মানিকগঞ্জ জেলা কারাগার- অনিয়মই যেখানে নিয়ম! by আব্দুল মোমিন
একটি
মারধরের মামলায় কারাবন্দী স্বামী নূর ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে আসেন
স্ত্রী হোসনা বেগম। অফিসকলের নামে ৭০০ টাকা কারারক্ষীকে দিয়ে নিচতলায়
কারাগার কার্যালয়ের একটি কক্ষে স্বামীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। গত
মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে স্বামীকে দেখতে এসে হোসনা বেগম প্রথম
আলোকে এ কথা জানান।
শুধু তিনিই নন, তাঁর মতো আরও অনেককেই প্রতিদিন টাকার বিনিময়ে বন্দীদের দেখা করতে কারা কর্তৃপক্ষকে অর্থ দিতে হচ্ছে।
কারাবিধি অনুযায়ী, বন্দীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য টাকা-পয়সা লেনদেন নিষিদ্ধ। এ ছাড়া মুঠোফোন বা অন্য কোনো নিষিদ্ধ দ্রব্য নিয়ে সাক্ষাৎকক্ষে প্রবেশ নিষেধ।
একাধিক কারাবন্দীর স্বজন ও জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারা অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বন্দীদের মধ্য থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য জ্যেষ্ঠ একজনকে ম্যাড হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে জেলার একেকজন ম্যাড নিয়োগ দেন। আর এ ম্যাডেরা নতুন বন্দীদের পাঁচ শ থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে ওয়ার্ডে সিটের (আসন) ব্যবস্থা করে দেন। কোনো হাজতি টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাঁর জায়গা হয় ফাইলে (সারিবদ্ধভাবে একজনের শরীরের সঙ্গে আরেকজনের শরীর লাগিয়ে ঘুমানোর ব্যবস্থা)।
সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পাওয়া মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার মানরা গ্রামের শামীম হোসেন জানান, বন্দী রোগীদের জন্য নির্ধারিত কারা হাসপাতাল থাকলেও পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে থাকছেন সুস্থ বন্দী ও শীর্ষ অপরাধীরা। এ ছাড়া কিশোর ওয়ার্ডে কিশোরদের থাকার কথা থাকলে টাকার বিনিময়ে প্রাপ্তবয়স্ক বন্দীদের রাখা হয়।
কারাগারে মাদক হিসেবে বন্দীরা মূলত গাঁজা সেবন করেন। অভিযোগ রয়েছে, টাকার বিনিময়ে প্রধান কারারক্ষী মোশারফ হোসেন মোল্লা কারারক্ষীদের মাধ্যমে বন্দীদের কাছে গাঁজা ও ইয়াবা বড়ি সরবরাহ করে থাকেন। এ ছাড়া সাধারণ বন্দীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে উৎকোচ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোশারফ হোসেন মোল্লা। তিনি জানান, মাদকের সঙ্গে কোনো আপস নেই। উৎকোচ আদায়ের প্রশ্নই ওঠে না। এসব অভিযোগ মিথ্যা।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলায় বন্দী ছেলে মো. বাবুকে দেখতে যান জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার জয়মন্টপ গ্রামের মোতালেব হোসেন। টিকিট কাউন্টারের ২০ টাকা দিয়ে দুটি মুঠোফোন জমা রাখার পর তাকে ৪০ টাকা দিয়ে সাক্ষাতের জন্য টিকিট নিতে হয়।
বেলা পৌনে একটার দিকে কারাগারের সাক্ষাৎকক্ষে বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারীদের কথা বলতে দেখা যায়। এ সময় কারা অভ্যন্তরে সাক্ষাৎকক্ষে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বন্দী লোহার শিকের ভেতর দিয়ে লাঠি বের করে দেন। আর বাইরে থেকে বন্দীদের স্বজনেরা লাঠির মাধ্যমে টাকা কারাগারের ভেতরে বন্দীদের দিচ্ছেন। কারারক্ষীরা টাকার বিনিময়ে এ কাজে সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে বুধবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জেল সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মুঠোফোনে কথা বলা যাবে না। অফিসে আসেন, সামনা-সামনি কথা বলব।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জেলা কারাগার প্রাঙ্গণে তাঁর সঙ্গে দেখা হলে তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা আছে। এখন কথা বলার সময় নেই। এরপর তিনি জেল সুপারের জিপে উঠে বেরিয়ে যান।
