পোশাক খাতের প্রণোদনা প্যাকেজ শিগগির by আবু কাওসার
রাজনৈতিক সহিংসতার বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত তৈরি পোশাক খাত রক্ষায়
'প্রণোদনা প্যাকেজ' ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে একটি খসড়া তৈরি করেছে
অর্থ মন্ত্রণালয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে তৈরি পোশাক শিল্প বাঁচাতে কর ছাড়সহ
সুনির্দিষ্ট কিছু সুবিধা দেওয়ার দাবি করেছিলেন সম্প্রতি পোশাক মালিকরা। এরই
পরিপ্রেক্ষিতে শিগগির প্রস্তাবিত প্যাকেজ ঘোষণা করবে সরকার। নির্ভরযোগ্য
সূত্রে জানা গেছে, এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছে অর্থ
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তরা। নির্বাচনের পর তা ঘোষণা করা হতে পারে।
যেসব প্রণোদনা দেওয়া হতে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে_ পোশাক রফতানি আয়ে উৎসে করে ছাড়, ক্যাশ ইনিশিয়েটিভ বা নগদ সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি ও রফতানি ঋণের সীমা আরও সহজ করা ইত্যাদি।
পোশাক শিল্পের মালিকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার বিরূপ প্রভাব এবং মজুরি বৃদ্ধির কারণে বেশিরভাগ পোশাক কারখানার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে নীতি-সহায়তা দিতে হবে। তা না হলে ওই সব কারখানা রুগ্ণ হয়ে পড়বে।
যোগাযোগ করা হলে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম পারভেজ চৌধুরী সমকালকে বলেন, একদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব, অন্যদিকে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন বেতন কাঠামো। এ অবস্থায় বেশিরভাগ ছোট ও মাঝারি পোশাক কারখানা টিকে থাকার মতো সামর্থ্য নেই। সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ দিলে ওই সব কারখানা আপাতত প্রতিযোগিতায় টিকে যাবে।
বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয়ে উৎসে কর হার শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ। প্রস্তাবিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় উৎসে কর হার কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ অথবা শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে। অবশ্য এই হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে বিজিএমইএ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে পোশাক খাত থেকে উৎসে কর বাবদ আদায় স্থির করা হয়েছে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত হারে উৎসে কর কমালে এখান থেকে রাজস্ব আয় ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা কম হবে।
রফতানিকে উৎসাহিত করতে বর্তমানে পোশাক খাতে নগদ সহায়তা দেওয়া হয় ৫ শতাংশ হারে। এর পরিমাণ ১ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে। নগদ সহায়তার পরিমাণ বিদ্যমানের চেয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব করা হয়। বর্তমানে নগদ সহায়তা খাতে বছরে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়। এখন পোশাক খাতে রফতানি ঋণের সীমা ২৫ শতাংশ। এ সীমা আরও ছাড় দিয়ে কমপক্ষে ৪০ শতাংশে উন্নীত করা হচ্ছে। রফতানি ঋণের সীমা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন পোশাক মালিকরা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কর ছাড় এবং নগদ সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করলে অতিরিক্ত দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এতে সরকারের আর্থিক চাপ বাড়বে। জানা গেছে, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রস্তাবগুলো কীভাবে কার্যকর করা যায় সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মতামত চাওয়া হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হবে।
পোশাক মালিকদের পক্ষ থেকে আগামী তিন বছরের জন্য এসব সুবিধা চাওয়া হলেও এক বছর মেয়াদের জন্য ঘোষণা করতে পারে সরকার। রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে গত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে_ এই দাবি সংশ্লিষ্ট শিল্প মালিকদের।
জানা গেছে, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধি দল বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একই মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে একটি প্যাকেজ কর্মসূচি তৈরি করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। ওই নির্দেশ অনুযায়ী এখন কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, যে এটা সত্যি যে, রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি পোষাতে পোশাক খাতের জন্য বিশেষ ঋণসুবিধা বিবেচনাধীন।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে অনেক ভালো উদ্যোক্তা বিপদে পড়ে গেছেন। যারা সত্যিকারভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা সরকারের উচিত তাদের রক্ষা করতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেওয়া।
