এক যুবকের চোখে শত মানুষের কান্না
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পঞ্চমীঘাট এলাকায় জমি দখলের প্রতিবাদ করায় র্যা বের সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার সোহেল মাহমুদের মা আমেনা বেগমের আহাজারি। ছবিটি গত বুধবার সকালে তোলা l প্রথম আলো |
বুকে
‘ন্যায়বিচার চাই’ প্ল্যাকার্ড বা লেখা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের কাছে
দাঁড়িয়ে থাকা আবুল কালাম আজাদের দাবি শেষ পর্যন্ত শত মানুষের ন্যায়বিচার
পাওয়ার আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ঘটিয়েছে। রাস্তায় একা দাঁড়িয়ে পড়া এই যুবক কার্যত
চোখে করে নিয়ে এসেছিলেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার নানাখী গ্রামের
শত মানুষের কান্না।
শেষ পর্যন্ত আজাদের প্রতিবাদ কানে তুলেছে রাষ্ট্র। গতকাল তাঁকে ডেকে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ তাঁর কথা শুনতে চেয়েছেন।
গ্রামে জমিজমার ‘তুচ্ছ সমস্যা’ নিয়ে আজাদ কেন প্রধানমন্ত্রীর দুয়ারে কড়া নাড়ার সাহস দেখিয়েছেন, তা খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে গুরুতর সব অভিযোগ। উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট বাজারের পাশে নানাখী মৌজায় মেট্রো গার্মেন্টস অ্যান্ড ডাইং নামের একটি কারখানা করছেন নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী অমল পোদ্দার। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ওই কারখানার জন্য এক বছর ধরে এলাকার নিরীহ মানুষের ফসলি জমি জোর করে কিনে নিচ্ছেন। বিক্রি করতে রাজি না হলে বালু ফেলে দখল করছেন।
গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন, ইতিমধ্যে ২১ জন বাসিন্দার ৩৪ বিঘা জমি দখল করা হয়েছে। ৩৫ জনকে কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে জমি নিয়ে এলাকা থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। এখনো অনেককে জমি, বসতবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ কাজে কারখানার মালিককে সহায়তা করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীেগর অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী এবং র্যা বের কয়েকজন সদস্য। জমি বিক্রি করতে রাজি হননি এমন কয়েকটি পরিবারের সদস্যকে র্যা ব গ্রেপ্তার করে মাদক রাখা ও বিক্রির অভিযোগ এনে মামলা করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গিয়ে ভুক্তভোগীরা কোনো প্রতিকার পাননি। শেষ পর্যন্ত গত রোববার আজাদ নামের যুবকটি এসে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দুয়ারে। সেটা করতে গিয়েও হয়রানির শিকার হয়েছে আজাদের পরিবার।
‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো র্যা বের হাতে নির্যাতনের শিকার হলাম। সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার করা হলো চাচাতো ভাইকে। আমরা এখন কোথায় যাব?’ চোখের পানি মুছতে মুছতে গত বুধবার প্রথম আলোর কাছে প্রশ্ন রাখলেন আজাদ।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে বাড়ি ফেরার এক ঘণ্টা পর রোববার রাত আটটায় র্যা ব-১১-এর সদস্যরা পঞ্চমীঘাট বাজার থেকে আমার চাচাতো ভাই কলেজছাত্র সোহেল মাহমুদকে আটক করেন। তারপর তাঁকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাড়িতে অভিযান চালান। তাঁরা আমাদের ও আমার চাচার ঘরের (সোহেল মাহমুদের ঘর) আসবাবপত্র তছনছ করেন। আমি প্রতিবাদ করলে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। আমার মা ও চাচি এগিয়ে আসলে তাঁদেরও মারধর করেন।’ আজাদ বলেন, এরপর সোহেলকে র্যা ব-১১-এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর কাছে ৩৭০টি ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে এবং তিনি মাদক ব্যবসায়ী দাবি করে পরদিন র্যা ব-১১-এর উপপরিচালক (ডিডি) মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সোহেল মাহমুদের বাবা স্থানীয় পঞ্চমীঘাট উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক কর্মচারী নূরুদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আমাদের ও গ্রামবাসীর জমি জবরদখলের প্রতিবাদ করায় র্যা ব কারখানার মালিকের পক্ষ নিয়ে আমাদের ওপর নির্যাতন চালায়। আমার ছেলেকে মাদকের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করেছে।’
সরেজমিনে গিয়ে গ্রামের আরও দুজনের কাছ থেকে র্যা বের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ দুজনের বিরুদ্ধেও মাদকের মামলা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, তাঁদের জমিও দখল করার চেষ্টা করছেন কারখানার মালিক।
এঁদের একজন সোনারগাঁ উপজেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহানারা বেগম বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী জামাল হোসেনসহ কয়েকজনের জমি দখল করে নেওয়ায় আমি প্রতিবাদ করি। গত ২৬ ডিসেম্বর র্যা ব সদস্যরা আমার বাড়িতে এসে আমাকে ও জামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যা ব কার্যালয়ে নিয়ে যান। পরদিন আমাদের দুজনকে মাদক ব্যবসায়ী উল্লেখ করে এবং ৪৫টি ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে দাবি করে মামলা করেন। র্যা ব-১১-এর ডিএডি নজরুল ইসলাম মামলার বাদী। দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে তারপর আমরা জামিন পাই। গ্রেপ্তারের সময় আমাদের ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করা হয়, পরিবারের অন্য সদস্যদের মারধর করা হয়।’
সাদিপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য রোকসানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। কিন্তু মহিলা দলের নেত্রীসহ যাঁদের গ্রেপ্তার করে র্যা ব মাদক ব্যবসায়ী বলেছে, তাঁরা সবাই মাদকবিরোধী মানুষ। জমি দখলের প্রতিবাদ করায় সাজানো মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দলের কিছু লোকজনকে নিয়ে র্যা বের সহযোগিতায় কারখানা কর্তৃপক্ষ গ্রামবাসীর জমি দখল করে আসছে। র্যা ব যাঁদের মাদক ব্যবসায়ী উল্লেখ করে গ্রেপ্তার করেছে, তাঁদের সবার পরিবারের জমি ওই কারখানার মালিক দখল করেছেন। প্রতিবাদ করার কারণেই গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ জানান, কারখানার মালিক অমল পোদ্দার ও র্যা বের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান বলেন, এ কারখানা মালিকের জবরদখলের অত্যাচারে দলমত-নির্বিশেষে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, কারখানার ভেতরে বালু ভরাটকাজের ঠিকাদারি করছেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের ছোট ভাই নুরুজ্জামান, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাদিপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য জাকির হোসেন প্রমুখ। নুরুজ্জামান ও আমিনুল ইসলাম ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কারখানার বালু ভরাট কাজের ঠিকাদারি পেয়েছি। কিন্তু জমিগুলো কেনা হয়েছে কি না, তা আমাদের জানা নেই। আমরা কোনো রকম দখলের সঙ্গে জড়িত নই।’
নুরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওখানে মাটি ভরাট হচ্ছে, এটা জানি। তবে আমি ওই কাজের ঠিকাদার না। এর সঙ্গে কোনোভাবে যুক্তও না।’
