মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য প্রসঙ্গ by সরদার সিরাজুল ইসলাম
শেখ হাসিনা সরকার গঠনের সাড়ে তিন বছর পর একসঙ্গে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করেছেন। এর মধ্যে প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমদ ও ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করায় বেশ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভার দফতর পরিবর্তন নিয়েও কথা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে। তিনি প্রাক্তন সিএসপি ও সচিব এবং ইতোপূর্বের শেখ হাসিনা সরকারে প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সাহারা খাতুনকে দেয়া হয়েছে ডাক ও তার মন্ত্রণালয়ে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে তাঁকে নিয়ে প্রতিনিয়ত কথা হয়েছে এই বলে যে, সাহারা খাতুন পারদর্শী নন। স্বরাষ্ট্র একটি স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয়। যাঁরা সাহারা খাতুনকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁদের বলতে হবে ইতোপূর্বে কোন্ মন্ত্রী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাহারা খাতুনের চাইতে ভাল কাজ করেছেন। আগের কিছু উদাহণ দেয়া যেতে পারে। জিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে.ক. মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন (১৯৬৮-১৯৬৯) সালের আগরতলা মামলার পাকবাহিনীর প্রসিকিউশন টিমের সদস্য। বঙ্গবন্ধুকে ইন্টারোগেশনের সময় নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে (বঙ্গবন্ধু কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে সে কথা মনে রাখেননি বরং সেনাবাহিনীতে রেখেছেন)। জিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নির্যাতন, প্রাণহরণের ঘটনা মানুষ ভোলে যায়নি।
এরশাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. মতিনের সময় ২৪.১.৮৮ তারিখে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানা থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ। ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টার বিরুদ্ধে যেভাবে কর্মিবাহিনী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিল সেভাবে তিনি রক্ষা পান তবে প্রাণহানি ৩৫ জন। গাজীপুরের ময়েজউদ্দিন হত্যা, নূর হোসেন হত্যা এবং ডাক্তার মিলন হত্যার কথা মানুষ ভুলে কি করে?
খালেদা ম্যাডামের প্রথম শাসনকালে (’৯১-৯৬) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরী ছিলেন একাত্তরের পাক দোসর। সারের দাবিতে ময়মনসিংহে বিক্ষোভরত ১৮ জনকে পুলিশের গুলিতে হত্যা। খালেদা ম্যাডামের ২০০১-২০০৬ সময়ে সবচাইতে ভয়াবহ ঘটনার নায়ক খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বাবর তো দীর্ঘদিন ধরে একুশের (২১.৮.০৪) শেখ হাসিনা হত্যা চেষ্টা ছাড়াও আরো একটি ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারাধীন আসামি। সে আমলে জঙ্গী বাহিনীর প্রকাশ্য মহড়া, কথিত বাংলাভাই নামক জঘন্য সন্ত্রাসী বাহিনী, ৬১ জেলায় একসঙ্গে বোমা হামলা, বিচারক হত্যা, শাহ কিবরিয়া হত্যা, মঞ্জুর ইমাম হত্যা, আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা, সিলেটে শাহজালাল মাজারে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে বোমা মেরে আহত করার মতো অসংখ্য ঘটনা ছাড়ও ২০০১-এর নির্বাচনউত্তর আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ঢালাও হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা নজিরবিহীন। এসব ঘটনায় বাবরকে মদদ দিয়েছে খালেদা পুত্র তারেক জিয়া। এদের দুর্নীতির খবর তো দুনিয়াব্যাপী। বাবরের বিশাল বাহিনী এখনও পুলিশে আছে। যাঁরা সাহারা খাতুনের সমালোচনা করেন তাঁদের বলতে হবে বিগত দিনের দুর্বিসহ দিনগুলোর চাইতে বরং তাঁর সময় অনেক ভালই কেটেছে। গত ঈদে যাঁরা ঢাকা ছেড়েছিলেন তাঁদের উদ্দেশ্যে নিজের নিরাপত্তার জন্য ঠিকমতো তালা লাগানোর পরামর্শ কি আলতাফ চৌধুরীর ‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে’ এর সঙ্গে তুলনা করা চলে?
