শিকল বাঁধা অবস্থায় ১৫টি বছর...
নাম রমেশ কুমার। ভারতের রাজস্থানের জালিয়ালা বেরা গ্রামের বাসিন্দা। মাত্র ১০ বছর বয়সে গাছের সঙ্গে শেকল বেঁধে রাখা হয়েছিল তাকে। মানসিক অসুস্থতার কারণে তাকে অমানবিক এ পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
সে দিনের পর থেকে দীর্ঘ ১৫টি বছর তাকে শেকল পরিয়ে রাখা হয়েছে। কখনও বাড়ির বাইরে গাছের সঙ্গে। কখনও ঘরের মধ্যে বিছানার সঙ্গে পা শেকল দিয়ে বাঁধা অবস্থায়। এভাবে সে পরিণত হয়েছে মানসিক প্রতিবন্ধীতে। আর এখন রমেশের চিকিৎসা করানোর মতো আর্থিক সঙ্গতিও নেই তার পরিবারের। সরকারি তরফ থেকেও নেই কোন সাহায্য।
১৫ বছর ধরে চিকিৎসা করানোর পর তার পরিবার এখন আর্থিকভাবে প্রায় নিঃস্ব। জমিজমা যা ছিল, সবই বিক্রি করা শেষ। পিতা পেশায় কৃষক। রমেশের ছোট ভাই পুখরাজ বললেন, একজন কৃষক কখনই তার ট্রাক্টর বিক্রি করেন না। কারণ এটা তার পরিবারের দুই বেলার রুটিরুজি যোগায়। তিনি বলেন, আমার পিতা নেমিরাম রমেশের চিকিৎসার জন্য তার ট্রাক্টর পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। পুখরাজ বলেন, ১০ বছর বয়সে রমেশ প্রথম অসুস্থ হয়। এরপর তা বাড়তে থাকে। তার আচরণেও সহিংসতা প্রকাশ পেতে শুরু করে। নিজের ক্ষতি করারও চেষ্টা করতো সে। এক পর্যায়ে এটা অনেক বেড়ে যায়। বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়া পথচারীদের লক্ষ্য করে রমেশ পাথর ছুঁড়তো ও তাদের ক্ষতি করার চেষ্টা করতো। পুখরাজ বলেন, শহরে চিকিৎসার খরচ অনেক বেশি হওয়ায় তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা ছাড়া কোন উপায় ছিল না। তিনি বলেন, গ্রামবাসীরাও আমাদের উত্যক্ত করতে শুরু করে। তারা রমেশকে নিয়ন্ত্রণের কথা বলতো। ভাই হিসেবে তিনি রমেশের অবস্থা দেখে খুব দুঃখ পেতেন। কিন্তু কিছু করার ছিল না। সরকারের কাছে রমেশের চিকিৎসার আকুল আবেদন জানিয়েও ফল হয়নি বলে জানান তিনি।
No comments