প্রকৃতি- নগরে বিদেশি মেহমান! by সুমনকুমার দাশ
(শীতের পাখির কলরবে মুখর সিলেটের দক্ষিণ সুরমার চণ্ডীপুল এলাকা। গত বৃহস্পতিবার ছবিটি তুলেছেন আনিছ মাহমুদ) ‘আমাদের
জীবন পাখিদের মতো নয়’ বলে আফসোস করেছিলেন কবি জীবনানন্দ দাশ। তাঁর ইচ্ছে
ছিল আপন মনে ‘মাঘের নীল আকাশে’ উড়ে চলবেন। কবির কল্পনা বাস্তবে রূপ না
পেলেও পাখিদের ওড়াউড়ি কিন্তু থেমে নেই। এই মাঘে, এই হাড়কাঁপানো শীতে
সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আসা পাখির ঝাঁক উড়ছে আকাশজুড়ে।
বিলে-ঝিলে-গাছে-ডালে-রং-বেরঙের পাখিদের সে কী কিচিরমিচির! মাস খানেক ধরেই এ
দৃশ্য চোখে পড়ছে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার চণ্ডীপুল এলাকা-লাগোয়া
জলাশয়গুলোতে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজারো পাখি
কিচিরমিচির রবে চারপাশ মুখর করে রেখেছে। বাসা-বাড়ির ছাদ, উঠান থেকে শুরু
করে বিজ্ঞাপনের জন্য সাঁটানো বিলবোর্ড—সব খানেই পাখিদের নির্বিঘ্ন
ওড়াউড়ি। খাবারের খোঁজে এসব পাখি বাড়ির পাশের জলাশয়, বিল-ঝিল, পরিত্যক্ত
জায়গা ও ডোবায় অনুসন্ধান করছে। স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান, তীব্র
শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে সাইবেরিয়া থেকে নানা জাতের পাখি উড়ে এসে
চণ্ডীপুল এলাকার নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজসংলগ্ন জলাশয়ে অস্থায়ী বসতি গেড়েছে।
এসব পাখির মধ্যে হাঁস-জাতীয় প্রজাতির আধিক্যই বেশি। শিকারিরা যেন বিদেশি
‘অতিথি’ এসব পাখির উপদ্রব করতে না পারে, সে জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা
নিজেদের মতো করে নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখভাল করছেন।
নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক তাহের উদ্দিন বলেন, পাখিদের অস্থায়ী আবাস শহরের ঠিক লাগোয়া জলাশয়ে হওয়ায় অনেকেই পাখি দেখতে নিয়মিত ভিড় করছেন। পাখিরা স্থানটিকে নিরাপদ মনে করেছে বলেই এখানে আশ্রয় নিয়েছে। বিশেষ করে সকাল ও বিকেলে পাখির কিচিরমিচির শব্দে আশপাশের এলাকার পরিবেশটাই মধুর হেয় পড়ে।
আবাসনের চাপে পিষ্ট ইট-পাথরের সিলেট নগরে উন্মুক্ত স্থান দিনে দিনে ক্রমশই সংকুচিত হচ্ছে। এ অবস্থায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাঁ পাশে কয়েক একর বিস্তৃত উন্মুক্ত জলাশয় রয়েছে। আশপাশের বাড়িঘরের ফাঁকে ফাঁকেও রয়েছে ডোবা-বিল-ঝিল। তিন বছর ধরে নিয়মিত শীতের পাখিরা এই উন্মুক্ত স্থানে কয়েক মাসের জন্য অস্থায়ী বসতি তৈরি করছে।
চণ্ডীপুল এলাকার ব্যবসায়ী আবুল বাশার বলেন, পাখি শিকারিরা তৎপর থাকে এখানে। সুযোগ পেলেই ওরা ফাঁদে পাখিদের আটকাতে চায়। তবে এলাকার সচেতন মানুষের বাধার কারণে শিকারিরা সেটা খুব একটা করে উঠতে পারে না। তবে শিকারিদের হাত থেকে পাখিদের রক্ষা করতে পর্যাপ্ত নজরদারি প্রয়োজন। এটি সম্ভব হলে প্রতিবছরই এখানে পাখি আসবে। এমনকি আশপাশের জলাশয়গুলোতেও পাখিদের অবাধ বিচরণের বিষয়টি নিশ্চিত হবে।
