নির্বাচন প্রতিরোধ ও বর্জন করুন
লন্ডন থেকে এক ভিডিওবার্তায় দেশবাসীর প্রতি আজকের ভোট প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির
সিনিয়র সহসভাপতি তারেক রহমান। নির্বাচনের একদিন আগে গতকাল শনিবার পাঠানো তারেক রহমানের এই ২২ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তাটি ইউটিউবের পাশাপাশি তারেক রহমানের নামে একটি ফেসবুক পাতায় প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিও বার্তায় দল ও জোটের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবীদের প্রতি ভোট বর্জন ও প্রতিরোধের আহ্বান জানান। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দেশের মানুষের বিরুদ্ধে না যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। আওয়ামী লীগের উদ্দেশেও এ নির্বাচন এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এ বিএনপি নেতা। দলের সিনিয়র সহ-সভাপতির ভিডিও বার্তার বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছেন বিএনপির সহদফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর গ্রেফতার এবং পরের বছর জামিনে মুক্তি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ লন্ডনে অবস্থান করছেন তারেক রহমান। চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার মুহূর্তে তিনি আর রাজনীতি করবেন না বলে লিখিত অঙ্গীকার করেন। লন্ডনে যাওয়ার পর দেশবাসীর উদ্দেশে এটাই তার প্রথম ভিডিও বার্তা। তবে লন্ডনে বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশে দলীয় কাউন্সিলে অংশ নিয়েছিলেন তারেক।
ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান বলেছেন, 'সরকার একটি 'প্রহসনের' নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। আজ সময় এসেছে আমাদের সবার ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিরোধ, প্রতিহত ও বর্জন করার। ব্যক্তিস্বার্থে নয়, দলীয় স্বার্থে নয়; এটা করতে হবে দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে, দেশের অস্তিত্বের স্বার্থে।'
নির্দলীয় সরকারের দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় ভোট বর্জন করে তা ঠেকাতে শনি ও রোববার দেশব্যাপী হরতাল ডাকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া 'গৃহবন্দি' অবস্থায় রয়েছেন বলেও তারেক দাবি করেন। তবে সরকার তা অস্বীকার করছে।
'নির্দলীয় সরকার'-এর দাবি উপেক্ষা করায় আওয়ামী লীগকে ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তারেক বলেন, 'তিনি কেবল অনিরপেক্ষই নন, খোদ আওয়ামী লীগের প্রধান। কোন ভরসায়, কিসের ভিত্তিতে বিএনপি বা অন্য যে কোনো দল শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে?'
সংবিধান অনুসরণের বিষয়ে তিনি বলেন, 'সংবিধান তো ঐশী বাণী নয় যে, এটিকে পরিবর্তন করা যাবে না। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে এ পর্যন্ত ১৫ বার আমাদের সংবিধান সংশোধিত হয়েছে। তাহলে জনগণের চাওয়া অনুযায়ী আমরা কেন ষোড়শ সংশোধন করতে পারব না?'
'একতরফা' নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েমের পথে এগোচ্ছে বলেও দাবি করেন তারেক।
বিরোধী দলবিহীন নির্বাচনে ১৫৩ আসনের প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগকে মুক্তিকামী জনতা এমনভাবেই প্রত্যাখ্যান ও ধিক্কার জানালেন যে, তারা শতচেষ্টা করেও ৩০০টির এমনকি অর্ধেক আসনেও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড় করাতে পারল না।'
তিনি বলেন, 'এ দেশের হতভাগ্য জনসাধারণকে ৫ বছর অন্তর ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র অনুশীলনের একমাত্র সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত করতে চাইছে। বিশ্ব ইতিহাসে এমন প্রতারণামূলক নির্বাচন এর আগে কখনও ঘটেনি।'
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে দাবি করেন, 'রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা, রাজনৈতিক গুম-খুন, সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যা, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, ধর্মপ্রাণ নাগরিকদের গণহত্যা, আর দুর্নীতির স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব অভিযোগের মুখে মানুষ প্রতিটি পদে পদে এ সরকারের ওপর অনাস্থার কথা জানিয়ে দিয়েছে।'
