জন্মদিনে সাবিনাঃ মেয়ে বাঁধনকে নিয়ে ঘুরছি সারাদিন by কামরুজ্জামান মিলু
আমাদের সংগীতাঙ্গনের অহংকার সাবিনা ইয়াসমিন। এই কোকিলকণ্ঠী শিল্পী দেখতে দেখতে পেরিয়ে এসেছেন জীবনের ৫৭টি বছর। ৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার তিনি উদযাপন করছেন ৫৮তম জন্মদিন। উপমহাদেশের খ্যাতিমান শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন তার এবারের জন্মদিনটি কীভাবে পালন করছেন, তা জানতে বাংলানিউজ কথা বলে তার সঙ্গে।
সাবিনা ইয়াসমিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলানিউজ তার কাছে জানতে চায়, এই বিশেষ দিনটি এবার কীভাবে পালন করছেন?
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “জন্মদিন প্রতিটি মানুষের জন্য বিশেষ একটি দিন। এই দিনটি নিজের মতো পালন করতে চাই বলে আজকে আমি হাতে কোনো কাজ রাখিনি। সারাদিন আমার মেয়ে বাঁধনসহ পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। দুপুরে বাইরে খাওয়াদাওয়া করেছি, রাতের ডিনারটাও বাইরে করবো।”
জন্মদিনে এবার প্রথম শুভেচ্ছা কার কাছ থেকে পেয়েছেন?
একটুখানি হেসে বলেন, “সবাইকে তো আপনজনই সবার আগে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকে। এবারের জন্মদিনের প্রথম শুভেচ্ছা জানিয়ে রাত ১২টার পরপরই প্রথম ফোন কলকাতা থেকে। ফোনটা ছিল কবির সুমনের। এরপরই আমার ছেলে শ্রাবণ লন্ডন থেকে ফোন করে আমাকে শুভেচ্ছা জানায়। খুব ভালো লাগতো তাদের নিয়ে একসঙ্গে জন্মদিনটি পালন করতে পারলে।”
ছোটবেলায় জন্মদিন কীভাবে পালন করতেন?
এ প্রশ্নের উত্তরে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “ছোটবেলায় জন্মদিন কাটতো বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথেই। বাবা-মা প্রতি জন্মদিনেই বড় একটা কেক কিনে আনতেন। কেক কাটার মাধ্যমে অনেক আনন্দ করতাম। ছোটবেলায় জন্মদিনে উপহারও অনেক পেতাম। শুভেচ্ছা কার্ড, চকলেট, পুতুল আরো অনেক মজার মজার জিনিস সবাই আমাকে উপহার দিত।”
এবারের জন্মদিনে কি কি উপহার পেলেন?
এ প্রশ্নে আবারও হেসে তিনি বলেন, “এখনও জন্মদিনে আমি প্রচুর উপহার পাই। উপহার হিসেবে বেশি পাই ফুল। অনেক ভক্ত শ্রোতারা ফোন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। ভক্তদের ফোন, অভিনন্দন আমার ভীষণ ভালো লাগে। তবে এবারের জন্মদিনে আমার মেয়ে বাঁধন আমাকে চমৎকার একটি উপহার দিয়েছে। তাছাড়া আমার স্বামী কবির সুমন ও সন্তান শ্রাবণ রাতে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এসবই আমার কাছে বড় উপহার।”
সাবিনা ইয়াসমিন জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। পৈত্রিক বাড়ি সাতক্ষীরা হলেও তার জন্ম ঢাকায়। ৫ বোনের মধ্যে ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিন এবং সাবিনা ইয়াসমিন গানের মানুষ। বড় বোন ফরিদা ইয়াসমিন যখন গান শিখতেন ওস্তাদ দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে, ছোট্ট সাবিনাও সারাক্ষণ তার পাশে থাকতেন। পরবর্তীতে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম নেন তিনি। মাত্র সাত বছর বয়েসে তিনি স্টেজ প্রোগ্রাম শুরু করেন। আটবছর বয়সে ছোটদের গানের অনুষ্ঠান ‘খেলাঘর’- এর মাধ্যমে রেডিওতে গান করেন। এরপর ১৯৬৫ সালে টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হলে শিশুশিল্পী হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি গান পরিবেশন করতেন।
পড়াশোনাতেও সাবিনা ইয়াসমিন সবসময় ছিলেন বেশ মনোযোগী। ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সমাজ বিজ্ঞানে এমএ পাস করেন।
