রংপুরের জাপা রাজনীতি: ‘দুর্গে’ দুর্বল সংগঠন কাটিয়ে ওঠার চেষ্টাও আছে
রংপুরকে একসময় বলা হতো জাতীয় পার্টির (জাপা) ‘দুর্গ’। কিন্তু সেই অবস্থা এখন আর অক্ষত আছে বলে মনে করেন না দলের নেতারাই। দলের কেন্দ্রে একের পর এক নাটকীয় সিদ্ধান্ত নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা কমিয়েছে।
জাপার নেতা-কর্মীরা বলছেন, কখনো কমিটি বাতিল, কখনো পুনর্বহাল, বহিষ্কার, পরে আবার দলে নিয়ে কমিটির দায়িত্ব দেওয়া, জাতীয় রাজনীতিতে দলের চেয়ারম্যানের একেক সময় একেক কথা—এমন সব কারণেই দলের এ হাল। হতাশ অনেকে দলীয় কার্যালয় এমনকি রাজনীতি থেকেও দূরে সরে যাচ্ছেন। এতে রংপুরে দলের রাজনৈতিক অবস্থানও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় জাপা সূত্র বলেছে, এ অবস্থা কাটাতে দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বারবার রংপুরে আসছেন। চেষ্টা চলছে নতুন করে দল গোছানোর। গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর মোফাজ্জল হোসেনকে আহ্বায়ক ও দলীয় চেয়ারম্যানের ভাতিজা ও দলীয় সাবেক সাংসদ আসিফ শাহরিয়ারকে সদস্যসচিব করে দুই সদস্যের জেলা কমিটি এবং মোস্তাফিজার রহমানকে আহ্বায়ক ও এস এম ইয়াসিরকে সদস্যসচিব করে দুই সদস্যের মহানগর কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। এর বিরোধিতাও হয়। দলের দুই পক্ষের মধ্যে দলীয় কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মহড়াও চলে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতারা দলীয় কার্যালয়ে বসছেন। পরে জেলা কমিটিতে ১২১ ও মহানগরে ১১৪ জন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এগুলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি নয়। কারণ, নতুন অন্তর্ভুক্ত সবাই সদস্য।
সর্বশেষ গত ২৫ জুন এইচ এম এরশাদ রংপুরে জাপার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ইফতার মাহফিলে অংশ নেন। জিলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত ওই ইফতারে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়। ঈদের পর জেলা ও মহানগরের কাউন্সিল করার কথা জানিয়ে সেখানে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেছেন, নতুন করে দল গোছাতে হবে। সাংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এই রংপুর থেকেই আবার জাতীয় পার্টিকে জাগিয়ে তুলতে হবে।
জাপার একাধিক সূত্র বলেছে, ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে ঘিরে দলের মধ্যে অসন্তোষ চরম রূপ নেয়। দলের তিনজন মেয়র পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁরা হলেন: বর্তমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, জেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান ও রংপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র এ কে এম আবদুর রউফ মানিক। অবশ্য পরে মসিউর রহমান মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
আবদুর রউফ মানিক ও মোস্তাফিজার রহমান নির্বাচন করলেও তাঁরা হেরে যান। মেয়র পদে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই সময় ঢাকা থেকে তৎকালীন জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান, পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুর রউফ মানিক ও যুব সংহতির সভাপতি এস এম ইয়াসিরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁদের আবারও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল করে নতুন কমিটি করা হয়েছে। রউফ বর্তমানে জাপার মহানগর কমিটির সদস্য।
জেলা জাপার সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান জেলা আহ্বায়ক কমিটির প্রবীণ সদস্য সৈয়দ নূর আহমেদ বলেন, একসময় রংপুরে জাতীয় পার্টির সুদিন ছিল। সময়ের প্রেক্ষাপটে এই দলটির জনপ্রিয়তা হারিয়ে যেতে বসেছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও দলের অনেক ক্ষতি করেছে। এরপরও দলকে এগিয়ে নিতে দলীয় চেয়ারম্যান (এরশাদ) এই বয়সেও ছুটে চলেছেন।
জাপার মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন, চেষ্টা করা হলেও দলের মধ্যে আগের সেই জৌলুশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। নিজেদের মধ্যে দলাদলি করে নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। অনেকেই দল করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মহানগর কমিটির সদস্যসচিব ইয়াসিরসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী বসে আছেন। ইয়াসির বলেন, দলের মধ্যে আগের সেই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এখন তেমন একটা নেই।
আর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, অনেক নেতা-কর্মী এখন আর দলীয় কার্যালয়ে আসেন না। নতুনদের দিয়ে দল গোছাতে কষ্ট হচ্ছে।
নতুন করে দল গোছাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানালেন জেলা কমিটির সদস্যসচিব ও সাবেক সাংসদ আসিফ শাহরিয়ারও। তিনি বলেন, ‘জেলা কমিটির অনেকেই এখন নিষ্ক্রিয়। আমার নিজেরও দলীয় কার্যালয়ে যাতায়াত কম। এরপরও সম্মেলন করার প্রয়োজন রয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে জেলা কমিটির কাউন্সিল করা হবে।’
