'হাতি'র সওয়ারি ক্ষণিকের 'নৌকা'র সওয়ারি আজীবন by রাশেদ মেহেদী
মজার
মানুষ হাজি সেলিম। একই সঙ্গে মজার রাজনীতিবিদও তিনি। আমাদের চেনাজানা
ঘরানার রাজনীতিবিদ নন তিনি। তার ভুবন যেন সত্যি আলাদা। প্রায়ই আদি-অকৃত্রিম
ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলেন। শুধু 'বলন'ই নয়, 'চলন'ও আলাদা। দলবল,
সঙ্গী-সাথীদের নিয়ে চলাফেরা করতে অভ্যস্ত তিনি। দুষ্টু লোকেরা বলেন,
চাটুকার ও চামচাদের বড়ই পছন্দ হাজি সাহেনারাজ। তার বক্তব্য, ওরা সবাই আমাকে
অন্তর দিয়ে ভালোবাসে। ঢাকাইয়া ভাষায় বললেন_ কী যে কন ভাইছাব, যারা লগে
থাকে অরা আমারে অন্তর দিয়া ভালোবাছে। অদের লগে রাখুম না তো রাখমু কারে?'
ঢাকা-৭ আসন থেকে 'স্বতন্ত্র' হিসেবে সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হলো মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেলে পুরান ঢাকার তার নিজের ব্যবসাকেন্দ্র 'গুলশান আর শপিং সেন্টার'-এ। সঙ্গীদের নিয়ে খানাপিনায় ব্যস্ত হাজি সাহেব। আলাদা একটি কক্ষে নিয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বললেন তিনি। শুরুতেই তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনুযোগ করে বললেন, তিনি তার বাসায় মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার না করে মিষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এ অভিযোগ নাকচ করে সমকালকে বলেন, 'আমি ও আমার স্ত্রী হাজি সাহেবের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলেছি, মিষ্টি নিয়েছি।'
সবাই জানেন, হাজি সেলিমের রাজনীতি শুরু বিএনপি কর্মী হিসেবে ১৯৯১ সালে। ১৯৯৪ সালে ওয়ার্ড কমিশনার পদে দলের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে দুটি ওয়ার্ড থেকে কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর কাছে মাত্র ১ হাজার ৯২ ভোটে পরাজিত হন তিনি।
হাজি সেলিম শুরুতেই সমকালকে ঢাকাইয়া ভাষায় বললেন, একটা কথা স্পষ্ট_ এ আসনে 'হাতি' নয়, 'নৌকা'ই জিতেছে। বিজ্ঞ ভোটাররা শুধু মাঝি বদল করেছেন।
সমকাল :নিজের দলের প্রার্থীকে হারিয়ে জিতলেন। কীভাবে জিতলেন?
হাজি সেলিম :ভাই, নিজের দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছি ঠিকই, আওয়ামী লীগ ছাড়ি নাই। দলে ছিলাম, আছি, থাকব। শেখ হাসিনাই আমার রাজনীতির আজীবনের আদর্শ। পুরান ঢাকার মানুষ জানে, তারা দেখেছে, বছরের পর বছর দৌড়ের ওপর থেকেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছাড়ি নাই, শেখ হাসিনাকে ছাড়ি নাই। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর চারদলীয় সরকার আমার বিরুদ্ধে ১৩৭টি মামলা দিয়েছে। আমার স্ত্রীকে অপারেশন ক্লিনহার্টের সময় নানা অত্যাচার-হয়রানি করেছে। আমার সঙ্গে রাজনীতি করা তিনজন তরুণ নেতাকে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করেছে। আমার মাকেও (প্রয়াত) হয়রানি করেছে। আমার ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বারবার। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময়ে নানা রকম হয়রানি হয়েছি। ২০০৮ সালে নির্বাচন করতে না পারলেও দলের সব কার্যক্রমে এলাকার সবার চেয়ে সক্রিয় ছিলাম। তার পরও এবারের নির্বাচনে নেত্রী মনোনয়ন দেননি। তবুও কষ্ট পাই নাই। এলাকার লোকজন এসে বলল, আপনাকে নির্বাচন করতে হবে। আমরা অন্য কিছু চাই না। এলাকার মানুষের ভালোবাসা আমার সবকিছু। তাদের দাবি-চাওয়াকে তো অস্বীকার করতে পারি না। তাই নির্বাচন করতে হলো। হাতি মার্কা হলেও আমার সঙ্গে এলাকার ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন। তারা নিজেরা দিন-রাত আমার জন্য কাজ করেছেন। আমি বিজয়ী হয়েছি। ভোটাররা 'নৌকা'র মাঝি বদল করেছেন।
সমকাল :নির্বাচনী প্রচারে কোনো বাধা পেয়েছেন? কোনো চাপ?
