গণিত অলিম্পিয়াডের তারকারা কে কোথায়? by মুনির হাসান
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডে দেশের পক্ষে প্রথম ব্রোঞ্জজয়ী দল। ছবি: প্রথম আলো |
২০০৫
সালে মেক্সিকোর মেরিদায় প্রথম বাংলাদেশ দল নিয়ে যাই আন্তর্জাতিক গণিত
অলিম্পিয়াড (আইএমও) অংশ নিতে। কায়কোবাদ স্যারের (অধ্যাপক মোহাম্মদ
কায়কোবাদ) হিসেবে প্রথম হলেও সেটি একটি অত্যন্ত ভালো দল। সম্ভাব্য ২৪২
নম্বরের মধ্যে আমাদের অর্জন হলো মাত্র তিন নম্বর, ছয়জন মিলে! কারণ খুব
সহজ। বাড়ি ফেরার সময় আমাদের সেই দলের দলনেতা মুনিবুর রহমান স্যারকে
(অধ্যাপক মুনিবুর রহমান চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) জিজ্ঞেস করেছিলাম
প্রশ্নগুলো কেমন। স্যার একবাক্যে বলেছিলেন, ‘আমাদের মাস্টার্সের
শিক্ষার্থীদের জন্যও কঠিন!’ আমাদের দলীয় অবস্থান ছিল ৯১টি দেশের ৮৬তম। আর
১১ তম বারে অংশ নিয়ে এবার আমাদের দলীয় অবস্থান ৩৩ তম। এবং সেটি দক্ষিণ
এশিয়ার বড় শক্তি ভারতের ওপরে। ভারতের অবস্থান ৩৭। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা
আমাদের অনেক পেছনে।
বলছিলাম ২০০৫ সালের দলের কথা। সেই দলের ছয় সদস্যের বর্তমান অবস্থান দেখলেই আমরা বুঝতে পারব দলটি কেমন ছিল। মাহবুবুল হাসান বুয়েটে পড়ে সেখানকার শিক্ষক হয়ে এখন গুগলের জেনেভা অফিসে কাজ করছেন। শাহরিয়ার রউফ গুগলের আমেরিকা অফিসে আছেন। তাহমিদ রাফি বুয়েট থেকে ডিগ্রি করে গড়ে তুলেছেন দ্বিমিক কম্পিউটিং স্কুল নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সেটির প্রধান নির্বাহী তিনি। সৈয়দ মোস্তফা তাহসিন চুয়েটের ডিগ্রি করে এখন চাকরি করছেন। দলের দুই মেয়ের একজন রাফাতুল ফারিয়া বুয়েট থেকে পাশ করে প্রথম শিক্ষকতা করেছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। এখন পিএইচডি করার জন্য রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পার্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর সাবরিনা তাবাসসুম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন থেকে এমবিএ করে এখন উচ্চশিক্ষার জন্য গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়।
২০০৫ সালে যখন আমরা গণিত ক্যাম্প করি তখন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন ড. মাহবুব মজুমদার। মাহবুব স্ট্যানফোর্ডের গ্র্যাজুয়েট, এমআইটির মাস্টার্স এবং কেমব্রিজের পিএইচডি। মাহবুব আমাকে বললেন, আইএমওর পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের বিদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। আমার একটা ধারণা ছিল, স্নাতক পর্যায়ে এমআইটি-হার্ভার্ডে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের পাঠানো অসম্ভব একটা কাজ। কিন্তু মাহবুব বললেন, ওদের যে মেধা, তাতে রাস্তা দেখিয়ে দিলেই হবে। এবং কেবল আইওমও দলের সদস্যরা নয়, যারা গণিত ক্যাম্প পর্যন্ত আসতে পারে তারা সবাই আসলে যোগ্য।
