রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার পথে মিসর by তারেক শামসুর রেহমান
মিসরের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আদলি
মনসুর কর্তৃক সংসদ ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘোষণা এবং মুসলিম
ব্রাদারহুডের তা প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়ে মিসরের রাজনীতি নিয়ে বড় ধরনের
অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এ অনিশ্চয়তা সেখানে সেনাশাসন দীর্ঘায়িত করবে। আদলি
মনসুর যে রোডম্যাপ উপস্থাপন করেছেন, তাতে আগামী চার মাসের মধ্যে একটি
গণভোট, ২০১৪ সালের প্রথম দিকে সংসদ নির্বাচন, এরপর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের
কথা উল্লেখ রয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একটি প্যানেলের নাম তিনি ঘোষণা
করবেন, যারা সংবিধানে কিছু পরিবর্তন ও সংশোধন আনবেন। এ সংশোধনীর ওপর গণভোট
অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সংশোধিত সংবিধানের আলোকে দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত
হবে। এখন মুসলিম ব্রাদারহুডের এ কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান রাজনীতিতে শুধু
অনিশ্চয়তাই বাড়াল না, বরং নানা জটিলতা তৈরি করল। এরই মধ্যে অর্থনীতিবিদ
হাজেম এল বেবলেউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাকেও
প্রত্যাখ্যান করেছে মুসলিম ব্রাদারহুড পার্টি।
মিসরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মোহম্মদ মুরসির অপসারণের পর যে প্রশ্নটি পশ্চিমা বিশ্বে আলোচিত হচ্ছে বেশি করে, তা হচ্ছে মুরসি কি আসলে ব্যর্থ হয়েছিলেন? জনগণের ভোটে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র এক বছর আগে। তিনি তার টার্ম শেষ করতে পারেননি। কিন্তু তার আগেই সেনাবাহিনী তাকে অপসারণ করল। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী স্পষ্টই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধাচরণ করেছে। তবে স্পষ্টতই মুরসি একটি ভুল করেছিলেন। আর তা হচ্ছে সেনাবাহিনীর শক্তিকে তিনি কিছুটা ‘আন্ডারমাইন’ করেছিলেন। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে সেনাবাহিনী খুব একটা ক্ষমতা দখল করে না। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায় না। এ ক্ষেত্রে মিসরের সামরিক অভ্যুত্থান নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। গত প্রায় ৬২ বছর ধরে মিসরের সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভবে ক্ষমতা পরিচালনা করে আসছে। সাধারণত সেনাবাহিনী দু’ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রথমত আরবিট্রেটর এবং দ্বিতীয়ত রুলার। আরবিট্রেটর মডেলের বড় দুর্বলতা হচ্ছে, এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়নে ও পরিচালনায় পুরো দায়িত্ব নিতে পারে না। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার যন্ত্রটি থাকে না। দ্বিতীয় মডেলে সেনাবাহিনী সরাসরি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। কর্নেল আদিব সিশাকলি ১৯৫২ সালে সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে আরবিট্রেটরের ভূমিকা থেকে রুলারের ভূমিকায় নিয়ে গিয়েছিলেন। মিসরে সেনাবাহিনী আরবিট্রেটর নয়, বরং সরাসরি রুলার পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। কর্নেল নাসেরের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর (১৯৫৩-১৯৬১) ভূমিকা ছিল এমনই।
আজকে মিসরে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের ভিত্তি গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন কর্নেল নাসের। নাসের সেনাবাহিনীর মধ্যে ফ্রি অফিসার্স ক্লাব গঠন করেছিলেন ১৯৪৯ সালে। এ ফ্রি অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগেই ১৯৫৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থান পরিচালিত হয় এবং কমান্ড কাউন্সিল গঠনে তারা একটি ভূমিকা পালন করেন। এ কমান্ড কাউন্সিল পরে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। মিসরের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এ রুলার মডেলের উদ্যোক্তারা একটি রাজনৈতিক সংগঠনের জš§ দেন। তাই সঙ্গত কারণেই দৃষ্টি থাকবে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ এল সিসির দিকে। তিনি কি পূর্বসূরিদের অনুসরণ করবেন?
