বিশ্ববাজারে তেলের দাম কম, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কমছে, দাম বাড়বে কেন? by অরুণ কর্মকার
বিশ্ববাজারে
জ্বালানি তেলের দাম কমায় দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন মূল্য কমেছে। অথচ
বিদ্যুতের দাম কমানো হচ্ছে না। বরং এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)
বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
বেসরকারি খাতের যেসব বিদ্যুৎ কোম্পানি সরকারের অনুমোদন নিয়ে নিজেরাই জ্বালানি (ফার্নেস) তেল আমদানি করছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছে অনেক কম দামে। কিন্তু বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পিডিবির প্রস্তাবে সে দাম দেখানো হয়নি। দেখানো হয়েছে পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সরবরাহ করা তেলের সরকার নির্ধারিত দাম। আর সেই দামের ভিত্তিতে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিইআরসিতে প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা হিসাব কষে বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার এখন পর্যন্ত ১১টি ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কোম্পানিকে নিজেদের ব্যবহারের জন্য ফার্নেস তেল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ছয়-সাতটি কোম্পানি তেল আমদানি শুরু করেছে। তাদের আমদানি করা তেলে বর্তমানে প্রায় ৭৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় এবং ওই কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জ্বালানি তেলের দাম কমায় ওই কোম্পানিগুলোর ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্র থেকে পিডিবি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পাচ্ছে গড়ে ১০ টাকা করে। এসব কোম্পানির বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি লিটার ফার্নেস তেলের দাম পড়ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকার মধ্যে।
অপরদিকে সরকার নির্ধারিত বিপিসির দামে তেল নিয়ে যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রতি লিটার তেলের দাম পড়ছে ৬২ টাকা। ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়ছে ১৬-১৭ টাকা। ফার্নেস তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হলে ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে গড়ে ১০ টাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব, যা কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রের দামের প্রায় সমান।
জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী ম. তামিম প্রথম আলোকে বলেন, মাত্র কয়েকটি কোম্পানির তেলের দাম কম হওয়াতেই বিদ্যুতের গড় উৎপাদন মূল্য সাড়ে ছয় টাকা থেকে কমে ছয় টাকার কাছে চলে এসেছে। দেশে সব মিলে তেলভিত্তিক কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে আড়াই হাজার মেগাওয়াটের বেশি। এর সবটার জন্যই তেলের দাম কমানো হলে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন মূল্য পাঁচ টাকার কাছাকাছি চলে আসবে। ফলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো দরকার হবে না। এর সুবিধা পাবেন দেশের প্রায় সব মানুষ।
এ ছাড়া সরকার ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার মেয়াদ বাড়িয়ে আগের চুক্তি নবায়ন করায় সেখানেও বিদ্যুতের দাম আগের তুলনায় কমেছে। কাজেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আর কোনো যৌক্তিক অবস্থা বিরাজ করছে না বলে সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো বলছে।
এ ছাড়া কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র স্থাপন বিলম্বিত হওয়ায় আরও কয়েক বছর ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিকসহ তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে হবে। তেলচালিত কেন্দ্রের সংখ্যা এবং উৎপাদনের পরিমাণও আরও বাড়াতে হবে। এর ফলে তেলের দাম না কমালে বিদ্যুতের উৎপাদন মূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে।
বর্তমানে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে বিইআরসির নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেছে, এটা নিয়ে কাজ ও চিন্তাভাবনা চলছে। দাম তো কিছুটা বাড়াতেই হবে। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত গণশুনানির ভিত্তিতে গ্যাসের দাম গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ এবং বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫-৬ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। তবে তা খুব শিগগির নয়।
দাম বাড়ানোর বিষয়ে গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও একটি সভা হয়েছে। সেই সভায় দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সভার সূত্র জানায়। এর একটি হচ্ছে তেলের দাম কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের উৎপাদন মূল্য কমার পরও দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা। আরেকটি হচ্ছে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়ার যে চিন্তা সরকারের ছিল, তা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো বলছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমার সম্ভাবনা আছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ, ইরানের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। ওই নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান বিশ্ববাজারে স্বাভাবিকভাবে তেল বিক্রি করতে পারছিল না। এখন সে বাধা উঠে যাওয়ায় বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে। তাতে দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া ইরান সম্প্রতি বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে যে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ তেল কিনলে তারা বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ চটের ব্যাগ নেবে। এ রকম বিনিময় বাণিজ্যে তেলের দামে কিছুটা বাড়তি সুবিধাও পাওয়া যেতে পারে।