সাহারা খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির কোন অভিযোগ নেই। প্রশাসনের অতীত কোন অভিজ্ঞতা ছাড়া একজন সাধারণ আইনজীবী লো প্রফাইলের এক আওয়ামী লীগ মহিলা কর্মী দেশের বা সরকারের জন্য কোন বোঝা নন। বাংলাদেশে একজন মহিলা যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চালাতে পারে এবং বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা (বিডিআর ঘটনাটি পুরোপুরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বলা যাবে না বরং এটা সরকার সামাল দিয়েছে) ছাড়াই দেশ চলছে সে কথা অবশ্যই সবাই স্মরণ করবে। তাঁর নতুন মন্ত্রণালয়ের এবং অন্যান্যের জন্য শুভ কামনা।
দুই
তোফায়েল আহমদ এবং রাশেদ খান মেনন মন্ত্রী হননি। মেননের মন্ত্রী না হওয়ার কারণ বুঝতে নষ্ট হয় না। কারণ তাঁর ছাত্র ও রাজনীতি জীবনে ৫০ বছর পর আজন্মবিদ্বেষী নৌকায় উঠেছেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের গুরু উপদেষ্টা মওলানা ভাষানী মুজিবনগর সরকারের পরিষদের সদস্য ছিলেন। আর মেননের ন্যাপ সম্পাদক মসিউর রহমান যাদুমিঞা ছিল কলাবরেটরদের তালিকায় (জেলেও গেছেন), পরে জিয়ার সিনিয়র মন্ত্রী। আনোয়ার জাহিদ ছিলেন ক্যান্টনমেন্টে মুরগি সাপ্লায়ার। কাজী জাফর, মান্নান ভুইয়া, মেননরা দেশে থেকেই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন বলে দাবি করেন; তবে আওয়ামী লীগ ও মূলধারা এড়িয়ে। দেশ স্বাধীনের পরে বঙ্গবন্ধু সরকার, সংবিধান সব কিছুর বিরোধিতা। জাফর, মান্নান ভুইয়া জিয়া-এরশাদের সেবক।
১৯৭৯ সালে জেনারেল জিয়ার সহানুভূতিতে তৎকালীন সচিব ওবায়দুল্লাহ খানের অনুজ রাশেদ খান মেনন বরিশালের একটি আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে বিএনপি ১৪০টি আসন পেলেও ৬৪টি আসনে জামানত হারায়। তার মধ্যে ৫টি আসনে বিজয়ী প্রার্থীরা ছিলেন রাশেদ খান মেনন, শাজাহান সিরাজ, মেজর হাফিজ, নুরুল ইসলাম মনি। রাশেদ খান মেনন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে ভোট দিয়েছিলেন। যদিও তার কোন প্রয়োজন ছিল না। কেননা, বিএনপি-জামায়াতের ভোট ছিল ১৫০-এর বেশি। ১৯৯২ সালে তাকে হত্যার জন্য গুলিবিদ্ধ করা হয় কিন্তু বিএনপি আমলে বা পরে এর কোন বিচার হয়েছে বলে শোনা যায়নি।
বিগত শেখ হাসিনার সরকারের সময় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকে ভোরের কাগজে লিখেছিলেন ‘উপযুক্ত কন্যার পিতৃহত্যার প্রতিশোধ’ হিসেবে। ওই লেখার একটি প্রতিক্রিয়া ছিল এই লেখকের ‘হত্যার বিচার সাংবিধানিক দায়িত্ব পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নয়’ শিরোনামে।
বিগত বিএনপি জমানায় রাশেদ খান মেননের নামে ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা একটি রাস্তার নামকরণ করেছেন। জনকণ্ঠ ভবনের ঠিকানা নিউ ইস্কাটন রোডটি এখন মেননের নামে (এর চেয়ে অনেক ত্যাগী নেতা তোফায়েল-রাজ্জাক-মতিয়ার নামে কোন সড়ক আছে কিনা জানি না)।
মন্ত্রিসভায় না হলেও ক্ষমতার সাধ তিনি ভোগ করেছেন এবং সরকারের শেষবর্ষে ভাল মন্ত্রণালয় না পাওয়ার শঙ্কায় মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করা এবং এক বছর পরে পারিবারিক মেরুর কোন সুবিধাজনক পথে হাঁটার জন্য একটি উন্মুক্ত অবস্থান ধরে রেখেছেন হয়ত।
হাসানুল হক ইনুর মেননের মতো অবস্থা নয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শুরু, মাঝে ‘জাসদ’ করে ফের মূলধারায়। বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগ তাঁর মূল শেকড়। তাঁর কোন কষ্ট হয়নি মন্ত্রিত্ব গ্রহণে বরং তিনি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের জন্য আছেন এবং থাকবেন শেখ হাসিনার সঙ্গে।