জেনারেল এল সিসির পূর্বসূরিরা দল গঠন করে ক্ষমতা করায়ত্ত করেছিলেন। ১৯৫৩-৫৬ সালে নাসের গঠন করেছিলেন ‘লিবারেশন র্যালি’। ১৯৫৭-৭০ সময়সীমায় গঠিত হয়েছিল ‘ন্যাশনাল ইউনিয়ন’। উভয় ক্ষেত্রেই লিবারেশন র্যালি ও ন্যাশনাল ইউনিয়ন একটি পরিপক্ব রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি। ১৯৭১ সালে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদাত গঠন করেছিলেন আরব সোশ্যালিস্ট ইউনিয়ন। আর ১৯৭৯ সালে সাদাত এটাকে ভেঙে গঠন করেছিলেন নিউ ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন। হোসনি মোবারকও একই পথ অনুসরণ করে গেছেন। সুতরাং জেনারেল সিসি যে ক্ষমতা একজন সম্ভাব্য প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিয়ে ব্যারাকে ফিরে যাবেন, এটা আমার মনে হয় না। সম্প্রতি জেনারেল সুসি প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। তাহলে কোন পথে যাচ্ছে মিসর? মিসর থেকে যেসব খবরাখবর আসছে তা কোনো আশার কথা বলছে না। মুরসির পক্ষেও বিশেষ দুটি জনমত রয়েছে। মুরসির সমর্থক মুসলিম ব্রাদারহুড লাখ লাখ লোকের জমায়েত করলে সেনাবাহিনী তাতে গুলি চালায়। এতে মারা যায় ৫২ জন। এর ফলে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে- সেনাবাহিনী কোনোমতেই আর মুরসিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনছে না। যদিও তার সমর্থকদের দাবি এটাই। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ভূমিকা এখনও স্পষ্ট নয়। সেনাবাহিনী কি এককভাবে কোনো একটি দল গঠন কিংবা পুনর্গঠিত করে নিজেরা ক্ষমতা পরিচালনা করবে, যেমনটি করেছিলেন আনোয়ার সাদাত কিংবা হোসনি মোবারক? বিকল্প হিসেবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ইসলামপন্থী, লিবারেল ও পশ্চিমা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ধারণ করা কিছু দলের সমন্বয়ে একটি জোট গঠন করা হতে পারে, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ক্ষমতা পরিচালনা করবেন। এমন সম্ভাবনাও রয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠিত হয়েছে, তারাই ক্ষমতা পরিচালনা করবে আরও কিছুদিনের জন্য। তারপর সামরিক জান্তা প্রেসিডেন্ট লির্বাচন দেবে এবং নিজেদের একজন প্রার্থীকে বিজয়ী করে নিয়ে আসবে। এগুলো সবই ক্লাসিকাল থিওরি। সামরিক শাসকরা এভাবেই ক্ষমতা ধরে রাখে ও পরিচালনা করে।
প্রথম দিকে মনে হয়েছিল, সেনাশাসকরা দ্বিতীয় সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আল বারাদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেনা অভ্যুত্থানকারীরা এটা করেনি। সম্ভবত যাদের নিয়ে ‘ঐক্য’ করতে চেয়েছিল সেনাবাহিনী, আল বারাদির ব্যাপারে তাদের আপত্তি ছিল। বিশেষ করে প্রথমদিকে আল নূর পার্টি সেনা অভ্যুত্থানকে সমর্থন করলেও আল বারাদির ব্যাপারে তাদের ‘রিজার্ভেশন’ আছে। শেষ পর্যন্ত নতুন মন্ত্রিসভায় বারাদিকে অন্তর্বর্তীকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভায় ইসলামপন্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আল নূর ইসলামপন্থী দল হিসেবে পরিচিত। পশ্চিমা বিশ্বে তাদের সালাফিস্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ এরা আদি ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। এদের সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিকভাবে পার্থক্য রয়েছে। ব্রাদারহুড যেভাবে মিসরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়, আল নূর সেভাবে চায় না। আল নূর বেশ কনজারভেটিভ। সে তুলনায় ব্রাদারহুড অনেকটা লিবারেল। মাত্র দু’বছর আগে গঠিত আল নূর পার্টির মিসরে জনপ্রিয়তা একেবারে কম নয়। বিগত সংসদ নির্বাচনে ব্রাদারহুডের