বিএনপির চলমান আন্দোলনকে 'গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের' সংগ্রাম অভিহিত করেন তারেক বলেন, 'দেশবাসীকে সাথে নিয়ে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে আমাদের যে আন্দোলন, তাতে অনেক নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। তাদের উৎসর্গের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য হলেও আমাদের ঘরে-ঘরে, গ্রামে-গ্রামে, শহরে-শহরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।' তিনি যে কোনো মূল্যে এই সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'এ সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী।
'এখন সর্বশক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার সময়। আর নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা নয়। এখন থেকে লক্ষ্য একটাই_ সব ক্ষুদ্র বিভাজন ভুলে স্বৈরাচারী সরকার আর তার প্রহসনের নির্বাচনকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করতে হবে।'
তারেক রহমান দাবি করেন, 'গত পাঁচ বছরে দেশের সম্পদের অভূতপূর্ব লুটপাট, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ন্যক্কারজনক বিনাশ আর রাজনৈতিক-বিরোধী ও সমালোচকদের নজিরবিহীন দমনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, গত নির্বাচনে তাদের ক্ষমতা লাভের প্রক্রিয়াটি প্রকৃতপক্ষেই কলঙ্কজনক ছিল।'
বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আরও দাবি করেন, 'বাংলাদেশজুড়ে গভীর রাজনৈতিক সংকট চলছে। জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগের ওপর বিক্ষুব্ধ হয়ে আছে দেশের মানুষ। জনসমর্থন ও আত্মবিশ্বাস শূন্যের কোঠায় পেঁৗছানো আওয়ামী লীগ সরকার গণমানুষের ইচ্ছাকে তাদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।'
নির্বাচন স্থগিতের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিও আহ্বান জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা বলেছিলেন যে, তিনি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব নয়, শান্তি চান। আর সেই শান্তির পূর্বশর্ত দেশের মানুষের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে পাতানো নির্বাচনের খেলা বন্ধ করা।'
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, 'ভেবে দেখুন, দেশের সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন দিয়ে, পদে পদে আমাদের প্রাণপ্রিয় ইসলাম ও ধর্মীয় সম্প্রীতিকে রক্তাক্ত করে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো গণদাবিকে ধূলিসাৎ করে, এমন লজ্জাজনক নির্বাচন কি একটি তথাকথিত গণতান্ত্রিক দলকে মানায়? এই নির্বাচন দিয়ে মানুষের ঘৃণা-অভিশাপ ছাড়া আপনাদের আর কী অর্জন হবে?'
তারেক বলেন, 'দেশের রাজনীতিতে আজকের দুটি পক্ষ বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগ নয়, ১৮ দল বনাম মহাজোট নয়। দুটি পক্ষ আজ গণতন্ত্র বনাম স্বৈরতন্ত্র, বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি বনাম অন্য দেশের পক্ষের শক্তি, গণমানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বনাম ব্যক্তিবিশেষের ক্ষমতার অভিলাষ।' দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'পরিস্থিতির বিচারে আজ কোন পক্ষটি আপনাদের অবলম্বন করা উচিত, তা আপনাদেরই সিদ্ধান্ত। যে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বলে আপনারা সবাই বিশ্বাস করেন, সেই ব্যবস্থার পক্ষেই আমাদের এত সংগ্রাম। তাই এই সংগ্রাম আমাদের একার নয়, এটি আপনাদেরও সংগ্রাম।'
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তারেক বলেন, 'আপনারা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্মী। দেশের পরিস্থিতি বা সরকারে থাকা দলের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা যা-ই হোক, আপনারা দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যেতে পারেন না।' তিনি আরও বলেন, 'আপনাদের চালক আপনাদের বিবেক, আর আপনাদের চাকরিদাতা এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের কষ্টার্জিত অর্থে আপনাদের সংস্থান হয়। এই মানুষদের ওপর জুলুম-নির্যাতনে আপনাদের অনেকেরই অংশগ্রহণ রয়েছে।' 'আজ যারা গণবিরোধী কাজ করতে আপনাদের (পুলিশ, র্যাব, বিজিবি) প্রণোদনা দিচ্ছে, গণমানুষের চাপে যখন তাদের অবশ্যম্ভাবী পতন ঘটবে, তখন জনতার কাঠগড়ায় সেই সব অপরাধীর পাশাপাশি যদি আপনাদেরও দাঁড়াতে হয়, তবে তা হবে অত্যন্ত লজ্জার ও কলঙ্কের।'