নগরের প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে শীতের পাখির আগমনের বিষয়টি মোটামুটিভাবে প্রচারিত হয়ে গেছে। এ খবরটি নগরবাসীর জীবনযাপনে অন্য এক ধরনের প্রাণচাঞ্চল্য ও আমেজের জন্ম দিয়েছে। কারণ, অনেকেই এখন সকাল কিংবা বিকেলে দলবেঁধে পাখি দেখতে চণ্ডীপুল এলাকায় যাচ্ছেন। কেউ কেউ পাখির সঙ্গে সেলফিও তুলছেন। মানুষের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় পাখিদের স্থান ত্যাগের আশঙ্কা করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের ভাষ্য, দর্শনার্থীদের এমন কিছুই করা উচিত নয়, যা থেকে পাখিরা জলাশয়টি অনিরাপদ ভাবতে শুরু করে দেয়।
সকাল থেকে বিকেল। এরপর হিমসন্ধ্যা শরীরে জড়িয়ে আসে শীতের রাত। তবুও থামে না পাখিদের কলরব। এ যেন জীবনানন্দের কবিতার সেই পঙ্ক্তির মতোই—‘রাত আরো বাড়িতেছে—এক সারি রাজহাঁস চুপে চুপে চ’লে যায় তাই,/এই শান্ত রাত্রিময় পৃথিবীরে ইহাদের পালকের নরম ধবল/তুলি দিয়ে আঁকে এরা—পৃথিবীতে এই বিজনতা যেন কোনোখানে নাই।’
নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক তাহের উদ্দিন বলেন, পাখিদের অস্থায়ী আবাস শহরের ঠিক লাগোয়া জলাশয়ে হওয়ায় অনেকেই পাখি দেখতে নিয়মিত ভিড় করছেন। পাখিরা স্থানটিকে নিরাপদ মনে করেছে বলেই এখানে আশ্রয় নিয়েছে। বিশেষ করে সকাল ও বিকেলে পাখির কিচিরমিচির শব্দে আশপাশের এলাকার পরিবেশটাই মধুর হেয় পড়ে।
আবাসনের চাপে পিষ্ট ইট-পাথরের সিলেট নগরে উন্মুক্ত স্থান দিনে দিনে ক্রমশই সংকুচিত হচ্ছে। এ অবস্থায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাঁ পাশে কয়েক একর বিস্তৃত উন্মুক্ত জলাশয় রয়েছে। আশপাশের বাড়িঘরের ফাঁকে ফাঁকেও রয়েছে ডোবা-বিল-ঝিল। তিন বছর ধরে নিয়মিত শীতের পাখিরা এই উন্মুক্ত স্থানে কয়েক মাসের জন্য অস্থায়ী বসতি তৈরি করছে।
চণ্ডীপুল এলাকার ব্যবসায়ী আবুল বাশার বলেন, পাখি শিকারিরা তৎপর থাকে এখানে। সুযোগ পেলেই ওরা ফাঁদে পাখিদের আটকাতে চায়। তবে এলাকার সচেতন মানুষের বাধার কারণে শিকারিরা সেটা খুব একটা করে উঠতে পারে না। তবে শিকারিদের হাত থেকে পাখিদের রক্ষা করতে পর্যাপ্ত নজরদারি প্রয়োজন। এটি সম্ভব হলে প্রতিবছরই এখানে পাখি আসবে। এমনকি আশপাশের জলাশয়গুলোতেও পাখিদের অবাধ বিচরণের বিষয়টি নিশ্চিত হবে।
নগরের প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে শীতের পাখির আগমনের বিষয়টি মোটামুটিভাবে প্রচারিত হয়ে গেছে। এ খবরটি নগরবাসীর জীবনযাপনে অন্য এক ধরনের প্রাণচাঞ্চল্য ও আমেজের জন্ম দিয়েছে। কারণ, অনেকেই এখন সকাল কিংবা বিকেলে দলবেঁধে পাখি দেখতে চণ্ডীপুল এলাকায় যাচ্ছেন। কেউ কেউ পাখির সঙ্গে সেলফিও তুলছেন। মানুষের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় পাখিদের স্থান ত্যাগের আশঙ্কা করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। তাঁদের ভাষ্য, দর্শনার্থীদের এমন কিছুই করা উচিত নয়, যা থেকে পাখিরা জলাশয়টি অনিরাপদ ভাবতে শুরু করে দেয়।
সকাল থেকে বিকেল। এরপর হিমসন্ধ্যা শরীরে জড়িয়ে আসে শীতের রাত। তবুও থামে না পাখিদের কলরব। এ যেন জীবনানন্দের কবিতার সেই পঙ্ক্তির মতোই—‘রাত আরো বাড়িতেছে—এক সারি রাজহাঁস চুপে চুপে চ’লে যায় তাই,/এই শান্ত রাত্রিময় পৃথিবীরে ইহাদের পালকের নরম ধবল/তুলি দিয়ে আঁকে এরা—পৃথিবীতে এই বিজনতা যেন কোনোখানে নাই।’
No comments