পবিত্র কোরআনের আলো-আজাব নাজিলের বিলম্বে খুশি হওয়ার কারণ নেই
১১০. হাত্তা- ইযাস তাইআসার রুসুলু ওয়া
যান্নূ- আন্নাহুম কাদ কুযিবূ জা-আহুম নাসরুনা-, ফানুজজিয়া মান নাশা-উ, ওয়া
লা- য়ুরাদ্দু বা'সুনা- 'আনিল কাওমিল মুজরিমীন। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ
: ১১০. (এর আগে আগমনকারী নবী-রাসুলদের ক্ষেত্রেও এমনই হয়েছিল যে তাদের
অবাধ্য সম্প্রদায়ের ওপর আজাব আসতে কিছুটা বিলম্ব করা হয়েছিল) শেষে রাসুলগণ
যখন হতাশ হয়ে পড়তেন এবং (কাফেররা) ভাবত, তাদের খালি খালি মিথ্যা ভয় দেখানো
হয়েছিল, তখনই তাদের আমি সাহায্য করেছি।* তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা আমি রক্ষা
করেছি। অপরাধী সম্প্রদায়ের ওপর আমার শাস্তি কেউ প্রতিহত করতে পারে না।
তাফসির : * প্রিয় রাসুল মুহাম্মদ (সা.) ইসলামের দাওয়াত শুরু করার পর বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তিনি ইসলামের বিরোধিতাকারীদের হুঁশিয়ার করেছিলেন, আমার দাওয়াত মেনে ইসলাম কবুল না করলে তোমাদের ওপর কঠিন আজাব ও গজব নাজিল হবে। এভাবে দীর্ঘদিন ভয় ও হুমকি দেখানোর পরও আল্লাহর গজব নাজিল হচ্ছিল না। এতে কাফের-মুশরিকদের স্পর্ধা আরো বেড়ে গেল। তারা বলতে লাগল, কোথায় তোমার আজাবের হুমকি? তুমি সত্য নবী হলে অনেক আগেই তোমার কথামাফিক আজাব এসে পড়ত। নাফরমান কাফের-মুশরিকদের এমন দুঃসাহস ও উক্তি শুনে প্রিয় রাসুল মুহাম্মদ (সা.) খানিকটা হতাশ হয়ে পড়লেন। তাই এখানে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা নিজের করুণা ও রহস্যের কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরাধী সম্প্রদায়কে শাস্তি নাজিল করার ক্ষেত্রে অবকাশ দিয়ে থাকেন। এ অবকাশ মাঝেমধ্যে এত বেশি লম্বা হয়ে পড়ে যে অবাধ্য অমুসলিমদের স্পর্ধা ও দুঃসাহস আরো বেড়ে যায়। তখন নবী-রাসুলগণ একপ্রকার হতাশা ও অস্থিরতায় ভোগেন। তাঁরা ভাবতে থাকেন, আল্লাহপ্রদত্ত আজাবের সংক্ষিপ্ত ওয়াদার যে অবকাশ আমরা নিজেদের অনুমানের ভিত্তিতে স্থির করে রেখেছিলাম, সে সময়ে কাফেরদের ওপর আজাব আসবে না। অতএব হকের বিজয়ও প্রকাশ হবে না। তাঁরা ভাবতে থাকেন, অনুমানের ভিত্তিতে আল্লাহর ওয়াদার সময় নির্ধারণ করার ব্যাপারে আমাদের বোধশক্তি ভুল করেছে। কারণ, আল্লাহ তায়ালা কোনো সময় সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করে দেননি। বিশেষ ইঙ্গিতের মাধ্যমেই আমরা তা নির্ধারণ করে নিয়েছিলাম। মূলত এমনই হতাশা ও অস্থিরতার মুহূর্তে আল্লাহ তায়ালা নাফরমান সম্প্রদায়ের ওপর গজব নাজিল করেন। নবী-রাসুলদের হতাশামুক্ত করে হকের বিজয়ের বার্তা শোনান। আল্লাহ তায়ালা তাই বলছেন, অবশেষে আজাব নাজিল করার সময় আমি আমার ইচ্ছা অনুযায়ী কিছু লোককে আজাব থেকে মুক্ত রাখি। এই কিছু লোক হলো, নবী-রাসুলগণের অনুসারী মুমিন বান্দারা। তাই আল্লাহর শাস্তি নাজিল হতে বিলম্বের কারণে এখনো আল্লাহ তায়ালা অলি-বুজুর্গদের যেমন হতাশ হওয়ার কারণ নেই, তেমনি শয়তানের অনুসারীদেরও মহা খুশি হওয়ার কারণ নেই।
আলোচ্য আয়াতে 'কুযিবূ' শব্দটিকে 'কুযযিবূ' উচ্চারণেও আবৃত্তি করা যায়। তবে কুযিবূ উচ্চারণের পক্ষেই বেশি অভিমত। 'কুযযিবূ' উচ্চারণে শব্দটির অর্থ হয়, অনুমান ও ধারণা ভুল হওয়া। এটি এক ধরনের গবেষণার ভ্রান্তি। নবী-রাসুলদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ভ্রান্তি সম্ভব। তবে অন্য গবেষক ও নবী-রাসুলদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হলো, নবী-রাসুলদের ভ্রান্তি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয় না। দ্রুততম সময়েই তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সত্য ঘটনা জানিয়ে দেওয়া হয়। সাধারণ গবেষকদের ক্ষেত্রে তা করা হয় না