সিনিয়র সহসভাপতি তারেক রহমান। নির্বাচনের একদিন আগে গতকাল শনিবার পাঠানো তারেক রহমানের এই ২২ মিনিট ৫৮ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তাটি ইউটিউবের পাশাপাশি তারেক রহমানের নামে একটি ফেসবুক পাতায় প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিও বার্তায় দল ও জোটের নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষ ও পেশাজীবীদের প্রতি ভোট বর্জন ও প্রতিরোধের আহ্বান জানান। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দেশের মানুষের বিরুদ্ধে না যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। আওয়ামী লীগের উদ্দেশেও এ নির্বাচন এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন এ বিএনপি নেতা। দলের সিনিয়র সহ-সভাপতির ভিডিও বার্তার বস্তুনিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছেন বিএনপির সহদফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারির পর গ্রেফতার এবং পরের বছর জামিনে মুক্তি নিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ লন্ডনে অবস্থান করছেন তারেক রহমান। চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার মুহূর্তে তিনি আর রাজনীতি করবেন না বলে লিখিত অঙ্গীকার করেন। লন্ডনে যাওয়ার পর দেশবাসীর উদ্দেশে এটাই তার প্রথম ভিডিও বার্তা। তবে লন্ডনে বিএনপির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশে দলীয় কাউন্সিলে অংশ নিয়েছিলেন তারেক।
ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান বলেছেন, 'সরকার একটি 'প্রহসনের' নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। আজ সময় এসেছে আমাদের সবার ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিরোধ, প্রতিহত ও বর্জন করার। ব্যক্তিস্বার্থে নয়, দলীয় স্বার্থে নয়; এটা করতে হবে দেশের ভবিষ্যতের স্বার্থে, দেশের অস্তিত্বের স্বার্থে।'
নির্দলীয় সরকারের দাবি উপেক্ষিত হওয়ায় ভোট বর্জন করে তা ঠেকাতে শনি ও রোববার দেশব্যাপী হরতাল ডাকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া 'গৃহবন্দি' অবস্থায় রয়েছেন বলেও তারেক দাবি করেন। তবে সরকার তা অস্বীকার করছে।
'নির্দলীয় সরকার'-এর দাবি উপেক্ষা করায় আওয়ামী লীগকে ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তারেক বলেন, 'তিনি কেবল অনিরপেক্ষই নন, খোদ আওয়ামী লীগের প্রধান। কোন ভরসায়, কিসের ভিত্তিতে বিএনপি বা অন্য যে কোনো দল শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাবে?'
সংবিধান অনুসরণের বিষয়ে তিনি বলেন, 'সংবিধান তো ঐশী বাণী নয় যে, এটিকে পরিবর্তন করা যাবে না। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে এ পর্যন্ত ১৫ বার আমাদের সংবিধান সংশোধিত হয়েছে। তাহলে জনগণের চাওয়া অনুযায়ী আমরা কেন ষোড়শ সংশোধন করতে পারব না?'
'একতরফা' নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগ বাকশাল কায়েমের পথে এগোচ্ছে বলেও দাবি করেন তারেক।
বিরোধী দলবিহীন নির্বাচনে ১৫৩ আসনের প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'আওয়ামী লীগকে মুক্তিকামী জনতা এমনভাবেই প্রত্যাখ্যান ও ধিক্কার জানালেন যে, তারা শতচেষ্টা করেও ৩০০টির এমনকি অর্ধেক আসনেও কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী দাঁড় করাতে পারল না।'
তিনি বলেন, 'এ দেশের হতভাগ্য জনসাধারণকে ৫ বছর অন্তর ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র অনুশীলনের একমাত্র সুযোগ থেকেও তারা বঞ্চিত করতে চাইছে। বিশ্ব ইতিহাসে এমন প্রতারণামূলক নির্বাচন এর আগে কখনও ঘটেনি।'
খালেদা জিয়ার বড় ছেলে দাবি করেন, 'রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতা, রাজনৈতিক গুম-খুন, সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যা, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি, ধর্মপ্রাণ নাগরিকদের গণহত্যা, আর দুর্নীতির স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব অভিযোগের মুখে মানুষ প্রতিটি পদে পদে এ সরকারের ওপর অনাস্থার কথা জানিয়ে দিয়েছে।'
