনাফা কেউ নিয়ে যান না, নিতে পারেন না। মুনাফা প্রতিষ্ঠানেই বিনিয়োগ করা হয়। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাঁদের কমিটমেন্ট আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডির মতো দাতা প্রতিষ্ঠান আমাদের সহায়তা করে চলেছে এই কারণে যে, আমরা সামাজিক বিপণনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে পেরেছি। এটা এখন নিশ্চিত যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব। আমাদের ব্যাপারে সরকার ও পেশাজীবীরা উচ্চ ধারণা পোষণ করেন।
প্রথম আলো: ব্যবসার পাশাপাশি মানুষের জন্য আর কী করছে এসএমসি?
মোহাম্মদ আলী: ব্যবসার পাশাপাশি এসএমসির কিছু সামাজিক কাজও আছে। যেমন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের অনেক পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা আছে শহর ও নগরে দরিদ্র মানুষের জন্য ক্লিনিক তৈরি করা। এসব ক্লিনিকে পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে। এ ছাড়া রাজধানীর বাসস্ট্যান্ডগুলোতে বসার জায়গা, টয়লেট ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আমাদের আছে।
প্রথম আলো: পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বা সাফল্য আসেনি—এমন কিছু কি উল্লেখ করার মতো আছে?
মোহাম্মদ আলী: ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি করা মনি-মিক্সের (অণুপুষ্টি-কণাসমৃদ্ধ গুঁড়া খাবার) ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যেভাবে মানুষের সাড়া পাব বলে আমরা ভেবেছিলাম সেভাবে সাড়া পাইনি।
প্রথম আলো: এসএমসি ৪১ বছর পার করেছে। ভবিষ্যতের এসএমসির চেহারা আমরা কেমন দেখতে পাব?
মোহাম্মদ আলী: সামাজিক বিপণনের নীতি ও চর্চার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এসএমসি সামাজিক ব্যবসায় বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে চায়। মূল উদ্দেশ্য নারী, শিশু ও পরিবারের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে অবদান রাখা। ইতিমধ্যে ব্যবসা বৃদ্ধির বড় পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড করা হয়েছে। এটা লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। একটি মানসম্পন্ন ওষুধ কারখানা করার সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
অন্যদিকে এসএমসি হোল্ডিংয়ের মাধ্যমে আগের সেবা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সেবার পরিধি বাড়ানো হবে। এসএমসি এন্টারপ্রাইজের মুনাফা হোল্ডিংয়ে বিনিয়োগ করা হবে। ২০২০ সালের মধ্যে এসএমসির পণ্য উৎপাদনক্ষমতা অনেক বাড়বে, একই সঙ্গে সেবার পরিধিও অনেক বিস্তৃত হবে।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ আলী: ধন্যবাদ।
প্রথম আলো: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্য কতখানি? এখনকার প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?
মোহাম্মদ আলী: স্বাধীনতার পর দেশে মোট প্রজনন হার বা টোটাল ফার্টিলিটি রেট (টিএফআর) ৬-এর বেশি ছিল। টিএফআর কমে এখন ২.২-এ দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের হারও অনেক বেড়েছে। বর্তমানে ৬৬ শতাংশ দম্পতি কোনো না কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করছে। এগুলো বড় ধরনের সাফল্য।
তবে এখন কয়েকটি বিষয়ে জোর দেওয়ার সময় এসেছে। জন্মনিয়ন্ত্রণের স্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহারের হার এ দেশে খুব কম। ভেসেকটমি বা লাইগেশনের মতো স্থায়ী পদ্ধতির ওপর জোর দিতে হবে। এখন এক সন্তান নীতি গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হওয়া দরকার। পাশাপাশি আচরণ পরিবর্তন এবং যোগাযোগে আরও গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
প্রথম আলো: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বা পরিবার পরিকল্পনায় দেশের সাফল্যে এসএমসির অবদান কীভাবে বর্ণনা করবেন।
মোহাম্মদ আলী: জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও শিশুস্বাস্থ্যে বড় অবদান রেখেছে এসএমসি। সর্বশেষ বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপে (২০১৪) দেখা গেছে, জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণকারীদের প্রতি তিনজনের একজন এসএমসির পণ্য ব্যবহার করে। অন্য গবেষণায় দেখা গেছে, এসএমসির সেবার ফলে ৪১ বছরে ১ কোটি ৬০ লাখ অপরিকল্পিত গর্ভধারণ থেকে সুরক্ষা দিয়েছে। একই সঙ্গে ১২ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। এগুলো জনসংখ্যা ও স্বাস্থ্য খাতে এসএমসির বড় অবদান।
প্রথম আলো: বাজারে এসএমসির প্রধান পণ্য কী আছে? সাধারণ মানুষের কাছে এসব পণ্য কীভাবে পৌঁছায়?