এরপর থেকে আমাদের আইওমও দলের সদস্যরা বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বিদেশের প্রথম শ্রেণির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্য ২০০৬ সালে স্লোভেনিয়া থেকে দেশের জন্য প্রথম সম্মানজনক স্বীকৃতি বয়ে আনা সৌমেন দাশ টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করে এখন আমেরিকায় পিএইচডি করছেন। তাঁর সঙ্গে আছেন তাঁর সহপাঠী তানভীর আহমেদ ভূঞা। তানভীর আছেন ক্যালটেকে। সৌমেনের সঙ্গে সম্মানজনক স্বীকৃতি পাওয়া শহিদুল ইসলাম বুয়েটের শিক্ষক হয়ে এখন পিএইচডি করছেন। আমাদের প্রথম ব্রোঞ্জ পদক (২০০৯, ব্রেমেন) জয়ী সামিন রিয়াসাত কেমব্রিজ থেকে গণিতে স্নাতক হয়ে দেশে ফিরে এক বছর শিক্ষকতা করেছেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়। এখন যোগ দিয়েছেন কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ে। উদ্দেশ্য পিএইচডি। আমরা যখন থাইল্যান্ডের চিয়ানমাই শহরে এবারের আইওমওর খাতা দেখা নিয়ে ব্যস্ত তখন সামিন ছিলেন আমেরিকার গণিত ক্যাম্পে। সেখানকার গণিত সমিতি তাঁকে দাওয়াত দিয়েছে আমেরিকার আগামী দিনের গণিত দলের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের। সামিনের সঙ্গে ব্রোঞ্জ জয়ী নাজিয়া চৌধুরী এমআইটি থেকে ডিগ্রি নিয়ে দেশে কিছুদিন কাটিয়েছেন। আগামী ২১ জুলাই তিনি চলে যাবেন সিঙ্গাপুরে মেডিসিনে উচ্চতর ডিগ্রির অন্বেষণে। পরের বছর কাজাখস্তানে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন তারিক আদনান। এবার হার্ভার্ড থেকে পড়া শেষ করে এখন ই-বে তে কাজ করছেন। কিছুদিন আগে তৈরি করছেন স্বল্পমূল্যের কম্পিউটিং ডিভাইস বাংলা পাই কম্পিউটার। সেই দলের অন্যতম সদস্য হক মোহাম্মদ ইশফাক স্ট্যানফোর্ড থেকে ডিগ্রি শেষ করে সেখানেই পিএইচডি করবেন বলে ঠিক করেছেন। দেশে তারিকের পড়ালেখা কুষ্টিয়ায় আর ইশফাকের ময়মনসিংহে। ২০১১-তে ব্রোঞ্জ এবং ২০১২তে দেশের জন্য প্রথম রূপার পদক নিয়ে আসা ধনঞ্জয় বিশ্বাস এখন পড়ছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর সহপাঠী হাসান জুবায়ের পড়ছে বুয়েটে। পড়ালেখার পাশাপাশি তারা দুজনই এখন সিলিকনভ্যালীর কোম্পানি ব্যাকপেকে হ্যাকার হিসেবে কাজ করছে। বুয়েটেই পড়ছে নাফিজা আঞ্জুম ও প্রাণন রহমান খান। ২০১১ সাল থেকে আমরা মেয়েদের জন্য আলাদা গণিত ক্যাম্পের আয়োজন করি। প্রথম লীলাবতী ক্যাম্পে এসেছিলেন শিঞ্জিনি সাহা। তিনি এখন পড়ছেন এমআইটিতে। সেখানে আরও পড়ছেন তামান্না ইসলাম উর্মি, সৌরভ দাশ (দুইটি ব্রোঞ্জ পদক), বৃষ্টি শিকদার। এ বছর সেখানে যোগ দেবে আর এক রূপাজয়ী নূর মোহাম্মদ শফিউল্লাহ।
বলছিলাম ২০০৫ সালের দলের কথা। সেই দলের ছয় সদস্যের বর্তমান অবস্থান দেখলেই আমরা বুঝতে পারব দলটি কেমন ছিল। মাহবুবুল হাসান বুয়েটে পড়ে সেখানকার শিক্ষক হয়ে এখন গুগলের জেনেভা অফিসে কাজ করছেন। শাহরিয়ার রউফ গুগলের আমেরিকা অফিসে আছেন। তাহমিদ রাফি বুয়েট থেকে ডিগ্রি করে গড়ে তুলেছেন দ্বিমিক কম্পিউটিং স্কুল নামে একটি প্রতিষ্ঠান। সেটির প্রধান নির্বাহী তিনি। সৈয়দ মোস্তফা তাহসিন চুয়েটের ডিগ্রি করে এখন চাকরি করছেন। দলের দুই মেয়ের একজন রাফাতুল ফারিয়া বুয়েট থেকে পাশ করে প্রথম শিক্ষকতা করেছেন আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। এখন পিএইচডি করার জন্য রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পার্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর সাবরিনা তাবাসসুম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসন থেকে এমবিএ করে এখন উচ্চশিক্ষার জন্য গেছেন অস্ট্রেলিয়ায়।
