সাংবাদিক পেটালেন সাংসদ
ইনডিপেনডেন্ট টিভি চ্যানেলের দুই
সংবাদকর্মীকে পিটিয়েছেন সরকার-দলীয় সাংসদ গোলাম মাওলা রনি। এ ঘটনায় সাংসদসহ
২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে এ ঘটনার পর রাতে ওই
সাংসদ টিভি চ্যানেলটির
অন্যতম মালিক সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পাল্টা মামলা করেন।
দুটো মামলাই হয়েছে শাহবাগ থানায়। একটির নম্বর ৪১, অপরটির ৪২। পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাংসদের মামলায় বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান রহমান ছাড়াও টিভি চ্যানেলের দুই সংবাদকর্মীকে আসামি করা হয়।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে সরকারদলীয় সাংসদের মামলার খবরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
মারধরের শিকার দুই সংবাদকর্মী হলেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অপরাধবিষয়ক অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান ‘তালাশ’-এর প্রতিবেদক ইমতিয়াজ মোমিন ও ভিডিও চিত্রগ্রাহক মহসীন মুকুল। গুরুতর আহত মহসীনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গোলাম মাওলা পটুয়াখালী-৩ আসনের সাংসদ।
ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তালাশ’ অনুষ্ঠানের জন্য পটুয়াখালীর একটি বিষয়ে কিছু অভিযোগকে কেন্দ্র করে তাঁরা বেশ কিছুদিন ধরে অনুসন্ধান করছেন। একটি সূত্রে তাঁরা জানতে পারেন, এ ঘটনায় একটি দরপত্র নিয়ে তদবির
করতে গতকাল দুপুরের দিকে দুই কোটি টাকা নিয়ে তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজার দশম তলায় সাংসদ গোলাম মাওলার কাছে তাঁর কার্যালয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা যাবেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে তিনি (ইমতিয়াজ) ও ভিডিও চিত্রগ্রাহক মহসীন সাংসদের কার্যালয়ের সামনে যান। সাংসদের কার্যালয়ে কেউ আসছেন কি না, তা তাঁরা সিঁড়িতে বসে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এরই মধ্যে হঠাৎ গোলাম মাওলা বের হয়ে ‘তোরা কার অনুমতি নিয়ে আসছস’ বলে ধমকাতে থাকেন।
ইমতিয়াজ বলেন, একপর্যায়ে সাংসদ তাঁর মাথার চুল ধরে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারতে থাকেন। তিনি হাতে থাকা বুম দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করলে সাংসদ তা কেড়ে নেন এবং বুম দিয়েই তাঁকে মারতে থাকেন। মারার কারণ জানতে মহসীন এগিয়ে এলে সাংসদের কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁর ওপর হামলা চালান। তাঁরা মহসীনের হাতে থাকা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দিলে সাংসদ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাঠি-রড দিয়ে উপর্যুপরি মারতে থাকেন। এ সময় মহসীনের কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে তা ভেঙে ফেলেন তাঁরা।
ইমতিয়াজ বলেন, ‘গোলাম মাওলা ও তাঁর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যখন মহসীনকে মারছিলেন, তখন আমি গিয়ে মহসীনকে রক্ষার চেষ্টা করি। তাঁরা তখন আমার ওপর আরেক দফা হামলা চালান। একপর্যায়ে সাংসদ ও তাঁর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমাদের মুঠোফোন, ক্যামেরা, মেমোরি কার্ড, বুম এবং মহসীনের জুতা ও শার্ট ছিনিয়ে নেন। পরে আমাদের কার্যালয়ে ঢুকিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রেখে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে কৌশলে আমার মোবাইলটি নিয়ে আমি ফোন করে সহকর্মীদের জানাই। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে এবং মহসীনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
গতকাল সাংসদের কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীদের ভিড় দেখা যায়। সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি কক্ষে কথা বলছিলেন সাংসদ। ওই কক্ষের এক কোণে দাঁড়িয়ে ইমতিয়াজ আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন।