এটা দুর্ভাগ্য যে, তোফায়েল ও মেননের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে। এদের বলা, চলা, ওরা কি কখনও এক ছিল, না আছে? মেনন নৌকায় উঠেছেন মন্ত্রী হওয়ার জন্য। আর তোফায়েল আহমদ তো নিজেই ১৯৬৯-এক মহাসঙ্কটে নৌকার মাঝি হয়ে তাড়িয়ে ছিলেন লোহমানব আইয়ুব খানকে। ঘটেছিল পাকিস্তানের অন্তিমশয্যা। ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির সঙ্গে ঊনসত্তরের মহানায়কের নামটি যেমন আছে তেমনি ব্যক্তি মুজিবের সাহচর্য, স্নেহ, ভালবাসায় তাঁর সমকক্ষ এখন আর রাজনীতি অঙ্গনে নেই বললেই চলে। এই বিরল সৌভাগ্যের তোফায়েল আহমদের জীবনে পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শাহাদাৎ পরবর্তী জাতীয় ব্যর্থতার জন্য তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়। শ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ১৮/৯/১২ তারিখে জনকণ্ঠে লিখেছেন সে সময় দায়িত্ব নিতে তোফায়েল আহমদের ব্যর্থতার কথা। হত্যা প্রতিহত করা বা পরবর্তীতে তোফায়েলের মতো এক যুবকের পক্ষে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সম্ভব ছিল কিনা সে কথা কেউ বলেন না। এটি ছিল সবার জাতিগত ব্যর্থতা। গত শোকদিবসে (১২) জেনারেল শফিউল্লাহ নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে বলেছেন, তাঁর মরে যাওয়া ভাল ছিল। শেখ হাসিনা তাঁকে ক্ষমা করেননি। তোফায়েলকে শুনতে হয় রাষ্ট্রপতি মারা গেলে তাঁর রাজনৈতিক সচিবেরও মারা যাওয়ার কথা। এ প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমদও গত ৯০ দশকে চট্টগ্রামে এক আত্মীয়ের বাসায় বলেছিলেন ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমিও মারা গেলাম না কেন?’
তিন
তবে জিয়ার স্বৈরশাসনে তোফায়েল জামাই আদরে ছিলেন না। শাহ মোয়াজ্জেম-ওবায়েদ বা মোস্তাক জিয়ার সঙ্গে ভিড়ে মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করলেও তোফায়েল ছিলেন ৩ বছর কারাগারে নির্যাতিত হয়েছেন শারীরিকভাবে। নৌকা থেকে সেই দুর্দিনেও নামেননি।
তবে তোফায়েল আবদুর রাজ্জাক বা ড. কামাল হোসেন নন। বঙ্গবন্ধু দলে তরুণ মেধার সমাবেশ ঘটাতে ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর তিন নেতার সমাধিস্থলের শহীদ সোহরাওয়ার্দীর প্রয়াণ দিবসের শোকসভায় ড. কামাল হোসেনকে উপস্থাপন করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে তাজউদ্দিন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ভারত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি শেষ মুহূর্তে কেটে পড়েন, ধরা দেন পাকবাহিনীর হাতে। এটা সম্ভবত তাঁর পাকিস্তানী স্ত্রীর পরামর্শে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের কিছুদিন আগেই বিদেশে নিরাপদ অবস্থানে ছিলেন অনেক বছর। ফেরেন জিয়ার শেষ দিকে। শেখ হাসিনা দলের প্রধান নিযুক্ত হওয়ার পর প্রথমে ড. কামাল অভিভাবকের ভূমিকায় থাকলেও শেখ হাসিনার অঙ্গীকার ও গভীর আগ্রহের বিপরীতে ড. কামালের আইন ব্যবসার প্রতি অতি ব্যস্ততা এবং দলীয় কর্মকা- ও কর্মীদের প্রতি উদাসীনতার কারণে অনেক পেছনে পড়েন। এটি প্রথম গুরুতর রূপ নেয় ১৯৮৬ সালে ড. কামালের পরামর্শে নির্বাচনে যোগদান করে। দ্বিতীয় দফায় ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বলেছিলেন ‘সূক্ষ্ম কারচুপির’ কথা। আর ড. কামাল মিডিয়াকে দেয়া ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে’ বলে এক পত্র দিয়ে নিজেই আওয়ামী লীগ ছেড়ে যান। ড. কামাল দু’বার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসনে ১৯৭১-৭৩-এ। পরে আর কখনও বিজয়ী হননি। নিজের কোন নির্বাচনী আসন নেই। এখন তিনি আওয়ামী লীগের শত্রুর ভূমিকায়। নিজের তৈরি সংবিধানকে তিনি ডিফেন্স করেন না। জাতির জনক হত্যার বেনিফিসিয়ারিরা তাঁকে সহানুভূতি দেখায়।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা সভাপতি এবং আবদুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু ১৯৮৩ সালে রাজ্জাক গঠন করেন বাকশাল। ১৯৯১-এর নির্বাচনে জোটবদ্ধ হলেও নির্বাচনে কাক্সিক্ষত আসন না পাওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে রাজ্জাকের দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ভোট নষ্ট এবং অপতৎপরতা। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের বিজয়ী না হওয়ার খেসারত (জামায়াত-বিএনপির নবজন্ম) জাতিকে আরো ভোগাবে।