সরেজমিন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতু পেরিয়ে সোনারগাঁয়ের দিকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার যাওয়ার পর মদনপুর বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে বাঁয়ে আরও ছয়-সাত কিলোমিটার সরু সড়ক ধরে এগোলে নানাখী গ্রাম। সেখানে মেট্রো গার্মেন্টস অ্যান্ড ডাইং নামের কারখানার জন্য বিশাল এলাকা বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। ভরাট হওয়া জমি দক্ষিণ ও পশ্চিমে ১০ ফুটের মতো উঁচু পাকা দেয়াল দিয়ে, পূর্ব ও উত্তরে টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা। জমির পূর্ব দিকে পঞ্চমীঘাট বাজার। গ্রামসংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদে ড্রেজারযন্ত্র বসিয়ে সেখান থেকে অন্তত ৬০০ ফুট পূর্ব দিকে পাইপের মাধ্যমে বালু এনে জমি ভরাট করা হচ্ছে। ভরাট হওয়া জমিতে আগের বাসিন্দাদের লাগানো কিছু আমগাছ দেখা গেল।
শেষ পর্যন্ত আজাদের প্রতিবাদ কানে তুলেছে রাষ্ট্র। গতকাল তাঁকে ডেকে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ তাঁর কথা শুনতে চেয়েছেন।
গ্রামে জমিজমার ‘তুচ্ছ সমস্যা’ নিয়ে আজাদ কেন প্রধানমন্ত্রীর দুয়ারে কড়া নাড়ার সাহস দেখিয়েছেন, তা খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে গুরুতর সব অভিযোগ। উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট বাজারের পাশে নানাখী মৌজায় মেট্রো গার্মেন্টস অ্যান্ড ডাইং নামের একটি কারখানা করছেন নারায়ণগঞ্জের ব্যবসায়ী অমল পোদ্দার। অভিযোগ উঠেছে, তিনি ওই কারখানার জন্য এক বছর ধরে এলাকার নিরীহ মানুষের ফসলি জমি জোর করে কিনে নিচ্ছেন। বিক্রি করতে রাজি না হলে বালু ফেলে দখল করছেন।
গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন, ইতিমধ্যে ২১ জন বাসিন্দার ৩৪ বিঘা জমি দখল করা হয়েছে। ৩৫ জনকে কিছু টাকা হাতে ধরিয়ে জমি নিয়ে এলাকা থেকে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। এখনো অনেককে জমি, বসতবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এ কাজে কারখানার মালিককে সহায়তা করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীেগর অঙ্গসংগঠনের কিছু নেতা-কর্মী এবং র্যা বের কয়েকজন সদস্য। জমি বিক্রি করতে রাজি হননি এমন কয়েকটি পরিবারের সদস্যকে র্যা ব গ্রেপ্তার করে মাদক রাখা ও বিক্রির অভিযোগ এনে মামলা করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গিয়ে ভুক্তভোগীরা কোনো প্রতিকার পাননি। শেষ পর্যন্ত গত রোববার আজাদ নামের যুবকটি এসে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর দুয়ারে। সেটা করতে গিয়েও হয়রানির শিকার হয়েছে আজাদের পরিবার।
‘প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যায়বিচার চাইতে গিয়ে উল্টো র্যা বের হাতে নির্যাতনের শিকার হলাম। সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার করা হলো চাচাতো ভাইকে। আমরা এখন কোথায় যাব?’ চোখের পানি মুছতে মুছতে গত বুধবার প্রথম আলোর কাছে প্রশ্ন রাখলেন আজাদ।
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে বাড়ি ফেরার এক ঘণ্টা পর রোববার রাত আটটায় র্যা ব-১১-এর সদস্যরা পঞ্চমীঘাট বাজার থেকে আমার চাচাতো ভাই কলেজছাত্র সোহেল মাহমুদকে আটক করেন। তারপর তাঁকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাড়িতে অভিযান চালান। তাঁরা আমাদের ও আমার চাচার ঘরের (সোহেল মাহমুদের ঘর) আসবাবপত্র তছনছ করেন। আমি প্রতিবাদ করলে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। আমার মা ও চাচি এগিয়ে আসলে তাঁদেরও মারধর করেন।’ আজাদ বলেন, এরপর সোহেলকে র্যা ব-১১-এর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর কাছে ৩৭০টি ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে এবং তিনি মাদক ব্যবসায়ী দাবি করে পরদিন র্যা ব-১১-এর উপপরিচালক (ডিডি) মাসুদুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