অন্য বোনদের মধ্যে নিলুফার ইয়াসমিন ধ্রুপদীধারায় জনপ্রিয়তা পান, আর সাবিনা ইয়াসমিন এগিয়ে যান আধুনিক গান আর প্লেব্যাক নিয়ে। অসাধারণ গায়কী আর কণ্ঠমাধুর্যের কারণে বাংলাভাষীদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানে সাবিনা ইয়াসমিনের উচ্চতা স্পর্শ করা আজো কারো সম্ভব হয়নি। দেড় হাজারের বেশি ছবির গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। এছাড়া সেরা কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১২ বার। ছবিগুলো হলো- সাধারণ মেয়ে (১৯৭৫), গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮), সুন্দরী (১৯৭৯), কসাই (১৯৮০), চন্দ্রনাথ (১৯৮৪), প্রেমিক (১৯৮৫), রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত (১৯৮৭), দুই জীবন (১৯৮৮), দাঙ্গা (১৯৯১), রাধাকৃষ্ণ (১৯৯২), দুই দুয়ারি (২০০০), দুই নয়নের আলো (২০০৬)। এছাড়া তিনি বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন ৫ বার।
সাবিনা ইয়াসমিন ১৯৮৪ সালে অর্জন করেন একুশে পদক। ১৯৮৫ সালে ভারতের ‘বিশ্ব উন্নয়ন সংসদ’ সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে সন্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে এবং ‘সংসদ রত্ন’ সন্মানে ভূষিত করে। ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারও অর্জন করেন জনপ্রিয় এ কণ্ঠশিল্পী।
আগামী ১ অক্টোবর চ্যানেল আইয়ের জন্মদিনে আসছে তার গাওয়া প্রথম রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম ‘আমি সন্ধ্যাদীপ শিখা’। অ্যালবামটি বাজারে আনবে ইমপ্রেস অডিও ভিশন। এ অ্যালবামটির সংগীত পরিচালনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের সংগীতশিল্পী রকেট মন্ডল। অ্যালবামটির সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কবির সুমন।
সাবিনা ইয়াসমিন চার দশকের বেশি সময় ধরে গানে গানে শ্রোতাদের মন মাতিয়ে রেখেছেন। জন্মদিনের বিশেষ মুহূর্তে শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে বলা হলে তিনি বলেন, “শ্রোতাদের ভালোবাসায় ধন্য আমার শিল্পী জীবন। এই ভালোবাসা আমাকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গানে নিবেদিত থাকার শক্তি যোগাবে। আমি শ্রোতাদের কাছে দোয়া চাই, যেন আরো ভালো ভালো গান তাদের উপহার দিয়ে যেতে পারি।”
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “জন্মদিন প্রতিটি মানুষের জন্য বিশেষ একটি দিন। এই দিনটি নিজের মতো পালন করতে চাই বলে আজকে আমি হাতে কোনো কাজ রাখিনি। সারাদিন আমার মেয়ে বাঁধনসহ পরিবারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছি। দুপুরে বাইরে খাওয়াদাওয়া করেছি, রাতের ডিনারটাও বাইরে করবো।”
জন্মদিনে এবার প্রথম শুভেচ্ছা কার কাছ থেকে পেয়েছেন?
একটুখানি হেসে বলেন, “সবাইকে তো আপনজনই সবার আগে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে থাকে। এবারের জন্মদিনের প্রথম শুভেচ্ছা জানিয়ে রাত ১২টার পরপরই প্রথম ফোন কলকাতা থেকে। ফোনটা ছিল কবির সুমনের। এরপরই আমার ছেলে শ্রাবণ লন্ডন থেকে ফোন করে আমাকে শুভেচ্ছা জানায়। খুব ভালো লাগতো তাদের নিয়ে একসঙ্গে জন্মদিনটি পালন করতে পারলে।”
ছোটবেলায় জন্মদিন কীভাবে পালন করতেন?
এ প্রশ্নের উত্তরে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “ছোটবেলায় জন্মদিন কাটতো বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথেই। বাবা-মা প্রতি জন্মদিনেই বড় একটা কেক কিনে আনতেন। কেক কাটার মাধ্যমে অনেক আনন্দ করতাম। ছোটবেলায় জন্মদিনে উপহারও অনেক পেতাম। শুভেচ্ছা কার্ড, চকলেট, পুতুল আরো অনেক মজার মজার জিনিস সবাই আমাকে উপহার দিত।”
এবারের জন্মদিনে কি কি উপহার পেলেন?