২০০৫ সালে যখন আমরা গণিত ক্যাম্প করি তখন আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন ড. মাহবুব মজুমদার। মাহবুব স্ট্যানফোর্ডের গ্র্যাজুয়েট, এমআইটির মাস্টার্স এবং কেমব্রিজের পিএইচডি। মাহবুব আমাকে বললেন, আইএমওর পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের বিদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া দরকার। আমার একটা ধারণা ছিল, স্নাতক পর্যায়ে এমআইটি-হার্ভার্ডে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের পাঠানো অসম্ভব একটা কাজ। কিন্তু মাহবুব বললেন, ওদের যে মেধা, তাতে রাস্তা দেখিয়ে দিলেই হবে। এবং কেবল আইওমও দলের সদস্যরা নয়, যারা গণিত ক্যাম্প পর্যন্ত আসতে পারে তারা সবাই আসলে যোগ্য।
এরপর থেকে আমাদের আইওমও দলের সদস্যরা বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি বিদেশের প্রথম শ্রেণির বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্য ২০০৬ সালে স্লোভেনিয়া থেকে দেশের জন্য প্রথম সম্মানজনক স্বীকৃতি বয়ে আনা সৌমেন দাশ টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করে এখন আমেরিকায় পিএইচডি করছেন। তাঁর সঙ্গে আছেন তাঁর সহপাঠী তানভীর আহমেদ ভূঞা। তানভীর আছেন ক্যালটেকে। সৌমেনের সঙ্গে সম্মানজনক স্বীকৃতি পাওয়া শহিদুল ইসলাম বুয়েটের শিক্ষক হয়ে এখন পিএইচডি করছেন। আমাদের প্রথম ব্রোঞ্জ পদক (২০০৯, ব্রেমেন) জয়ী সামিন রিয়াসাত কেমব্রিজ থেকে গণিতে স্নাতক হয়ে দেশে ফিরে এক বছর শিক্ষকতা করেছেন এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়। এখন যোগ দিয়েছেন কানাডার ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ে। উদ্দেশ্য পিএইচডি। আমরা যখন থাইল্যান্ডের চিয়ানমাই শহরে এবারের আইওমওর খাতা দেখা নিয়ে ব্যস্ত তখন সামিন ছিলেন আমেরিকার গণিত ক্যাম্পে। সেখানকার গণিত সমিতি তাঁকে দাওয়াত দিয়েছে আমেরিকার আগামী দিনের গণিত দলের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের। সামিনের সঙ্গে ব্রোঞ্জ জয়ী নাজিয়া চৌধুরী এমআইটি থেকে ডিগ্রি নিয়ে দেশে কিছুদিন কাটিয়েছেন। আগামী ২১ জুলাই তিনি চলে যাবেন সিঙ্গাপুরে মেডিসিনে উচ্চতর ডিগ্রির অন্বেষণে। পরের বছর কাজাখস্তানে ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছিলেন তারিক আদনান। এবার হার্ভার্ড থেকে পড়া শেষ করে এখন ই-বে তে কাজ করছেন। কিছুদিন আগে তৈরি করছেন স্বল্পমূল্যের কম্পিউটিং ডিভাইস বাংলা পাই কম্পিউটার। সেই দলের অন্যতম সদস্য হক মোহাম্মদ ইশফাক স্ট্যানফোর্ড থেকে ডিগ্রি শেষ করে সেখানেই পিএইচডি করবেন বলে ঠিক করেছেন। দেশে তারিকের পড়ালেখা কুষ্টিয়ায় আর ইশফাকের ময়মনসিংহে। ২০১১-তে ব্রোঞ্জ এবং ২০১২তে দেশের জন্য প্রথম রূপার পদক নিয়ে আসা ধনঞ্জয় বিশ্বাস এখন পড়ছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। তাঁর সহপাঠী হাসান জুবায়ের পড়ছে