কী করবেন মাহী-রনি by কাফি কামাল
মাহী
বি. চৌধুরী ও গোলাম মওলা রনি। ঢাকা সিটি নির্বাচনে উত্তর ও দক্ষিণে তরুণ
প্রজন্মের দুই আলোচিত মেয়র প্রার্থী। সাবেক এমপি মাহী বি. চৌধুরী
বিকল্পধারার যুগ্ম মহাসচিব হলেও নির্বাচন করছেন একটি অনলাইন ভিত্তিক সংগঠন
‘ব্লু ব্যান্ড কল’-এর ব্যানারে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাবেক আলোচিত এমপি
গোলাম মওলা রনি লড়ছেন স্বতন্ত্র। বিএনপি সরাসরি নির্বাচনে না গেলে বিকল্প
প্রার্থীদের সমর্থন দেয়ার ব্যাপারে একটি গুঞ্জন ছিল রাজনৈতিক মহলে। সে
ক্ষেত্রে ঢাকা উত্তরে সমমনা রাজনৈতিক দল বিকল্পধারার মাহী বি. চৌধুরী ও
ঢাকা দক্ষিণে গোলাম মওলা রনির নাম ছিল আলোচনায়। রনির চেয়েও মাহীকে নিয়েই
আলোচনা ছিল বেশী । কিন্তু সিটি নির্বাচনে দলের এক নীতি-নির্ধারক মির্জা
আব্বাস এবং সিনিয়র এক নেতার ছেলে তাবিথ আউয়ালকে সমর্থন দিয়েছে বিএনপি।
জাতীয়তাবাদী ঘরানার বিশিষ্ট নাগরিক ও পেশাজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘আদর্শ ঢাকা
আন্দোলন’-এর ব্যানারে তারা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ফলে এখন কি করবেন মাহী
বি. চৌধুরী ও গোলাম মওলা রনি। তারা কি সক্রিয়ভাবে নির্বাচন করবেন নাকি ধীরে
ধীরে নিষ্ক্রিয় হবেন প্রচারণার মাঠে? যদিও ইতিমধ্যে তাদের নামে প্রতীক
বরাদ্দ হয়েছে। মাহী ঈগল ও রনি পেয়েছেন আংটি। বড় রাজনৈতিক শক্তির সমর্থন
পাওয়ার সম্ভাবনার মতো এখন নির্বাচনে থাকা-না থাকার ব্যাপারে নতুন গুঞ্জন
তৈরি হলে দুইপক্ষই তা উড়িয়ে দিয়েছেন। গোলাম মওলা রনি বলেছেন, কোনভাবেই তিনি
নির্বাচন থেকে সরছেন না। দিন যত যাবে, ততই তার পক্ষে সমর্থনের জোয়ার
দৃশ্যমান হবে। অন্যদিকে মাহী বি. চৌধুরীর ব্যাপারে তার নির্বাচনী প্রচার
সেল-এর চীফ কো-অর্ডিনেটর জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, কোমর বেঁধেই নির্বাচনে
নেমেছেন মাহী। শারীরিক অসুস্থতার কারণে শুক্রবার বাইরে জনসংযোগ না করলেও আজ
শনিবার থেকে তাকে পুরোদমে জনসংযোগে দেখা যাবে। এদিকে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে,
মাহী বি. চৌধুরী বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটে নেই। তাহলে কেন তার প্রতি বিএনপি
সমর্থন দেবে? সমর্থনের ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলে আলোচনার যৌক্তিকতা নিয়েও
তৈরি হয়েছে প্রশ্ন। সাদা চোখে দেখলে মাহীকে বিএনপির সমর্থন দেয়ার বিষয়টি
অযৌক্তিকই বটে। তবে এ আলোচনার নেপথ্যে রয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ। বিএনপি ও
জোটের একাধিক নেতা জানান, ঢাকা উত্তরে আবদুল আউয়াল মিন্টু একক প্রার্থী
হওয়ায় দলের কেউ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। কিন্তু তার মনোনয়নপত্র বাতিল
হওয়ায় বিএনপি একটি ধাক্কা খায়। শেষদিন তার পুত্র তাবিথের মনোনয়ন জমা দেয়া
নিয়ে বিএনপি মহলে তৈরি হয় নতুন প্রশ্ন। রাজনীতিতে ছেলেকে প্রতিষ্ঠিত করতেই
কি ইচ্ছাকৃত ভুল করেছেন মিন্টু? কিন্তু তখন হিসাব করা হয় আবদুল আউয়াল