রাজ্জাকের মতো তোফায়েল আহমদ এবং শেখ হাসিনা এমন কোন পরিস্থিতির খবর দৃশ্যমান নয়। ২০০৭-এর সময় তোফায়েলের নাম এসেছে সংস্কারবাদী হিসেবে। এটা কি শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে সংস্কার না শেখ হাসিনাকে রেখে সংস্কার সেটা কিন্তু পরিষ্কার নয়। তবে দেশের সবচাইতে বড় রাজনৈতিক দলে কে কাকে কোথায় কাবু করবে সে তৎপরতা থাকতেই পারে। তোফায়েল আগে মন্ত্রী হননি বা প্রেসিডিয়াম সদস্য না থাকায় তাঁর মনে ব্যথা থাকতেই পারে। তবে বিলম্বে হলেও শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিত্বের অফার কিন্তু তোফায়েল আহমদকে মূল্যায়নে শেখ হাসিনার আন্তরিকতার দৃষ্টান্ত হিসেবেই বিবেচিত। তোফায়েল মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করার কোন কারণ বলেননি। বলেছেন মন্ত্রী না হলেও তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করতে করতে একদিন বিদায় নেবেন। তিনি নিজকে আওয়ামী লীগের তোফায়েল হিসেবে ভাবতে গর্ববোধ করেন। কিন্তু মন্ত্রী না হওয়া আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। আর বিএনপি এজন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে বলছে তাদের ‘ভাষায় ডুবন্ত নৌকায় তোফায়েল ওঠেনি।’ এর কি জবাব দেবেন ‘আওয়ালী লীগের তোফায়েল?’
এরশাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. মতিনের সময় ২৪.১.৮৮ তারিখে চট্টগ্রাম কোতোয়ালি থানা থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলিবর্ষণ। ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউতে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টার বিরুদ্ধে যেভাবে কর্মিবাহিনী শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছিল সেভাবে তিনি রক্ষা পান তবে প্রাণহানি ৩৫ জন। গাজীপুরের ময়েজউদ্দিন হত্যা, নূর হোসেন হত্যা এবং ডাক্তার মিলন হত্যার কথা মানুষ ভুলে কি করে?
খালেদা ম্যাডামের প্রথম শাসনকালে (’৯১-৯৬) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরী ছিলেন একাত্তরের পাক দোসর। সারের দাবিতে ময়মনসিংহে বিক্ষোভরত ১৮ জনকে পুলিশের গুলিতে হত্যা। খালেদা ম্যাডামের ২০০১-২০০৬ সময়ে সবচাইতে ভয়াবহ ঘটনার নায়ক খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বাবর তো দীর্ঘদিন ধরে একুশের (২১.৮.০৪) শেখ হাসিনা হত্যা চেষ্টা ছাড়াও আরো একটি ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারাধীন আসামি। সে আমলে জঙ্গী বাহিনীর প্রকাশ্য মহড়া, কথিত বাংলাভাই নামক জঘন্য সন্ত্রাসী বাহিনী, ৬১ জেলায় একসঙ্গে বোমা হামলা, বিচারক হত্যা, শাহ কিবরিয়া হত্যা, মঞ্জুর ইমাম হত্যা, আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা, সিলেটে শাহজালাল মাজারে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে বোমা মেরে আহত করার মতো অসংখ্য ঘটনা ছাড়ও ২০০১-এর নির্বাচনউত্তর আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ঢালাও হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা নজিরবিহীন। এসব ঘটনায় বাবরকে মদদ দিয়েছে খালেদা পুত্র তারেক জিয়া। এদের দুর্নীতির খবর তো দুনিয়াব্যাপী। বাবরের বিশাল বাহিনী এখনও পুলিশে আছে। যাঁরা সাহারা খাতুনের সমালোচনা করেন তাঁদের বলতে হবে বিগত দিনের দুর্বিসহ দিনগুলোর চাইতে বরং তাঁর সময় অনেক ভালই কেটেছে। গত ঈদে যাঁরা ঢাকা ছেড়েছিলেন তাঁদের উদ্দেশ্যে নিজের নিরাপত্তার জন্য ঠিকমতো তালা লাগানোর পরামর্শ কি আলতাফ চৌধুরীর ‘আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে’ এর সঙ্গে তুলনা করা চলে?