হাজি সেলিম :দুঃখের কথা কী বলব ভাই! আমার প্রতীক ছিল হাতি। নির্বাচনী প্রচারের সময় একটা সার্কাসের হাতি আসছে। আমি এর কিছুই জানি না। সার্কাসের হাতি নিয়া সার্কাস দল দোকানে দোকানে তোলা নিচ্ছে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করলেন, আমি নাকি জ্যান্ত হাতি দিয়ে প্রচার চালাচ্ছি।
আমি এলাকার মানুষের নেতা। দুই যুগ ধরে এ এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গে আছি। তারা কোনো সমস্যার কথা জানালে ছুটে যাই, সাহায্য করি। সমস্যায় টাকা-পয়সাও দিতে হয়। আল্লাহ আমাকে অনেক দিয়েছেন। এত টাকা দান না করলে কী করব? সন্তানের জন্য যথেষ্ট রেখেছি। তার পরও অনেক আছে, সব তো দানই করব। অথচ দ্যাখেন, এটাও অভিযোগ করল_ আমি নাকি টাকা দিয়া ভোটারদের প্রভাবিত করছি। এসব অভিযোগের কারণে ভোটের তিন দিন আগে জজকোর্ট ভবনে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যেতে হলো। প্রতিপক্ষ প্রার্থী যখন বুঝতে পারলেন, ভোটের হাওয়া তার দিকে নাই, ভোটকেন্দ্র দখল করারও সুযোগ নাই, তখন তার লোকেরা কেন্দ্রে কেন্দ্রে বোম ফাটাইয়া ভোটার আসা ঠেকানোর চেষ্টা করল। বোমাবাজি না হলে ভোট আরও অনেক বেশি পড়ত।
সমকাল :পুরান ঢাকায় সন্ত্রাস, দখলবাজি বড় সমস্যা। আপনার বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে এর আগে...
হাজি সেলিম :আমি কখনও কোনো দিন সন্ত্রাস করি নাই; বরং ১৯৯৬ সালে এমপি হওয়ার পর, এলাকায় যারা সন্ত্রাসী ছিল, উল্টাপাল্টা কাজ করত, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কাজে লাগাইয়া দিলাম। আসলে তো সন্ত্রাস, চুরি যা-ই বলেন, সব করে পেটের ক্ষুধার জন্য। ওইটার ব্যবস্থা হলে এসব আর করে না। আমি এবারও কোনো সন্ত্রাস হতে দেব না। আমার এলাকায় সন্ত্রাস থাকবে না, চাঁদাবাজি হবে না_ এটা জোর দিয়ে বলতে পারি।
সমকাল :পুরান ঢাকার মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক সমস্যা, এসব সমস্যা দূর করার জন্য কোনো পরিকল্পনা নিয়েছেন?
হাজি সেলিম :সমস্যার কথা কয়টা বলব, ভাই। এখন শীতকাল, রাস্তাঘাটে চলা যায়। বর্ষার সময় আইলে দেখবেন কী ভয়ঙ্কর অবস্থা। রাস্তায় রাস্তায় হাঁটুপানি জইমা থাকে। আসলে কী জানেন, ঢাকার শুরু পুরান ঢাকা দিয়া। এর পর পরিবার বাড়ছে, আর ঘরের জায়গা কমছে। এখন এক ছটাক জায়গা নিয়াও টানাটানি, নতুন ঘর করলে হাঁটার জায়গা থাকে না। পানির লাইন পাওয়া যায় না। অনেক জায়গা আছে, পানির লাইন, স্যুয়ারেজ লাইন কোনটা_ বোঝাই যায় না। এ অবস্থার মধ্যে কী করব বলেন? আমি চেষ্টা করব, যাতে মানুষের কষ্ট কম হয়। অন্তত পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসের সমস্যা কম হয়। রাস্তায় যেন পানি জমা বন্ধ হয়। কয়টা দিন যাক, আমি সিটি করপোরেশন, রাজউক সব জায়গায় ঘুইর্যা সমস্যা দূর করার চেষ্টা নেব।
সমকাল :পরাজিত প্রতিপক্ষের সহায়তা চাইবেন এলাকার উন্নয়নের জন্য?
