ঢাকা উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে মাদকই বড় সমস্যা by সামছুর রহমান
কল্যাণপুর বস্তিতে প্রবেশ করার প্রধান দুটি সড়কই বেহাল। শেষ কবে সংস্কার হয়েছে জানা নেই কারোর। গতকাল তোলা ছবি l আশরাফুল আলম |
ওয়ার্ড
কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থনের আশায় ছিলেন অন্তত চারজন প্রার্থী।
তাঁদের কেউ সাবেক কাউন্সিলর, কেউ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা বা সমর্থক।
গত বুধবার আওয়ামী লীগ এই ওয়ার্ডে গাজী অলিয়ার রহমানকে সমর্থন দিয়েছে।
তবে সমর্থন না পাওয়া অন্য তিন প্রার্থীও থাকতে চান ভোটের লড়াইয়ে।
এ চারজনসহ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ১০ জন। কল্যাণপুর ও পাইকপাড়ার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত এই ওয়ার্ড। আওয়ামী লীগের সমর্থন নিশ্চিত হওয়ার পরপরই গাজী অলিয়ার রহমান দলের অন্য তিন প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন। আশায় আছেন, তাঁরা শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়াবেন। তবে তাঁরা বলছেন, এ ওয়ার্ডে বিএনপির সক্রিয় কোনো প্রার্থী না থাকায় তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না।
গতকাল বৃহস্পতিবার অলিয়ার রহমানের সঙ্গে কথা হয় কল্যাণপুর নতুন বাজারে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে তাঁদের (দলীয় তিনজন) সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুরোধ করেছি। আমার বিশ্বাস, আমার ডাকে তাঁরা সাড়া দিবেন। দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে সবাই কাজ করবেন।’
এই ডাকে আপাতত সাড়া দেওয়ার ইচ্ছে নেই বলে জানিয়েছেন আরেক প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা মো. মামুন মিয়া শাহ্জাহান। বললেন, ‘সে (অলিয়ার) দলের প্রার্থী, আরও প্রার্থী থাকবে। স্থানীয় নির্বাচনে যে কারও নির্বাচন করার অধিকার আছে। আগামীকাল (আজ শুক্রবার) জুমার নামাজের পর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করব।’
আরেক প্রার্থী দেওয়ান আবদুল মান্নানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে দেখা করতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি দূরে আছি। আমি আওয়ামী লীগের সমর্থক, দলে আমার পদ-পদবি নেই। এলাকার মানুষজন ভালোবাসে, কিছু সমর্থক আছে। সিদ্ধান্ত নেই, দেখি কী হয়।’
ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এ কে এম দেলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অলিয়ারের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন সমর্থক বসে আছেন। তাঁদের আশা, দেলোয়ার নির্বাচন করবেন।
গতকাল এই ওয়ার্ডের অন্তত ৪০ জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়েছে এ প্রতিবেদকের। এলাকার সমস্যা কী—জানতে চাইলে তাঁদের একটাই জবাব, এলাকায় মাদক ছেয়ে গেছে। কল্যাণপুর ও পাইকপাড়ায় মাদকের সমস্যা নতুন নয়। আগে মাদক ছিল কল্যাণপুর বস্তিকেন্দ্রিক। বর্তমানে তা এই এলাকার পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে পড়েছে। বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, এলাকার নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে মাদকের আড্ডা বেশি হচ্ছে।