সাহারা খাতুনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির কোন অভিযোগ নেই। প্রশাসনের অতীত কোন অভিজ্ঞতা ছাড়া একজন সাধারণ আইনজীবী লো প্রফাইলের এক আওয়ামী লীগ মহিলা কর্মী দেশের বা সরকারের জন্য কোন বোঝা নন। বাংলাদেশে একজন মহিলা যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চালাতে পারে এবং বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা (বিডিআর ঘটনাটি পুরোপুরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বলা যাবে না বরং এটা সরকার সামাল দিয়েছে) ছাড়াই দেশ চলছে সে কথা অবশ্যই সবাই স্মরণ করবে। তাঁর নতুন মন্ত্রণালয়ের এবং অন্যান্যের জন্য শুভ কামনা।
দুই
তোফায়েল আহমদ এবং রাশেদ খান মেনন মন্ত্রী হননি। মেননের মন্ত্রী না হওয়ার কারণ বুঝতে নষ্ট হয় না। কারণ তাঁর ছাত্র ও রাজনীতি জীবনে ৫০ বছর পর আজন্মবিদ্বেষী নৌকায় উঠেছেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের গুরু উপদেষ্টা মওলানা ভাষানী মুজিবনগর সরকারের পরিষদের সদস্য ছিলেন। আর মেননের ন্যাপ সম্পাদক মসিউর রহমান যাদুমিঞা ছিল কলাবরেটরদের তালিকায় (জেলেও গেছেন), পরে জিয়ার সিনিয়র মন্ত্রী। আনোয়ার জাহিদ ছিলেন ক্যান্টনমেন্টে মুরগি সাপ্লায়ার। কাজী জাফর, মান্নান ভুইয়া, মেননরা দেশে থেকেই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন বলে দাবি করেন; তবে আওয়ামী লীগ ও মূলধারা এড়িয়ে। দেশ স্বাধীনের পরে বঙ্গবন্ধু সরকার, সংবিধান সব কিছুর বিরোধিতা। জাফর, মান্নান ভুইয়া জিয়া-এরশাদের সেবক।
১৯৭৯ সালে জেনারেল জিয়ার সহানুভূতিতে তৎকালীন সচিব ওবায়দুল্লাহ খানের অনুজ রাশেদ খান মেনন বরিশালের একটি আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯১ সালে বিএনপি ১৪০টি আসন পেলেও ৬৪টি আসনে জামানত হারায়। তার মধ্যে ৫টি আসনে বিজয়ী প্রার্থীরা ছিলেন রাশেদ খান মেনন, শাজাহান সিরাজ, মেজর হাফিজ, নুরুল ইসলাম মনি। রাশেদ খান মেনন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আব্দুর রহমান বিশ্বাসকে ভোট দিয়েছিলেন। যদিও তার কোন প্রয়োজন ছিল না। কেননা, বিএনপি-জামায়াতের ভোট ছিল ১৫০-এর বেশি। ১৯৯২ সালে তাকে হত্যার জন্য গুলিবিদ্ধ করা হয় কিন্তু বিএনপি আমলে বা পরে এর কোন বিচার হয়েছে বলে শোনা যায়নি।
বিগত শেখ হাসিনার সরকারের সময় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকে ভোরের কাগজে লিখেছিলেন ‘উপযুক্ত কন্যার পিতৃহত্যার প্রতিশোধ’ হিসেবে। ওই লেখার একটি প্রতিক্রিয়া ছিল এই লেখকের ‘হত্যার বিচার সাংবিধানিক দায়িত্ব পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নয়’ শিরোনামে।