যেসব প্রণোদনা দেওয়া হতে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে_ পোশাক রফতানি আয়ে উৎসে করে ছাড়, ক্যাশ ইনিশিয়েটিভ বা নগদ সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি ও রফতানি ঋণের সীমা আরও সহজ করা ইত্যাদি।
পোশাক শিল্পের মালিকরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার বিরূপ প্রভাব এবং মজুরি বৃদ্ধির কারণে বেশিরভাগ পোশাক কারখানার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থায় তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হলে নীতি-সহায়তা দিতে হবে। তা না হলে ওই সব কারখানা রুগ্ণ হয়ে পড়বে।
যোগাযোগ করা হলে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম পারভেজ চৌধুরী সমকালকে বলেন, একদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতার নেতিবাচক প্রভাব, অন্যদিকে এর সঙ্গে যোগ হয়েছে নতুন বেতন কাঠামো। এ অবস্থায় বেশিরভাগ ছোট ও মাঝারি পোশাক কারখানা টিকে থাকার মতো সামর্থ্য নেই। সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ দিলে ওই সব কারখানা আপাতত প্রতিযোগিতায় টিকে যাবে।
বর্তমানে তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয়ে উৎসে কর হার শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ। প্রস্তাবিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় উৎসে কর হার কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ অথবা শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে। অবশ্য এই হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে বিজিএমইএ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে পোশাক খাত থেকে উৎসে কর বাবদ আদায় স্থির করা হয়েছে এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত হারে উৎসে কর কমালে এখান থেকে রাজস্ব আয় ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি টাকা কম হবে।
রফতানিকে উৎসাহিত করতে বর্তমানে পোশাক খাতে নগদ সহায়তা দেওয়া হয় ৫ শতাংশ হারে। এর পরিমাণ ১ শতাংশ বাড়িয়ে ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হতে পারে। নগদ সহায়তার পরিমাণ বিদ্যমানের চেয়ে দ্বিগুণ করার প্রস্তাব করা হয়। বর্তমানে নগদ সহায়তা খাতে বছরে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়। এখন পোশাক খাতে রফতানি ঋণের সীমা ২৫ শতাংশ। এ সীমা আরও ছাড় দিয়ে কমপক্ষে ৪০ শতাংশে উন্নীত করা হচ্ছে। রফতানি ঋণের সীমা ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন পোশাক মালিকরা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কর ছাড় এবং নগদ সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করলে অতিরিক্ত দেড় হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এতে সরকারের আর্থিক চাপ বাড়বে। জানা গেছে, প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় প্রস্তাবগুলো কীভাবে কার্যকর করা যায় সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মতামত চাওয়া হবে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হবে।
পোশাক মালিকদের পক্ষ থেকে আগামী তিন বছরের জন্য এসব সুবিধা চাওয়া হলেও এক বছর মেয়াদের জন্য ঘোষণা করতে পারে সরকার। রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে গত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে_ এই দাবি সংশ্লিষ্ট শিল্প মালিকদের।
জানা গেছে, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের একটি প্রতিনিধি দল বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে একই মাসের শেষের দিকে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেন অর্থমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে একটি প্যাকেজ কর্মসূচি তৈরি করতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন মন্ত্রী। ওই নির্দেশ অনুযায়ী এখন কাজ করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, যে এটা সত্যি যে, রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি পোষাতে পোশাক খাতের জন্য বিশেষ ঋণসুবিধা বিবেচনাধীন।
বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে অনেক ভালো উদ্যোক্তা বিপদে পড়ে গেছেন। যারা সত্যিকারভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা সরকারের উচিত তাদের রক্ষা করতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেওয়া।
No comments