পদ্মা সেতু নিয়ে দাতাদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত না নেয়ার পরামর্শ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় কৌশলপত্র প্রকাশ অর্থ মন্ত্রণালয়ের by হামিদ-উজ-জামান মামুন
পদ্মা সেতু নিয়ে দাতাদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করার পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে ব্যয়সীমার মধ্য থেকে অনুমোদিত ডিজাইন এবং কাঠামো অনুযায়ী এই সেতুর কাজ শুরুর কথাও বলা হয়েছে।
দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় এসব পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি সারসংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাজেট বাস্তবায়নের সম্ভাব্য নীতিকৌশল ও করণীয় সম্পর্কে এটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদিত সার সংক্ষেপের সুপারিশগুলো অবগতি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ২৭ আগস্ট সরকারী বিভিন্ন দফতরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সুপারিশে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষিতে সরকারের অগ্রাধিকার ঠিক করা উচিত। এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হওয়া উচিত পদ্মা সেতুসহ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিদ্যুত খাতের উন্নয়ন। এ লক্ষ্যে আগামী তিন বছর সম্পদ আহরণ করা দরকার। বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সহজ শর্তে নেয়া ঋণের ব্যবহার বাড়ানো এবং গ্যারান্টি ইস্যুর ক্ষেত্রে যেসব রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্যারান্টি ইস্যু করা হচ্ছে, তাদের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা আছে কি না, সেই সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে আসা দরকার। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ কর্তৃক একটি টেকনিক্যাল টিম গঠন করে প্রতি সপ্তাহে তা পরিবীক্ষণ করা উচিত। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যবস্থাপনায় সরকারী সিকিউরিটিজ বাজারকে আরও গতিশীল ও টেকসই করা এবং ট্রেজারি সিকিউরিটিজের সুদের হার ধীরে ধীরে মার্কেট ক্লিয়ারিং রেট এর কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কৌশলপত্রে বৈদেশিক অর্থায়ন এবং প্রাপ্ত বৈদেশিক সাহায্যের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক সাহায্য কিভাবে দ্রুত ছাড় এবং ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা। ওই কমিটি কর্তৃক এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণ করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। এছাড়া দশটি মন্ত্রণালয়ের বৃহৎ প্রকল্পের পরিবীক্ষণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সচিবের (বাজেট ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ) সভাপতিত্বে মাসিক ভিত্তিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠান এবং ৫০টি প্রকল্পের বৈদেশিক সাহায্যের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগ প্রধান কর্তৃক প্রতি সপ্তাহে পরিবীক্ষণ করা যেতে পারে।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্ব^রে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর চারটি শর্ত সরকারকে দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। কিন্তু সেগুলো পূরণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে চলতি বছরের ২৯ জুন পদ্মা সেতুর ঋণ চুক্তি বাতিল করে সংস্থাটি। এর ফলে দেশের সবচেয়ে বড় নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতাদের অর্থায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। প্রথম দিকে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শুরু থেকেই বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে শুরু থেকেই উল্টো পথেই হাঁটছে সরকার। দাতাদের মন গলানোর চেষ্টার চেয়ে বিকল্প অর্থায়নেই বেশি ঝোঁক দেখা গিয়েছিল। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগে ঋণ চুক্তি বাতিলের পর প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বলা হয়েছিল নিজস্ব অর্থায়নে করা হবে পদ্মা সেতু। এ জন্য মন্ত্রিসভায় নিজস্ব অর্থায়নের নীতিগত সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খুলে অর্থসংগ্রহ, এডিপির অর্থ কাটছাঁট কিংবা সারচার্জ আরোপসহ নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা বলছেন, আপাতত এ ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। পদ্মা সেতু অর্থায়নে বৈদেশিক সাহায্য পেতে সব রকম চেষ্টা করছে সরকার।
সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের দেয়া শর্ত যথাযথ পূরণ না করায় পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের অনীহার মূল কারণ। সেই সঙ্গে সরকারের সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে দাতাদের অর্থায়নের পুরো প্রক্রিয়াই ভেস্তে যেতে বসেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান পদত্যাগ না করায় শেষপর্যন্ত এ সেতুতে বৈদেশিক অর্থায়ন শঙ্কার মুখে পড়েছে। কেননা এর আগে চার শর্তের মধ্যে তিনটি শর্তই পুরোপুরি এবং একটি শর্তের বেশিরভাগ অংশই পূরণ করেছে সরকার। এখন বাকি শুধু ওই উপদেষ্টার পদত্যাগ। সংশ্লিষ্টদের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, পুরোপুরি চারটি শর্ত পূরণ হলে এখনও বিশ্বব্যাংক ফিরে আসতে প্রস্তুত রয়েছে। সেই সঙ্গে বাকি দাতাদের অর্থায়নও নিশ্চিত হয়ে যাবে। এছাড়া যা করতে হবে তা আর মাত্র দশ দিনের মধ্যেই করতে হবে। কেননা জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) চতুর্থবারের মতো বর্ধিত ঋণ কার্যকারিতার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর।
অন্যদিকে এ সেতুতে অর্থায়নের চূড়ান্ত প্রস্তাব দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। সম্প্রতি সেতু ভবনে মালয়েশিয়া সরকারের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বিশেষ দূত দাতোসেরি সামি ভেলু যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাবের কপি হস্তান্তর করেন।
