ছাত্রলীগের সম্মেলন সামনে রেখে পদধারীদের বাদ দিয়ে ভোটার করা হচ্ছে ‘অনুগত’ কর্মীদের by আসিফুর রহমান
ছাত্রলীগের রংপুর জেলা শাখার কমিটিতে পদধারী নেতার সংখ্যা ১৩। কেন্দ্রীয় কমিটিতে ২৫ জনের যে ভোটার তালিকা (কাউন্সিলর) পাঠানো হয়েছে, তাতে পদধারী মাত্র চারজনের নাম রয়েছে। তাঁরা হলেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও দুজন সহসভাপতি। বাকি ২১ জনের পরিচয় ‘ছাত্রলীগ কর্মী’।
ছাত্রলীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে এভাবে ‘অনুগত কর্মীদের’ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, যেসব স্থানে কমিটি নেই বা মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি রয়েছে, সেসব স্থানে তড়িঘড়ি করে কমিটি দেওয়া হচ্ছে। তাতেও কথিত ‘সিন্ডিকেটের’ অনুগতরা ঠাঁই পাচ্ছেন বলে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায় থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কেবল গত রবি ও সোমবারই ২৪টি কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
রংপুর জেলা কমিটির পদধারী এমন চারজন নেতার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজন দাবি করেন, তাঁরা ভোটার তালিকা দেখেছেন, তাতে তাঁদের নাম নেই। অপর দুজন বলেন, তাঁদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি নেওয়া হয়নি। এমনকি সম্মেলনের দাওয়াতপত্রও পাননি।
জানতে চাইলে রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, কমিটির পদধারী সবাইকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতাদের এ দাবি ঠিক কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল আগামীকাল শনিবার ও পরদিন রোববার ছাত্রলীগের ২৮তম জাতীয় সম্মেলনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে। তিনি বলেন, যেসব তালিকা জমা পড়েছে, তা কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই বুধবার রাতে ভোটার তালিকা অনুমোদন করা হয়েছে। কিন্তু সেটা প্রকাশ করা হবে না। তিনি বলেন, ‘ভোটার তালিকা আমাদের কাছে থাকবে। যাঁরা ভোটার তাঁদের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে ভোট নেওয়া হবে।’
রংপুরের মতো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির পাঠানো ভোটার তালিকায়ও পদধারী নেতাদের মধ্যে কেবল চারজনের নাম রয়েছে। বাকি ২১ জনের পরিচয় ‘ছাত্রলীগ কর্মী’। কমিটির সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা সংগঠনের নিয়ম-শৃঙ্খলা ও নেতৃত্ব মেনে চলেন এবং যাঁদের গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তাঁদের ভোটার তালিকায় রাখা হয়েছে।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ১০ সদস্যবিশিষ্ট ঝিনাইদহ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্যে চারজনকে ভোটার করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল আহমেদ বলেন, ১০ জনের কমিটি পরে বর্ধিত করে ১৪১ সদস্য করা হয়। সেখান থেকেই পছন্দ অনুযায়ী ২৫ জনকে ভোটার করেছেন। তাঁর দাবি, নির্বাচন কমিশন থেকে তাঁকে পছন্দমতো ভোটার তালিকা করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গঠনতন্ত্রে এ বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সুপারিশের ভিত্তিতেই ভোটার তালিকা করা হয়ে থাকে।
ঢাকা বিভাগের চারটি জেলার ভোটার তালিকা সংগ্রহ করে দেখা গেছে, পদধারী নেতাদের না রেখে কলেজ শাখার সদস্য পর্যায়ের কিংবা কর্মীদের ভোটার করা হয়েছে। ঢাকা জেলা কমিটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে যাঁদের পরিচয় দেওয়া হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুগত। আমি সিন্ডিকেটের বাইরের নেতার অনুসারী। তাই ভোটার তালিকায় আমার নাম নেই।’
সংগঠনের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে আগের সম্মেলনগুলোর মতো এবারও একটি মহল সক্রিয় রয়েছে। যা নেতা-কর্মীদের কাছে ‘সিন্ডিকেট’ হিসেবে পরিচিত। অনেক জেলা কমিটিতেই এই কথিত সিন্ডিকেটের অনুগত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন বলে প্রচার আছে। তাঁরা অনুগতদের ভোটার করেছেন বলে অভিযোগ আছে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বর্তমান কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্য, প্রতিটি জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৫ জন ‘কাউন্সিলরের’ ভোটে পরবর্তী দুই বছরের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির সদস্য থাকেন ১২১ জন। এঁদের মধ্যে কারা ভোটার হবেন, সেটা গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট করে বলা নেই। আবার বেশির ভাগ জেলায়ই পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। এখন আবার নতুন কমিটি দেওয়া হচ্ছে। যার সবগুলোই আংশিক কমিটি। ফলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পছন্দমতো ব্যক্তিদের ভোটার করার সুযোগ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, কারা ভোটার হবেন, তা জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এখতিয়ার। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাঁর দাবি, কথিত সিন্ডিকেট বা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থে অনুগতদের নিয়ে ভোটার তালিকা করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ তিনি এ প্রথম শুনেছেন। এ সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই।
এদিকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক জয়দেব নন্দী প্রথম আলোকে বলেন, সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে কি না, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি ভোট হয়, তবে সারা দেশের ১০১টি জেলা শাখা ও বিদেশের ১১টি শাখার ভোটাররা গোপন ব্যালটে নতুন নেতা নির্বাচন করবেন। ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে।