বিগত বিএনপি জমানায় রাশেদ খান মেননের নামে ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা একটি রাস্তার নামকরণ করেছেন। জনকণ্ঠ ভবনের ঠিকানা নিউ ইস্কাটন রোডটি এখন মেননের নামে (এর চেয়ে অনেক ত্যাগী নেতা তোফায়েল-রাজ্জাক-মতিয়ার নামে কোন সড়ক আছে কিনা জানি না)।
মন্ত্রিসভায় না হলেও ক্ষমতার সাধ তিনি ভোগ করেছেন এবং সরকারের শেষবর্ষে ভাল মন্ত্রণালয় না পাওয়ার শঙ্কায় মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করা এবং এক বছর পরে পারিবারিক মেরুর কোন সুবিধাজনক পথে হাঁটার জন্য একটি উন্মুক্ত অবস্থান ধরে রেখেছেন হয়ত।
হাসানুল হক ইনুর মেননের মতো অবস্থা নয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে শুরু, মাঝে ‘জাসদ’ করে ফের মূলধারায়। বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী লীগ তাঁর মূল শেকড়। তাঁর কোন কষ্ট হয়নি মন্ত্রিত্ব গ্রহণে বরং তিনি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের জন্য আছেন এবং থাকবেন শেখ হাসিনার সঙ্গে।
এটা দুর্ভাগ্য যে, তোফায়েল ও মেননের নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে। এদের বলা, চলা, ওরা কি কখনও এক ছিল, না আছে? মেনন নৌকায় উঠেছেন মন্ত্রী হওয়ার জন্য। আর তোফায়েল আহমদ তো নিজেই ১৯৬৯-এক মহাসঙ্কটে নৌকার মাঝি হয়ে তাড়িয়ে ছিলেন লোহমানব আইয়ুব খানকে। ঘটেছিল পাকিস্তানের অন্তিমশয্যা। ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধির সঙ্গে ঊনসত্তরের মহানায়কের নামটি যেমন আছে তেমনি ব্যক্তি মুজিবের সাহচর্য, স্নেহ, ভালবাসায় তাঁর সমকক্ষ এখন আর রাজনীতি অঙ্গনে নেই বললেই চলে। এই বিরল সৌভাগ্যের তোফায়েল আহমদের জীবনে পঁচাত্তরে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শাহাদাৎ পরবর্তী জাতীয় ব্যর্থতার জন্য তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়। শ্রদ্ধেয় আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ১৮/৯/১২ তারিখে জনকণ্ঠে লিখেছেন সে সময় দায়িত্ব নিতে তোফায়েল আহমদের ব্যর্থতার কথা। হত্যা প্রতিহত করা বা পরবর্তীতে তোফায়েলের মতো এক যুবকের পক্ষে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সম্ভব ছিল কিনা সে কথা কেউ বলেন না। এটি ছিল সবার জাতিগত ব্যর্থতা। গত শোকদিবসে (১২) জেনারেল শফিউল্লাহ নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে বলেছেন, তাঁর মরে যাওয়া ভাল ছিল। শেখ হাসিনা তাঁকে ক্ষমা করেননি। তোফায়েলকে শুনতে হয় রাষ্ট্রপতি মারা গেলে তাঁর রাজনৈতিক সচিবেরও মারা যাওয়ার কথা। এ প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমদও গত ৯০ দশকে চট্টগ্রামে এক আত্মীয়ের বাসায় বলেছিলেন ‘বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আমিও মারা গেলাম না কেন?’
