সালাহউদ্দিন কোথায়? স্ত্রী-সন্তানদের অসহায় অপেক্ষা by কাজী সুমন
দেশের
বাইরে অবস্থানরত বড় দুই সন্তান প্রতিদিনই ফোন করে মাকে বলেন- কেন বাবাকে
খুঁজে পাচ্ছো না। রাতে ঘুমানোর সময় ছোট সন্তান মাকে প্রশ্ন করে- বাবার মতো
ভাল মানুষদের কেন এমন অবস্থা হয়। সন্তানদের এসব প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন
না বিএনপির নিখোঁজ যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
এক বুক কষ্ট নিয়ে স্বামীকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তিনি। নিখোঁজের ৩০
দিন পেরিয়ে গেলেও স্বামীর কোন হদিস পাননি সাবেক এই এমপি। তিনি কোথায় আছেন,
কি অবস্থায় আছেন, কি ঘটেছে তার ভাগ্যে- তাও জানেন না। দেশের প্রথম শ্রেণীর
একজন নাগরিক এভাবে নিখোঁজ হয়ে যাবেন- সেটা ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি তিনি।
সালাহউদ্দিন নিখোঁজের তিন দিন আগে তার দুই গাড়িচালক ও ব্যক্তিগত সহকারীকে
গ্রেপ্তার এবং উত্তরার সেই বাড়ির মালিক ও দারোয়ানের বক্তব্যসহ অসংখ্য আলামত
থাকার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্বীকারের বিষয়টি মানতে পারছেন না তিনি। গত
১০ই মার্চ রাতে রাজধানী উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের একটি বাসা থেকে
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে দুই গৃহকর্মীসহ সালাহউদ্দিন আহমেদকে তুলে
নিয়ে যায়। এরপর এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন হাসিনা
আহমেদ। খোঁজ নেন পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিটি দপ্তরে। ২৪
ঘণ্টার মধ্যে স্বামীকে আদালতে হাজিরের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন
করেন। স্বামীর খুঁজে বের করার নির্দেশ দিতে প্রধানমন্ত্রীকে দুদফা
স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু কোথাও থেকে কোন আশ্বাস পাননি অসহায় হাসিনা
আহমেদ। সালাহউদ্দিন নিখোঁজের তিন দিন পর একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা বলেন, সালাহউদ্দিনকে ময়লার বস্তার সঙ্গে গুলশান কার্যালয় থেকে পাচার
করে দিয়েছেন খালেদা জিয়া। এরপর ১৯শে মার্চ গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার
দুর্গম চরে সালাহউদ্দিনের লাশ উদ্ধারের গুজব ছড়ানো হয়। এসব ঘটনায় আরও ভড়কে
যান তিনি। স্বামী নিখোঁজের পর থেকে দুঃসহ দিন কাটানোর বর্ণনা দিয়ে হাসিনা
আহমেদ মানবজমিনকে বলেন, প্রতিটি দিন-রাত কিভাবে কাটছে সেটা বলে বোঝাতে
পারবো না। পরিবারের সদস্যদের প্রতিটি মুহূর্তই এখন কাটছে দুঃসহ যন্ত্রণায়।
বড় ছেলে সৈয়দ ইব্রাহিম আহমেদ (২৩) কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ছেন। দ্বিতীয় সন্তান পারমিজ আহমেদ ইকরা (১৯) মালয়েশিয়ায়
একটি মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করছেন। হাসিনা আহমেদ বলেন, তারা প্রতিদিনই
ফোন করে আমাকে জিজ্ঞেস করে- কেন বাবাকে খুঁজে পাচ্ছি না। আমি নির্বাক হয়ে
থাকি। তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। হাসিনা আহমেদ বলেন, ছোট মেয়ে
ফারিবা আহমেদ রাইদা রাজধানীর একটি স্কুলে দশম শ্রেণীতে এবং ছোট ছেলে সৈয়দ
ইউসুফ আহমেদ নবম শ্রেণীতে পড়ে। আত্মীয়স্বজন যারাই এ সান্ত্বনা জানাতে আসেন
তাদের জড়িয়ে হু হু করে কেঁদে উঠে বাচ্চারা।
নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাচ্চারা একদিন স্কুলে গেলে দুদিন স্কুলে যায় না। বাবার জন্য মন খারাপ করে বসে থাকে। কোচিংয়ে পাঠাতে পারি না। তাদের পড়াশোনার মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। তিনি বলেন, বাচ্চারা একবেলা খেলে পরের বেলা খায় না। প্রতিবেলা রান্নাঘরে যেতেও মন চায় না।
সালাহউদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তুলে নিয়ে গেছে দাবি করে হাসিনা আহমেদ বলেন, এ মানুষটাকে তো কেউ আসমানে নিয়ে যায় নাই। তাকে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে- তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। কারণ সালাহউদ্দিন নিখোঁজের তিন দিন আগে ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গণি ও দুই গাড়িচালক সোহাগ ও খোকনকে আটক করে পুলিশ। তিন দিন পর তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এ ছাড়া উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি সড়কের ৪৯/বি নম্বর বাড়ির মালিক ও দারোয়ান আমাকে জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই সালাহউদ্দিনকে তুলে নিয়ে গেছে। ওই বাসার আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীরা সেটা দেখেছেন। এত সব প্রমাণ থাকার পর পুলিশ কেন অস্বীকার করছে সেটা বুঝতে পারছি না। পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ করে হাসিনা আহমেদ বলেন, সালাহউদ্দিন নিখোঁজের পর থানায় জিডি করেছি। হাইকোর্টে রিট করেছি। যেখানে যেখানে দরখাস্ত করার সেটা করছি। কিন্তু কোথাও থেকে কোন সাড়া পাইনি। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকেও আমার সঙ্গে কোন যোগাযোগ করা হয়নি। উল্টো আমি নিজেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কখনও কারও দেখা পাচ্ছি আবার কারও দেখা পাচ্ছি না। কেউ আমাকে কোন আশ্বাস দেয়নি। সবাই শুধু বলে, আমরা জানি না। এখন আল্লাহর ওপরই শেষ ভরসা করে আছেন মন্তব্য করে সালাহউদ্দিনের স্ত্রী বলেন, আমি এখনও আশা ছাড়িনি। আমি আল্লাহর ওপরই শেষ ভরসা করে আছি। আশা করছি- আল্লাহ উনাকে সহি-সালামতেই রাখছেন। তিনি বলেন, যারা আমার স্বামী নিখোঁজের বিষয় নিয়ে রসিকতা করছেন তারা তো আমার মতো এ রকম কষ্টে কোন দিন পড়েননি। আর সত্য কোন দিন চাপা থাকে না। আজ না হোক ১০ বছর পরে হলেও সে সত্য বেরিয়ে আসবে। আল্লাহ কোন দিন এতবড় অন্যায় সহ্য করবেন না।
উদ্ধারে তৎপরতা নেই
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার ৩০ দিন পার হচ্ছে। কিন্তু তাকে উদ্ধারে কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাকে ধরে নিয়ে গেছে। এ কারণে তাকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হচ্ছে না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকেও বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সালাহউদ্দিন আহমেদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়। তিনি বেঁচে আছেন কিনা, তিনি আর ফিরে আসবেন কিনা এই আলোচনা চলছে সর্বত্র। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তাকে উদ্ধারে গুরুত্ব দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি কোথায় আছেন বা কারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে তাও জানার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, পুলিশের অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে যেখান থেকে তার নিখোঁজ হওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেখানে তিনি অবস্থানই করেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সালাহউদ্দিন আহমেদকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে তেমন কোন তৎপরতা নেই। উল্টো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে আদালতে ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেয়া প্রতিবেদনে সালাহউদ্দিন ঘটনার দিন ওই বাসাতে ছিলেন না বলে দাবি করা হয়েছে। তবু বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন ওঠায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সালাহউদ্দিনকে উদ্ধারে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সালাহউদ্দিনকে উদ্ধারে একটি অভিযানিক কমিটিও গঠন করা হয়। সেই কমিটির পক্ষ থেকে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে, সেখানেও সালাহউদ্দিন উদ্ধারে তৎপরতার চাইতে তিনি যে ঘটনার দিন ওই বাসায় ছিলেন না তা উল্লেখ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সালাহউদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশেষ সংস্থা তুলে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ ছাড়া সালাহউদ্দিন আহমেদ যে ফ্ল্যাটে অবস্থান করছিলেন তার মালিক ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ডিএমডি হাবিব হাসনাত। তিনি তার স্ত্রী সুমনাকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে হাবিব হাসনাত ও সুমনাকেও পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বর্তমানে দুবাই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, হাবিব হাসনাত ও তার স্ত্রীকে জোর করে দুবাই পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে। তাদের পাওয়া গেলে সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যেত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদকে উদ্ধারের জন্য সারা দেশে আমাদের সকল ব্যাটালিয়নকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। এর পাশাপাশি গোয়েন্দা কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। তবে তার অবস্থান জানা যাচ্ছে না।
নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাচ্চারা একদিন স্কুলে গেলে দুদিন স্কুলে যায় না। বাবার জন্য মন খারাপ করে বসে থাকে। কোচিংয়ে পাঠাতে পারি না। তাদের পড়াশোনার মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। তিনি বলেন, বাচ্চারা একবেলা খেলে পরের বেলা খায় না। প্রতিবেলা রান্নাঘরে যেতেও মন চায় না।
সালাহউদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তুলে নিয়ে গেছে দাবি করে হাসিনা আহমেদ বলেন, এ মানুষটাকে তো কেউ আসমানে নিয়ে যায় নাই। তাকে যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে- তা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। কারণ সালাহউদ্দিন নিখোঁজের তিন দিন আগে ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গণি ও দুই গাড়িচালক সোহাগ ও খোকনকে আটক করে পুলিশ। তিন দিন পর তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এ ছাড়া উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩/বি সড়কের ৪৯/বি নম্বর বাড়ির মালিক ও দারোয়ান আমাকে জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই সালাহউদ্দিনকে তুলে নিয়ে গেছে। ওই বাসার আশপাশের প্রত্যক্ষদর্শীরা সেটা দেখেছেন। এত সব প্রমাণ থাকার পর পুলিশ কেন অস্বীকার করছে সেটা বুঝতে পারছি না। পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ করে হাসিনা আহমেদ বলেন, সালাহউদ্দিন নিখোঁজের পর থানায় জিডি করেছি। হাইকোর্টে রিট করেছি। যেখানে যেখানে দরখাস্ত করার সেটা করছি। কিন্তু কোথাও থেকে কোন সাড়া পাইনি। এমনকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকেও আমার সঙ্গে কোন যোগাযোগ করা হয়নি। উল্টো আমি নিজেই সবার সঙ্গে যোগাযোগ করছি। কখনও কারও দেখা পাচ্ছি আবার কারও দেখা পাচ্ছি না। কেউ আমাকে কোন আশ্বাস দেয়নি। সবাই শুধু বলে, আমরা জানি না। এখন আল্লাহর ওপরই শেষ ভরসা করে আছেন মন্তব্য করে সালাহউদ্দিনের স্ত্রী বলেন, আমি এখনও আশা ছাড়িনি। আমি আল্লাহর ওপরই শেষ ভরসা করে আছি। আশা করছি- আল্লাহ উনাকে সহি-সালামতেই রাখছেন। তিনি বলেন, যারা আমার স্বামী নিখোঁজের বিষয় নিয়ে রসিকতা করছেন তারা তো আমার মতো এ রকম কষ্টে কোন দিন পড়েননি। আর সত্য কোন দিন চাপা থাকে না। আজ না হোক ১০ বছর পরে হলেও সে সত্য বেরিয়ে আসবে। আল্লাহ কোন দিন এতবড় অন্যায় সহ্য করবেন না।
উদ্ধারে তৎপরতা নেই
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার ৩০ দিন পার হচ্ছে। কিন্তু তাকে উদ্ধারে কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই তাকে ধরে নিয়ে গেছে। এ কারণে তাকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হচ্ছে না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকেও বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করা হচ্ছে। এ অবস্থায় সালাহউদ্দিন আহমেদের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়। তিনি বেঁচে আছেন কিনা, তিনি আর ফিরে আসবেন কিনা এই আলোচনা চলছে সর্বত্র। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদ নিখোঁজের অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তাকে উদ্ধারে গুরুত্ব দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি কোথায় আছেন বা কারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে তাও জানার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, পুলিশের অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে যেখান থেকে তার নিখোঁজ হওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেখানে তিনি অবস্থানই করেননি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সালাহউদ্দিন আহমেদকে উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে তেমন কোন তৎপরতা নেই। উল্টো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে আদালতে ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেয়া প্রতিবেদনে সালাহউদ্দিন ঘটনার দিন ওই বাসাতে ছিলেন না বলে দাবি করা হয়েছে। তবু বিষয়টি নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন ওঠায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সালাহউদ্দিনকে উদ্ধারে একাধিক অভিযান পরিচালনা করেছে। এ ছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সালাহউদ্দিনকে উদ্ধারে একটি অভিযানিক কমিটিও গঠন করা হয়। সেই কমিটির পক্ষ থেকে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে, সেখানেও সালাহউদ্দিন উদ্ধারে তৎপরতার চাইতে তিনি যে ঘটনার দিন ওই বাসায় ছিলেন না তা উল্লেখ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সালাহউদ্দিনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশেষ সংস্থা তুলে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ ছাড়া সালাহউদ্দিন আহমেদ যে ফ্ল্যাটে অবস্থান করছিলেন তার মালিক ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ডিএমডি হাবিব হাসনাত। তিনি তার স্ত্রী সুমনাকে নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে হাবিব হাসনাত ও সুমনাকেও পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বর্তমানে দুবাই অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, হাবিব হাসনাত ও তার স্ত্রীকে জোর করে দুবাই পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে। তাদের পাওয়া গেলে সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যেত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদকে উদ্ধারের জন্য সারা দেশে আমাদের সকল ব্যাটালিয়নকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া রয়েছে। এর পাশাপাশি গোয়েন্দা কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে। তবে তার অবস্থান জানা যাচ্ছে না।
No comments