পরেই ছিল তাদের স্থান। সংবিধানে নারী-পুরুষ সমতা বিধান করার উদ্যোগ নিয়েছিল ব্রাদারগুড। কিন্তু আল নূরের তাতে আপত্তি ছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানেই- সামরিক বাহিনী যখন ক্ষমতা দখল করল, তখন আল নূর পার্টি মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থন না করে সমর্থন করে বসল সেনাবাহিনীকে। এতে করে এটা স্পষ্ট যে, আল নূর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায়। তাদের এ অবস্থান তাদের একটি সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত করতে পারে। উপরন্তু আল নূরের রাজনৈতিক মতাদর্শ পশ্চিমা বিশ্বে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনোই চাইবে না কট্টরপন্থী অপর একটি ইসলামী দল মিসরে নতুন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বড় ভূমিকা পালন করুক। মুরসিকে উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের একটা প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। সুতরাং আরেকটি কট্টরপন্থী ইসলামী দল মিসরে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করবে, এটা যুক্তরাষ্ট্র চাইবে না। আল নূর অভ্যুত্থান পরবর্তী মিসরে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইলেও তাতে তারা ব্যর্থই হবে। মনে রাখতে হবে, এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বড় স্বার্থ রয়েছে।
‘আরব বসন্ত’ গোটা আরব বিশ্বে পরিবর্তন ডেকে আনলেও এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি সেখানে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়েছে, তা বলা যাবে না। বলা যেতে পারে, একটি ইসলামী শক্তির উত্থান ঘটেছে আরব বিশ্বে। আরব বসন্তের মধ্য দিয়ে আধুনিক মনস্ক গণতান্ত্রিক, লিবারেল শক্তির উত্থান ঘটেছে, তাও কিন্তু বলা যাবে না। তিউনিসিয়ায় এ শক্তির কিছুটা অবস্থান থাকলেও মিসর, লিবিয়া কিংবা সিরিয়ায় লিবারেলপন্থীদের আদৌ কোনো ভূমিকা নেই। বরং দেখা গেছে আল-কায়দার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সংগঠনগুলোর প্রতিপত্তি বাড়ছে। আল-কায়দার স্থানীয় সংগঠন সিরিয়া ও লিবিয়ায় যথেষ্ট শক্তিশালী। ইয়েমেনে অনেক আগে থেকেই তাদের ঘাঁটি রয়েছে। মিসরে তারা ঘাঁটি গেড়েছে। ইরাকেও তারা শক্তিশালী। সুতরাং মিসরে আল-কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শক্তিগুলো রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হোক- এটা পশ্চিমা বিশ্ব কোনো দিন চাইবে না। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যে মার্কিন স্ট্রাটেজি, তাতে কট্টরপন্থী কোনো ইসলামিক গ্র“পকে সমর্থন করবে না যুক্তরাষ্ট্র।
প্রথমদিকে মনে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র মুরসিকে সামনে রেখে তাদের স্বার্থ আদায় করে নিতে চায়। মুরসি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেছেন। কিন্তু মুরসি যখন ধীরে ধীরে মিসরকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইলেন, তখন শুধু সমর্থন প্রত্যাহারই নয়, বরং মুরসির বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানকে প্ররোচিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এখানেই মার্কিন নীতির বৈপরীত্ব। যুক্তরাষ্ট্র কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সামরিক অভ্যুত্থান সমর্থন করে না। এটা তাদের ভাষায় গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনার পরিপন্থী। যে কারণে দেখা যায় ষাটের দশকে পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে সেনা অভ্যুত্থানকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করলেও এখন আর সমর্থন