কারাগারের জেলার মো. আবু মুসা জানান, অফিসকলের নামে কোনো টাকা-পয়সা নেওয়া হয় না। তবে বিশেষ কোনো ব্যক্তি কিংবা জনপ্রতিনিধিরা জেল সুপারের কার্যালয়ে বন্দীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। সত্যতা পাওয়া গেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
শুধু তিনিই নন, তাঁর মতো আরও অনেককেই প্রতিদিন টাকার বিনিময়ে বন্দীদের দেখা করতে কারা কর্তৃপক্ষকে অর্থ দিতে হচ্ছে।
কারাবিধি অনুযায়ী, বন্দীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য টাকা-পয়সা লেনদেন নিষিদ্ধ। এ ছাড়া মুঠোফোন বা অন্য কোনো নিষিদ্ধ দ্রব্য নিয়ে সাক্ষাৎকক্ষে প্রবেশ নিষেধ।
একাধিক কারাবন্দীর স্বজন ও জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারা অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বন্দীদের মধ্য থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য জ্যেষ্ঠ একজনকে ম্যাড হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে জেলার একেকজন ম্যাড নিয়োগ দেন। আর এ ম্যাডেরা নতুন বন্দীদের পাঁচ শ থেকে এক হাজার টাকার বিনিময়ে ওয়ার্ডে সিটের (আসন) ব্যবস্থা করে দেন। কোনো হাজতি টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাঁর জায়গা হয় ফাইলে (সারিবদ্ধভাবে একজনের শরীরের সঙ্গে আরেকজনের শরীর লাগিয়ে ঘুমানোর ব্যবস্থা)।
সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পাওয়া মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার মানরা গ্রামের শামীম হোসেন জানান, বন্দী রোগীদের জন্য নির্ধারিত কারা হাসপাতাল থাকলেও পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে থাকছেন সুস্থ বন্দী ও শীর্ষ অপরাধীরা। এ ছাড়া কিশোর ওয়ার্ডে কিশোরদের থাকার কথা থাকলে টাকার বিনিময়ে প্রাপ্তবয়স্ক বন্দীদের রাখা হয়।
কারাগারে মাদক হিসেবে বন্দীরা মূলত গাঁজা সেবন করেন। অভিযোগ রয়েছে, টাকার বিনিময়ে প্রধান কারারক্ষী মোশারফ হোসেন মোল্লা কারারক্ষীদের মাধ্যমে বন্দীদের কাছে গাঁজা ও ইয়াবা বড়ি সরবরাহ করে থাকেন। এ ছাড়া সাধারণ বন্দীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে উৎকোচ নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোশারফ হোসেন মোল্লা। তিনি জানান, মাদকের সঙ্গে কোনো আপস নেই। উৎকোচ আদায়ের প্রশ্নই ওঠে না। এসব অভিযোগ মিথ্যা।
গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলায় বন্দী ছেলে মো. বাবুকে দেখতে যান জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার জয়মন্টপ গ্রামের মোতালেব হোসেন। টিকিট কাউন্টারের ২০ টাকা দিয়ে দুটি মুঠোফোন জমা রাখার পর তাকে ৪০ টাকা দিয়ে সাক্ষাতের জন্য টিকিট নিতে হয়।
বেলা পৌনে একটার দিকে কারাগারের সাক্ষাৎকক্ষে বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাৎকারীদের কথা বলতে দেখা যায়। এ সময় কারা অভ্যন্তরে সাক্ষাৎকক্ষে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বন্দী লোহার শিকের ভেতর দিয়ে লাঠি বের করে দেন। আর বাইরে থেকে বন্দীদের স্বজনেরা লাঠির মাধ্যমে টাকা কারাগারের ভেতরে বন্দীদের দিচ্ছেন। কারারক্ষীরা টাকার বিনিময়ে এ কাজে সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে বুধবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জেল সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘মুঠোফোনে কথা বলা যাবে না। অফিসে আসেন, সামনা-সামনি কথা বলব।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জেলা কারাগার প্রাঙ্গণে তাঁর সঙ্গে দেখা হলে তিনি জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা আছে। এখন কথা বলার সময় নেই। এরপর তিনি জেল সুপারের জিপে উঠে বেরিয়ে যান।
কারাগারের জেলার মো. আবু মুসা জানান, অফিসকলের নামে কোনো টাকা-পয়সা নেওয়া হয় না। তবে বিশেষ কোনো ব্যক্তি কিংবা জনপ্রতিনিধিরা জেল সুপারের কার্যালয়ে বন্দীদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন।
জেলা প্রশাসক রাশিদা ফেরদৌস বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। সত্যতা পাওয়া গেলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
No comments