পুড়ে গেল অন্ধ মায়ের স্বপ্ন by পান্না বালা
(বরিশালে
দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রলবোমায় নিহত সোহাগ বিশ্বাসের মায়ের আহাজারি।
গতকাল ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার শংকরপাশা গ্রামের নিজ বাড়িতে l প্রথম
আলো) অন্ধ
মা সেলিনা বেগম। ছোটবেলায় টাইফয়েড জ্বরে দুই চোখের দৃষ্টি হারান। বিয়ের
পর তাঁর কোলজুড়ে আসে সোহাগ বিশ্বাস। কিন্তু মাত্র দেড় বছর পরই স্বামীকেও
হারান সেলিনা। তখন থেকে ছেলে সোহাগই ছিলেন তাঁর এ অন্ধকার পৃথিবীর আলো।
সে আলোতেই স্বপ্ন দেখতেন তিনি। এবার সেলিনার (৩৬) সে স্বপ্নটাও পুড়ে গেল।
অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রলবোমা কেড়ে নিয়েছে তাঁর
আদরের ছেলে সোহাগকে (১৭)। গতকাল রোববার ভোরে বরিশাল থেকে ফরিদপুর ফেরার
পথে বোমা হামলায় মারা গেছেন ট্রাকচালকের সহকারী ছেলে সোহাগ। এ ঘটনায় আহত
হন ট্রাকচালক রিপন শেখও (২৩)। সোহাগ বিশ্বাস ও রিপন শেখের বাড়ি
যথাক্রমে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার শংকরপাশা ও মীরের গ্রামে। ভোর সাড়ে
ছয়টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সানুহারি
এলাকায় পেট্রলবোমা হামলার শিকার হন তাঁরা।
স্বামীকে হারিয়ে প্রতিবন্ধী বাবা দলিলউদ্দিন মন্ডলের (৬৫) সংসারে অবুঝ সোহাগকে নিয়ে ঠাঁই নিয়েছিলেন সেলিনা। বাবা দলিলউদ্দিনের সংসারেও তখন টানাটানি। দুই ছেলে, তিন মেয়ে ও নাতি সোহাগকে নিয়ে চরম সংকটে পড়েন দলিল।
সোহাগের মামা হায়দার মন্ডল জানান, অসীম সীমাবদ্ধতা আর চরম দৈন্যদশার মধ্যেই সোহাগকে বুকে চেপে বড় করেছেন অন্ধ সেলিনা। স্বপ্ন দেখেছেন সোহাগ বড় হয়ে রোজগার করবে, তাঁর দুঃখ-যন্ত্রণার অবসান হবে। পরিবারের চাপে পাঁচ বছর আগে সেলিনার বিয়ে হয় রামনগর ইউনিয়নের গজগাঁহ গ্রামের কৃষক ওসমান মিয়ার সঙ্গে। ওসমান নিজেও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।
অভাবের কারণে লেখাপাড়া শিখতে পারেননি সোহাগ। একটু বুঝতে শিখেই নিজে কিছু করে মায়ের অভাব ঘোচানোর দিকে মন দেন।
গতকাল দুপুরে শংকরপাশা গ্রামে মৃত সোহাগের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় হৃদয়বিদারক দৃশ্য। বাড়িতে শুধু কান্না আর আর্তনাদ। অন্ধ মা সেলিনার চিৎকার, ‘আদরের সোহাগ, তুই আমার কাছে ফিইরা আয়। আমি টাকাপয়সা কিছু চাই না। শুধু তুই ফিরা আয়। আমার বুকে আয়।’
বিকেল পাঁচটার দিকে সোহাগের মৃতদেহ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে শংকরপাশার বাড়িতে আনা হয়। লাশ নিয়ে আসেন সোহাগের মামা হায়দার ও খালু মন্নু। জানাজা শেষে সন্ধ্যার পর স্থানীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করার কথা।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার গোপালচন্দ্র পাল বলেন, রিপনের দুই হাত, মুখমণ্ডল ও আংশিকভাবে দুই পা ঝলছে গেছে। পুড়ে গেছে শরীরের ১২ শতাংশ।
স্বামীকে হারিয়ে প্রতিবন্ধী বাবা দলিলউদ্দিন মন্ডলের (৬৫) সংসারে অবুঝ সোহাগকে নিয়ে ঠাঁই নিয়েছিলেন সেলিনা। বাবা দলিলউদ্দিনের সংসারেও তখন টানাটানি। দুই ছেলে, তিন মেয়ে ও নাতি সোহাগকে নিয়ে চরম সংকটে পড়েন দলিল।
সোহাগের মামা হায়দার মন্ডল জানান, অসীম সীমাবদ্ধতা আর চরম দৈন্যদশার মধ্যেই সোহাগকে বুকে চেপে বড় করেছেন অন্ধ সেলিনা। স্বপ্ন দেখেছেন সোহাগ বড় হয়ে রোজগার করবে, তাঁর দুঃখ-যন্ত্রণার অবসান হবে। পরিবারের চাপে পাঁচ বছর আগে সেলিনার বিয়ে হয় রামনগর ইউনিয়নের গজগাঁহ গ্রামের কৃষক ওসমান মিয়ার সঙ্গে। ওসমান নিজেও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী।
অভাবের কারণে লেখাপাড়া শিখতে পারেননি সোহাগ। একটু বুঝতে শিখেই নিজে কিছু করে মায়ের অভাব ঘোচানোর দিকে মন দেন।
গতকাল দুপুরে শংকরপাশা গ্রামে মৃত সোহাগের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় হৃদয়বিদারক দৃশ্য। বাড়িতে শুধু কান্না আর আর্তনাদ। অন্ধ মা সেলিনার চিৎকার, ‘আদরের সোহাগ, তুই আমার কাছে ফিইরা আয়। আমি টাকাপয়সা কিছু চাই না। শুধু তুই ফিরা আয়। আমার বুকে আয়।’
বিকেল পাঁচটার দিকে সোহাগের মৃতদেহ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে শংকরপাশার বাড়িতে আনা হয়। লাশ নিয়ে আসেন সোহাগের মামা হায়দার ও খালু মন্নু। জানাজা শেষে সন্ধ্যার পর স্থানীয় কবরস্থানে তাঁকে দাফন করার কথা।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার গোপালচন্দ্র পাল বলেন, রিপনের দুই হাত, মুখমণ্ডল ও আংশিকভাবে দুই পা ঝলছে গেছে। পুড়ে গেছে শরীরের ১২ শতাংশ।
No comments