সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করছেন মন্ত্রী-সাংসদ-প্রশাসন
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন রানা দাশগুপ্ত। পাশে ঐক্য পরিষদের অন্য নেতারা l ছবি: প্রথম আলো |
মন্ত্রী,
সাংসদ, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু
সম্প্রদায়ের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান
ঐক্য পরিষদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদ এ অভিযোগ করে।
সংবাদ সম্মেলনে দখলদারদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন ও দ্রুত বিচার আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও সব রাজনৈতিক দলে পৃথক সেল গঠন করারও দাবি জানানো হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমরা কারও ভোটব্যাংক নই। আমাদের বেয়াকুব ভাবা ঠিক হবে না। নাচতে নেমেছি, কিন্তু ঘোমটা দেব না।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রানা দাশগুপ্ত বলেন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরা যখন নীরব, তখন সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করছে বা করার চেষ্টা করছে। সরকারি দলের সাংসদ দবিরুল ইসলাম ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখলের চেষ্টা করছেন। পিরোজপুরের সাংসদ এম এ আউয়ালের বিরুদ্ধে স্বরূপকাঠিতে এক ব্যবসায়ীর দোকান দখলের অপপ্রয়াস চালানোর অভিযোগ উঠেছে। সংসদের হুইপ মাহবুব আরা গিনির বিরুদ্ধে গাইবান্ধার রামগঞ্জ মিশন ও আশ্রমের জমি দখল এবং গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। ফরিদপুরের ভাজনডাঙ্গার জমিদার সতীশ চন্দ্র গুহ মজুমদারের বাড়ি দখলে নিয়ে পুরোনো ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী এক মন্ত্রী। সাংবাদিকেরা প্রভাবশালী ওই মন্ত্রীর নাম জানতে চাইলে রানা দাশগুপ্ত বলেন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে দবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছয়বারের নির্বাচিত সাংসদ। এটা অনেকের ঈর্ষার কারণ। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কেউ কেউ অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’ তবে তিনি বলেন, জমি নিয়ে যে বিরোধ ছিল, তা মিটমাট হয়ে গেছে। অভিযোগ সম্পর্কে মাহবুব আরা গিনি বলেন, ‘কলেজের সীমানা দেওয়া হয়েছে। প্রাচীরের ভেতরে কিছু গাছ কাটা পড়েছে। সরেজমিনে না দেখে ঐক্য পরিষদ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কারও জমি দখল করিনি, গাছ কাটিনি।’ তবে চেষ্টা করেও সাংসদ এম এ আউয়ালের মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে ফরিদপুরের জমিদারবাড়ি সম্পর্কে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জমিদারবাড়িটি আমাদের পাশের বাড়ি। আমরা ৭০ বছর ওই বাড়ি পাহারা দিয়ে রেখেছি। অন্য এক ব্যক্তি জাল কাগজপত্র তৈরি করে ওই বাড়ি দখল করেছিল। আমরা তা দখলমুক্ত করি। পরে বাড়ির প্রকৃত মালিক অনেক পীড়াপীড়ি করায় আমরা ন্যায্য নাম দিয়ে ওই বাড়ি কিনেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এই সংবাদটিকে (জমিদারবাড়ি দখল) আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। তবে তা যদি সত্য হয়, প্রশ্ন জাগে, এ দেশের সংখ্যালঘুরা যাবে কোথায়? আমাদের কাছে নিশ্চিতভাবে খবর আছে, ফরিদপুরে দেবোত্তর সম্পত্তি বিলুপ্তির পথে।’
এরপর রানা দাশগুপ্ত ফরিদপুর জেলায় বেদখল হওয়া দেবোত্তর সম্পত্তির কিছু তথ্য তুলে ধরেন। এর মধ্যে আছে: কালীমাতা বিগ্রহের ১ হাজার ৮৬৯ শতক জমি দখল করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। শিবমন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছে জেলা কারাগারের সাক্ষাৎকার কক্ষ। জগন্নাথ বিগ্রহের ১ দশমিক ৩২ একর দেবোত্তর সম্পত্তি দখলে রেখেছেন জেলা প্রশাসক। ব্রাহ্মসমাজ মন্দির ভেঙে গড়ে তোলা হয়েছে বালিকা বিদ্যালয় ও শহীদ মিনার। পারিবারিক শিবমন্দির দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে আইন মহাবিদ্যালয়। পারিবারিক দুর্গামন্দিরের ১ হাজার ৭২৫ শতক জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে সমবায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, দখলদারেরা সংখ্যালঘুদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং চাঁদাবাজিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষ ও সাংবাদিকদের হয়রানি করছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সামগ্রিক পরিস্থিতি ফরিদপুরের চেয়ে ভিন্ন নয়। লক্ষ্মীপুরের দালালবাজারে সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা জমিদারবাড়ির ৩৬ একর দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে। নাটোরের সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ননীগোপাল কুণ্ডু ও তাঁর স্ত্রী চিত্রা রানীকে খুন করা হয়েছে। হবিগঞ্জের মাধবপুরে কলেজছাত্রী শিল্পী রানীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। কক্সবাজারে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাস চালিয়ে তাদের জায়গা দখল করেছে জাবেদ কায়সারের সন্ত্রাসী বাহিনী। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দখল ও নির্যাতনের উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের মতো বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন ভালো নেই। আদিবাসীদের মানবাধিকার পরিস্থিতিও ভালো নয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের সভাপতি সাংসদ উষাতন তালুকদার, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে দখলদারদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন ও দ্রুত বিচার আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার ও সব রাজনৈতিক দলে পৃথক সেল গঠন করারও দাবি জানানো হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমরা কারও ভোটব্যাংক নই। আমাদের বেয়াকুব ভাবা ঠিক হবে না। নাচতে নেমেছি, কিন্তু ঘোমটা দেব না।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রানা দাশগুপ্ত বলেন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীরা যখন নীরব, তখন সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করছে বা করার চেষ্টা করছে। সরকারি দলের সাংসদ দবিরুল ইসলাম ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখলের চেষ্টা করছেন। পিরোজপুরের সাংসদ এম এ আউয়ালের বিরুদ্ধে স্বরূপকাঠিতে এক ব্যবসায়ীর দোকান দখলের অপপ্রয়াস চালানোর অভিযোগ উঠেছে। সংসদের হুইপ মাহবুব আরা গিনির বিরুদ্ধে গাইবান্ধার রামগঞ্জ মিশন ও আশ্রমের জমি দখল এবং গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে। ফরিদপুরের ভাজনডাঙ্গার জমিদার সতীশ চন্দ্র গুহ মজুমদারের বাড়ি দখলে নিয়ে পুরোনো ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী এক মন্ত্রী। সাংবাদিকেরা প্রভাবশালী ওই মন্ত্রীর নাম জানতে চাইলে রানা দাশগুপ্ত বলেন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নাম গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে দবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছয়বারের নির্বাচিত সাংসদ। এটা অনেকের ঈর্ষার কারণ। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কেউ কেউ অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’ তবে তিনি বলেন, জমি নিয়ে যে বিরোধ ছিল, তা মিটমাট হয়ে গেছে। অভিযোগ সম্পর্কে মাহবুব আরা গিনি বলেন, ‘কলেজের সীমানা দেওয়া হয়েছে। প্রাচীরের ভেতরে কিছু গাছ কাটা পড়েছে। সরেজমিনে না দেখে ঐক্য পরিষদ আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে কারও জমি দখল করিনি, গাছ কাটিনি।’ তবে চেষ্টা করেও সাংসদ এম এ আউয়ালের মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে ফরিদপুরের জমিদারবাড়ি সম্পর্কে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জমিদারবাড়িটি আমাদের পাশের বাড়ি। আমরা ৭০ বছর ওই বাড়ি পাহারা দিয়ে রেখেছি। অন্য এক ব্যক্তি জাল কাগজপত্র তৈরি করে ওই বাড়ি দখল করেছিল। আমরা তা দখলমুক্ত করি। পরে বাড়ির প্রকৃত মালিক অনেক পীড়াপীড়ি করায় আমরা ন্যায্য নাম দিয়ে ওই বাড়ি কিনেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এই সংবাদটিকে (জমিদারবাড়ি দখল) আমরা বিশ্বাস করতে চাই না। তবে তা যদি সত্য হয়, প্রশ্ন জাগে, এ দেশের সংখ্যালঘুরা যাবে কোথায়? আমাদের কাছে নিশ্চিতভাবে খবর আছে, ফরিদপুরে দেবোত্তর সম্পত্তি বিলুপ্তির পথে।’
এরপর রানা দাশগুপ্ত ফরিদপুর জেলায় বেদখল হওয়া দেবোত্তর সম্পত্তির কিছু তথ্য তুলে ধরেন। এর মধ্যে আছে: কালীমাতা বিগ্রহের ১ হাজার ৮৬৯ শতক জমি দখল করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। শিবমন্দির ভেঙে তৈরি করা হয়েছে জেলা কারাগারের সাক্ষাৎকার কক্ষ। জগন্নাথ বিগ্রহের ১ দশমিক ৩২ একর দেবোত্তর সম্পত্তি দখলে রেখেছেন জেলা প্রশাসক। ব্রাহ্মসমাজ মন্দির ভেঙে গড়ে তোলা হয়েছে বালিকা বিদ্যালয় ও শহীদ মিনার। পারিবারিক শিবমন্দির দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে আইন মহাবিদ্যালয়। পারিবারিক দুর্গামন্দিরের ১ হাজার ৭২৫ শতক জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে সমবায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। রানা দাশগুপ্ত আরও বলেন, দখলদারেরা সংখ্যালঘুদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং চাঁদাবাজিসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষ ও সাংবাদিকদের হয়রানি করছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের সামগ্রিক পরিস্থিতি ফরিদপুরের চেয়ে ভিন্ন নয়। লক্ষ্মীপুরের দালালবাজারে সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা জমিদারবাড়ির ৩৬ একর দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করছে। নাটোরের সিংড়ায় মুক্তিযোদ্ধা ননীগোপাল কুণ্ডু ও তাঁর স্ত্রী চিত্রা রানীকে খুন করা হয়েছে। হবিগঞ্জের মাধবপুরে কলেজছাত্রী শিল্পী রানীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। কক্সবাজারে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাস চালিয়ে তাদের জায়গা দখল করেছে জাবেদ কায়সারের সন্ত্রাসী বাহিনী। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দখল ও নির্যাতনের উদাহরণ তুলে ধরে বলা হয়, হিন্দু সম্প্রদায়ের মতো বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন ভালো নেই। আদিবাসীদের মানবাধিকার পরিস্থিতিও ভালো নয়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের সভাপতি সাংসদ উষাতন তালুকদার, আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
No comments