করে না। এখন গণতান্ত্রিক শক্তিকে ‘প্রমোট’ করে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু দেখা গেল, মিসরে একটি নির্বাচিত সরকারকে যখন সেনাবাহিনী উৎখাত করল, তখন যুক্তরাষ্ট্র সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেনি। এমনকি ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের যে সেনা সহযোগিতা, তাও বন্ধ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। কারণ মিসরে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হচ্ছে সেনাবাহিনী। কোনো রাজনৈতিক দলকে তারা মিত্র হিসেবে বেছে নেয়নি।
মুরসির এক বছরের শাসনামলকে ‘ব্যর্থ’ হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। তবে এটা সত্য, তিনি প্রশাসনে দক্ষতা দেখাতে পারেননি। তিনি অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে আদৌ গুরুত্ব দেননি। বেকারত্ব হ্রাসের ব্যাপারে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেননি। তরুণ প্রজšে§র যে প্রত্যাশা, তা তিনি পূরণ করতে পারেননি। তিনি বেকার সমস্যার সমাধান, অর্থনীতিকে সচল করার ব্যাপারে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে বেশি মাত্রায় ইসলামীকরণের দিকে ঝুঁকেছিলেন। এ সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছে তার বিরোধী পক্ষ। তারপরও মাত্র এক বছরের সময়সীমা দিয়ে তাকে বিচার করা যাবে না। জনগণকেই সুযোগ দেয়া উচিত ছিল ব্যালটের সাহায্যে তাকে অপসারণ করার। কিন্তু তা হল না। এতে করে উন্নয়নশীল বিশ্বের অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলো আরও উৎসাহিত হবে। মিসরে গণতন্ত্র বিকাশের যে সম্ভাবনা ছিল, সেনা অভ্যুত্থান তাকে রুদ্ধ করে দিল। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোও পারল না ঐক্যবদ্ধভাবে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। সেনাবাহিনীর সাফল্য এখানেই। এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলছে মিসর। তবে ব্রাদারহুডের শক্তিকে খাটো করা যাবে না। দীর্ঘস্থায়ী এক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হল মিসর।
নিউইয়র্ক, জুলাই ২০১৩
ড. তারেক শামসুর রেহমান : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মিসরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ড. মোহম্মদ মুরসির অপসারণের পর যে প্রশ্নটি পশ্চিমা বিশ্বে আলোচিত হচ্ছে বেশি করে, তা হচ্ছে মুরসি কি আসলে ব্যর্থ হয়েছিলেন? জনগণের ভোটে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র এক বছর আগে। তিনি তার টার্ম শেষ করতে পারেননি। কিন্তু তার আগেই সেনাবাহিনী তাকে অপসারণ করল। এ ক্ষেত্রে সেনাবাহিনী স্পষ্টই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধাচরণ করেছে। তবে স্পষ্টতই মুরসি একটি ভুল করেছিলেন। আর তা হচ্ছে সেনাবাহিনীর শক্তিকে তিনি কিছুটা ‘আন্ডারমাইন’ করেছিলেন। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে সেনাবাহিনী খুব একটা ক্ষমতা দখল করে না। সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোথাও গ্রহণযোগ্যতা পায় না। এ ক্ষেত্রে মিসরের সামরিক অভ্যুত্থান নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। গত প্রায় ৬২ বছর ধরে মিসরের সেনাবাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভবে ক্ষমতা পরিচালনা করে আসছে। সাধারণত সেনাবাহিনী দু’ধরনের ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রথমত আরবিট্রেটর এবং দ্বিতীয়ত রুলার। আরবিট্রেটর মডেলের বড় দুর্বলতা হচ্ছে, এক্ষেত্রে সেনাবাহিনী রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়নে ও পরিচালনায় পুরো দায়িত্ব নিতে পারে