জানতে চাইলে গোলাম মাওলা সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি দাবি করেন, মারধরের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তাহলে আপনি দুঃখ প্রকাশ করছেন কেন? এর জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার অফিসের সামনে ঘটনা ঘটেছে, তাই।’ তাহলে মেরেছে কারা? সাংসদ বলেন, ‘ভবনের অন্য লোকেরা মেরেছে।’
ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে সাংসদের মারধরের দৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ আছে। ইনডিপেনডেন্টের সংবাদেও তা প্রচারিত হয়েছে।’
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের বার্তাপ্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে রড-লাঠি দিয়ে ইমতিয়াজ ও মহসীনকে পিটিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ গোলাম মাওলা ও তাঁর সহযোগীরা।
গোলাম মাওলা দাবি করেন, ‘সমাধানের জন্য সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে একটা মীমাংসা হয়েছে। আমি আদালতে যাব না। মীমাংসার ব্যাপারে সাংবাদিক নেতারা ভালো বলতে পারবেন।’
পাশে থাকা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ বলেন, সাংসদ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি ক্যামেরা মেরামত ও আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার ব্যাপারে যাবতীয় ব্যবস্থা নেবেন। উভয় পক্ষ এ সমাধান মেনে নিয়েছে। তবে মারধরের শিকার দুই সংবাদকর্মী বলেন, ‘আমরা এ সমাধান মানি না।’
সমঝোতার কথা বলা হলেও গতকাল সন্ধ্যায় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সহকারী ব্যবস্থাপক ইউনুছ আলী বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গোলাম মাওলাসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গার আঘাতগুলো লালচে হয়ে গেছে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার বর্ণনা দেন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের ঘটনা ন্যক্কারজনক। দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত। এক প্রশ্নের জবাবে ওই সাংসদকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি আইন ভঙ্গ করলে সে জন্য তিনিই জবাবদিহি করবেন। এর দায় সরকার নেবে না।
সর্বশেষ সংবাদ শুনতে আপনার মোবাইল ফোন থেকে ডায়াল করুন ২২২১
দুটো মামলাই হয়েছে শাহবাগ থানায়। একটির নম্বর ৪১, অপরটির ৪২। পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সাংসদের মামলায় বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান রহমান ছাড়াও টিভি চ্যানেলের দুই সংবাদকর্মীকে আসামি করা হয়।
আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে সরকারদলীয় সাংসদের মামলার খবরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
মারধরের শিকার দুই সংবাদকর্মী হলেন ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের অপরাধবিষয়ক অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান ‘তালাশ’-এর প্রতিবেদক ইমতিয়াজ মোমিন ও ভিডিও চিত্রগ্রাহক মহসীন মুকুল। গুরুতর আহত মহসীনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গোলাম মাওলা পটুয়াখালী-৩ আসনের সাংসদ।
ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘তালাশ’ অনুষ্ঠানের জন্য পটুয়াখালীর একটি বিষয়ে কিছু অভিযোগকে কেন্দ্র করে তাঁরা বেশ কিছুদিন ধরে অনুসন্ধান করছেন। একটি সূত্রে তাঁরা জানতে পারেন, এ ঘটনায় একটি দরপত্র নিয়ে তদবির
করতে গতকাল দুপুরের দিকে দুই কোটি টাকা নিয়ে তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজার দশম তলায় সাংসদ গোলাম মাওলার কাছে তাঁর কার্যালয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা যাবেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে তিনি (ইমতিয়াজ) ও ভিডিও চিত্রগ্রাহক মহসীন সাংসদের কার্যালয়ের সামনে যান। সাংসদের কার্যালয়ে কেউ আসছেন কি না, তা তাঁরা সিঁড়িতে বসে পর্যবেক্ষণ করছিলেন। এরই মধ্যে হঠাৎ গোলাম মাওলা বের হয়ে ‘তোরা কার অনুমতি নিয়ে আসছস’ বলে ধমকাতে থাকেন।
