টিলার পাশে ৫০ পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস by খলিল রহমান
সুনামগঞ্জের ছাতক শহরে একটি টিলার চারপাশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে ৫০টি পরিবার। ছবি -প্রথম আলো |
সুনামগঞ্জের
ছাতক শহরে একটি উঁচু টিলার চারপাশে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে ৫০টি
পরিবার। টিলার ওপর রয়েছে প্রায় দেড় শ বছরের পুরোনো একটি পাকা স্তম্ভ।
ভঙ্গুর অবস্থায় থাকায় স্তম্ভটি এখন টিলা ধসের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে
দিয়েছে।
টিলাটি স্থানীয়ভাবে ‘ইংলিশ টিলা’ হিসেবে পরিচিত। ঝুঁকির মুখে থাকা ২৮টি পরিবারকে অন্যত্র সরে যেতে পৌরসভার পক্ষ থেকে ছয় মাস আগে নোটিশ দেওয়া হলেও তারা সরে যায়নি। এসব পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, তাঁরা ভূমিহীন। যাওয়ার জায়গা নেই। তাই ঝুঁকি জেনেও সেখানে বসবাস করছেন।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, টিলাসহ এখানে দুই একর ৬০ শতক জমি আছে। এর মধ্যে এক একর ৯৮ শতক সরকারি খাস। সরকারি জমি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। তাই মানুষজন ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাতক পৌর শহরের বাগবাড়ি এলাকায় এই টিলার অবস্থান। ১৮৬০ সালে টিলার ওপর স্বামী জর্জ ইংলিশের স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছিলেন হেনরি ইংলিশ। জর্জ ইংলিশ ১৮৫০ সালে ছাতকে মারা যান।
স্তম্ভটি এখন ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। ভেঙে পড়েছে কিছু অংশও। যেকোনো সময় পুরোটাই ধসে পড়তে পারে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, স্বাধীনতার পর থেকে মানুষ এই টিলার পাদদেশে ঘরবাড়ি করে বসবাস শুরু করে। বর্তমানে ৫০টি পরিবার রয়েছে। এদের ২৮টি খাসজমিতে রয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি টিনের বেড়া ও চালা দিয়ে খুপরি ঘরের মতো। টিলার উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। উত্তর দিকের খুপরি ঘরগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির দিনে ভয় তাঁদের বেশি। যেকোনো সময় টিলাসহ স্তম্ভটি ধসে পড়তে পারে—এই আশঙ্কায় দুটি পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। এখন যারা আছে, তারাও চরম আতঙ্কে রয়েছে। টিলার উত্তর দিকের বাসিন্দা সামিয়ারা বেগম বলেন, ‘টিলা আর মাস্তুল (স্তম্ভ) অখন মাথার উফরে মহা বিপদের লাখান খাড়া অইয়া আছে। রাইত ঘুমাইলে ডর খরে, কোন সময় ভাইঙ্গা আইয়া ঘরের উফরে পড়ে।’ টিলার পূর্ব পাশে টিনের বেড়া ও টিনের চালার ১০ থেকে ১২টি ছোট ঘর। এ দিকটাও ঝুঁকিপূর্ণ।
টিলার একেবারে ঢালে প্রথম ঘরটি রোজিনা বেগমের। দুই সন্তান নিয়ে থাকেন তিনি। স্বামী নেই। কাজ করেন অন্যের বাড়িতে। রোজিনা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। যাইমু কই, সরকার যদি জায়গা-জমিন দিয়ে ঘর বানাইয়া দিত তাইলে উপায় অইত। না অইলে এই বিপদের মাঝেই থাকত অইব।’
বাগবাড়ি এলাকার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন বলেন, ২০০৭ সালে কিছু পরিবারকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে আবার তারা চলে আসে। এখন পুরো টিলাই ঝুঁকিতে আছে।
সুনামগঞ্জ-৫ আসনের (ছাতক-দোয়ারাবাজার) সাবেক সাংসদ কলিমউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখানে ৫০টি পরিবার মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। টিলার ওপরে যে স্তম্ভটি রয়েছে, সেটির একাংশ ভেঙে গেছে। এখন হালকা ভূমিকম্প হলে টিলাসহ সেটি ধসে পড়তে পারে। প্রশাসনের উচিত, দ্রুত ভূমিহীন পরিবারগুলোকে অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে ঝুঁকিমুক্ত করা।’
ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা তাদের সরে যেতে নোটিশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা যায়নি। সেই উদ্যোগ আবার নেওয়া হবে।’