না। অর্থাৎ সেনাবাহিনীর হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার যন্ত্রটি থাকে না। দ্বিতীয় মডেলে সেনাবাহিনী সরাসরি রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। কর্নেল আদিব সিশাকলি ১৯৫২ সালে সিরিয়ার সেনাবাহিনীকে আরবিট্রেটরের ভূমিকা থেকে রুলারের ভূমিকায় নিয়ে গিয়েছিলেন। মিসরে সেনাবাহিনী আরবিট্রেটর নয়, বরং সরাসরি রুলার পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। কর্নেল নাসেরের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর (১৯৫৩-১৯৬১) ভূমিকা ছিল এমনই।
আজকে মিসরে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের ভিত্তি গড়ে দিয়ে গিয়েছিলেন কর্নেল নাসের। নাসের সেনাবাহিনীর মধ্যে ফ্রি অফিসার্স ক্লাব গঠন করেছিলেন ১৯৪৯ সালে। এ ফ্রি অফিসার্স ক্লাবের উদ্যোগেই ১৯৫৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থান পরিচালিত হয় এবং কমান্ড কাউন্সিল গঠনে তারা একটি ভূমিকা পালন করেন। এ কমান্ড কাউন্সিল পরে একটি রাজনৈতিক সংগঠনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। মিসরের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এ রুলার মডেলের উদ্যোক্তারা একটি রাজনৈতিক সংগঠনের জš§ দেন। তাই সঙ্গত কারণেই দৃষ্টি থাকবে জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ এল সিসির দিকে। তিনি কি পূর্বসূরিদের অনুসরণ করবেন?
জেনারেল এল সিসির পূর্বসূরিরা দল গঠন করে ক্ষমতা করায়ত্ত করেছিলেন। ১৯৫৩-৫৬ সালে নাসের গঠন করেছিলেন ‘লিবারেশন র্যালি’। ১৯৫৭-৭০ সময়সীমায় গঠিত হয়েছিল ‘ন্যাশনাল ইউনিয়ন’। উভয় ক্ষেত্রেই লিবারেশন র্যালি ও ন্যাশনাল ইউনিয়ন একটি পরিপক্ব রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে উঠতে পারেনি। ১৯৭১ সালে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদাত গঠন করেছিলেন আরব সোশ্যালিস্ট ইউনিয়ন। আর ১৯৭৯ সালে সাদাত এটাকে ভেঙে গঠন করেছিলেন নিউ ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন। হোসনি মোবারকও একই পথ অনুসরণ করে গেছেন। সুতরাং জেনারেল সিসি যে ক্ষমতা একজন সম্ভাব্য প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দিয়ে ব্যারাকে ফিরে যাবেন, এটা আমার মনে হয় না। সম্প্রতি জেনারেল সুসি প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত হওয়ায় তা আরও স্পষ্ট হয়েছে। তাহলে কোন পথে যাচ্ছে মিসর? মিসর থেকে যেসব খবরাখবর আসছে তা কোনো আশার কথা বলছে না। মুরসির পক্ষেও বিশেষ দুটি জনমত রয়েছে। মুরসির সমর্থক মুসলিম ব্রাদারহুড লাখ লাখ লোকের জমায়েত করলে সেনাবাহিনী তাতে গুলি চালায়। এতে মারা যায় ৫২ জন। এর ফলে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে- সেনাবাহিনী কোনোমতেই আর মুরসিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনছে না। যদিও তার সমর্থকদের দাবি এটাই। এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ভূমিকা এখনও স্পষ্ট নয়। সেনাবাহিনী কি এককভাবে কোনো একটি দল গঠন কিংবা পুনর্গঠিত করে নিজেরা ক্ষমতা পরিচালনা করবে, যেমনটি করেছিলেন আনোয়ার সাদাত কিংবা হোসনি মোবারক? বিকল্প হিসেবে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ইসলামপন্থী, লিবারেল ও পশ্চিমা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ধারণ করা কিছু দলের সমন্বয়ে একটি জোট গঠন করা হতে পারে, যারা অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য ক্ষমতা পরিচালনা করবেন। এমন সম্ভাবনাও রয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন গঠিত হয়েছে, তারাই ক্ষমতা পরিচালনা করবে আরও কিছুদিনের জন্য। তারপর সামরিক জান্তা প্রেসিডেন্ট লির্বাচন দেবে এবং নিজেদের একজন প্রার্থীকে বিজয়ী করে নিয়ে আসবে। এগুলো সবই ক্লাসিকাল থিওরি। সামরিক শাসকরা এভাবেই ক্ষমতা ধরে রাখে ও পরিচালনা করে।