জাপার নেতা-কর্মীরা বলছেন, কখনো কমিটি বাতিল, কখনো পুনর্বহাল, বহিষ্কার, পরে আবার দলে নিয়ে কমিটির দায়িত্ব দেওয়া, জাতীয় রাজনীতিতে দলের চেয়ারম্যানের একেক সময় একেক কথা—এমন সব কারণেই দলের এ হাল। হতাশ অনেকে দলীয় কার্যালয় এমনকি রাজনীতি থেকেও দূরে সরে যাচ্ছেন। এতে রংপুরে দলের রাজনৈতিক অবস্থানও দুর্বল হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় জাপা সূত্র বলেছে, এ অবস্থা কাটাতে দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বারবার রংপুরে আসছেন। চেষ্টা চলছে নতুন করে দল গোছানোর। গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর মোফাজ্জল হোসেনকে আহ্বায়ক ও দলীয় চেয়ারম্যানের ভাতিজা ও দলীয় সাবেক সাংসদ আসিফ শাহরিয়ারকে সদস্যসচিব করে দুই সদস্যের জেলা কমিটি এবং মোস্তাফিজার রহমানকে আহ্বায়ক ও এস এম ইয়াসিরকে সদস্যসচিব করে দুই সদস্যের মহানগর কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। এর বিরোধিতাও হয়। দলের দুই পক্ষের মধ্যে দলীয় কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মহড়াও চলে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতারা দলীয় কার্যালয়ে বসছেন। পরে জেলা কমিটিতে ১২১ ও মহানগরে ১১৪ জন সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এগুলো পূর্ণাঙ্গ কমিটি নয়। কারণ, নতুন অন্তর্ভুক্ত সবাই সদস্য।
সর্বশেষ গত ২৫ জুন এইচ এম এরশাদ রংপুরে জাপার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ইফতার মাহফিলে অংশ নেন। জিলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত ওই ইফতারে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়। ঈদের পর জেলা ও মহানগরের কাউন্সিল করার কথা জানিয়ে সেখানে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে এরশাদ বলেছেন, নতুন করে দল গোছাতে হবে। সাংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। এই রংপুর থেকেই আবার জাতীয় পার্টিকে জাগিয়ে তুলতে হবে।
জাপার একাধিক সূত্র বলেছে, ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনকে ঘিরে দলের মধ্যে অসন্তোষ চরম রূপ নেয়। দলের তিনজন মেয়র পদে প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাঁরা হলেন: বর্তমান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, জেলা জাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান ও রংপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র এ কে এম আবদুর রউফ মানিক। অবশ্য পরে মসিউর রহমান মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন।
আবদুর রউফ মানিক ও মোস্তাফিজার রহমান নির্বাচন করলেও তাঁরা হেরে যান। মেয়র পদে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী সরফুদ্দীন আহমেদ। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই সময় ঢাকা থেকে তৎকালীন জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান, পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুর রউফ মানিক ও যুব সংহতির সভাপতি এস এম ইয়াসিরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁদের আবারও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল করে নতুন কমিটি করা হয়েছে। রউফ বর্তমানে জাপার মহানগর কমিটির সদস্য।
জেলা জাপার সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান জেলা আহ্বায়ক কমিটির প্রবীণ সদস্য সৈয়দ নূর আহমেদ বলেন, একসময় রংপুরে জাতীয় পার্টির সুদিন ছিল। সময়ের প্রেক্ষাপটে এই দলটির জনপ্রিয়তা হারিয়ে যেতে বসেছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও দলের অনেক ক্ষতি করেছে। এরপরও দলকে এগিয়ে নিতে দলীয় চেয়ারম্যান (এরশাদ) এই বয়সেও ছুটে চলেছেন।
জাপার মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলছেন, চেষ্টা করা হলেও দলের মধ্যে আগের সেই জৌলুশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। নিজেদের মধ্যে দলাদলি করে নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। অনেকেই দল করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মহানগর কমিটির সদস্যসচিব ইয়াসিরসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী বসে আছেন। ইয়াসির বলেন, দলের মধ্যে আগের সেই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এখন তেমন একটা নেই।
আর মহানগর কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, অনেক নেতা-কর্মী এখন আর দলীয় কার্যালয়ে আসেন না। নতুনদের দিয়ে দল গোছাতে কষ্ট হচ্ছে।
নতুন করে দল গোছাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানালেন জেলা কমিটির সদস্যসচিব ও সাবেক সাংসদ আসিফ শাহরিয়ারও। তিনি বলেন, ‘জেলা কমিটির অনেকেই এখন নিষ্ক্রিয়। আমার নিজেরও দলীয় কার্যালয়ে যাতায়াত কম। এরপরও সম্মেলন করার প্রয়োজন রয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে জেলা কমিটির কাউন্সিল করা হবে।’
No comments