সোহেল মাহমুদের বাবা স্থানীয় পঞ্চমীঘাট উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক কর্মচারী নূরুদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আমাদের ও গ্রামবাসীর জমি জবরদখলের প্রতিবাদ করায় র্যা ব কারখানার মালিকের পক্ষ নিয়ে আমাদের ওপর নির্যাতন চালায়। আমার ছেলেকে মাদকের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করেছে।’
সরেজমিনে গিয়ে গ্রামের আরও দুজনের কাছ থেকে র্যা বের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ দুজনের বিরুদ্ধেও মাদকের মামলা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আরও অভিযোগ করেন, তাঁদের জমিও দখল করার চেষ্টা করছেন কারখানার মালিক।
এঁদের একজন সোনারগাঁ উপজেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহানারা বেগম বলেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী জামাল হোসেনসহ কয়েকজনের জমি দখল করে নেওয়ায় আমি প্রতিবাদ করি। গত ২৬ ডিসেম্বর র্যা ব সদস্যরা আমার বাড়িতে এসে আমাকে ও জামাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যা ব কার্যালয়ে নিয়ে যান। পরদিন আমাদের দুজনকে মাদক ব্যবসায়ী উল্লেখ করে এবং ৪৫টি ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে দাবি করে মামলা করেন। র্যা ব-১১-এর ডিএডি নজরুল ইসলাম মামলার বাদী। দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে তারপর আমরা জামিন পাই। গ্রেপ্তারের সময় আমাদের ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করা হয়, পরিবারের অন্য সদস্যদের মারধর করা হয়।’
সাদিপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য রোকসানা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। কিন্তু মহিলা দলের নেত্রীসহ যাঁদের গ্রেপ্তার করে র্যা ব মাদক ব্যবসায়ী বলেছে, তাঁরা সবাই মাদকবিরোধী মানুষ। জমি দখলের প্রতিবাদ করায় সাজানো মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
সাদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দলের কিছু লোকজনকে নিয়ে র্যা বের সহযোগিতায় কারখানা কর্তৃপক্ষ গ্রামবাসীর জমি দখল করে আসছে। র্যা ব যাঁদের মাদক ব্যবসায়ী উল্লেখ করে গ্রেপ্তার করেছে, তাঁদের সবার পরিবারের জমি ওই কারখানার মালিক দখল করেছেন। প্রতিবাদ করার কারণেই গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’
ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ জানান, কারখানার মালিক অমল পোদ্দার ও র্যা বের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন।
সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান বলেন, এ কারখানা মালিকের জবরদখলের অত্যাচারে দলমত-নির্বিশেষে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, কারখানার ভেতরে বালু ভরাটকাজের ঠিকাদারি করছেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের ছোট ভাই নুরুজ্জামান, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সাদিপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য জাকির হোসেন প্রমুখ। নুরুজ্জামান ও আমিনুল ইসলাম ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কারখানার বালু ভরাট কাজের ঠিকাদারি পেয়েছি। কিন্তু জমিগুলো কেনা হয়েছে কি না, তা আমাদের জানা নেই। আমরা কোনো রকম দখলের সঙ্গে জড়িত নই।’
নুরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওখানে মাটি ভরাট হচ্ছে, এটা জানি। তবে আমি ওই কাজের ঠিকাদার না। এর সঙ্গে কোনোভাবে যুক্তও না।’