এ প্রশ্নে আবারও হেসে তিনি বলেন, “এখনও জন্মদিনে আমি প্রচুর উপহার পাই। উপহার হিসেবে বেশি পাই ফুল। অনেক ভক্ত শ্রোতারা ফোন করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। ভক্তদের ফোন, অভিনন্দন আমার ভীষণ ভালো লাগে। তবে এবারের জন্মদিনে আমার মেয়ে বাঁধন আমাকে চমৎকার একটি উপহার দিয়েছে। তাছাড়া আমার স্বামী কবির সুমন ও সন্তান শ্রাবণ রাতে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। এসবই আমার কাছে বড় উপহার।”
সাবিনা ইয়াসমিন জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর। পৈত্রিক বাড়ি সাতক্ষীরা হলেও তার জন্ম ঢাকায়। ৫ বোনের মধ্যে ফরিদা ইয়াসমিন, ফওজিয়া খান, নীলুফার ইয়াসমিন এবং সাবিনা ইয়াসমিন গানের মানুষ। বড় বোন ফরিদা ইয়াসমিন যখন গান শিখতেন ওস্তাদ দুর্গাপ্রসাদ রায়ের কাছে, ছোট্ট সাবিনাও সারাক্ষণ তার পাশে থাকতেন। পরবর্তীতে ওস্তাদ পি সি গোমেজের কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীতের তালিম নেন তিনি। মাত্র সাত বছর বয়েসে তিনি স্টেজ প্রোগ্রাম শুরু করেন। আটবছর বয়সে ছোটদের গানের অনুষ্ঠান ‘খেলাঘর’- এর মাধ্যমে রেডিওতে গান করেন। এরপর ১৯৬৫ সালে টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হলে শিশুশিল্পী হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি গান পরিবেশন করতেন।
পড়াশোনাতেও সাবিনা ইয়াসমিন সবসময় ছিলেন বেশ মনোযোগী। ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সমাজ বিজ্ঞানে এমএ পাস করেন।
অন্য বোনদের মধ্যে নিলুফার ইয়াসমিন ধ্রুপদীধারায় জনপ্রিয়তা পান, আর সাবিনা ইয়াসমিন এগিয়ে যান আধুনিক গান আর প্লেব্যাক নিয়ে। অসাধারণ গায়কী আর কণ্ঠমাধুর্যের কারণে বাংলাভাষীদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানে সাবিনা ইয়াসমিনের উচ্চতা স্পর্শ করা আজো কারো সম্ভব হয়নি। দেড় হাজারের বেশি ছবির গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। এছাড়া সেরা কণ্ঠশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১২ বার। ছবিগুলো হলো- সাধারণ মেয়ে (১৯৭৫), গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮), সুন্দরী (১৯৭৯), কসাই (১৯৮০), চন্দ্রনাথ (১৯৮৪), প্রেমিক (১৯৮৫), রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্ত (১৯৮৭), দুই জীবন (১৯৮৮), দাঙ্গা (১৯৯১), রাধাকৃষ্ণ (১৯৯২), দুই দুয়ারি (২০০০), দুই নয়নের আলো (২০০৬)। এছাড়া তিনি বাচসাস পুরস্কার পেয়েছেন ৫ বার।
সাবিনা ইয়াসমিন ১৯৮৪ সালে অর্জন করেন একুশে পদক। ১৯৮৫ সালে ভারতের ‘বিশ্ব উন্নয়ন সংসদ’ সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য তাকে সন্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে এবং ‘সংসদ রত্ন’ সন্মানে ভূষিত করে। ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কারও অর্জন করেন জনপ্রিয় এ কণ্ঠশিল্পী।
আগামী ১ অক্টোবর চ্যানেল আইয়ের জন্মদিনে আসছে তার গাওয়া প্রথম রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম ‘আমি সন্ধ্যাদীপ শিখা’। অ্যালবামটি বাজারে আনবে ইমপ্রেস অডিও ভিশন। এ অ্যালবামটির সংগীত পরিচালনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের সংগীতশিল্পী রকেট মন্ডল। অ্যালবামটির সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী কবির সুমন।
সাবিনা ইয়াসমিন চার দশকের বেশি সময় ধরে গানে গানে শ্রোতাদের মন মাতিয়ে রেখেছেন। জন্মদিনের বিশেষ মুহূর্তে শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে বলা হলে তিনি বলেন, “শ্রোতাদের ভালোবাসায় ধন্য আমার শিল্পী জীবন। এই ভালোবাসা আমাকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত গানে নিবেদিত থাকার শক্তি যোগাবে। আমি শ্রোতাদের কাছে দোয়া চাই, যেন আরো ভালো ভালো গান তাদের উপহার দিয়ে যেতে পারি।”
No comments