মিন্টুর কারণে আওয়ামী লীগ আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হককে সমর্থন দিয়েছে।
সেখানে রাজনীতির বাইরের এবং সার্বিকভাবে স্বল্পপরিচিত তাবিথ কতটুকু সফল
হবেন। এছাড়া মিন্টুর ভুলের পাশাপাশি তাবিথের অনিশ্চয়তা ছিল ঋণ খেলাপি
হিসেবে সোনালী ব্যাংকের আপিল নিয়ে। তখনই বিএনপি ও জোটের একটি মহল থেকে
আলোচনায় আনা হয় মাহীর নাম। তার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলা হয়, মাহী সকল মহলে
পরিচিত মুখ। এছাড়া মাহীকে সমর্থন দেয়া হলে ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকা সমমনা
রাজনৈতিক দলগুলোকে আন্দোলন সংগ্রামে একই প্ল্যাটফরমে আরও ঘনিষ্ঠভাবে পাওয়া
যাবে। জোটের শরিকদের মধ্যে বিএনপির প্রতি আস্থাও বাড়বে। কিন্তু বিএনপির
একটি বড় অংশ ও জোটের প্রভাবশালী শরিকরা মাহীর চেয়ে তাবিথের প্রতি আস্থা
রাখার পক্ষ নেন। শীর্ষ নেতার কাছে তাদের যুক্তি ছিল দলে মিন্টুর অবদান আছে,
তার ছেলেই সমর্থন প্রাপ্য। ক্লিন ইমেজ ও শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে
নতুন প্রজন্মের ভোটাররা তাবিথকেই পছন্দ করবেন। সর্বশেষ সোনালী ব্যাংকের
গেরো পার হয়ে তাবিথের মনোনয়ন বৈধ হওয়ার পর সুগম হয় বিএনপির সিদ্ধান্ত নেয়ার
পথ। এছাড়া মাহীর নাম আলোচনায় এলেও বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনায় যায়নি
বিকল্পধারা। সমর্থনের প্রত্যাশায় মাহী একদফা পেছালেও সবুজ সংকেত না পেয়ে
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জনসংযোগে নামেন। সেদিন তিনি বিএনপির সমর্থন চাইলেও
বাস্তবে কার্যকর উদ্যোগ নেননি । এমনকি প্রশ্নোত্তরে তার কিছু বক্তব্যে
বিএনপির নেতারা আহত হন। তবে বিকল্পধারার একাধিক নেতা জানান, বিএনপি নেতারা
বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে এলেও বিএনপি-বিকল্পধারার মধ্যে এ নিয়ে কোন আনুষ্ঠানিক
বা অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তারা নিজেদের শক্তিতেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন
।
এদিকে নির্বাচনে নিজেদের অবস্থানের ব্যাপারে গোলাম মওলান রনি মানবজমিনকে বলেন, আমি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী, আমার কৌশলও স্বতন্ত্র। আমি অন্যদের মতো রাস্তায় রাস্তায় জনসংযোগের রীতিতে পথ চলতে চাই না। সে কথা আমি আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছি। তিনি বলেন, গত দুইদিন অন্যদের মতো আমার জনসংযোগ নিয়ে হয়তো ব্যাপক প্রচারণা হয়নি। কিন্তু আমিই বেশি মানুষের সঙ্গে সশরীরে জনসংযোগ করেছি। তার চিত্র দেখুন- আমি জুমার নামাজ পড়েছি নিউ মার্কেটে বিশ্বাস মসজিদে। সেখানে অন্তত দুই হাজার মানুষের সামনে আমি খুতবা দিয়েছি। তারপর গেছি লালবাগ শাহী মসজিদে। সেখানে মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মুফতি জাহিদসহ হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। আমার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে সেখানে বিপুল মানুষের সমাগম হয়েছিল। তারা আমার জন্য দোয়া করেছেন। এরপর নারিন্দা পীর সাহেবের কাছে গিয়েছি। সেখানেই আসরের নামাজের পর দুই হাজারের