প্রথম দিকে মনে হয়েছিল, সেনাশাসকরা দ্বিতীয় সম্ভাবনার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তারা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আল বারাদিকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেনা অভ্যুত্থানকারীরা এটা করেনি। সম্ভবত যাদের নিয়ে ‘ঐক্য’ করতে চেয়েছিল সেনাবাহিনী, আল বারাদির ব্যাপারে তাদের আপত্তি ছিল। বিশেষ করে প্রথমদিকে আল নূর পার্টি সেনা অভ্যুত্থানকে সমর্থন করলেও আল বারাদির ব্যাপারে তাদের ‘রিজার্ভেশন’ আছে। শেষ পর্যন্ত নতুন মন্ত্রিসভায় বারাদিকে অন্তর্বর্তীকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভায় ইসলামপন্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আল নূর ইসলামপন্থী দল হিসেবে পরিচিত। পশ্চিমা বিশ্বে তাদের সালাফিস্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ এরা আদি ইসলামী সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। এদের সঙ্গে মুসলিম ব্রাদারহুডের রাজনৈতিকভাবে পার্থক্য রয়েছে। ব্রাদারহুড যেভাবে মিসরে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে চায়, আল নূর সেভাবে চায় না। আল নূর বেশ কনজারভেটিভ। সে তুলনায় ব্রাদারহুড অনেকটা লিবারেল। মাত্র দু’বছর আগে গঠিত আল নূর পার্টির মিসরে জনপ্রিয়তা একেবারে কম নয়। বিগত সংসদ নির্বাচনে ব্রাদারহুডের পরেই ছিল তাদের স্থান। সংবিধানে নারী-পুরুষ সমতা বিধান করার উদ্যোগ নিয়েছিল ব্রাদারগুড। কিন্তু আল নূরের তাতে আপত্তি ছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে এখানেই- সামরিক বাহিনী যখন ক্ষমতা দখল করল, তখন আল নূর পার্টি মুসলিম ব্রাদারহুডকে সমর্থন না করে সমর্থন করে বসল সেনাবাহিনীকে। এতে করে এটা স্পষ্ট যে, আল নূর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায়। তাদের এ অবস্থান তাদের একটি সুবিধাবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত করতে পারে। উপরন্তু আল নূরের রাজনৈতিক মতাদর্শ পশ্চিমা বিশ্বে কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনোই চাইবে না কট্টরপন্থী অপর একটি ইসলামী দল মিসরে নতুন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় বড় ভূমিকা পালন করুক। মুরসিকে উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের একটা প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। সুতরাং আরেকটি কট্টরপন্থী ইসলামী দল মিসরে রাষ্ট্রক্ষমতা পরিচালনা করবে, এটা যুক্তরাষ্ট্র চাইবে না। আল নূর অভ্যুত্থান পরবর্তী মিসরে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইলেও তাতে তারা ব্যর্থই হবে। মনে রাখতে হবে, এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বড় স্বার্থ রয়েছে।
‘আরব বসন্ত’ গোটা আরব বিশ্বে পরিবর্তন ডেকে আনলেও এর মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি সেখানে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত হয়েছে, তা বলা যাবে না। বলা যেতে পারে, একটি ইসলামী শক্তির উত্থান ঘটেছে আরব বিশ্বে। আরব বসন্তের মধ্য দিয়ে আধুনিক মনস্ক গণতান্ত্রিক, লিবারেল শক্তির উত্থান ঘটেছে, তাও কিন্তু বলা যাবে না। তিউনিসিয়ায় এ শক্তির কিছুটা অবস্থান থাকলেও মিসর, লিবিয়া কিংবা সিরিয়ায় লিবারেলপন্থীদের আদৌ কোনো ভূমিকা নেই। বরং দেখা গেছে আল-কায়দার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সংগঠনগুলোর প্রতিপত্তি বাড়ছে। আল-কায়দার স্থানীয় সংগঠন সিরিয়া ও লিবিয়ায় যথেষ্ট শক্তিশালী। ইয়েমেনে অনেক আগে থেকেই তাদের ঘাঁটি রয়েছে। মিসরে তারা ঘাঁটি গেড়েছে। ইরাকেও তারা শক্তিশালী। সুতরাং মিসরে আল-কায়দার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শক্তিগুলো রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হোক- এটা পশ্চিমা বিশ্ব কোনো দিন চাইবে না। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যে মার্কিন স্ট্রাটেজি, তাতে কট্টরপন্থী কোনো ইসলামিক গ্র“পকে সমর্থন করবে না যুক্তরাষ্ট্র।