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
তাফসির : * প্রিয় রাসুল মুহাম্মদ (সা.) ইসলামের দাওয়াত শুরু করার পর বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তিনি ইসলামের বিরোধিতাকারীদের হুঁশিয়ার করেছিলেন, আমার দাওয়াত মেনে ইসলাম কবুল না করলে তোমাদের ওপর কঠিন আজাব ও গজব নাজিল হবে। এভাবে দীর্ঘদিন ভয় ও হুমকি দেখানোর পরও আল্লাহর গজব নাজিল হচ্ছিল না। এতে কাফের-মুশরিকদের স্পর্ধা আরো বেড়ে গেল। তারা বলতে লাগল, কোথায় তোমার আজাবের হুমকি? তুমি সত্য নবী হলে অনেক আগেই তোমার কথামাফিক আজাব এসে পড়ত। নাফরমান কাফের-মুশরিকদের এমন দুঃসাহস ও উক্তি শুনে প্রিয় রাসুল মুহাম্মদ (সা.) খানিকটা হতাশ হয়ে পড়লেন। তাই এখানে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা নিজের করুণা ও রহস্যের কারণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপরাধী সম্প্রদায়কে শাস্তি নাজিল করার ক্ষেত্রে অবকাশ দিয়ে থাকেন। এ অবকাশ মাঝেমধ্যে এত বেশি লম্বা হয়ে পড়ে যে অবাধ্য অমুসলিমদের স্পর্ধা ও দুঃসাহস আরো বেড়ে যায়। তখন নবী-রাসুলগণ একপ্রকার হতাশা ও অস্থিরতায় ভোগেন। তাঁরা ভাবতে থাকেন, আল্লাহপ্রদত্ত আজাবের সংক্ষিপ্ত ওয়াদার যে অবকাশ আমরা নিজেদের অনুমানের ভিত্তিতে স্থির করে রেখেছিলাম, সে সময়ে কাফেরদের ওপর আজাব আসবে না। অতএব হকের বিজয়ও প্রকাশ হবে না। তাঁরা ভাবতে থাকেন, অনুমানের ভিত্তিতে আল্লাহর ওয়াদার সময় নির্ধারণ করার ব্যাপারে আমাদের বোধশক্তি ভুল করেছে। কারণ, আল্লাহ তায়ালা কোনো সময় সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারণ করে দেননি। বিশেষ ইঙ্গিতের মাধ্যমেই আমরা তা নির্ধারণ করে নিয়েছিলাম। মূলত এমনই হতাশা ও অস্থিরতার মুহূর্তে আল্লাহ তায়ালা নাফরমান সম্প্রদায়ের ওপর গজব নাজিল করেন। নবী-রাসুলদের হতাশামুক্ত করে হকের বিজয়ের বার্তা শোনান। আল্লাহ তায়ালা তাই বলছেন, অবশেষে আজাব নাজিল করার সময় আমি আমার ইচ্ছা অনুযায়ী কিছু লোককে আজাব থেকে মুক্ত রাখি। এই কিছু লোক হলো, নবী-রাসুলগণের অনুসারী মুমিন বান্দারা। তাই আল্লাহর শাস্তি নাজিল হতে বিলম্বের কারণে এখনো আল্লাহ তায়ালা অলি-বুজুর্গদের যেমন হতাশ হওয়ার কারণ নেই, তেমনি শয়তানের অনুসারীদেরও মহা খুশি হওয়ার কারণ নেই।
আলোচ্য আয়াতে 'কুযিবূ' শব্দটিকে 'কুযযিবূ' উচ্চারণেও আবৃত্তি করা যায়। তবে কুযিবূ উচ্চারণের পক্ষেই বেশি অভিমত। 'কুযযিবূ' উচ্চারণে শব্দটির অর্থ হয়, অনুমান ও ধারণা ভুল হওয়া। এটি এক ধরনের গবেষণার ভ্রান্তি। নবী-রাসুলদের ক্ষেত্রে এ ধরনের ভ্রান্তি সম্ভব। তবে অন্য গবেষক ও নবী-রাসুলদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হলো, নবী-রাসুলদের ভ্রান্তি দীর্ঘ সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয় না। দ্রুততম সময়েই তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সত্য ঘটনা জানিয়ে দেওয়া হয়। সাধারণ গবেষকদের ক্ষেত্রে তা করা হয় না
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments