আজকের প্রতিপক্ষ শুধুই পাকিস্তান নয় by নোমান মোহাম্মদ
প্রতিপক্ষ নম্বর ১ : পাকিস্তান।
প্রতিপক্ষ নম্বর ২ : নেট রান রেট।
প্রতিপক্ষ নম্বর ৩ : ইনজুরি।
প্রতিপক্ষ নম্বর ২ : নেট রান রেট।
প্রতিপক্ষ নম্বর ৩ : ইনজুরি।
প্রতিপক্ষ নম্বর ৪ : অসুস্থতা।
প্রতিপক্ষ নম্বর ৫ : হোয়াটমোর।
চাইলে তালিকাটা আরো বড় করা যায়। বড় দলগুলোর বিপক্ষে জয়হীনতার দীন ইতিহাস, এশিয়া কাপ ফাইনালে তীরে এসে তরী ডোবানোর হতাশা, টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০০৭ সালের পর আর না জেতা- এমনই আরো কত কী! তবে মোটা দাগে শুরুর ওই প্রতিপক্ষ-পঞ্চকের ধাঁধায় লুকিয়ে বাংলাদেশের টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্বপ্ন। সেগুলোর সমাধান করতে পারলে সম্ভব হবে অসম্ভব। নীল নভোরীক্ষে মিলিয়ে যাওয়া স্বপ্নঘুড়ি আবার উড়ে বেড়াবে বাংলাদেশের আকাশে! টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলবে মুশফিকুর রহিমের দল।
প্রথম প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের কাছে অজেয় হয়ে আছে ১৩ বছর ধরে। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে রূপকথার সেই জয়ের পর আর কখনোই পাকিস্তানকে হারানো যায়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে এরপর ৩৭ বারের দ্বৈরথে প্রতিবারই বাংলাদেশের প্রাপ্তি হতাশা। পরাজয়ের!
দ্বিতীয় প্রতিপক্ষও হালফিলে ঝামেলা করছে খুব। জিম্বাবুয়েতে তিন জাতি টুর্নামেন্টে ওই নেট রান রেটের কারণে ফাইনালে খেলা হয়নি। ত্রিনিদাদে চার দলের টুর্নামেন্টে হতে পারেনি চ্যাম্পিয়ন। প্রথম ম্যাচে ৫৯ রানের হারের কারণে তাই জয়ের পাশাপাশি রান রেটের চাপটাও জেঁকে থাকবে কাঁধে। প্রবলভাবেই!
তৃতীয় প্রতিপক্ষের শিকার মাশরাফি বিন মুর্তজা। কাল বিকেলে অনুশীলনে ফিল্ডিং করতে গিয়ে ডান হাঁটুর নিচে ব্যথা পান তিনি। ফিজিও অবশ্য জানিয়েছেন, উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো আঘাত নয়। তবে মাশরাফির বলেই উদ্বিগ্নতা কাটছে না। কিছুতেই!
চতুর্থ প্রতিপক্ষ সাকিব আল হাসানের সহচর। অসুস্থতার কারণে কাল দলের সঙ্গে অনুশীলনে আসেননি। তবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলে টিম ম্যানেজমেন্টের দাবি। দলের সেরা ক্রিকেটার অসুস্থ হলে শিরদাঁড়া বেয়ে ভয় ছড়িয়ে যায়। অনুমিতভাবেই!
আর পঞ্চম প্রতিপক্ষ চার বছর ধরে ছিলেন বাংলাদেশের কোচ। এ দেশের ক্রিকেটের নাড়ি-নক্ষত্র হোয়াটমোরের জানা। কিছুদিন আগে এশিয়া কাপে বার দুয়েক দেখা হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় এসেও বাংলাদেশের অনুশীলন ম্যাচে ছিলেন 'গুপ্তচর'-এর ভূমিকায়। হোয়াটমোরের রণ-পরিকল্পনা সাজানো তাই বাংলাদেশের জন্য আতঙ্কের। স্বাভাবিক কারণেই!
এত কিছু জয় করতে হবে বাংলাদেশকে। এত্ত কিছু। তবেই মিলবে সুপার এইটের টিকেট। নইলে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি নিয়েও বিস্মরণযোগ্য এক টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ করবে বাংলাদেশ।
মাঠে যেমনই হোক, কথাবার্তায় বাংলাদেশ দল বরাবরই চটপটে। আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। পাকিস্তানের শক্তির কথা জেনেও সেই আত্মবিশ্বাসের ঝিলিক মুশফিকুর রহিমের কণ্ঠে, 'আমাদের জন্য এটা বাঁচা-মরার ম্যাচ। এখানে ভালো কিছু একটা করে দেখানোর অপেক্ষায় আছে পুরো দল। এক অর্থে এই ম্যাচে আমাদের হারানোর কিছু নেই। জিততে পারলে দারুণ হবে। আশায় আছি ভালো একটা ম্যাচ হবে।' সেখানে জিতলেই তো হবে না, জিততে হবে অন্তত ৩৭ রানের ব্যবধানে। আর পরে ব্যাটিং করলে ইনিংসের বিরতিতে জানা যাবে হিসাব। পাকিস্তান যদি ১৫০ রান করে, তাহলে ১৫.৪ ওভারের মধ্যে জিতলেই কেবল সুপার এইটে উঠবে মুশফিকের দল। অধিনায়ক তাকিয়ে আছেন প্রথম ম্যাচের দুঃস্বপ্ন ভুলে সব বিভাগে ভালো করার দিকে, 'এশিয়া কাপের ফাইনালে তো আমরা সামান্য ব্যবধানে হেরেছিলাম। সেটা অবশ্য ছিল অন্য ফরম্যাটের ম্যাচ। আসলে প্রতিশোধ নিয়ে ভাবছি না আমরা। আমাদের ভাবনায় এই ম্যাচে সব বিভাগে ভালো পারফর্ম করা।' কাল দুপুরে যখন সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন, মুশফিকের চোখে তখন সব হারানোর হাহাকার না। বরং যেন স্বপ্নের মায়াঞ্জন আঁকা, 'এই বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলার স্বপ্ন নিয়েই এসেছি। জানি কাজটা কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। পাকিস্তান ভালো দল মানছি; কিন্তু তারা অজেয় নয়। আমার দলের সবাই যদি তাদের সেরা ক্রিকেট খেলে তাহলে এই ম্যাচে কোনো কিছু হতে পারে।'
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে উইকেট বোঝার ভুল স্বীকার করেছেন মুশফিক। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাই একজন স্পিনার কমিয়ে পেসার বাড়ানোর ইঙ্গিত, 'স্বীকার করছি প্রথম ম্যাচে আমরা উইকেট সম্পর্কে পুরো স্বচ্ছ ধারণা পাইনি। ভেবেছিলাম ওটা দিনের বেলার ম্যাচ, সেখানে স্পিনাররা উইকেট থেকে বাড়তি কিছু সুবিধা পাবে। কিন্তু সেটা হয়নি। সেটাই ছিল আমাদের ভুল। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আমরা নতুন উইকেটে খেলব। এই ম্যাচটা হবে রাতের বেলা। একজন বাঁ-হাতি স্পিনার কমিয়ে আমরা দলে পেসার বাড়ানোর চিন্তা করছি।' ইলিয়াস সানির বদলে পেসার আবুল হোসেনের একাদশে ঢোকাটা তাই এক রকম নিশ্চিত।
পাকিস্তানের একাদশে সব তারকার ছড়াছড়ি। বোলিংয়ে সাঈদ আজমল, শহীদ আফ্রিদি, উমর গুল, ব্যাটিংয়ে মোহাম্মদ হাফিজ, নাসির জামশেদ, কামরান আকমলরা। তবে অধিনায়ক হাফিজ এর পরও বাংলাদেশকে সমীহ করছেন, 'আমরা এটি মোটেই ভাবছি না, এরই মধ্যে আমরা সুপার এইটে উঠে গেছি। বাংলাদেশের বিপক্ষে আমাদের ভালো খেলতে হবে। জানি, ওদের প্রবলভাবে ফেরার সামর্থ্য আছে। আর টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে যেকোনো দলই জিততে পারে।'
পারে তো বটেই! আজ সেটি পেরে দেখাতে হবে বাংলাদেশের! অপয়া '১৩' বছরের যে গেরোতে অজেয় পাকিস্তান, আজ সেটি পয়া করার চ্যালেঞ্জ মুশফিকদের। কাজটি কি খুব কঠিন? পাকিস্তান, নেট রান রেট, ইনজুরি, অসুস্থতা আর হোয়াটমোরকে হারাতে পারলেই তো হয়!
প্রতিপক্ষ নম্বর ৫ : হোয়াটমোর।
চাইলে তালিকাটা আরো বড় করা যায়। বড় দলগুলোর বিপক্ষে জয়হীনতার দীন ইতিহাস, এশিয়া কাপ ফাইনালে তীরে এসে তরী ডোবানোর হতাশা, টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০০৭ সালের পর আর না জেতা- এমনই আরো কত কী! তবে মোটা দাগে শুরুর ওই প্রতিপক্ষ-পঞ্চকের ধাঁধায় লুকিয়ে বাংলাদেশের টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্বপ্ন। সেগুলোর সমাধান করতে পারলে সম্ভব হবে অসম্ভব। নীল নভোরীক্ষে মিলিয়ে যাওয়া স্বপ্নঘুড়ি আবার উড়ে বেড়াবে বাংলাদেশের আকাশে! টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলবে মুশফিকুর রহিমের দল।
প্রথম প্রতিপক্ষ বাংলাদেশের কাছে অজেয় হয়ে আছে ১৩ বছর ধরে। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে রূপকথার সেই জয়ের পর আর কখনোই পাকিস্তানকে হারানো যায়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে এরপর ৩৭ বারের দ্বৈরথে প্রতিবারই বাংলাদেশের প্রাপ্তি হতাশা। পরাজয়ের!
দ্বিতীয় প্রতিপক্ষও হালফিলে ঝামেলা করছে খুব। জিম্বাবুয়েতে তিন জাতি টুর্নামেন্টে ওই নেট রান রেটের কারণে ফাইনালে খেলা হয়নি। ত্রিনিদাদে চার দলের টুর্নামেন্টে হতে পারেনি চ্যাম্পিয়ন। প্রথম ম্যাচে ৫৯ রানের হারের কারণে তাই জয়ের পাশাপাশি রান রেটের চাপটাও জেঁকে থাকবে কাঁধে। প্রবলভাবেই!
তৃতীয় প্রতিপক্ষের শিকার মাশরাফি বিন মুর্তজা। কাল বিকেলে অনুশীলনে ফিল্ডিং করতে গিয়ে ডান হাঁটুর নিচে ব্যথা পান তিনি। ফিজিও অবশ্য জানিয়েছেন, উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো আঘাত নয়। তবে মাশরাফির বলেই উদ্বিগ্নতা কাটছে না। কিছুতেই!
চতুর্থ প্রতিপক্ষ সাকিব আল হাসানের সহচর। অসুস্থতার কারণে কাল দলের সঙ্গে অনুশীলনে আসেননি। তবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই বলে টিম ম্যানেজমেন্টের দাবি। দলের সেরা ক্রিকেটার অসুস্থ হলে শিরদাঁড়া বেয়ে ভয় ছড়িয়ে যায়। অনুমিতভাবেই!
আর পঞ্চম প্রতিপক্ষ চার বছর ধরে ছিলেন বাংলাদেশের কোচ। এ দেশের ক্রিকেটের নাড়ি-নক্ষত্র হোয়াটমোরের জানা। কিছুদিন আগে এশিয়া কাপে বার দুয়েক দেখা হয়েছে। শ্রীলঙ্কায় এসেও বাংলাদেশের অনুশীলন ম্যাচে ছিলেন 'গুপ্তচর'-এর ভূমিকায়। হোয়াটমোরের রণ-পরিকল্পনা সাজানো তাই বাংলাদেশের জন্য আতঙ্কের। স্বাভাবিক কারণেই!