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান বলেন, ‘ঝুঁকির বিষয়টি আমরা জানি। তবে ভূমিহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে আদালতের কোনো স্থিতাবস্থা আছে কি না, সেটি দেখতে হবে। আমরা শিগগিরই এই মানুষদের ঝুঁকি থেকে রক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করব।’
টিলাটি স্থানীয়ভাবে ‘ইংলিশ টিলা’ হিসেবে পরিচিত। ঝুঁকির মুখে থাকা ২৮টি পরিবারকে অন্যত্র সরে যেতে পৌরসভার পক্ষ থেকে ছয় মাস আগে নোটিশ দেওয়া হলেও তারা সরে যায়নি। এসব পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, তাঁরা ভূমিহীন। যাওয়ার জায়গা নেই। তাই ঝুঁকি জেনেও সেখানে বসবাস করছেন।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, টিলাসহ এখানে দুই একর ৬০ শতক জমি আছে। এর মধ্যে এক একর ৯৮ শতক সরকারি খাস। সরকারি জমি নিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা রয়েছে। তাই মানুষজন ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাতক পৌর শহরের বাগবাড়ি এলাকায় এই টিলার অবস্থান। ১৮৬০ সালে টিলার ওপর স্বামী জর্জ ইংলিশের স্মৃতি ধরে রাখতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছিলেন হেনরি ইংলিশ। জর্জ ইংলিশ ১৮৫০ সালে ছাতকে মারা যান।
স্তম্ভটি এখন ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। ভেঙে পড়েছে কিছু অংশও। যেকোনো সময় পুরোটাই ধসে পড়তে পারে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, স্বাধীনতার পর থেকে মানুষ এই টিলার পাদদেশে ঘরবাড়ি করে বসবাস শুরু করে। বর্তমানে ৫০টি পরিবার রয়েছে। এদের ২৮টি খাসজমিতে রয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি টিনের বেড়া ও চালা দিয়ে খুপরি ঘরের মতো। টিলার উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে। উত্তর দিকের খুপরি ঘরগুলো সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির দিনে ভয় তাঁদের বেশি। যেকোনো সময় টিলাসহ স্তম্ভটি ধসে পড়তে পারে—এই আশঙ্কায় দুটি পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। এখন যারা আছে, তারাও চরম আতঙ্কে রয়েছে। টিলার উত্তর দিকের বাসিন্দা সামিয়ারা বেগম বলেন, ‘টিলা আর মাস্তুল (স্তম্ভ) অখন মাথার উফরে মহা বিপদের লাখান খাড়া অইয়া আছে। রাইত ঘুমাইলে ডর খরে, কোন সময় ভাইঙ্গা আইয়া ঘরের উফরে পড়ে।’ টিলার পূর্ব পাশে টিনের বেড়া ও টিনের চালার ১০ থেকে ১২টি ছোট ঘর। এ দিকটাও ঝুঁকিপূর্ণ।
টিলার একেবারে ঢালে প্রথম ঘরটি রোজিনা বেগমের। দুই সন্তান নিয়ে থাকেন তিনি। স্বামী নেই। কাজ করেন অন্যের বাড়িতে। রোজিনা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। যাইমু কই, সরকার যদি জায়গা-জমিন দিয়ে ঘর বানাইয়া দিত তাইলে উপায় অইত। না অইলে এই বিপদের মাঝেই থাকত অইব।’
বাগবাড়ি এলাকার ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন বলেন, ২০০৭ সালে কিছু পরিবারকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে আবার তারা চলে আসে। এখন পুরো টিলাই ঝুঁকিতে আছে।
সুনামগঞ্জ-৫ আসনের (ছাতক-দোয়ারাবাজার) সাবেক সাংসদ কলিমউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখানে ৫০টি পরিবার মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে। টিলার ওপরে যে স্তম্ভটি রয়েছে, সেটির একাংশ ভেঙে গেছে। এখন হালকা ভূমিকম্প হলে টিলাসহ সেটি ধসে পড়তে পারে। প্রশাসনের উচিত, দ্রুত ভূমিহীন পরিবারগুলোকে অন্যত্র পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে ঝুঁকিমুক্ত করা।’
ছাতক পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা তাদের সরে যেতে নোটিশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা যায়নি। সেই উদ্যোগ আবার নেওয়া হবে।’
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান বলেন, ‘ঝুঁকির বিষয়টি আমরা জানি। তবে ভূমিহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে আদালতের কোনো স্থিতাবস্থা আছে কি না, সেটি দেখতে হবে। আমরা শিগগিরই এই মানুষদের ঝুঁকি থেকে রক্ষার প্রক্রিয়া শুরু করব।’
No comments