এই অভিযোগের বিষয়ে মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কল্যাণপুর এলাকায় মাদক ব্যবসার কথা শোনা যায়। ওই এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। তবে সমস্যা হচ্ছে, অভিযান চালানোর সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। তার পরও মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে থানা থেকে নতুন দল গঠন করা হয়েছে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আয়তন ১ দশমিক ১৩ বর্গকিলোমিটার। দক্ষিণ পাইকপাড়া, মধ্যপাইকপাড়ার কিছু অংশ, কল্যাণপুর ও সরকারি ডি-টাইপ কোয়ার্টার এলাকা নিয়ে গঠিত এই ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৬০ হাজার ৪৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩১ হাজার ৭১৮ জন এবং নারী ভোটার ২৮ হাজার ৭২৬ জন।
এলাকার আরেক বড় সমস্যা মশার উপদ্রব। সামান্য বৃষ্টিতেই বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয় অস্থায়ী জলাবদ্ধতার। সড়কের ময়লা-আবর্জনা নিয়মিত অপসারণ করা হয় না। এলাকায় খেলার মাঠ নেই। ওয়ার্ডে একটি কমিউনিটি সেন্টার হবে—এটি এলাকাবাসীর বহুদিনের প্রত্যাশা। তা আজও পূরণ হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, এলাকায় অসংখ্য আবাসিক ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। এসব ভবনের নির্মাণসামগ্রী সামনের সড়কের অনেকটা জুড়ে রাখা হয়েছে। ফলে সড়ক সংকুচিত হয়ে যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কল্যাণপুর প্রধান সড়কের একজন বাড়ির মালিক ইব্রাহিম আলী বললেন, ‘ট্রাকে নির্মাণসামগ্রী এনে রাস্তার ওপরই নামানো হয়। সেখানেই পড়ে থাকে।’
কল্যাণপুর বস্তিতে প্রবেশের প্রধান সড়ক দুটি বেহাল। জমে থাকা কাদা দেখে বোঝার উপায় নেই, এ সড়কে শেষ কবে পিচ ঢালাই হয়েছিল। সড়কের দুই পাশেই গড়ে উঠেছে দোকান। নেই ফুটপাত। বস্তিবাসীকে চলাচল করতে হয় কাদা মাড়িয়ে। বস্তির ভেতরে কয়েকটি রিকশা-রিকশাভ্যানের গ্যারেজ আছে, চালকদের রিকশা-ভ্যান নিয়ে আসা-যাওয়ায় বেগ পেতে হয়।
কল্যাণপুর নতুন বাজারটি বর্তমান জায়গায় আছে ১৯৮১ সাল থেকে। ওয়ার্ডের সবচেয়ে বড় এ বাজারে দোকানের সংখ্যা পৌনে ৪০০। বাজারের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি স্থায়ী বাজারের। বাজারের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হাশেম বলেন, যে-ই নির্বাচিত হোক না কেন, বাজারটি যেন স্থায়ী হয়।
এ চারজনসহ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ১০ জন। কল্যাণপুর ও পাইকপাড়ার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত এই ওয়ার্ড। আওয়ামী লীগের সমর্থন নিশ্চিত হওয়ার পরপরই গাজী অলিয়ার রহমান দলের অন্য তিন প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলেছেন। আশায় আছেন, তাঁরা শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়াবেন। তবে তাঁরা বলছেন, এ ওয়ার্ডে বিএনপির সক্রিয় কোনো প্রার্থী না থাকায় তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না।
গতকাল বৃহস্পতিবার অলিয়ার রহমানের সঙ্গে কথা হয় কল্যাণপুর নতুন বাজারে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে তাঁদের (দলীয় তিনজন) সঙ্গে যোগাযোগ করে অনুরোধ করেছি। আমার বিশ্বাস, আমার ডাকে তাঁরা সাড়া দিবেন। দলের সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে সবাই কাজ করবেন।’
এই ডাকে আপাতত সাড়া দেওয়ার ইচ্ছে নেই বলে জানিয়েছেন আরেক প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা মো. মামুন মিয়া শাহ্জাহান। বললেন, ‘সে (অলিয়ার) দলের প্রার্থী, আরও প্রার্থী থাকবে। স্থানীয় নির্বাচনে যে কারও নির্বাচন করার অধিকার আছে। আগামীকাল (আজ শুক্রবার) জুমার নামাজের পর আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করব।’