এত কিছু জয় করতে হবে বাংলাদেশকে। এত্ত কিছু। তবেই মিলবে সুপার এইটের টিকেট। নইলে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি প্রস্তুতি নিয়েও বিস্মরণযোগ্য এক টোয়েন্টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ করবে বাংলাদেশ।
মাঠে যেমনই হোক, কথাবার্তায় বাংলাদেশ দল বরাবরই চটপটে। আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। পাকিস্তানের শক্তির কথা জেনেও সেই আত্মবিশ্বাসের ঝিলিক মুশফিকুর রহিমের কণ্ঠে, 'আমাদের জন্য এটা বাঁচা-মরার ম্যাচ। এখানে ভালো কিছু একটা করে দেখানোর অপেক্ষায় আছে পুরো দল। এক অর্থে এই ম্যাচে আমাদের হারানোর কিছু নেই। জিততে পারলে দারুণ হবে। আশায় আছি ভালো একটা ম্যাচ হবে।' সেখানে জিতলেই তো হবে না, জিততে হবে অন্তত ৩৭ রানের ব্যবধানে। আর পরে ব্যাটিং করলে ইনিংসের বিরতিতে জানা যাবে হিসাব। পাকিস্তান যদি ১৫০ রান করে, তাহলে ১৫.৪ ওভারের মধ্যে জিতলেই কেবল সুপার এইটে উঠবে মুশফিকের দল। অধিনায়ক তাকিয়ে আছেন প্রথম ম্যাচের দুঃস্বপ্ন ভুলে সব বিভাগে ভালো করার দিকে, 'এশিয়া কাপের ফাইনালে তো আমরা সামান্য ব্যবধানে হেরেছিলাম। সেটা অবশ্য ছিল অন্য ফরম্যাটের ম্যাচ। আসলে প্রতিশোধ নিয়ে ভাবছি না আমরা। আমাদের ভাবনায় এই ম্যাচে সব বিভাগে ভালো পারফর্ম করা।' কাল দুপুরে যখন সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন, মুশফিকের চোখে তখন সব হারানোর হাহাকার না। বরং যেন স্বপ্নের মায়াঞ্জন আঁকা, 'এই বিশ্বকাপের সুপার এইটে খেলার স্বপ্ন নিয়েই এসেছি। জানি কাজটা কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। পাকিস্তান ভালো দল মানছি; কিন্তু তারা অজেয় নয়। আমার দলের সবাই যদি তাদের সেরা ক্রিকেট খেলে তাহলে এই ম্যাচে কোনো কিছু হতে পারে।'
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে উইকেট বোঝার ভুল স্বীকার করেছেন মুশফিক। পাকিস্তানের বিপক্ষে তাই একজন স্পিনার কমিয়ে পেসার বাড়ানোর ইঙ্গিত, 'স্বীকার করছি প্রথম ম্যাচে আমরা উইকেট সম্পর্কে পুরো স্বচ্ছ ধারণা পাইনি। ভেবেছিলাম ওটা দিনের বেলার ম্যাচ, সেখানে স্পিনাররা উইকেট থেকে বাড়তি কিছু সুবিধা পাবে। কিন্তু সেটা হয়নি। সেটাই ছিল আমাদের ভুল। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে আমরা নতুন উইকেটে খেলব। এই ম্যাচটা হবে রাতের বেলা। একজন বাঁ-হাতি স্পিনার কমিয়ে আমরা দলে পেসার বাড়ানোর চিন্তা করছি।' ইলিয়াস সানির বদলে পেসার আবুল হোসেনের একাদশে ঢোকাটা তাই এক রকম নিশ্চিত।
পাকিস্তানের একাদশে সব তারকার ছড়াছড়ি। বোলিংয়ে সাঈদ আজমল, শহীদ আফ্রিদি, উমর গুল, ব্যাটিংয়ে মোহাম্মদ হাফিজ, নাসির জামশেদ, কামরান আকমলরা। তবে অধিনায়ক হাফিজ এর পরও বাংলাদেশকে সমীহ করছেন, 'আমরা এটি মোটেই ভাবছি না, এরই মধ্যে আমরা সুপার এইটে উঠে গেছি। বাংলাদেশের বিপক্ষে আমাদের ভালো খেলতে হবে। জানি, ওদের প্রবলভাবে ফেরার সামর্থ্য আছে। আর টোয়েন্টি টোয়েন্টিতে যেকোনো দলই জিততে পারে।'
পারে তো বটেই! আজ সেটি পেরে দেখাতে হবে বাংলাদেশের! অপয়া '১৩' বছরের যে গেরোতে অজেয় পাকিস্তান, আজ সেটি পয়া করার চ্যালেঞ্জ মুশফিকদের। কাজটি কি খুব কঠিন? পাকিস্তান, নেট রান রেট, ইনজুরি, অসুস্থতা আর হোয়াটমোরকে হারাতে পারলেই তো হয়!
No comments