সরেজমিন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুর সেতু পেরিয়ে সোনারগাঁয়ের দিকে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার যাওয়ার পর মদনপুর বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে বাঁয়ে আরও ছয়-সাত কিলোমিটার সরু সড়ক ধরে এগোলে নানাখী গ্রাম। সেখানে মেট্রো গার্মেন্টস অ্যান্ড ডাইং নামের কারখানার জন্য বিশাল এলাকা বালু দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। ভরাট হওয়া জমি দক্ষিণ ও পশ্চিমে ১০ ফুটের মতো উঁচু পাকা দেয়াল দিয়ে, পূর্ব ও উত্তরে টিনের বেড়া দিয়ে ঘেরা। জমির পূর্ব দিকে পঞ্চমীঘাট বাজার। গ্রামসংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদে ড্রেজারযন্ত্র বসিয়ে সেখান থেকে অন্তত ৬০০ ফুট পূর্ব দিকে পাইপের মাধ্যমে বালু এনে জমি ভরাট করা হচ্ছে। ভরাট হওয়া জমিতে আগের বাসিন্দাদের লাগানো কিছু আমগাছ দেখা গেল।
আবুল কালাম আজাদ |
গতকাল
দুপুরে গ্রামের বাসিন্দা আমেনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘অনেক কষ্ট
করে চার শতাংশ জমি কিনেছি। সেখানে টিনের ঘর তুলে স্বামীসহ ছোট্ট দুটি
সন্তান নিয়ে বসবাস করছি। কিন্তু অমল পোদ্দারের লোকজন আমাদের বাড়ি ছেড়ে
চলে যেতে বলেছেন।’ তিনি বলেন, তাঁর স্বামী ঢাকায় চায়ের দোকান করেন। দুই
সন্তান নিয়ে তিনি এখন ভীতসন্ত্রস্ত। ড্রেজার দিয়ে নিচু জমি ভরাট করায় তাঁর
ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে।
গ্রামের বাসিন্দারা দাবি করেন, ইতিমধ্যে ৩৫টি পরিবারের জমি নামমাত্র মূল্যে রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নানাখী গ্রামের গিয়াসউদ্দিন, মোস্তফা মিয়া, ইউনুস আলী, সালামত মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া, ফিরোজ হোসেন, ইউনুস আলী, দৌলরদী গ্রামের মোতালেব ভূঁইয়া, সোবহান ভূঁইয়া, আবদুল বাতেন, জব্বার ভূঁইয়া, সাদত আলী প্রমুখ।
যে ২১ জনের জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা হলেন ইতিমধ্যে আলোচিত আবুল কালাম আজাদ ও তাঁর চাচা, গ্রামের আবদুল হাকিম, বারেক মিয়া, কাশেম আলী, নুরুল ইসলাম, আবদুল খালেক, ঢাকার ব্যবসায়ী আবুল বাদশা, আসন আলী, হযরত আলী, সালামত মিয়া, নবী উল্লাহ, গিয়াস উদ্দিন, রহমান মিয়া, তাওলাদ হোসেন, দুলাল মিয়া, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
হাকিম আলী বলেন, ‘আমার পাঁচ বিঘা জমি বালু ফেলে দখল করা হয়েছে। চাপে পড়ে আমি দুই বিঘা জমি বিক্রি করে দিয়েছি।’
মামলা-হামলার ভয়েও অনেকে কম মূল্যে জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। দখলের প্রতিবাদ করায় গত দুই বছরে ১৬ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন নানাখী গ্রামের হেকিম আলী, তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, ছেলে ইসলাম মিয়া ও তাঁর স্ত্রী রাহিমা বেগম, কৃষক ইমান আলী ও তাঁর স্ত্রী আমেনা বেগম, নুরুল ইসলাম, আবদুল হালিম, আলমগীর মিয়া, জয়নব আলী প্রমুখ। আহত হাকিম আলী অভিযোগ করে বলেন, নির্যাতনের পর মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।
ভুক্তভোগীরা দাবি করেন, গত ছয় মাসে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ গত শনিবার এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরদিন রোববার আবুল কালাম আজাদ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনের পাশে ‘ন্যায়বিচার চাই’ প্ল্যাকার্ড বুকে নিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন।
কারখানাটির দেখভালের দায়িত্বে আছেন ব্যবসায়ী অমল পোদ্দারের ভাতিজা বাপ্পী পোদ্দার। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও জমি জোরপূর্বক দখল করিনি। বাজারমূল্য দিয়ে জমি কিনে কারখানা করছি। ইতিমধ্যে আমরা প্রায় ৪০ বিঘা জমি কিনেছি। অনেক কৃষকের জমি কেনার জন্য অগ্রিম হিসেবে বায়নার টাকা পরিশোধ করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী অমল পোদ্দার গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজাদের বাবা আবদুল খালেকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকায় ১৫ শতাংশ জমি কিনেছি।’