তিন
তবে জিয়ার স্বৈরশাসনে তোফায়েল জামাই আদরে ছিলেন না। শাহ মোয়াজ্জেম-ওবায়েদ বা মোস্তাক জিয়ার সঙ্গে ভিড়ে মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করলেও তোফায়েল ছিলেন ৩ বছর কারাগারে নির্যাতিত হয়েছেন শারীরিকভাবে। নৌকা থেকে সেই দুর্দিনেও নামেননি।
তবে তোফায়েল আবদুর রাজ্জাক বা ড. কামাল হোসেন নন। বঙ্গবন্ধু দলে তরুণ মেধার সমাবেশ ঘটাতে ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর তিন নেতার সমাধিস্থলের শহীদ সোহরাওয়ার্দীর প্রয়াণ দিবসের শোকসভায় ড. কামাল হোসেনকে উপস্থাপন করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে তাজউদ্দিন আহমদ ও ব্যারিস্টার আমিনুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর ভারত যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি শেষ মুহূর্তে কেটে পড়েন, ধরা দেন পাকবাহিনীর হাতে। এটা সম্ভবত তাঁর পাকিস্তানী স্ত্রীর পরামর্শে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের কিছুদিন আগেই বিদেশে নিরাপদ অবস্থানে ছিলেন অনেক বছর। ফেরেন জিয়ার শেষ দিকে। শেখ হাসিনা দলের প্রধান নিযুক্ত হওয়ার পর প্রথমে ড. কামাল অভিভাবকের ভূমিকায় থাকলেও শেখ হাসিনার অঙ্গীকার ও গভীর আগ্রহের বিপরীতে ড. কামালের আইন ব্যবসার প্রতি অতি ব্যস্ততা এবং দলীয় কর্মকা- ও কর্মীদের প্রতি উদাসীনতার কারণে অনেক পেছনে পড়েন। এটি প্রথম গুরুতর রূপ নেয় ১৯৮৬ সালে ড. কামালের পরামর্শে নির্বাচনে যোগদান করে। দ্বিতীয় দফায় ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বলেছিলেন ‘সূক্ষ্ম কারচুপির’ কথা। আর ড. কামাল মিডিয়াকে দেয়া ‘নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে’ বলে এক পত্র দিয়ে নিজেই আওয়ামী লীগ ছেড়ে যান। ড. কামাল দু’বার সংসদ সদস্য হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসনে ১৯৭১-৭৩-এ। পরে আর কখনও বিজয়ী হননি। নিজের কোন নির্বাচনী আসন নেই। এখন তিনি আওয়ামী লীগের শত্রুর ভূমিকায়। নিজের তৈরি সংবিধানকে তিনি ডিফেন্স করেন না। জাতির জনক হত্যার বেনিফিসিয়ারিরা তাঁকে সহানুভূতি দেখায়।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা সভাপতি এবং আবদুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক। কিন্তু ১৯৮৩ সালে রাজ্জাক গঠন করেন বাকশাল। ১৯৯১-এর নির্বাচনে জোটবদ্ধ হলেও নির্বাচনে কাক্সিক্ষত আসন না পাওয়ার কারণ হিসেবে চিহ্নিত রয়েছে রাজ্জাকের দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ভোট নষ্ট এবং অপতৎপরতা। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগের বিজয়ী না হওয়ার খেসারত (জামায়াত-বিএনপির নবজন্ম) জাতিকে আরো ভোগাবে।
রাজ্জাকের মতো তোফায়েল আহমদ এবং শেখ হাসিনা এমন কোন পরিস্থিতির খবর দৃশ্যমান নয়। ২০০৭-এর সময় তোফায়েলের নাম এসেছে সংস্কারবাদী হিসেবে। এটা কি শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে সংস্কার না শেখ হাসিনাকে রেখে সংস্কার সেটা কিন্তু পরিষ্কার নয়। তবে দেশের সবচাইতে বড় রাজনৈতিক দলে কে কাকে কোথায় কাবু করবে সে তৎপরতা থাকতেই পারে। তোফায়েল আগে মন্ত্রী হননি বা প্রেসিডিয়াম সদস্য না থাকায় তাঁর মনে ব্যথা থাকতেই পারে। তবে বিলম্বে হলেও শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিত্বের অফার কিন্তু তোফায়েল আহমদকে মূল্যায়নে শেখ হাসিনার আন্তরিকতার দৃষ্টান্ত হিসেবেই বিবেচিত। তোফায়েল মন্ত্রিত্ব গ্রহণ না করার কোন কারণ বলেননি। বলেছেন মন্ত্রী না হলেও তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কাজ করতে করতে একদিন বিদায় নেবেন। তিনি নিজকে আওয়ামী লীগের তোফায়েল হিসেবে ভাবতে গর্ববোধ করেন। কিন্তু মন্ত্রী না হওয়া আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। আর বিএনপি এজন্য তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে বলছে তাদের ‘ভাষায় ডুবন্ত নৌকায় তোফায়েল ওঠেনি।’ এর কি জবাব দেবেন ‘আওয়ালী লীগের তোফায়েল?’
No comments