মোহাম্মদ আলী: বর্তমানে এসএমসির আটটি পণ্যের ২৩টি ব্র্যান্ড বাজারে আছে। এর মধ্যে আছে জন্মনিরোধক বড়ি, কনডম, আইইউডি, ইমপ্লান্টস, ইনজেকটেবলস, ওআরএস, সেফ ডেলিভারি কিট, স্যানিটারি ন্যাপকিন, শিশুর জন্য অণুপুষ্টি-কণাসমৃদ্ধ পাউডার ও জিঙ্ক। এসব পণ্য সাধারণত ওষুধের দোকান, মুদি দোকান ও এনজিওতে বিক্রি হয়। এ ক্ষেত্রে এসএমসির স্যানিটারি ন্যাপকিনের কথা বিশেষভাবে বলা দরকার। এর নাম ‘জয়া’। নিম্নবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্তের ক্রয়ক্ষমতা মাথায় রেখে এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এর মান বাজারের যেকোনো উচ্চমূল্যের ন্যাপকিনের মানের সমান। অল্পদিন আগে বাজারে ছাড়লেও এর পরিচিতি ও চাহিদা ব্যাপক।
প্রথম আলো: বাজারে অনেক প্রতিষ্ঠানের একই ধরনের পণ্য আছে। কিন্তু মানুষ কেন এসএমসির পণ্যের ব্যাপারে বেশি আগ্রহী?
মোহাম্মদ আলী: ১৯৭৪ সাল থেকে এসএমসি মানুষকে কম দামে মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করে আসছে। এসএমসির সব পণ্যের দাম কম, দরিদ্র শ্রেণির ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে। এই দীর্ঘ সময়ে পণ্যের মান ঠিক রাখার ফলে এসএমসি মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। এসএমসির যেকোনো ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষের বিশ্বাস আছে যে, তিনি ঠকবেন না। উদাহরণ হিসেবে খাওয়ার স্যালাইন বা ওআরএসের কথা বলা যায়। বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তের মানুষ সাধারণ ডায়রিয়া চিকিৎসায় প্রথমেই এসএমসির স্যালাইন খোঁজে। বাজারের ৮০ শতাংশ ওআরএস এসএমসির। এটা আস্থারই পরিচয়।
প্রথম আলো: এত বড় বাজার ধরা ও মানুষের আস্থা অর্জনের পেছনের কারণ কী?
মোহাম্মদ আলী: বেশ কিছু কৌশলের কারণে এসএমসি বর্তমান অবস্থায় আসতে ও মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে। একটি বড় বিতরণ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সহজে মানুষের কাছে মানসম্পন্ন পণ্য পৌঁছায়। আমাদের বাজারজাতকরণ কৌশল হচ্ছে ক্রেতাকেন্দ্রিক। ঘরের কাছের ওষুধের বা মুদি দোকানে আমাদের পণ্য পাওয়া যায়। ক্রেতারা এসএমসি ও এসএমসির পণ্যকে বিশ্বাস করে।
অন্যদিকে এসএমসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দেখতে চান যে এই প্রতিষ্ঠানটি দৃঢ়ভাবে টিকে আছে। কর্মচারীরা দেখতে পান, এই প্রতিষ্ঠানের মুনাফা কেউ নিয়ে যান না, নিতে পারেন না। মুনাফা প্রতিষ্ঠানেই বিনিয়োগ করা হয়। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাঁদের কমিটমেন্ট আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডির মতো দাতা প্রতিষ্ঠান আমাদের সহায়তা করে চলেছে এই কারণে যে, আমরা সামাজিক বিপণনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হতে পেরেছি। এটা এখন নিশ্চিত যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারব। আমাদের ব্যাপারে সরকার ও পেশাজীবীরা উচ্চ ধারণা পোষণ করেন।
প্রথম আলো: ব্যবসার পাশাপাশি মানুষের জন্য আর কী করছে এসএমসি?
মোহাম্মদ আলী: ব্যবসার পাশাপাশি এসএমসির কিছু সামাজিক কাজও আছে। যেমন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের অনেক পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা আছে শহর ও নগরে দরিদ্র মানুষের জন্য ক্লিনিক তৈরি করা। এসব ক্লিনিকে পরিবার পরিকল্পনা সেবা ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হবে। এ ছাড়া রাজধানীর বাসস্ট্যান্ডগুলোতে বসার জায়গা, টয়লেট ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা আমাদের আছে।
প্রথম আলো: পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বা সাফল্য আসেনি—এমন কিছু কি উল্লেখ করার মতো আছে?
মোহাম্মদ আলী: ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি করা মনি-মিক্সের (অণুপুষ্টি-কণাসমৃদ্ধ গুঁড়া খাবার) ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যেভাবে মানুষের সাড়া পাব বলে আমরা ভেবেছিলাম সেভাবে সাড়া পাইনি।
প্রথম আলো: এসএমসি ৪১ বছর পার করেছে। ভবিষ্যতের এসএমসির চেহারা আমরা কেমন দেখতে পাব?
মোহাম্মদ আলী: সামাজিক বিপণনের নীতি ও চর্চার মাধ্যমে ভবিষ্যতে এসএমসি সামাজিক ব্যবসায় বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে চায়। মূল উদ্দেশ্য নারী, শিশু ও পরিবারের স্বাস্থ্য ও কল্যাণে অবদান রাখা। ইতিমধ্যে ব্যবসা বৃদ্ধির বড় পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড করা হয়েছে। এটা লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। একটি মানসম্পন্ন ওষুধ কারখানা করার সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
অন্যদিকে এসএমসি হোল্ডিংয়ের মাধ্যমে আগের সেবা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সেবার পরিধি বাড়ানো হবে। এসএমসি এন্টারপ্রাইজের মুনাফা হোল্ডিংয়ে বিনিয়োগ করা হবে। ২০২০ সালের মধ্যে এসএমসির পণ্য উৎপাদনক্ষমতা অনেক বাড়বে, একই সঙ্গে সেবার পরিধিও অনেক বিস্তৃত হবে।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ আলী: ধন্যবাদ।
No comments