কিন্তু আজাদের বাবা অভিযোগ করেন, তিনি সাড়ে ১৫ শতক জমির জন্য ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বায়না করেন। বায়না চুক্তি করা হয় পাঁচ লাখ টাকার। এর মধ্যে তাঁকে চার লাখ টাকা দেওয়া হয়। বাকি এক লাখ টাকা আর দেননি অমল পোদ্দার। কিন্তু তাঁর সাড়ে ৩৬ শতাংশ জমি বালু ফেলে দখল করে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মোট ৬০ শতাংশ জমি আছে।
গ্রামের বাসিন্দারা দাবি করেন, ইতিমধ্যে ৩৫টি পরিবারের জমি নামমাত্র মূল্যে রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন নানাখী গ্রামের গিয়াসউদ্দিন, মোস্তফা মিয়া, ইউনুস আলী, সালামত মিয়া, ইব্রাহিম মিয়া, ফিরোজ হোসেন, ইউনুস আলী, দৌলরদী গ্রামের মোতালেব ভূঁইয়া, সোবহান ভূঁইয়া, আবদুল বাতেন, জব্বার ভূঁইয়া, সাদত আলী প্রমুখ।
যে ২১ জনের জমি দখল করার অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা হলেন ইতিমধ্যে আলোচিত আবুল কালাম আজাদ ও তাঁর চাচা, গ্রামের আবদুল হাকিম, বারেক মিয়া, কাশেম আলী, নুরুল ইসলাম, আবদুল খালেক, ঢাকার ব্যবসায়ী আবুল বাদশা, আসন আলী, হযরত আলী, সালামত মিয়া, নবী উল্লাহ, গিয়াস উদ্দিন, রহমান মিয়া, তাওলাদ হোসেন, দুলাল মিয়া, নুরুল ইসলাম প্রমুখ।
হাকিম আলী বলেন, ‘আমার পাঁচ বিঘা জমি বালু ফেলে দখল করা হয়েছে। চাপে পড়ে আমি দুই বিঘা জমি বিক্রি করে দিয়েছি।’
মামলা-হামলার ভয়েও অনেকে কম মূল্যে জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। দখলের প্রতিবাদ করায় গত দুই বছরে ১৬ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা হলেন নানাখী গ্রামের হেকিম আলী, তাঁর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, ছেলে ইসলাম মিয়া ও তাঁর স্ত্রী রাহিমা বেগম, কৃষক ইমান আলী ও তাঁর স্ত্রী আমেনা বেগম, নুরুল ইসলাম, আবদুল হালিম, আলমগীর মিয়া, জয়নব আলী প্রমুখ। আহত হাকিম আলী অভিযোগ করে বলেন, নির্যাতনের পর মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।
ভুক্তভোগীরা দাবি করেন, গত ছয় মাসে একাধিকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা-পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ গত শনিবার এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরদিন রোববার আবুল কালাম আজাদ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনের পাশে ‘ন্যায়বিচার চাই’ প্ল্যাকার্ড বুকে নিয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন।
কারখানাটির দেখভালের দায়িত্বে আছেন ব্যবসায়ী অমল পোদ্দারের ভাতিজা বাপ্পী পোদ্দার। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কারও জমি জোরপূর্বক দখল করিনি। বাজারমূল্য দিয়ে জমি কিনে কারখানা করছি। ইতিমধ্যে আমরা প্রায় ৪০ বিঘা জমি কিনেছি। অনেক কৃষকের জমি কেনার জন্য অগ্রিম হিসেবে বায়নার টাকা পরিশোধ করেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী অমল পোদ্দার গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজাদের বাবা আবদুল খালেকের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকায় ১৫ শতাংশ জমি কিনেছি।’
কিন্তু আজাদের বাবা অভিযোগ করেন, তিনি সাড়ে ১৫ শতক জমির জন্য ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বায়না করেন। বায়না চুক্তি করা হয় পাঁচ লাখ টাকার। এর মধ্যে তাঁকে চার লাখ টাকা দেওয়া হয়। বাকি এক লাখ টাকা আর দেননি অমল পোদ্দার। কিন্তু তাঁর সাড়ে ৩৬ শতাংশ জমি বালু ফেলে দখল করে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মোট ৬০ শতাংশ জমি আছে।
সোনারগাঁ উপজেলার নানাখী গ্রামে এই জায়গা দখল করে একটি শিল্পকারখানা গড়ে তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রামের লোকজন। গত মঙ্গলবার তোলা ছবি l প্রথম আলো |
