কংগ্রেসকে বাঁচাতে মাঠে নামলেন প্রিয়াঙ্কা
লোকসভা
নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের গান্ধী পরিবার তার পূর্ণশক্তি নিয়োগ করছে।
রাজনীতিতে সক্রিয় না হওয়া প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও মঙ্গলবার কংগ্রেসের শীর্ষ
নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। এর মাধ্যমে নির্বাচনের আগে কংগ্রেসের
কৌশল রচনায় প্রবেশ ঘটল প্রিয়াঙ্কার। খবর :ইন্ডিয়া টুডে ও আনন্দবাজার
পত্রিকা।
আগামী ১৭ তারিখ কংগ্রেসের
সম্মেলনে দলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট রাহুল
গান্ধীর নাম ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করেই
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষে দলের ভেতর মতবাদ থাকলেও ক্রমবর্ধমান জনমতের
কারণে কংগ্রেস হয়তো নির্বাচনের আগেই তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণায় বাধ্য হবে।
সেক্ষেত্রে ১৭ তারিখই রাহুলের নাম ঘোষিত হতে পারে। তার আগে মঙ্গলবার
রাহুলের বাড়িতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকটি ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এতে যোগ দেওয়া
নেতাদের সবাই দলের মূল নির্বাচনী প্রচার কমিটির সঙ্গে যুক্ত। তবে এ বৈঠকে
রাহুল ছিলেন না। সেখানেই কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর রাজনৈতিক সচিব
আহমেদ প্যাটেল থেকে শুরু করে জনার্দন দ্বিবেদী, দিগ্গি্বজয় সিংহ, অজয়
মাকেন, মধুসূদন মিস্ত্রি, জয়রাম রমেশদের সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক করেন
প্রিয়াঙ্কা। বৈঠকে যোগদানের মাধ্যমে দলের রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে
প্রিয়াঙ্কার ভূমিকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আলোচনার বিষয়বস্তু
প্রকাশ না করলেও দলের একাধিক শীর্ষ নেতার মতে, আলোচনা কী হলো সেটা খুব
বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে এটাই যে, ভোটের আগে কংগ্রেসের
কৌশল নির্ধারণে অবশেষে প্রবেশ ঘটল প্রিয়াঙ্কার। লোকসভা ভোটে রাহুল যখন তার
রাজনৈতিক জীবনের বৃহত্তম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চলেছেন, তখনই আড়াল ভেঙে
দাদার পাশে এসে দাঁড়ালেন বোন। এমনিতেই প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে ভারতে আগ্রহের
কমতি নেই। অনেকে তার মধ্যে ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া দেখেন। কংগ্রেসের কারও
কারও মতে, ভোটে এ বিষয়টি কংগ্রেসের পক্ষে ইতিবাচক হতে পারে। ওই বৈঠকের
পরপরই দলীয় সূত্র জানায়, চলতি বছর অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনে প্রিয়াঙ্কা
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না, তবে রায়বেরিলি ও আমেথি লোকসভা আসনের দেখভাল
করবেন তিনি। এ দুটি আসন থেকে নির্বাচন করেন তার মা সোনিয়া গান্ধী ও ভাই
রাহুল গান্ধী। দলীয় সূত্রমতে, সংগঠনের ভেতর এখন প্রিয়াঙ্কা আরও জোরালো
ভূমিকা রাখবেন এবং রাহুলের নির্বাচনী প্রচারের মূলশক্তি হিসেবে কাজ করবেন।
অনেক দিন ধরেই রাহুলের পরামর্শক হিসেবে প্রিয়াঙ্কা কাজ করছেন বলেও ধারণা
করা হয়। রাহুলকে সঠিক নির্দেশনা দেওয়া ছাড়াও সোনিয়া-রাহুল যখন প্রচারে
ব্যস্ত থাকবেন, তখন দিলি্লতে বসে দলীয় নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার গুরুদায়িত্ব
সামলাবেন প্রিয়াঙ্কা। এ পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের অনেক নেতার দাবি, ১৭ তারিখে
রাহুলকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা না করে দলীয় সভাপতি করা হতে পারে।
সেক্ষেত্রে আসন্ন নির্বাচনে সোনিয়া হয়তো আর প্রার্থীই হবেন না। তখন মায়ের
কেন্দ্র রায়বেরিলিতে প্রিয়াঙ্কার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে।
যদিও সেই সম্ভাবনা নিয়েও সন্দিহান অনেকে। তাদের যুক্তি, প্রিয়াঙ্কা যদি
দিলি্লতে রাহুলের কৌশল রচনায় সাহায্য করেন, তাহলে ভোটে লড়বেন কীভাবে? তা
ছাড়া প্রিয়াঙ্কা প্রার্থী হলে পরিস্থিতির কথা ভেবেই রবার্ট ভদ্রের বিরুদ্ধে
জমি কেলেঙ্কারি খুঁচিয়ে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি।
No comments