বেসরকারি খাতের যেসব বিদ্যুৎ কোম্পানি সরকারের অনুমোদন নিয়ে নিজেরাই জ্বালানি (ফার্নেস) তেল আমদানি করছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) তাদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছে অনেক কম দামে। কিন্তু বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পিডিবির প্রস্তাবে সে দাম দেখানো হয়নি। দেখানো হয়েছে পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সরবরাহ করা তেলের সরকার নির্ধারিত দাম। আর সেই দামের ভিত্তিতে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিইআরসিতে প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা হিসাব কষে বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন নেই।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার এখন পর্যন্ত ১১টি ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কোম্পানিকে নিজেদের ব্যবহারের জন্য ফার্নেস তেল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। এর মধ্যে ছয়-সাতটি কোম্পানি তেল আমদানি শুরু করেছে। তাদের আমদানি করা তেলে বর্তমানে প্রায় ৭৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় এবং ওই কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জ্বালানি তেলের দাম কমায় ওই কোম্পানিগুলোর ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্র থেকে পিডিবি প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পাচ্ছে গড়ে ১০ টাকা করে। এসব কোম্পানির বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি লিটার ফার্নেস তেলের দাম পড়ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকার মধ্যে।
অপরদিকে সরকার নির্ধারিত বিপিসির দামে তেল নিয়ে যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে আছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রতি লিটার তেলের দাম পড়ছে ৬২ টাকা। ফলে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়ছে ১৬-১৭ টাকা। ফার্নেস তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হলে ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে গড়ে ১০ টাকায় প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব, যা কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রের দামের প্রায় সমান।
জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী ম. তামিম প্রথম আলোকে বলেন, মাত্র কয়েকটি কোম্পানির তেলের দাম কম হওয়াতেই বিদ্যুতের গড় উৎপাদন মূল্য সাড়ে ছয় টাকা থেকে কমে ছয় টাকার কাছে চলে এসেছে। দেশে সব মিলে তেলভিত্তিক কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে আড়াই হাজার মেগাওয়াটের বেশি। এর সবটার জন্যই তেলের দাম কমানো হলে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন মূল্য পাঁচ টাকার কাছাকাছি চলে আসবে। ফলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো দরকার হবে না। এর সুবিধা পাবেন দেশের প্রায় সব মানুষ।
এ ছাড়া সরকার ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কেনার মেয়াদ বাড়িয়ে আগের চুক্তি নবায়ন করায় সেখানেও বিদ্যুতের দাম আগের তুলনায় কমেছে। কাজেই বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর আর কোনো যৌক্তিক অবস্থা বিরাজ করছে না বলে সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো বলছে।
এ ছাড়া কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র স্থাপন বিলম্বিত হওয়ায় আরও কয়েক বছর ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিকসহ তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে হবে। তেলচালিত কেন্দ্রের সংখ্যা এবং উৎপাদনের পরিমাণও আরও বাড়াতে হবে। এর ফলে তেলের দাম না কমালে বিদ্যুতের উৎপাদন মূল্য অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে।
বর্তমানে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে বিইআরসির নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেছে, এটা নিয়ে কাজ ও চিন্তাভাবনা চলছে। দাম তো কিছুটা বাড়াতেই হবে। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত গণশুনানির ভিত্তিতে গ্যাসের দাম গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ এবং বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫-৬ শতাংশ বাড়ানো হতে পারে। তবে তা খুব শিগগির নয়।
দাম বাড়ানোর বিষয়ে গত মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও একটি সভা হয়েছে। সেই সভায় দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সভার সূত্র জানায়। এর একটি হচ্ছে তেলের দাম কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের উৎপাদন মূল্য কমার পরও দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা। আরেকটি হচ্ছে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসে ভর্তুকি দেওয়ার যে চিন্তা সরকারের ছিল, তা কীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।
সরকারি-বেসরকারি সূত্রগুলো বলছে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আরও কমার সম্ভাবনা আছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ, ইরানের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। ওই নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরান বিশ্ববাজারে স্বাভাবিকভাবে তেল বিক্রি করতে পারছিল না। এখন সে বাধা উঠে যাওয়ায় বাজারে তেলের সরবরাহ বাড়বে। তাতে দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া ইরান সম্প্রতি বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে যে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ তেল কিনলে তারা বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ চটের ব্যাগ নেবে। এ রকম বিনিময় বাণিজ্যে তেলের দামে কিছুটা বাড়তি সুবিধাও পাওয়া যেতে পারে।
No comments