এ সময় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের দাতাদের অর্থায়ন প্রসঙ্গে বলেছিলেন, আমাদের সকলের সঙ্গেই আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া দাতাদের ব্যাপারটি অর্থ মন্ত্রণালয় দেখবে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অনুমোদিত সার সংক্ষেপের সুপারিশগুলো অবগতি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ২৭ আগস্ট সরকারী বিভিন্ন দফতরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
সুপারিশে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষিতে সরকারের অগ্রাধিকার ঠিক করা উচিত। এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার হওয়া উচিত পদ্মা সেতুসহ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিদ্যুত খাতের উন্নয়ন। এ লক্ষ্যে আগামী তিন বছর সম্পদ আহরণ করা দরকার। বৈদেশিক ঋণ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সহজ শর্তে নেয়া ঋণের ব্যবহার বাড়ানো এবং গ্যারান্টি ইস্যুর ক্ষেত্রে যেসব রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য গ্যারান্টি ইস্যু করা হচ্ছে, তাদের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা আছে কি না, সেই সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে আসা দরকার। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ কর্তৃক একটি টেকনিক্যাল টিম গঠন করে প্রতি সপ্তাহে তা পরিবীক্ষণ করা উচিত। এছাড়া অভ্যন্তরীণ ঋণ ব্যবস্থাপনায় সরকারী সিকিউরিটিজ বাজারকে আরও গতিশীল ও টেকসই করা এবং ট্রেজারি সিকিউরিটিজের সুদের হার ধীরে ধীরে মার্কেট ক্লিয়ারিং রেট এর কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কৌশলপত্রে বৈদেশিক অর্থায়ন এবং প্রাপ্ত বৈদেশিক সাহায্যের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পাইপলাইনে থাকা বৈদেশিক সাহায্য কিভাবে দ্রুত ছাড় এবং ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা। ওই কমিটি কর্তৃক এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণ করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। এছাড়া দশটি মন্ত্রণালয়ের বৃহৎ প্রকল্পের পরিবীক্ষণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সচিবের (বাজেট ও ব্যয় নিয়ন্ত্রণ) সভাপতিত্বে মাসিক ভিত্তিতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠান এবং ৫০টি প্রকল্পের বৈদেশিক সাহায্যের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সংশ্লিষ্ট অনুবিভাগ প্রধান কর্তৃক প্রতি সপ্তাহে পরিবীক্ষণ করা যেতে পারে।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্ব^রে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পর চারটি শর্ত সরকারকে দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। কিন্তু সেগুলো পূরণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে চলতি বছরের ২৯ জুন পদ্মা সেতুর ঋণ চুক্তি বাতিল করে সংস্থাটি। এর ফলে দেশের সবচেয়ে বড় নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকসহ অন্য দাতাদের অর্থায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। প্রথম দিকে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শুরু থেকেই বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে শুরু থেকেই উল্টো পথেই হাঁটছে সরকার। দাতাদের মন গলানোর চেষ্টার চেয়ে বিকল্প অর্থায়নেই বেশি ঝোঁক দেখা গিয়েছিল। এক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগে ঋণ চুক্তি বাতিলের পর প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বলা হয়েছিল নিজস্ব অর্থায়নে করা হবে পদ্মা সেতু। এ জন্য মন্ত্রিসভায় নিজস্ব অর্থায়নের নীতিগত সিদ্ধান্তও নেয়া হয়। ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খুলে অর্থসংগ্রহ, এডিপির অর্থ কাটছাঁট কিংবা সারচার্জ আরোপসহ নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা বলছেন, আপাতত এ ধরনের কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। পদ্মা সেতু অর্থায়নে বৈদেশিক সাহায্য পেতে সব রকম চেষ্টা করছে সরকার।
সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের দেয়া শর্ত যথাযথ পূরণ না করায় পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের অনীহার মূল কারণ। সেই সঙ্গে সরকারের সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে দাতাদের অর্থায়নের পুরো প্রক্রিয়াই ভেস্তে যেতে বসেছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান পদত্যাগ না করায় শেষপর্যন্ত এ সেতুতে বৈদেশিক অর্থায়ন শঙ্কার মুখে পড়েছে। কেননা এর আগে চার শর্তের মধ্যে তিনটি শর্তই পুরোপুরি এবং একটি শর্তের বেশিরভাগ অংশই পূরণ করেছে সরকার। এখন বাকি শুধু ওই উপদেষ্টার পদত্যাগ। সংশ্লিষ্টদের সর্বশেষ পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, পুরোপুরি চারটি শর্ত পূরণ হলে এখনও বিশ্বব্যাংক ফিরে আসতে প্রস্তুত রয়েছে। সেই সঙ্গে বাকি দাতাদের অর্থায়নও নিশ্চিত হয়ে যাবে। এছাড়া যা করতে হবে তা আর মাত্র দশ দিনের মধ্যেই করতে হবে। কেননা জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) চতুর্থবারের মতো বর্ধিত ঋণ কার্যকারিতার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর।
অন্যদিকে এ সেতুতে অর্থায়নের চূড়ান্ত প্রস্তাব দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। সম্প্রতি সেতু ভবনে মালয়েশিয়া সরকারের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বিশেষ দূত দাতোসেরি সামি ভেলু যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে চূড়ান্ত প্রস্তাবের কপি হস্তান্তর করেন।
এ সময় যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের দাতাদের অর্থায়ন প্রসঙ্গে বলেছিলেন, আমাদের সকলের সঙ্গেই আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া দাতাদের ব্যাপারটি অর্থ মন্ত্রণালয় দেখবে।
No comments