বিএনপির চলমান আন্দোলনকে 'গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের' সংগ্রাম অভিহিত করেন তারেক বলেন, 'দেশবাসীকে সাথে নিয়ে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে আমাদের যে আন্দোলন, তাতে অনেক নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। তাদের উৎসর্গের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য হলেও আমাদের ঘরে-ঘরে, গ্রামে-গ্রামে, শহরে-শহরে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।' তিনি যে কোনো মূল্যে এই সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'এ সরকারের পতন অবশ্যম্ভাবী।
'এখন সর্বশক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার সময়। আর নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা নয়। এখন থেকে লক্ষ্য একটাই_ সব ক্ষুদ্র বিভাজন ভুলে স্বৈরাচারী সরকার আর তার প্রহসনের নির্বাচনকে যে কোনো মূল্যে প্রতিহত করতে হবে।'
তারেক রহমান দাবি করেন, 'গত পাঁচ বছরে দেশের সম্পদের অভূতপূর্ব লুটপাট, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ন্যক্কারজনক বিনাশ আর রাজনৈতিক-বিরোধী ও সমালোচকদের নজিরবিহীন দমনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে, গত নির্বাচনে তাদের ক্ষমতা লাভের প্রক্রিয়াটি প্রকৃতপক্ষেই কলঙ্কজনক ছিল।'
বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আরও দাবি করেন, 'বাংলাদেশজুড়ে গভীর রাজনৈতিক সংকট চলছে। জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগের ওপর বিক্ষুব্ধ হয়ে আছে দেশের মানুষ। জনসমর্থন ও আত্মবিশ্বাস শূন্যের কোঠায় পেঁৗছানো আওয়ামী লীগ সরকার গণমানুষের ইচ্ছাকে তাদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।'
নির্বাচন স্থগিতের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিও আহ্বান জানান তারেক রহমান। তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা বলেছিলেন যে, তিনি সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করবেন। তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব নয়, শান্তি চান। আর সেই শান্তির পূর্বশর্ত দেশের মানুষের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে পাতানো নির্বাচনের খেলা বন্ধ করা।'
আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে বলেন, 'ভেবে দেখুন, দেশের সার্বভৌমত্বকে বিসর্জন দিয়ে, পদে পদে আমাদের প্রাণপ্রিয় ইসলাম ও ধর্মীয় সম্প্রীতিকে রক্তাক্ত করে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো গণদাবিকে ধূলিসাৎ করে, এমন লজ্জাজনক নির্বাচন কি একটি তথাকথিত গণতান্ত্রিক দলকে মানায়? এই নির্বাচন দিয়ে মানুষের ঘৃণা-অভিশাপ ছাড়া আপনাদের আর কী অর্জন হবে?'
তারেক বলেন, 'দেশের রাজনীতিতে আজকের দুটি পক্ষ বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগ নয়, ১৮ দল বনাম মহাজোট নয়। দুটি পক্ষ আজ গণতন্ত্র বনাম স্বৈরতন্ত্র, বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি বনাম অন্য দেশের পক্ষের শক্তি, গণমানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা বনাম ব্যক্তিবিশেষের ক্ষমতার অভিলাষ।' দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, 'পরিস্থিতির বিচারে আজ কোন পক্ষটি আপনাদের অবলম্বন করা উচিত, তা আপনাদেরই সিদ্ধান্ত। যে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না বলে আপনারা সবাই বিশ্বাস করেন, সেই ব্যবস্থার পক্ষেই আমাদের এত সংগ্রাম। তাই এই সংগ্রাম আমাদের একার নয়, এটি আপনাদেরও সংগ্রাম।'
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে তারেক বলেন, 'আপনারা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের কর্মী। দেশের পরিস্থিতি বা সরকারে থাকা দলের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা যা-ই হোক, আপনারা দেশের মানুষের বিরুদ্ধে যেতে পারেন না।' তিনি আরও বলেন, 'আপনাদের চালক আপনাদের বিবেক, আর আপনাদের চাকরিদাতা এই দেশের খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের কষ্টার্জিত অর্থে আপনাদের সংস্থান হয়। এই মানুষদের ওপর জুলুম-নির্যাতনে আপনাদের অনেকেরই অংশগ্রহণ রয়েছে।' 'আজ যারা গণবিরোধী কাজ করতে আপনাদের (পুলিশ, র্যাব, বিজিবি) প্রণোদনা দিচ্ছে, গণমানুষের চাপে যখন তাদের অবশ্যম্ভাবী পতন ঘটবে, তখন জনতার কাঠগড়ায় সেই সব অপরাধীর পাশাপাশি যদি আপনাদেরও দাঁড়াতে হয়, তবে তা হবে অত্যন্ত লজ্জার ও কলঙ্কের।'
No comments