আটষট্টি বছর পরে প্রকৃত স্বাধীনতা পেতে চলেছি
দুদুবার
আমরা স্বাধীনতা দেখলাম, কিন্তু প্রকৃত অর্থে ছিটমহলে যারা থাকি, এখনও
স্বাধীনতা পাই নি। এতগুলো বছর পরে আজ আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা পেতে চলেছি।
তার জন্ম হয়েছিল ব্রিটিশ-শাসনাধীন ভারতের নাগরিক হিসেবে। এর পর কয়েকবার নাগরিকত্ব বদলেছে তার। ৭৫ বছরের এক জীবনেই পোয়াতুরকুঠি ছিটমহলের বৃদ্ধ মনসুর আলি মিঞা ভারতীয় থেকে হয়েছেন পাকিস্তানী, তার পর বাংলাদেশী।
তার পর এখন আবার - ৬৮ বছর পর - তিনি ফেরত পাচ্ছেন তার আদি নাগরিকত্ব, বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে।
আনুষ্ঠানিক ঘটনাটা ঘটছে আজ মাঝরাতে। ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হবার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে প্রায় ৫২ হাজার ছিটমহলবাসীর পরিচয়হীন অবস্থা।
ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশী ছিটমহল পোয়াতুরকুঠির বাসিন্দা ৭৫ বছর বয়সী মনসুর আলি মিঞা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ৬৮ বছর ধরে কীভাবে কেটেছে ছিটমহলবাসীর জীবন?
আমার জন্ম ১৯৪১ সালে। এখন বয়স ৭৫। আমরা বাপ-দাদা ১৪ পুরুষ এই গ্রামেরই বাসিন্দা।কিন্তু ভারতের স্বাধীনতার দু বছর পর।
মনসুর আলি বলছিলেন, ৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ভারত স্বাধীন হল হিন্দুস্তান পাকিস্তান ভাগ হয়ে গেল। আর ১৯৪৯ সালে কোচবিহারের রাজা ভারতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন আর তারা হয়ে গেলেন ছিটমহলের বাসিন্দা।
১৯৭১ সালে আবার পূর্ব পাকিস্তান থেকে জন্ম নিল বাংলাদেশ। দুদুবার আমরা স্বাধীনতা দেখলাম, কিন্তু ছিটমহলে যারা থাকি, তার এখনও প্রকৃত স্বাধীনতা পাই নি।
৬৮ বছর ধরে আমরা অন্ধকারের বাসিন্দা। নাগরিকত্ব নেই, প্রশাসন নেই মিথ্যার আশ্রয় করে বাস করতে হয় আমাদের।
এমনও হয়েছে যে স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য ভারতের হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্বামীর নাম ভাঁড়াতে হয়। এভাবেই মামাকে বাবা বানিয়ে ভারতের স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে আমাদের ছেলেপুলেরা।
আমাদের গ্রাম যেন জেলখানা।
মনসুর আলি মিঞা বলছেন, এরকমও হয়েছে, ১৯৬৬ সাল থেকে প্রায় সাত বছর আমরা গ্রাম থেকে বেরতে পারি নি। গ্রামে ফেরিওয়ালারা আসত। আমরা গ্রাম থেকে বেরলেই ভারতের পুলিশ তাড়া করত।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কড়াকড়িটা কমে যায়। এতগুলো বছর পরে আজ আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা পেতে চলেছি।
আমার তো বয়স হয়ে গেল কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মকে যেন মনুষ্যেতর জীবন না কাটাতে হয় তারা যেন নিজের পরিচয় নিয়ে বাঁচতে পারে এটাই আমার আশা।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
তার জন্ম হয়েছিল ব্রিটিশ-শাসনাধীন ভারতের নাগরিক হিসেবে। এর পর কয়েকবার নাগরিকত্ব বদলেছে তার। ৭৫ বছরের এক জীবনেই পোয়াতুরকুঠি ছিটমহলের বৃদ্ধ মনসুর আলি মিঞা ভারতীয় থেকে হয়েছেন পাকিস্তানী, তার পর বাংলাদেশী।
তার পর এখন আবার - ৬৮ বছর পর - তিনি ফেরত পাচ্ছেন তার আদি নাগরিকত্ব, বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময়ের মধ্যে দিয়ে।
আনুষ্ঠানিক ঘটনাটা ঘটছে আজ মাঝরাতে। ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে ১৬২টি ছিটমহল বিনিময় হবার মধ্যে দিয়ে শেষ হবে প্রায় ৫২ হাজার ছিটমহলবাসীর পরিচয়হীন অবস্থা।
ভারতের মধ্যে থাকা বাংলাদেশী ছিটমহল পোয়াতুরকুঠির বাসিন্দা ৭৫ বছর বয়সী মনসুর আলি মিঞা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, ৬৮ বছর ধরে কীভাবে কেটেছে ছিটমহলবাসীর জীবন?
আমার জন্ম ১৯৪১ সালে। এখন বয়স ৭৫। আমরা বাপ-দাদা ১৪ পুরুষ এই গ্রামেরই বাসিন্দা।কিন্তু ভারতের স্বাধীনতার দু বছর পর।
মনসুর আলি বলছিলেন, ৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ভারত স্বাধীন হল হিন্দুস্তান পাকিস্তান ভাগ হয়ে গেল। আর ১৯৪৯ সালে কোচবিহারের রাজা ভারতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন আর তারা হয়ে গেলেন ছিটমহলের বাসিন্দা।
১৯৭১ সালে আবার পূর্ব পাকিস্তান থেকে জন্ম নিল বাংলাদেশ। দুদুবার আমরা স্বাধীনতা দেখলাম, কিন্তু ছিটমহলে যারা থাকি, তার এখনও প্রকৃত স্বাধীনতা পাই নি।
৬৮ বছর ধরে আমরা অন্ধকারের বাসিন্দা। নাগরিকত্ব নেই, প্রশাসন নেই মিথ্যার আশ্রয় করে বাস করতে হয় আমাদের।
এমনও হয়েছে যে স্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য ভারতের হাসপাতালে নিয়ে গেলে স্বামীর নাম ভাঁড়াতে হয়। এভাবেই মামাকে বাবা বানিয়ে ভারতের স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করে আমাদের ছেলেপুলেরা।
আমাদের গ্রাম যেন জেলখানা।
মনসুর আলি মিঞা বলছেন, এরকমও হয়েছে, ১৯৬৬ সাল থেকে প্রায় সাত বছর আমরা গ্রাম থেকে বেরতে পারি নি। গ্রামে ফেরিওয়ালারা আসত। আমরা গ্রাম থেকে বেরলেই ভারতের পুলিশ তাড়া করত।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর কড়াকড়িটা কমে যায়। এতগুলো বছর পরে আজ আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা পেতে চলেছি।
আমার তো বয়স হয়ে গেল কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মকে যেন মনুষ্যেতর জীবন না কাটাতে হয় তারা যেন নিজের পরিচয় নিয়ে বাঁচতে পারে এটাই আমার আশা।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
No comments