অমল
পোদ্দার জানান, তিনিও ওই গ্রামের বাসিন্দা। সেখানে তাঁদের ২০-২২ বিঘা
পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে। বাকি ১৭-১৮ বিঘা সম্পত্তি তিনি কিনে মোট ৩০-৩৫ বিঘা
জমি ভরাট করছেন।
অমল পোদ্দার দাবি করেন, তিনি বা তাঁর লোক বাড়িঘর ছেড়ে যেতে কাউকে হুমকি-ধমকি দেননি। জমি ভরাটের কাজ না পেয়ে এঁরা তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুলছেন। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন, আমি অন্যের জমি ভরাট করেছি, তাহলে সরকার যে শাস্তি দেবে, তা মাথা পেতে নেব।’
জমি দখলের জন্য র্যা বকে ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে অমল পোদ্দার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ বিষয়ে র্যা ব ও এর সিও (পরিচালক) ভালো বলতে পারবেন।’
র্যা ব-১১-এর পরিচালক লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সোহেল নামে একজন যার কাছে ইয়াবা থাকার তথ্য ছিল, তাকে ধরতে র্যা ব অভিযান চালায়। আজাদ কী বলেছে, তা আমরা জানি না। আমার সঙ্গেও আজাদের কোনো কথা হয়নি।’
তবে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, যাকে (সোহেল) র্যা ব গ্রেপ্তার করেছে, তাদের পরিবারের জমি কারখানার মালিক দখল করেছে। মামলাটির তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের পর জানা যাবে, সে মাদক ব্যবসায়ী কি না।’ তিনি বলেন, ‘আমি এখানে নতুন। এর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করা হয়েছে কি না, আমার জানা নেই।’
অমল পোদ্দার জানান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা গত বুধবার তাঁকে ডেকে বালু ভরাট বন্ধ রাখার জন্য বলেছেন। এ কারণে ভরাটকাজ বন্ধ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক বুধবার প্রথম আলোকে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী র্যা ব সদস্যরা কোনো অন্যায়ে যুক্ত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করা হবে বলে জানান তিনি।
অমল পোদ্দার দাবি করেন, তিনি বা তাঁর লোক বাড়িঘর ছেড়ে যেতে কাউকে হুমকি-ধমকি দেননি। জমি ভরাটের কাজ না পেয়ে এঁরা তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুলছেন। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি প্রমাণ করতে পারেন, আমি অন্যের জমি ভরাট করেছি, তাহলে সরকার যে শাস্তি দেবে, তা মাথা পেতে নেব।’
জমি দখলের জন্য র্যা বকে ব্যবহারের অভিযোগের বিষয়ে অমল পোদ্দার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ বিষয়ে র্যা ব ও এর সিও (পরিচালক) ভালো বলতে পারবেন।’
র্যা ব-১১-এর পরিচালক লে. কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সোহেল নামে একজন যার কাছে ইয়াবা থাকার তথ্য ছিল, তাকে ধরতে র্যা ব অভিযান চালায়। আজাদ কী বলেছে, তা আমরা জানি না। আমার সঙ্গেও আজাদের কোনো কথা হয়নি।’
তবে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, যাকে (সোহেল) র্যা ব গ্রেপ্তার করেছে, তাদের পরিবারের জমি কারখানার মালিক দখল করেছে। মামলাটির তদন্ত হচ্ছে। তদন্তের পর জানা যাবে, সে মাদক ব্যবসায়ী কি না।’ তিনি বলেন, ‘আমি এখানে নতুন। এর আগে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করা হয়েছে কি না, আমার জানা নেই।’
অমল পোদ্দার জানান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা গত বুধবার তাঁকে ডেকে বালু ভরাট বন্ধ রাখার জন্য বলেছেন। এ কারণে ভরাটকাজ বন্ধ রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক বুধবার প্রথম আলোকে বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী র্যা ব সদস্যরা কোনো অন্যায়ে যুক্ত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ করা হবে বলে জানান তিনি।
No comments