মতো মুরিদান ও মুসল্লির সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। এরপর মতিঝিল ওয়াপদা মসজিদ হয়ে আরামবাগ বাগে রহমতে গিয়েছি। মাগরিবের নামাজ পড়ে বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলেছি, কোলাকুলি করেছি। সন্ধ্যার পর যাবো রোটারি ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে। রনি বলেন, আমি হুট করে নির্বাচনে অংশ নিইনি। অনেক চিন্তা ভাবনা করেই ভোটের মাঠে নেমেছি। জাতীয় নির্বাচনে আমার নির্বাচনী এলাকার অন্তত ৫০ হাজার মানুষ ঢাকায় থাকেন। এছাড়া ফরিদপুর ও বরিশালের ভোটাররা আমাকেই বেছে নেবেন। বরিশাল ইজম কিন্তু সবচেয়ে বড় ইজম। রনি বলেন, ঢাকায় ভোটের হিসেবে ৩০ ভাগ বিএনপি, ২৫ ভাগ আওয়ামী লীগ, ১২ ভাগ জামায়াত ও ৩৩ ভাগ পপুলার ভোট। ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে যদি তিনজনকে মূল প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেন তাহলে বিজয়ীকে ৭ লাখের বেশি ভোট পেতে হবে। কিন্তু বিএনপি ও আওয়ামী লীগের এত ভোট নেই। দলীয় কোন্দলের কারণে তারা আবার নিজেদের ঘরানার অর্ধেকের বেশি ভোট পাবেন না। এই হিসাব কষলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী দেড় লাখের বেশি ভোট পাওয়ার কথা নয়। বাকি ভোটের জন্য তাদের নির্ভর করতে হবে পপুলার ভোটারদের ওপর। রনি বলেন, এখানেই আমি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকব। প্রথমত, ভোটারদের অর্ধেক নারী। মার্জিত রুচির মানুষ, নিষ্পাপ মুখদর্শনের কারণে তাদের বেশিরভাগই বেছে নেবেন আমাকে। নতুন ভোটারদের কাছে জংধরা রাজনীতি এবং রাজনীতিকদের প্রতি অনীহা আছে। তারা অন্যদের ভালো মতো চেনেও না। তারা চেনে গোলাম মওলা রনি, মাহী বি চৌধুরী ও ব্যারিস্টার পার্থের মতো তরুণদের। এসব তরুণ জীবনের প্রথম ভোটটি আদর্শহীন রাজনীতি ও রাজনীতিকদের দেয়ার মতো বোকা নয়। এছাড়া বিএনপির আত্মকেন্দ্রিকতা, সুবিধাবাদী অবস্থান, আন্দোলনে পিছুটানসহ অভ্যন্তরীণ বেইমানির কারণে জামায়াত তাদের বিশ্বাস করে না। জামায়াতের ভোটও বিএনপি পাবে না, আওয়ামী লীগতো নয়ই। সবমিলিয়ে আমি বিশ্বাস করি, ঢাকা দক্ষিণে কাস্টিং ভোটের অর্ধেকই আমি পাব। এদিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে গতকাল বিশ্রামে ছিলেন মাহী বি চৌধুরী। কয়েক দফা যোগাযোগ করেও তার সঙ্গে আলাপ করা যায়নি। তবে তার হয়ে মানবজমিনকে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান, নির্বাচনী প্রচার সেল-এর চীফ কো-অর্ডিনেটর জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, মাহী বি চৌধুরী আজ সকাল থেকেই পুরোদমে প্রচারণা শুরু করবেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গতকাল তিনি প্রচারণায় অংশ নেননি। অনেকেই বিষয়টির ভিন্ন ব্যাখ্যা ও নানা গুঞ্জন ছড়াচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে মাহী বি চৌধুরী নির্বাচনে আছেন এবং থাকবেন। আগামী দু-একদিনের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণার দৃশ্য সবার চোখে পড়বে। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একজন প্রার্থী হিসেবে সব মহলের সমর্থন প্রত্যাশা করাটাই স্বাভাবিক। সংবাদ সম্মেলনে মাহী চৌধুরী এক প্রশ্নের জবাবে সেটা পরিষ্কার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ঢাকা উত্তরের ভোটার হিসেবে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছেও যাবেন। তিনি সবার সমর্থন প্রত্যাশা করেন। এখন বিএনপি তাদের মতো নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থন দিয়েছে, আমরা আমাদের মতো নির্বাচন করছি। লড়াইয়ের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই আমরা নির্বাচনে নেমেছি। এদিকে গতরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রচার সেল-এর চীফ কো-অর্ডিনেটর জাহাঙ্গীর আলম জানান, শনিবার দুপুর ২টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন মাহী বি চৌধুরী। এছাড়া বিকাল ৪টায় খিলক্ষেত তালের টেক এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় বৈঠক ও রাত ৮টায় কাফরুল থানা এলাকায় গণসংযোগ করবেন তিনি।
এদিকে নির্বাচনে নিজেদের অবস্থানের ব্যাপারে গোলাম মওলান রনি মানবজমিনকে বলেন, আমি একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী, আমার কৌশলও স্বতন্ত্র। আমি অন্যদের মতো রাস্তায় রাস্তায় জনসংযোগের রীতিতে পথ চলতে চাই না। সে কথা আমি আমার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছি। তিনি বলেন, গত দুইদিন অন্যদের মতো আমার জনসংযোগ নিয়ে হয়তো ব্যাপক প্রচারণা হয়নি। কিন্তু আমিই বেশি মানুষের সঙ্গে সশরীরে জনসংযোগ করেছি। তার চিত্র দেখুন- আমি জুমার নামাজ পড়েছি নিউ মার্কেটে বিশ্বাস মসজিদে। সেখানে অন্তত দুই হাজার মানুষের সামনে আমি খুতবা দিয়েছি। তারপর গেছি লালবাগ শাহী মসজিদে। সেখানে মাওলানা জুবায়ের আহমেদ, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মুফতি জাহিদসহ হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। আমার উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে সেখানে বিপুল মানুষের সমাগম হয়েছিল। তারা আমার জন্য দোয়া করেছেন। এরপর নারিন্দা পীর সাহেবের কাছে গিয়েছি। সেখানেই আসরের নামাজের পর দুই হাজারের মতো মুরিদান ও মুসল্লির সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। এরপর মতিঝিল ওয়াপদা মসজিদ হয়ে আরামবাগ বাগে রহমতে গিয়েছি। মাগরিবের নামাজ পড়ে বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের সঙ্গে কথা বলেছি, কোলাকুলি করেছি। সন্ধ্যার পর যাবো রোটারি ক্লাবের একটি অনুষ্ঠানে। রনি বলেন, আমি হুট করে নির্বাচনে অংশ নিইনি। অনেক চিন্তা ভাবনা করেই ভোটের মাঠে নেমেছি। জাতীয় নির্বাচনে আমার নির্বাচনী এলাকার অন্তত ৫০ হাজার মানুষ ঢাকায় থাকেন। এছাড়া ফরিদপুর ও বরিশালের ভোটাররা আমাকেই বেছে নেবেন। বরিশাল ইজম কিন্তু সবচেয়ে বড় ইজম। রনি বলেন, ঢাকায় ভোটের হিসেবে ৩০ ভাগ বিএনপি, ২৫ ভাগ আওয়ামী লীগ, ১২ ভাগ জামায়াত ও ৩৩ ভাগ পপুলার ভোট। ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে যদি তিনজনকে মূল প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করেন তাহলে বিজয়ীকে ৭ লাখের বেশি ভোট পেতে হবে। কিন্তু বিএনপি ও আওয়ামী লীগের এত ভোট নেই। দলীয় কোন্দলের কারণে তারা আবার নিজেদের ঘরানার অর্ধেকের বেশি ভোট পাবেন না। এই হিসাব কষলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী দেড় লাখের বেশি ভোট পাওয়ার কথা নয়। বাকি ভোটের জন্য তাদের নির্ভর করতে হবে পপুলার ভোটারদের ওপর। রনি বলেন, এখানেই আমি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে থাকব। প্রথমত, ভোটারদের অর্ধেক নারী। মার্জিত রুচির মানুষ, নিষ্পাপ মুখদর্শনের কারণে তাদের বেশিরভাগই বেছে নেবেন আমাকে। নতুন ভোটারদের কাছে জংধরা রাজনীতি এবং রাজনীতিকদের প্রতি অনীহা আছে। তারা অন্যদের ভালো মতো চেনেও না। তারা চেনে গোলাম মওলা রনি, মাহী বি চৌধুরী ও ব্যারিস্টার পার্থের মতো তরুণদের। এসব তরুণ জীবনের প্রথম ভোটটি আদর্শহীন রাজনীতি ও রাজনীতিকদের দেয়ার মতো বোকা নয়। এছাড়া বিএনপির আত্মকেন্দ্রিকতা, সুবিধাবাদী অবস্থান, আন্দোলনে পিছুটানসহ অভ্যন্তরীণ বেইমানির কারণে জামায়াত তাদের বিশ্বাস করে না। জামায়াতের ভোটও বিএনপি পাবে না, আওয়ামী লীগতো নয়ই। সবমিলিয়ে আমি বিশ্বাস করি, ঢাকা দক্ষিণে কাস্টিং ভোটের অর্ধেকই আমি পাব। এদিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে গতকাল বিশ্রামে ছিলেন মাহী বি চৌধুরী। কয়েক দফা যোগাযোগ করেও তার সঙ্গে আলাপ করা যায়নি। তবে তার হয়ে মানবজমিনকে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান, নির্বাচনী প্রচার সেল-এর চীফ কো-অর্ডিনেটর জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, মাহী বি চৌধুরী আজ সকাল থেকেই পুরোদমে প্রচারণা শুরু করবেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গতকাল তিনি প্রচারণায় অংশ নেননি। অনেকেই বিষয়টির ভিন্ন ব্যাখ্যা ও নানা গুঞ্জন ছড়াচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে মাহী বি চৌধুরী নির্বাচনে আছেন এবং থাকবেন। আগামী দু-একদিনের মধ্যে ব্যাপক প্রচারণার দৃশ্য সবার চোখে পড়বে। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একজন প্রার্থী হিসেবে সব মহলের সমর্থন প্রত্যাশা করাটাই স্বাভাবিক। সংবাদ সম্মেলনে মাহী চৌধুরী এক প্রশ্নের জবাবে সেটা পরিষ্কার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ঢাকা উত্তরের ভোটার হিসেবে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছেও যাবেন। তিনি সবার সমর্থন প্রত্যাশা করেন। এখন বিএনপি তাদের মতো নির্বাচনে প্রার্থী সমর্থন দিয়েছে, আমরা আমাদের মতো নির্বাচন করছি। লড়াইয়ের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই আমরা নির্বাচনে নেমেছি। এদিকে গতরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রচার সেল-এর চীফ কো-অর্ডিনেটর জাহাঙ্গীর আলম জানান, শনিবার দুপুর ২টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন মাহী বি চৌধুরী। এছাড়া বিকাল ৪টায় খিলক্ষেত তালের টেক এলাকায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় বৈঠক ও রাত ৮টায় কাফরুল থানা এলাকায় গণসংযোগ করবেন তিনি।
No comments