অর্থনীতির স্বার্থে সমঝোতা চাই
সরকার বলছে, এটি সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও আমাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য সমঝোতার প্রয়োজন এখন আরও তীব্র হয়েছে। আমরা অত্যন্ত দুশ্চিন্তার সঙ্গে লক্ষ করছি যে চলমান সাংঘর্ষিক রাজনীতি ও অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগে অনুৎসাহ দেখা যাচ্ছে। সরকারের আর্থসামাজিক উন্নতির জন্য যে কর্মসূচিগুলো ছিল, সেগুলো থেকে দৃষ্টি অন্য দিকে সরে যাচ্ছে। নিম্ন ও স্বল্প আয়ের ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা ক্রমেই লোপ পাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও উৎপাদন চালানোর খরচ বেড়ে যাচ্ছে, যার কারণে বিদেশিদের সঙ্গে প্রতিযোগসক্ষমতা কমে যাচ্ছে আমাদের বিনিয়োগকারীদের। রপ্তানি ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। এসব কারণে আমাদের অর্থনীতির প্রতিকূলতা অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
যে সাংঘর্ষিক রাজনীতি ও সহিংসতা দেখছি, তাতে বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের সমঝোতার মধ্যে আসতেই হবে। একটা গ্রহণযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রাখতে হবে। এই সংকটে যে আর্থসামাজিক ক্ষতি হচ্ছে, তা থেকে আমাদের অবশ্যই উত্তরণ পেতে হবে। সে জন্য ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে পরিত্যাগ করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা, সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এবং সহিংসতার রাজনীতি বন্ধ করার বিষয়ে সমঝোতার দিকে এগোনোর চেষ্টা করতে হবে। এগুলোকে কেন্দ্র করে আলোচনা ও সমঝোতার দিকেই আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। তা না করতে পারলে গত দুই দশকের গণতান্ত্রিক শাসনে যে আর্থসামাজিক উন্নতি হয়েছে, তা ধরে রাখা কঠিন হবে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সামনে যে সম্ভাবনাগুলো আছে, সেগুলোও অর্জন করা দুরূহ হয়ে যাবে। বৈরী রাজনীতির কারণে আমরা আর পেছাতে চাই না।
মোস্তাফিজুর রহমান: নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
মোস্তাফিজুর রহমান: নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
No comments