আরেক প্রার্থী দেওয়ান আবদুল মান্নানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে দেখা করতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি দূরে আছি। আমি আওয়ামী লীগের সমর্থক, দলে আমার পদ-পদবি নেই। এলাকার মানুষজন ভালোবাসে, কিছু সমর্থক আছে। সিদ্ধান্ত নেই, দেখি কী হয়।’
ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এ কে এম দেলোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। অলিয়ারের নির্বাচনী কার্যালয় থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন সমর্থক বসে আছেন। তাঁদের আশা, দেলোয়ার নির্বাচন করবেন।
গতকাল এই ওয়ার্ডের অন্তত ৪০ জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়েছে এ প্রতিবেদকের। এলাকার সমস্যা কী—জানতে চাইলে তাঁদের একটাই জবাব, এলাকায় মাদক ছেয়ে গেছে। কল্যাণপুর ও পাইকপাড়ায় মাদকের সমস্যা নতুন নয়। আগে মাদক ছিল কল্যাণপুর বস্তিকেন্দ্রিক। বর্তমানে তা এই এলাকার পাড়া-মহল্লায় ছড়িয়ে পড়েছে। বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, এলাকার নির্মাণাধীন ভবনগুলোতে মাদকের আড্ডা বেশি হচ্ছে।
এই অভিযোগের বিষয়ে মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তানভীর হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কল্যাণপুর এলাকায় মাদক ব্যবসার কথা শোনা যায়। ওই এলাকায় নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। তবে সমস্যা হচ্ছে, অভিযান চালানোর সময় মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। তার পরও মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে থানা থেকে নতুন দল গঠন করা হয়েছে।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আয়তন ১ দশমিক ১৩ বর্গকিলোমিটার। দক্ষিণ পাইকপাড়া, মধ্যপাইকপাড়ার কিছু অংশ, কল্যাণপুর ও সরকারি ডি-টাইপ কোয়ার্টার এলাকা নিয়ে গঠিত এই ওয়ার্ডে মোট ভোটার ৬০ হাজার ৪৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩১ হাজার ৭১৮ জন এবং নারী ভোটার ২৮ হাজার ৭২৬ জন।
এলাকার আরেক বড় সমস্যা মশার উপদ্রব। সামান্য বৃষ্টিতেই বিভিন্ন সড়কে তৈরি হয় অস্থায়ী জলাবদ্ধতার। সড়কের ময়লা-আবর্জনা নিয়মিত অপসারণ করা হয় না। এলাকায় খেলার মাঠ নেই। ওয়ার্ডে একটি কমিউনিটি সেন্টার হবে—এটি এলাকাবাসীর বহুদিনের প্রত্যাশা। তা আজও পূরণ হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, এলাকায় অসংখ্য আবাসিক ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। এসব ভবনের নির্মাণসামগ্রী সামনের সড়কের অনেকটা জুড়ে রাখা হয়েছে। ফলে সড়ক সংকুচিত হয়ে যানবাহন চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কল্যাণপুর প্রধান সড়কের একজন বাড়ির মালিক ইব্রাহিম আলী বললেন, ‘ট্রাকে নির্মাণসামগ্রী এনে রাস্তার ওপরই নামানো হয়। সেখানেই পড়ে থাকে।’
কল্যাণপুর বস্তিতে প্রবেশের প্রধান সড়ক দুটি বেহাল। জমে থাকা কাদা দেখে বোঝার উপায় নেই, এ সড়কে শেষ কবে পিচ ঢালাই হয়েছিল। সড়কের দুই পাশেই গড়ে উঠেছে দোকান। নেই ফুটপাত। বস্তিবাসীকে চলাচল করতে হয় কাদা মাড়িয়ে। বস্তির ভেতরে কয়েকটি রিকশা-রিকশাভ্যানের গ্যারেজ আছে, চালকদের রিকশা-ভ্যান নিয়ে আসা-যাওয়ায় বেগ পেতে হয়।
কল্যাণপুর নতুন বাজারটি বর্তমান জায়গায় আছে ১৯৮১ সাল থেকে। ওয়ার্ডের সবচেয়ে বড় এ বাজারে দোকানের সংখ্যা পৌনে ৪০০। বাজারের ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি স্থায়ী বাজারের। বাজারের দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হাশেম বলেন, যে-ই নির্বাচিত হোক না কেন, বাজারটি যেন স্থায়ী হয়।
No comments