হাজি সেলিম :সহযোগিতা তো চাইতেই তার বাসায় গেলাম। উনি আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলেন না।
হাজি সেলিম বললেন, প্রাণ খুইলা আপনার সঙ্গে আরও সুখ-দুঃখের কথা কইতে চাইছিলাম। দ্যাহেন, বাইরে ক-ত লোক। অ্যাহন বিদাই লই। সমকালে একদিন যামু। অনেক কতা জমা অইয়া আছে। সব কতা কমু। ভালো খাবারের ব্যবস্থা রাইখেন।বের। হাজি সেলিম অবশ্য এ অভিযোগ মানতে একদম
ঢাকা-৭ আসন থেকে 'স্বতন্ত্র' হিসেবে সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হলো মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকেলে পুরান ঢাকার তার নিজের ব্যবসাকেন্দ্র 'গুলশান আর শপিং সেন্টার'-এ। সঙ্গীদের নিয়ে খানাপিনায় ব্যস্ত হাজি সাহেব। আলাদা একটি কক্ষে নিয়ে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বললেন তিনি। শুরুতেই তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অনুযোগ করে বললেন, তিনি তার বাসায় মিষ্টি নিয়ে গিয়েছিলেন। তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার না করে মিষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এ অভিযোগ নাকচ করে সমকালকে বলেন, 'আমি ও আমার স্ত্রী হাজি সাহেবের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলেছি, মিষ্টি নিয়েছি।'
সবাই জানেন, হাজি সেলিমের রাজনীতি শুরু বিএনপি কর্মী হিসেবে ১৯৯১ সালে। ১৯৯৪ সালে ওয়ার্ড কমিশনার পদে দলের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে দুটি ওয়ার্ড থেকে কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর কাছে মাত্র ১ হাজার ৯২ ভোটে পরাজিত হন তিনি।
হাজি সেলিম শুরুতেই সমকালকে ঢাকাইয়া ভাষায় বললেন, একটা কথা স্পষ্ট_ এ আসনে 'হাতি' নয়, 'নৌকা'ই জিতেছে। বিজ্ঞ ভোটাররা শুধু মাঝি বদল করেছেন।
সমকাল :নিজের দলের প্রার্থীকে হারিয়ে জিতলেন। কীভাবে জিতলেন?
হাজি সেলিম :ভাই, নিজের দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছি ঠিকই, আওয়ামী লীগ ছাড়ি নাই। দলে ছিলাম, আছি, থাকব। শেখ হাসিনাই আমার রাজনীতির আজীবনের আদর্শ। পুরান ঢাকার মানুষ জানে, তারা দেখেছে, বছরের পর বছর দৌড়ের ওপর থেকেও আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছাড়ি নাই, শেখ হাসিনাকে ছাড়ি নাই। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর চারদলীয় সরকার আমার বিরুদ্ধে ১৩৭টি মামলা দিয়েছে। আমার স্ত্রীকে অপারেশন ক্লিনহার্টের সময় নানা অত্যাচার-হয়রানি করেছে। আমার সঙ্গে রাজনীতি করা তিনজন তরুণ নেতাকে ক্রসফায়ারের নামে গুলি করে হত্যা করেছে। আমার মাকেও (প্রয়াত) হয়রানি করেছে। আমার ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বারবার। ২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময়ে নানা রকম হয়রানি হয়েছি। ২০০৮ সালে নির্বাচন করতে না পারলেও দলের সব কার্যক্রমে এলাকার সবার চেয়ে সক্রিয় ছিলাম। তার পরও এবারের নির্বাচনে নেত্রী মনোনয়ন দেননি। তবুও কষ্ট পাই নাই। এলাকার লোকজন এসে বলল, আপনাকে নির্বাচন করতে হবে। আমরা অন্য কিছু চাই না। এলাকার মানুষের ভালোবাসা আমার সবকিছু। তাদের দাবি-চাওয়াকে তো অস্বীকার করতে পারি না। তাই নির্বাচন করতে হলো। হাতি মার্কা হলেও আমার সঙ্গে এলাকার ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছিলেন। তারা নিজেরা দিন-রাত আমার জন্য কাজ করেছেন। আমি বিজয়ী হয়েছি। ভোটাররা 'নৌকা'র মাঝি বদল করেছেন।
সমকাল :নির্বাচনী প্রচারে কোনো বাধা পেয়েছেন? কোনো চাপ?
হাজি সেলিম :দুঃখের কথা কী বলব ভাই! আমার প্রতীক ছিল হাতি। নির্বাচনী প্রচারের সময় একটা সার্কাসের হাতি আসছে। আমি এর কিছুই জানি না। সার্কাসের হাতি নিয়া সার্কাস দল দোকানে দোকানে তোলা নিচ্ছে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করলেন, আমি নাকি জ্যান্ত হাতি দিয়ে প্রচার চালাচ্ছি।
আমি এলাকার মানুষের নেতা। দুই যুগ ধরে এ এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গে আছি। তারা কোনো সমস্যার কথা জানালে ছুটে যাই, সাহায্য করি। সমস্যায় টাকা-পয়সাও দিতে হয়। আল্লাহ আমাকে অনেক দিয়েছেন। এত টাকা দান না করলে কী করব? সন্তানের জন্য যথেষ্ট রেখেছি। তার পরও অনেক আছে, সব তো দানই করব। অথচ দ্যাখেন, এটাও অভিযোগ করল_ আমি নাকি টাকা দিয়া ভোটারদের প্রভাবিত করছি। এসব অভিযোগের কারণে ভোটের তিন দিন আগে জজকোর্ট ভবনে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যেতে হলো। প্রতিপক্ষ প্রার্থী যখন বুঝতে পারলেন, ভোটের হাওয়া তার দিকে নাই, ভোটকেন্দ্র দখল করারও সুযোগ নাই, তখন তার লোকেরা কেন্দ্রে কেন্দ্রে বোম ফাটাইয়া ভোটার আসা ঠেকানোর চেষ্টা করল। বোমাবাজি না হলে ভোট আরও অনেক বেশি পড়ত।
সমকাল :পুরান ঢাকায় সন্ত্রাস, দখলবাজি বড় সমস্যা। আপনার বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে এর আগে...
হাজি সেলিম :আমি কখনও কোনো দিন সন্ত্রাস করি নাই; বরং ১৯৯৬ সালে এমপি হওয়ার পর, এলাকায় যারা সন্ত্রাসী ছিল, উল্টাপাল্টা কাজ করত, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা কাজে লাগাইয়া দিলাম। আসলে তো সন্ত্রাস, চুরি যা-ই বলেন, সব করে পেটের ক্ষুধার জন্য। ওইটার ব্যবস্থা হলে এসব আর করে না। আমি এবারও কোনো সন্ত্রাস হতে দেব না। আমার এলাকায় সন্ত্রাস থাকবে না, চাঁদাবাজি হবে না_ এটা জোর দিয়ে বলতে পারি।
সমকাল :পুরান ঢাকার মানুষের জীবনযাত্রায় অনেক সমস্যা, এসব সমস্যা দূর করার জন্য কোনো পরিকল্পনা নিয়েছেন?
হাজি সেলিম :সমস্যার কথা কয়টা বলব, ভাই। এখন শীতকাল, রাস্তাঘাটে চলা যায়। বর্ষার সময় আইলে দেখবেন কী ভয়ঙ্কর অবস্থা। রাস্তায় রাস্তায় হাঁটুপানি জইমা থাকে। আসলে কী জানেন, ঢাকার শুরু পুরান ঢাকা দিয়া। এর পর পরিবার বাড়ছে, আর ঘরের জায়গা কমছে। এখন এক ছটাক জায়গা নিয়াও টানাটানি, নতুন ঘর করলে হাঁটার জায়গা থাকে না। পানির লাইন পাওয়া যায় না। অনেক জায়গা আছে, পানির লাইন, স্যুয়ারেজ লাইন কোনটা_ বোঝাই যায় না। এ অবস্থার মধ্যে কী করব বলেন? আমি চেষ্টা করব, যাতে মানুষের কষ্ট কম হয়। অন্তত পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসের সমস্যা কম হয়। রাস্তায় যেন পানি জমা বন্ধ হয়। কয়টা দিন যাক, আমি সিটি করপোরেশন, রাজউক সব জায়গায় ঘুইর্যা সমস্যা দূর করার চেষ্টা নেব।
সমকাল :পরাজিত প্রতিপক্ষের সহায়তা চাইবেন এলাকার উন্নয়নের জন্য?
হাজি সেলিম :সহযোগিতা তো চাইতেই তার বাসায় গেলাম। উনি আমার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করলেন না।
হাজি সেলিম বললেন, প্রাণ খুইলা আপনার সঙ্গে আরও সুখ-দুঃখের কথা কইতে চাইছিলাম। দ্যাহেন, বাইরে ক-ত লোক। অ্যাহন বিদাই লই। সমকালে একদিন যামু। অনেক কতা জমা অইয়া আছে। সব কতা কমু। ভালো খাবারের ব্যবস্থা রাইখেন।বের। হাজি সেলিম অবশ্য এ অভিযোগ মানতে একদম
No comments