নতুন করে শিক্ষা নিয়ে ভাবুন by মোঃ মুজিবুর রহমান
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেও দেশে যে ধরনের
পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হয় অস্থিতিশীল রাজনীতির উত্তাপ সহজে কমবে
না। বরং দিন দিন তা আরও বাড়বে। এরই মধ্যে ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ
নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিকে এগিয়ে চলেছে দেশ। অন্যদিকে, নির্বাচন বর্জনকারী
বিরোধীদলীয় নেতৃত্বাধীন জোট বর্তমান নির্বাচন অনুষ্ঠানের কার্যক্রম বাতিল
করে নতুনভাবে তফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছে। এ উদ্দেশ্যে তারা নবম সংসদ ভেঙে
দেয়ারও দাবি উত্থাপন করেছে। নির্বাচন নিয়ে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি শেষ
পর্যন্ত কোন দিকে প্রবাহিত হয় সেটাই দেখার বিষয় হয়ে রইল। এদিকে আমরা
উদ্বেগের সঙ্গে দেখছি, রাজনৈতিক কারণে সৃষ্ট সহিংসতা ও অস্থিতিশীল
পরিস্থিতি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এরই মধ্যে একরকম ধ্বংসের মুখে ফেলে
দিয়েছে; শিক্ষাকে এক ধরনের টেনে নিয়ে গেছে খাদের কিনারে। এ নিয়ে আমরা
পত্র-পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে বহু আবেদন-নিবেদন করেছি, একই কথা
বিভিন্নভাবে বারবার তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কার্যত আমাদের
আবেদন-নিবেদন কোনো কাজে আসেনি। গণমাধ্যমও গুরুত্বের সঙ্গে এসব বিষয় তুলে
ধরেছে, তাতেও তেমন কোনো ফল দেখা যায়নি। বরং রাজনৈতিক দলগুলো তাদের
পরিকল্পনা মতোই এগিয়ে চলেছে। অথচ ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেশের
শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে এবং তাতে শিক্ষার্থীদের কী ক্ষতি
হচ্ছে, সেদিকে কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ আছে বলে মনে হয় না! রাজনৈতিক পরিস্থিতির
সর্বশেষ ঘটনাবলী পর্যবেক্ষণ করে আমাদের মনে এখন এমন ধারণার জন্ম হচ্ছে যে,
আগামী দিনগুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য অপেক্ষা করছে আরও মহাবিপদ! কারণ আমরা
দেখলাম, রাজনৈতিক ঝড়-ঝঞ্ঝার কবলে পড়ে ২০১৩ সালের পুরো বছর শিক্ষা কার্যক্রম
বিঘ্নিত হয়েছে। রাজনৈতিক তাণ্ডবের মুখে বিপর্যস্ত হয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা।
প্রাথমিক স্তর থেকে আরম্ভ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষা
বিঘ্নিত হয়েছে ব্যাপকভাবে। উচ্চশিক্ষা স্তরে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সৃষ্টি
হয়েছে অনিশ্চয়তা, দেখা দিয়েছে সংশয়। এখনও প্রায় ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি
পরীক্ষা স্থগিত হয়ে আছে। ২০১৪ সালের শুরুতেই যদি দেশে রাজনৈতিক
স্থিতিশীলতা ফিরে না আসে তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে আর বাঁচানো যাবে কিনা
তাতে ঘোর সন্দেহ রয়েছে। কারণ এমনিতেই শিক্ষার যতটুকু ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে
গেছে, এখন আগামী দিনগুলোতে যদি শিক্ষা কার্যক্রম নিরাপদে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া
না যায় তাহলে শিক্ষার্থীদের কপালে আরও দুর্ভোগ আছে- এটা একরকম নিশ্চিত
করেই বলা যায়!
রাজনৈতিক কার্যক্রম কিভাবে চলবে তা রাজনীতিকদের ওপর নির্ভর করলেও শিক্ষা কার্যক্রম কিভাবে পরিচালিত হবে সেটা নিয়েও রাজনীতিকদের ভাবার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নির্ভর করে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর। একইভাবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন নির্ভরশীল। যে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি যত বেশি স্থিতিশীল, সে দেশ তত বেশি উন্নয়ন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে। অথচ আমাদের দেশে উন্নয়নকামী মানুষরা শিক্ষা নিয়ে সৃষ্টিশীল চিন্তা করবে কখন, তাদের অধিকাংশের সময় কাটে রাজনৈতিক মারপ্যাঁচের হিসাব করতে। আমরা দেখছি, বর্তমানে দেশে শিক্ষা যেন কোনো গুরুত্বই পাচ্ছে না। বরং এক কথায় বলা যায়, শিক্ষা সবচেয়ে অবহেলিত খাত হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে শিক্ষায় যতটুকু সফলতা অর্জিত হয়েছিল তাও এখন মলিন হতে চলেছে। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার প্রধান দায়িত্ব যেমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের, তেমনি দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার দায়িত্বও রাজনৈতিক নেতৃত্ব এড়াতে পারে না। বরং শিক্ষাসহ সব খাতের নিরাপদ পরিচালনা নির্ভর করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর। দেশে যদি সারা বছর রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করে তাহলে কোনো কার্যক্রমই স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। মোটা দাগে কথা হল, রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে সব ধরনের কর্মকাণ্ড মুখ থুবড়ে পড়ে, বিঘ্নিত হয় উন্নয়ন কার্যক্রম। শিক্ষা এমন একটি খাত যে খাতের স্বাভাবিক বিকাশ এবং সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। অথচ এটাই আমাদের দেশে সম্ভব হয়নি আজও।
রাজনৈতিক কার্যক্রম কিভাবে চলবে তা রাজনীতিকদের ওপর নির্ভর করলেও শিক্ষা কার্যক্রম কিভাবে পরিচালিত হবে সেটা নিয়েও রাজনীতিকদের ভাবার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি নির্ভর করে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর। একইভাবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন নির্ভরশীল। যে দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতি যত বেশি স্থিতিশীল, সে দেশ তত বেশি উন্নয়ন নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে পারে। অথচ আমাদের দেশে উন্নয়নকামী মানুষরা শিক্ষা নিয়ে সৃষ্টিশীল চিন্তা করবে কখন, তাদের অধিকাংশের সময় কাটে রাজনৈতিক মারপ্যাঁচের হিসাব করতে। আমরা দেখছি, বর্তমানে দেশে শিক্ষা যেন কোনো গুরুত্বই পাচ্ছে না। বরং এক কথায় বলা যায়, শিক্ষা সবচেয়ে অবহেলিত খাত হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরে শিক্ষায় যতটুকু সফলতা অর্জিত হয়েছিল তাও এখন মলিন হতে চলেছে। শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার প্রধান দায়িত্ব যেমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের, তেমনি দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার দায়িত্বও রাজনৈতিক নেতৃত্ব এড়াতে পারে না। বরং শিক্ষাসহ সব খাতের নিরাপদ পরিচালনা নির্ভর করে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর। দেশে যদি সারা বছর রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করে তাহলে কোনো কার্যক্রমই স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। মোটা দাগে কথা হল, রাজনৈতিক অস্থিরতার মুখে সব ধরনের কর্মকাণ্ড মুখ থুবড়ে পড়ে, বিঘ্নিত হয় উন্নয়ন কার্যক্রম। শিক্ষা এমন একটি খাত যে খাতের স্বাভাবিক বিকাশ এবং সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। অথচ এটাই আমাদের দেশে সম্ভব হয়নি আজও।
No comments