বুয়েটে। পড়ালেখার পাশাপাশি তারা দুজনই এখন সিলিকনভ্যালীর কোম্পানি ব্যাকপেকে হ্যাকার হিসেবে কাজ করছে। বুয়েটেই পড়ছে নাফিজা আঞ্জুম ও প্রাণন রহমান খান। ২০১১ সাল থেকে আমরা মেয়েদের জন্য আলাদা গণিত ক্যাম্পের আয়োজন করি। প্রথম লীলাবতী ক্যাম্পে এসেছিলেন শিঞ্জিনি সাহা। তিনি এখন পড়ছেন এমআইটিতে। সেখানে আরও পড়ছেন তামান্না ইসলাম উর্মি, সৌরভ দাশ (দুইটি ব্রোঞ্জ পদক), বৃষ্টি শিকদার। এ বছর সেখানে যোগ দেবে আর এক রূপাজয়ী নূর মোহাম্মদ শফিউল্লাহ।
২০১১-তে ব্রোঞ্জ এবং ২০১২-তে দেশের জন্য প্রথম রুপার পদক নিয়ে আসা ধনঞ্জয় বিশ্বাস এখন পড়ছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো |
গণিত
ক্যাম্পের ক্যাম্পারদের অনেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে সেখানকার শিক্ষক হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে হাসনাইন হেইকেল
এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষক। অভীক রায় বুয়েটের
শিক্ষকতার পাঠ চুকিয়ে পিএইচডি করতে রওনা দিচ্ছেন।
অনেকেই লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে যোগ দিয়েছেন কর্মক্ষেত্রে। কিন্তু মনের গভীরে লালন করে যাচ্ছে গণিত অলিম্পিয়াডকে। কারণ তাঁরা সবাই নাজিয়া চৌধুরীর মতো বিশ্বাস করে, “আমার আজকের ‘আমি’র মধ্যে বিশাল একটা অংশ জুড়ে আছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। এই গণিত অলিম্পিয়াড আমাকে গণিতের পাশাপাশি শিখিয়েছে স্বপ্ন দেখতে, স্বপ্নটা পাওয়ার জন্য লড়তে, ভালোবাসতে, বড় আশা রাখতে, ধৈর্য ধরতে। গণিত অলিম্পিয়াডের সঙ্গেই আমার এই ছোট জীবনের খুশির মুহূর্ত যেমন এসেছে, তেমনি এসেছে ব্যর্থতার মুহূর্তও। ব্যর্থ যখন হয়েছি, পরীক্ষায় যখন শূন্য পেয়েছি, তখন মনে হয়েছে পুরা আকাশটা যেন মাথায় ভেঙে পড়ল। কিন্তু গণিত অলিম্পিয়াডের স্বপ্নালু মানুষগুলো আমাকে বারবার করে বলেছেন, লেগে থাক, লেগে থাক। এটাই এখন আমার জীবনে চলার মন্ত্র-লেগে থাক। এই মন্ত্রটা শেখানোর জন্য, এই ‘আমি’টাকে গড়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের কাছে আমি ঋণী।”
অনেকেই লেখাপড়ার পাঠ চুকিয়ে যোগ দিয়েছেন কর্মক্ষেত্রে। কিন্তু মনের গভীরে লালন করে যাচ্ছে গণিত অলিম্পিয়াডকে। কারণ তাঁরা সবাই নাজিয়া চৌধুরীর মতো বিশ্বাস করে, “আমার আজকের ‘আমি’র মধ্যে বিশাল একটা অংশ জুড়ে আছে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড। এই গণিত অলিম্পিয়াড আমাকে গণিতের পাশাপাশি শিখিয়েছে স্বপ্ন দেখতে, স্বপ্নটা পাওয়ার জন্য লড়তে, ভালোবাসতে, বড় আশা রাখতে, ধৈর্য ধরতে। গণিত অলিম্পিয়াডের সঙ্গেই আমার এই ছোট জীবনের খুশির মুহূর্ত যেমন এসেছে, তেমনি এসেছে ব্যর্থতার মুহূর্তও। ব্যর্থ যখন হয়েছি, পরীক্ষায় যখন শূন্য পেয়েছি, তখন মনে হয়েছে পুরা আকাশটা যেন মাথায় ভেঙে পড়ল। কিন্তু গণিত অলিম্পিয়াডের স্বপ্নালু মানুষগুলো আমাকে বারবার করে বলেছেন, লেগে থাক, লেগে থাক। এটাই এখন আমার জীবনে চলার মন্ত্র-লেগে থাক। এই মন্ত্রটা শেখানোর জন্য, এই ‘আমি’টাকে গড়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের কাছে আমি ঋণী।”
No comments