ইমতিয়াজ বলেন, একপর্যায়ে সাংসদ তাঁর মাথার চুল ধরে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারতে থাকেন। তিনি হাতে থাকা বুম দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করলে সাংসদ তা কেড়ে নেন এবং বুম দিয়েই তাঁকে মারতে থাকেন। মারার কারণ জানতে মহসীন এগিয়ে এলে সাংসদের কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাঁর ওপর হামলা চালান। তাঁরা মহসীনের হাতে থাকা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দিলে সাংসদ ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাঠি-রড দিয়ে উপর্যুপরি মারতে থাকেন। এ সময় মহসীনের কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে তা ভেঙে ফেলেন তাঁরা।
ইমতিয়াজ বলেন, ‘গোলাম মাওলা ও তাঁর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যখন মহসীনকে মারছিলেন, তখন আমি গিয়ে মহসীনকে রক্ষার চেষ্টা করি। তাঁরা তখন আমার ওপর আরেক দফা হামলা চালান। একপর্যায়ে সাংসদ ও তাঁর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আমাদের মুঠোফোন, ক্যামেরা, মেমোরি কার্ড, বুম এবং মহসীনের জুতা ও শার্ট ছিনিয়ে নেন। পরে আমাদের কার্যালয়ে ঢুকিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা আটকে রেখে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে কৌশলে আমার মোবাইলটি নিয়ে আমি ফোন করে সহকর্মীদের জানাই। পরে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে এবং মহসীনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’
গতকাল সাংসদের কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীদের ভিড় দেখা যায়। সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি কক্ষে কথা বলছিলেন সাংসদ। ওই কক্ষের এক কোণে দাঁড়িয়ে ইমতিয়াজ আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন।
জানতে চাইলে গোলাম মাওলা সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি দাবি করেন, মারধরের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তাহলে আপনি দুঃখ প্রকাশ করছেন কেন? এর জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার অফিসের সামনে ঘটনা ঘটেছে, তাই।’ তাহলে মেরেছে কারা? সাংসদ বলেন, ‘ভবনের অন্য লোকেরা মেরেছে।’
ইমতিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে সাংসদের মারধরের দৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ আছে। ইনডিপেনডেন্টের সংবাদেও তা প্রচারিত হয়েছে।’
ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের বার্তাপ্রধান খালেদ মুহিউদ্দীন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে রড-লাঠি দিয়ে ইমতিয়াজ ও মহসীনকে পিটিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ গোলাম মাওলা ও তাঁর সহযোগীরা।
গোলাম মাওলা দাবি করেন, ‘সমাধানের জন্য সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে একটা মীমাংসা হয়েছে। আমি আদালতে যাব না। মীমাংসার ব্যাপারে সাংবাদিক নেতারা ভালো বলতে পারবেন।’
পাশে থাকা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ বলেন, সাংসদ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি ক্যামেরা মেরামত ও আহত সাংবাদিকদের চিকিৎসার ব্যাপারে যাবতীয় ব্যবস্থা নেবেন। উভয় পক্ষ এ সমাধান মেনে নিয়েছে। তবে মারধরের শিকার দুই সংবাদকর্মী বলেন, ‘আমরা এ সমাধান মানি না।’
সমঝোতার কথা বলা হলেও গতকাল সন্ধ্যায় ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সহকারী ব্যবস্থাপক ইউনুছ আলী বাদী হয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গোলাম মাওলাসহ অজ্ঞাতনামা ২০ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গার আঘাতগুলো লালচে হয়ে গেছে। তিনি কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার বর্ণনা দেন।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, এ ধরনের ঘটনা ন্যক্কারজনক। দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত। এক প্রশ্নের জবাবে ওই সাংসদকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি আইন ভঙ্গ করলে সে জন্য তিনিই জবাবদিহি করবেন। এর দায় সরকার নেবে না।
সর্বশেষ সংবাদ শুনতে আপনার মোবাইল ফোন থেকে ডায়াল করুন ২২২১
No comments