ছাত্রলীগের আসন্ন জাতীয় সম্মেলন সামনে রেখে এভাবে ‘অনুগত কর্মীদের’ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, যেসব স্থানে কমিটি নেই বা মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি রয়েছে, সেসব স্থানে তড়িঘড়ি করে কমিটি দেওয়া হচ্ছে। তাতেও কথিত ‘সিন্ডিকেটের’ অনুগতরা ঠাঁই পাচ্ছেন বলে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায় থেকে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে কেবল গত রবি ও সোমবারই ২৪টি কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
রংপুর জেলা কমিটির পদধারী এমন চারজন নেতার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজন দাবি করেন, তাঁরা ভোটার তালিকা দেখেছেন, তাতে তাঁদের নাম নেই। অপর দুজন বলেন, তাঁদের কাছ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি নেওয়া হয়নি। এমনকি সম্মেলনের দাওয়াতপত্রও পাননি।
জানতে চাইলে রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, কমিটির পদধারী সবাইকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের নেতাদের এ দাবি ঠিক কি না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল আগামীকাল শনিবার ও পরদিন রোববার ছাত্রলীগের ২৮তম জাতীয় সম্মেলনের জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে। তিনি বলেন, যেসব তালিকা জমা পড়েছে, তা কোনো কাটাছেঁড়া ছাড়াই বুধবার রাতে ভোটার তালিকা অনুমোদন করা হয়েছে। কিন্তু সেটা প্রকাশ করা হবে না। তিনি বলেন, ‘ভোটার তালিকা আমাদের কাছে থাকবে। যাঁরা ভোটার তাঁদের ছবির সঙ্গে মিলিয়ে ভোট নেওয়া হবে।’
রংপুরের মতো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির পাঠানো ভোটার তালিকায়ও পদধারী নেতাদের মধ্যে কেবল চারজনের নাম রয়েছে। বাকি ২১ জনের পরিচয় ‘ছাত্রলীগ কর্মী’। কমিটির সভাপতি সঞ্জীবন চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা সংগঠনের নিয়ম-শৃঙ্খলা ও নেতৃত্ব মেনে চলেন এবং যাঁদের গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে তাঁদের ভোটার তালিকায় রাখা হয়েছে।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর ১০ সদস্যবিশিষ্ট ঝিনাইদহ জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্যে চারজনকে ভোটার করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাকিল আহমেদ বলেন, ১০ জনের কমিটি পরে বর্ধিত করে ১৪১ সদস্য করা হয়। সেখান থেকেই পছন্দ অনুযায়ী ২৫ জনকে ভোটার করেছেন। তাঁর দাবি, নির্বাচন কমিশন থেকে তাঁকে পছন্দমতো ভোটার তালিকা করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গঠনতন্ত্রে এ বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সুপারিশের ভিত্তিতেই ভোটার তালিকা করা হয়ে থাকে।
ঢাকা বিভাগের চারটি জেলার ভোটার তালিকা সংগ্রহ করে দেখা গেছে, পদধারী নেতাদের না রেখে কলেজ শাখার সদস্য পর্যায়ের কিংবা কর্মীদের ভোটার করা হয়েছে। ঢাকা জেলা কমিটির একজন সাংগঠনিক সম্পাদক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে যাঁদের পরিচয় দেওয়া হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের অনুগত। আমি সিন্ডিকেটের বাইরের নেতার অনুসারী। তাই ভোটার তালিকায় আমার নাম নেই।’
সংগঠনের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে আগের সম্মেলনগুলোর মতো এবারও একটি মহল সক্রিয় রয়েছে। যা নেতা-কর্মীদের কাছে ‘সিন্ডিকেট’ হিসেবে পরিচিত। অনেক জেলা কমিটিতেই এই কথিত সিন্ডিকেটের অনুগত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন বলে প্রচার আছে। তাঁরা অনুগতদের ভোটার করেছেন বলে অভিযোগ আছে।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বর্তমান কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ ও কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্য, প্রতিটি জেলা কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৫ জন ‘কাউন্সিলরের’ ভোটে পরবর্তী দুই বছরের জন্য ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটির সদস্য থাকেন ১২১ জন। এঁদের মধ্যে কারা ভোটার হবেন, সেটা গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট করে বলা নেই। আবার বেশির ভাগ জেলায়ই পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। এখন আবার নতুন কমিটি দেওয়া হচ্ছে। যার সবগুলোই আংশিক কমিটি। ফলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পছন্দমতো ব্যক্তিদের ভোটার করার সুযোগ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, কারা ভোটার হবেন, তা জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের এখতিয়ার। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাঁর দাবি, কথিত সিন্ডিকেট বা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থে অনুগতদের নিয়ে ভোটার তালিকা করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ তিনি এ প্রথম শুনেছেন। এ সম্পর্কে তাঁর কিছু জানা নেই।
এদিকে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক জয়দেব নন্দী প্রথম আলোকে বলেন, সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হবে কি না, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যদি ভোট হয়, তবে সারা দেশের ১০১টি জেলা শাখা ও বিদেশের ১১টি শাখার ভোটাররা গোপন ব্যালটে নতুন নেতা নির্বাচন করবেন। ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শেষ হয়েছে।
No comments