প্রথমদিকে মনে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র মুরসিকে সামনে রেখে তাদের স্বার্থ আদায় করে নিতে চায়। মুরসি নিজে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করেছেন। কিন্তু মুরসি যখন ধীরে ধীরে মিসরকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইলেন, তখন শুধু সমর্থন প্রত্যাহারই নয়, বরং মুরসির বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানকে প্ররোচিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এখানেই মার্কিন নীতির বৈপরীত্ব। যুক্তরাষ্ট্র কোনো গণতান্ত্রিক দেশে সামরিক অভ্যুত্থান সমর্থন করে না। এটা তাদের ভাষায় গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনার পরিপন্থী। যে কারণে দেখা যায় ষাটের দশকে পৃথিবীর কোনো কোনো দেশে সেনা অভ্যুত্থানকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করলেও এখন আর সমর্থন করে না। এখন গণতান্ত্রিক শক্তিকে ‘প্রমোট’ করে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু দেখা গেল, মিসরে একটি নির্বাচিত সরকারকে যখন সেনাবাহিনী উৎখাত করল, তখন যুক্তরাষ্ট্র সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেনি। এমনকি ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের যে সেনা সহযোগিতা, তাও বন্ধ করেনি যুক্তরাষ্ট্র। কারণ মিসরে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র হচ্ছে সেনাবাহিনী। কোনো রাজনৈতিক দলকে তারা মিত্র হিসেবে বেছে নেয়নি।
মুরসির এক বছরের শাসনামলকে ‘ব্যর্থ’ হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। তবে এটা সত্য, তিনি প্রশাসনে দক্ষতা দেখাতে পারেননি। তিনি অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে আদৌ গুরুত্ব দেননি। বেকারত্ব হ্রাসের ব্যাপারে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেননি। তরুণ প্রজšে§র যে প্রত্যাশা, তা তিনি পূরণ করতে পারেননি। তিনি বেকার সমস্যার সমাধান, অর্থনীতিকে সচল করার ব্যাপারে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে বেশি মাত্রায় ইসলামীকরণের দিকে ঝুঁকেছিলেন। এ সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়েছে তার বিরোধী পক্ষ। তারপরও মাত্র এক বছরের সময়সীমা দিয়ে তাকে বিচার করা যাবে না। জনগণকেই সুযোগ দেয়া উচিত ছিল ব্যালটের সাহায্যে তাকে অপসারণ করার। কিন্তু তা হল না। এতে করে উন্নয়নশীল বিশ্বের অগণতান্ত্রিক শক্তিগুলো আরও উৎসাহিত হবে। মিসরে গণতন্ত্র বিকাশের যে সম্ভাবনা ছিল, সেনা অভ্যুত্থান তাকে রুদ্ধ করে দিল। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোও পারল না ঐক্যবদ্ধভাবে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। সেনাবাহিনীর সাফল্য এখানেই। এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে চলছে মিসর। তবে ব্রাদারহুডের শক্তিকে খাটো করা যাবে না। দীর্ঘস্থায়ী এক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হল মিসর।
নিউইয়র্ক, জুলাই ২০১৩
ড. তারেক শামসুর রেহমান : অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; রাজনৈতিক বিশ্লেষক
No comments